![মানবজাতির সুখ-সমৃদ্ধি প্রত্যাশায় উদযাপিত হচ্ছে বুদ্ধপূর্ণিমা](uploads/2024/05/22/buddha-1716373104.jpg)
গৌতম বুদ্ধ যে অহিংসা ও শান্তির বাণী প্রচার করে গেছেন, তা অন্তরে ধারণ করে উদযাপিত হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধপূর্ণিমা।
বুধবার (২২ মে) ভোর থেকে বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীরা এই পূর্ণিমা তিথিতে স্নান করে শুচিবস্ত্র ধারণ করেন।
রাজধানীতে বুদ্ধ পূর্ণিমার আয়োজন হয় মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার ও বাসাবোর ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় সংগীতের মধ্য দিয়ে বুদ্ধ বন্দনার পর সবুজবাগ বৌদ্ধ বিহার থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়, এ সময় ওড়ানো হয় বেলুন। এরপর ভক্তরা আসতে শুরু করেন বিহারে। স্নান সেরে শুচিবস্ত্র ধারণ করে মন্দিরে বুদ্ধের বন্দনায় রত হন তারা।
সকাল সাড়ে ৯টায় বুদ্ধ পূজা মাথায় নিয়ে ভক্তরা মন্দির প্রদক্ষিণ করেন। এ সময়ে বাদক দল ঢোল বাজায়।
সকালের কর্মসূচির মধ্যে আরও ছিল জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, ভিক্ষুসংঘের প্রাতঃরাশ, মঙ্গলসূত্র পাঠ, বুদ্ধ পূজা, পঞ্চশীল, ও অষ্টাঙ্গ উপোসথশীল গ্রহণ, মহাসংঘদান, ভিক্ষুসংঘকে পিণ্ডদান, ত্রিপিটক পাঠ, প্রদীপ পূজা এবং জগতের সব প্রাণীর সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা।
প্রার্থনা শেষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা পাত্রে জল ঢেলে মৃত স্বজনদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে নানা উপচারে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।
বিহারের বোধিবৃক্ষে পত্র-পুষ্প-জলে পূজা দেওয়া হয় গৌতম বুদ্ধকে।
বেলা সাড়ে ১১টায় সবুজবাগ বৌদ্ধ বিহারে পিণ্ডদানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সকালের পর্বের অনুষ্ঠান।
ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের অধ্যক্ষ আনন্দ মিত্র মহাথেরো বলেন, “দিনটি আমাদের কাছে মহাপবিত্র, মহাগুরুত্বপূর্ণ। বুদ্ধ সকল প্রাণীর সুখ-শান্তি কামনার কথা বলেছেন। আমরা যারা বৌদ্ধ ভিক্ষু আছি, আমরা সকল প্রাণীর প্রতি, সকল মানবজাতির সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করছি। সকল মানবজাতি যেন ভালো থাকে, শান্তিতে থাকে, সকলে যেন সুন্দর দেশ, সুন্দর জাতি, সুন্দর পরিবার নিয়ে বসবাস করতে পারে, সেই আশাই করছি।’
বুধবার সকালে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশে বর্তমানে যেকোনো সময়ের তুলনায় স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ফলে সব ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে পালন করছেন।’
অনুষ্ঠানে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) খ. মহিদ উদ্দিন, বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি প্রকৌশলী দিব্যেন্দু বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয়, আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত ধর্মমিত্র মহাথের প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন
জয়ন্ত সাহা/অমিয়/