ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

এমপি আজীম হত্যার ঘটনায় কসাই গ্রেপ্তার, বেরিয়ে এল লোমহর্ষক তথ্য

প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৪, ০৪:২৭ পিএম
আপডেট: ২৪ মে ২০২৪, ০৯:৩২ পিএম
এমপি আজীম হত্যার ঘটনায় কসাই গ্রেপ্তার, বেরিয়ে এল লোমহর্ষক তথ্য

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার পর তার শরীর থেকে চামড়া ছাড়িয়ে তাকে টুকরো টুকরো করা হয়। হাড় ও মাংস আলাদা করে ছোট ছোট প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে তাতে হলুদ দেওয়া হয়, যাতে কেউ সন্দেহ না করে। পরে সেই ব্যাগগুলো কলকাতার বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেওয়া হয়। 

এমপি আজীম হত্যার সঙ্গে জড়িত জিহাদ হাওলাদার নামের এক কসাইকে গ্রেপ্তার করেছে পশ্চিমবঙ্গ অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) তাকে পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, জিহাদ হাওলাদার কলকাতার নিউটাউনের একটি অ্যাপার্টমেন্টে এমপি আনার হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে এমপি আনার হত্যার লোমহর্ষক বিবরণ।

শুক্রবার (২৪ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। 

আনার হত্যাকাণ্ডের পেছনে মূলহোতা ছিলেন তারই বন্ধু ও ব্যবসায়ী অংশীদার আখতারুজ্জামান। তিনি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র শহীদুজ্জামান সেলিমের ভাই। তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তার নির্দেশ ও পরিকল্পনা অনুযায়ী জিহাদসহ আরও চার বাংলাদেশি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন বলে স্বীকারোক্তি দেন জিহাদ। তাদের বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় যাওয়া-আসার ব্যাপারে সহায়তা করেছেন আখতারুজ্জামান।

পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি জানায়, তারা অ্যাপার্টমেন্টের ভেতরে রক্তের দাগ এবং বেশ কয়েকটি প্ল্যাস্টিকের ব্যাগ খুঁজে পেয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই প্ল্যাস্টিক ব্যাগগুলো মাংস ও হাড় নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।

তারা আরও জানান, আনারকে হত্যার পর মরদেহ যাতে শনাক্ত করা না যায়, তাই জিহাদকে ভাড়া করা হয়।

এদিকে বুধবার (২২ মে) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আনোয়ারুল আজীম আনারকে খুন করা হয়েছে এবং তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

গত ১২ মে এমপি আজীম চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। সেখানে বরাহনগরের মণ্ডলপাড়ায় তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে উঠেছিলেন। পরদিন দুপুর পৌনে ২টার দিকে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। বুধবার (২২ মে) জানা যায় তিনি খুন হয়েছেন।

আনোয়ারুল আজীম আনার ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য। তিনি ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টানা তিনবার আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

 

সাদিয়া নাহার/

মেট্রোরেল কবে চালু হবে তা বলা যাচ্ছে না: সেতুমন্ত্রী

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০২:১৬ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৪২ পিএম
মেট্রোরেল কবে চালু হবে তা বলা যাচ্ছে না: সেতুমন্ত্রী
ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ভবন পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

মেট্রোরেল কবে নাগাদ চালু হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শনিবার (২৭ জুলাই) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর মহাখালীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে পুঁজি করে বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ভবন পরিদর্শনে যান। পরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মেট্রোরেল না থাকায় মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। ৩০ মিনিটের পথ দুই ঘণ্টায়ও যেতে পারছেন না। মেট্রোরেল কবে নাগাদ চালু হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। 

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করে যারা সহিংসতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।  প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যখন যেখানে যা করার তা করব। প্রধানমন্ত্রী নিজেই সব ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় গিয়েছেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, হামলাকারীদের যে ফুটেজ ছিল তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। তারা পরপর দুইবার পদ্মা সেতুতে আগুন লাগাতে গিয়েছিল। শেখ হাসিনার যা অর্জন তা ধ্বংস করতে চায় তারা।

তিনি বলেন, এটা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কাজ না। বিএনপি-জামায়াত এই আন্দোলনে ওপর ভর করেছে। তাদের দীর্ঘ দিনের ব্যর্থতার জন্য এমন হামলা। তারা গণতন্ত্র মানে না। আগুন, অস্ত্র নিয়ে নেমেছে তারা। কত মানুষের প্রাণ প্রদীপ নিভে গেছে। মর্মান্তিক দৃশ্যপট, সাংবাদিকও নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে হামলা হয়। ভাঙচুর করা হয় সিসি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরা, এলইডি মনিটর, টিকিট কাটার মেশিনসহ বিভিন্ন জায়গায়। লুট করা হয় মূল্যবান অনেক জিনিস। পরে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নির্ণয়ে কমিটি করেছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।

ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন চালু হতে কমপক্ষে এক বছর লাগতে পারে বলে জানায় মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। 

অমিয়/

সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:২২ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৪২ পিএম
সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী
ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

রাজধানীর মহাখালীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে পুঁজি করে বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২৭ জুলাই) সকালে সেতু ভবনের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত অংশ দেখে হতবাক হয়ে যান তিনি।

এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

গেল ১৮ জুলাই কয়েক শ দুষ্কৃতিকারী সেতু ভবনে ঢুকে ভাঙচুর ও আগুন জ্বালিয়ে দেয়। তারা ভবন থেকে সরকারি সম্পত্তি লুট করে। তারা অনেক যানবাহন ও মোটরবাইক ভাঙচুর, বিভিন্ন শেড ও কক্ষ তছনছ করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া তারা সেতু ভবনের অনেক কর্মচারীকে মারধর করে।

প্রধানমন্ত্রী পরে মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শন করেন এবং ১৮ জুলাই সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন।

সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভবন দুটির ধ্বংসযজ্ঞের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে বিএনপি-জামায়াত চক্র সারাদেশে সরকারি প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।

পরে সরকারপ্রধান এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজার ধ্বংসযজ্ঞও পরিদর্শন করেন।

অমিয়/

ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত করার ষড়যন্ত্র থেকেই এই তাণ্ডব: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:৩২ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৪৮ পিএম
ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত করার ষড়যন্ত্র থেকেই এই তাণ্ডব: প্রধানমন্ত্রী
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থপেডিক রিহ্যাবিলিটেশন-নিটোর পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে আবার ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত করার ষড়যন্ত্র থেকেই এই তাণ্ডব চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে পুঁজি করে ঘটা সহিংসতায় আহতদের দেখতে আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থপেডিক রিহ্যাবিলিটেশন-নিটোর (পঙ্গু হাসপাতাল) পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করতেই এই ষড়যন্ত্র করেছে বিএনপি-জামায়াত। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত যেভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, এবারও একইভাবে তাণ্ডব করেছে।’

এ সময় শেখ হাসিনা আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে বলেন।

হাসপাতাল পরিদর্শনের সময় অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে সহিংসতায় আহতদের দেখতে যান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলে আহতদের সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

অমিয়/

আহতদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৮ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০২:২৩ পিএম
আহতদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী
পঙ্গু হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

দেশব্যাপী কোটা সংস্কার আন্দোলনকে পুঁজি করে ঘটে যাওয়া সহিংসতায় আহতদের দেখতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থোপেডিক রিহ্যাবিলিটেশন (নিটর) পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সরকারপ্রধান রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। 

এ সময় চিকিৎসাধীন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন ও তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।

নিটর পরিচালক অধ্যাপক ড. কাজী শামীম উজ্জামান আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান।

এর আগে শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ডিএমসিএইচ) হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সন্ত্রাসী হামলায় আহতদের খোঁজখবর নেন সরকারপ্রধান।

ইসরাত চৈতী/অমিয়/

কারফিউ বিরতি: দূরপাল্লার বাস চলাচল ছিল কম

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৬ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৬ এএম
কারফিউ বিরতি: দূরপাল্লার বাস চলাচল ছিল কম
ছবি: খবরের কাগজ

গত কয়েক দিনে কোটা আন্দোলন ঘিরে ভয়াবহ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা হয় কারফিউ। ফলে সড়ক, রেল ও নৌপথের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আন্তর্জাতিক যোগাযোগও বিঘ্নিত হয়। তবে কারফিউ শিথিলের সময়ে রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে দূরপাল্লার স্বল্পসংখ্যক বাস চলাচল করায় যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি দেখা দেয়। 

গত ১৯ জুলাই কারফিউ ঘোষণা করা হয়। এদিন থেকেই রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়। এতে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগের মাধ্যম মৈত্রী এক্সপ্রেস ও খুলনা-কলকাতা যাতায়াতকারী বন্ধন এক্সপ্রেস চলাচল বাতিল করা হয়। সম্প্রতি নির্দিষ্ট সময় কারফিউ শিথিল হলেও নিরাপত্তার কারণে রেল যোগাযোগ এখনো সচল হয়নি। 

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ শনিবার কলকাতা থেকে ১৩১০৮ কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেসের রওনা হওয়ার কথা ছিল। একই দিনে ঢাকা থেকে রওনা হওয়ার কথা ছিল ১৩১১০ ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসের। তবে যাত্রীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় এসব যাত্রাও বাতিল করেছে উভয় দেশের রেল কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, যেসব যাত্রী ইতোমধ্যে টিকিট কিনেছেন, কলকাতার বিশেষ টিকিট কাউন্টারে তারা টিকিটের দাম ফেরত পাচ্ছেন। তবে কোনো যাত্রী টিকিট হারিয়ে ফেললে টাকা ফেরত দেওয়া হবে না। বিদেশি যাত্রীদের ক্ষেত্রে প্যাসেঞ্জার রিজার্ভেশন সিস্টেমের (পিআরএস) কাজের সময় টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। দেশের অভ্যন্তরে চলাচলকারী ট্রেনের টিকিটধারীদেরও টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। 

এদিকে ঢাকা থেকে স্বল্পসংখ্যক দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যাওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন যাত্রীরা। গত বুধবার থেকেই কারফিউ শিথিল থাকাকালে রাজধানীর সায়েদাবাদ, গাবতলী ও মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনাল থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে দূরপাল্লার কিছু বাস। আবার গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় এসেছে বেশ কিছু বাস। এতে যেন কিছুটা হলেও গতি ফিরে পেয়েছে সড়কে যান চলাচল। কারফিউ চলাকালে যেসব মানুষ ঢাকায় আটকা পড়েছিলেন, তাদেরও স্বস্তি গন্তব্যে ফিরতে পেরে। বিদেশ গমনাগমনের উদ্দেশ্যে যাদের বিমানের টিকিট কাটা আছে, যাতায়াতব্যবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় দুশ্চিন্তা কমেছে তাদেরও। 

অস্ট্রেলিয়ায় অধ্যয়নরত মারিয়া গমেজ দেশে এসেছিলেন গত মাসে। তার বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায়। মারিয়া খবরের কাগজকে বলেন, ‘আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ফেরার টিকিট নিয়ে রেখেছি। কিন্তু কারফিউ জারি করায় ঢাকার ভেতর শহরের বাইরের কোনো যানবাহন ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। এতে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। সম্প্রতি ঢাকার ভেতরে যানবাহন চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে।’ 

তবে ঢাকায় দূরপাল্লার বাস চললেও এখনো ভয় কাটেনি মানুষের। গত কয়েক দিনের সহিংসতার ঘটনায় প্রয়োজন থাকলেও ঢাকার ভেতর ঢুকতে ভয় পাচ্ছেন অনেকে। পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার বাসিন্দা সুমা গমেজ মোবাইল ফোনে খবরের কাগজকে বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনে আগামী সোমবার ঢাকায় যেতেই হবে। কিন্তু ঢাকার যে খবর শুনি, এই পরিস্থিতিতে সাহসে কুলাচ্ছে না। কখন কোন দিক থেকে আক্রমণ করে বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়, সব সময় এই ভয় পাই।’ 

দূরপাল্লার বাস চলাচলে বিঘ্ন
এদিকে বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ঢাকা থেকে দূরপাল্লার সব রুটে যাত্রীবাহী বাস চলাচল সীমিত করে এনেছেন বাস মালিকরা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও রাজধানীর তিন আন্তজেলা বাস টার্মিনালের বাস মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এ তথ্য। তারা বলছেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক কারফিউ বলবৎ থাকলে বিকেল ৫টার পর ঢাকা থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর বাড্ডা, কলাবাগান ও শ্যামলী এলাকার কয়েকটি বাস কাউন্টারের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সড়ক-মহাসড়ক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এলেও বাসমালিকরা এখনো নানা শঙ্কায় ভুগছেন। শ্যামলী এলাকায় আল হামরা, শ্যামলী, নাবিল ও ডিপজল পরিবহনের কয়েকজন বাসচালক খবরের কাগজকে জানান, রাতে বাস না চালানোর মূল কারণ হলো, বাসমালিকরা চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। কারফিউ চলাকালে সড়কে নানা পয়েন্টে নিরাপত্তা তল্লাশিতেও বাসচালক ও যাত্রীরা বিরক্ত হন। 

মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনালের বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কালাম বলেন, ‘বিকেলের পর টার্মিনালে যাত্রীও থাকেন না। যেহেতু এখন ট্রেন চলাচল বন্ধ, বাসে একটু চাপ পড়ার কথা। কিন্তু ছুটির দিনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত খুব একটা যাত্রী দেখলাম না মহাখালীতে। মানুষের মনে ভয় রয়ে গেছে। বাস ঠিকঠাক চালাতে না পেরে পরিবহন ব্যবসায় বিশাল ধস নেমেছে।’ 

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক গোলাম সামদানি বলেন, কারফিউতে বাস চলাচলের বিষয়ে সমিতি কোনো নির্দেশনা জারি করেনি। বাসমালিকরা নিরাপত্তার স্বার্থে রাতে বাস চালাতে রাজি হননি। যতদিন কারফিউ চলবে, এমন পরিস্থিতি থাকবে। যাত্রীদেরও এ নিয়ে খুব অভিযোগ নেই।