সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নিজেদের ‘রাজাকার’ হিসেবে দাবি করা তাদের ‘উগ্র বাসনার কুৎসিত বহিঃপ্রকাশ’ বলে মন্তব্য করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। কমিটি বলছে, এই আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে অপমান-অপদস্ত করছে।
সোমবার (১৫ জুলাই) বিকেলে গণমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে কমিটি এই মন্তব্য করে।
এতে বলা হয়, কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার প্রয়োজন। তবে আন্দোলনের নামে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের যে দাবি আন্দোলনকারীরা তুলেছে, তা নিঃসন্দেহে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮(৪) এবং ২৯(৩)(ক) অনুচ্ছেদের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে কোটা পদ্ধতি বহাল থাকতে হবে। পৃথিবীর সব রাষ্ট্রেই সরকারি চাকরি থেকে শুরু করে নাগরিক নানা সুযোগ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সমতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কোটা পদ্ধতি চালু আছে। সে ক্ষেত্রে কোন যুক্তিতে আন্দোলনকারীরা কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবি জানাচ্ছে, তা আমাদের বোধগম্য নয়।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি বলেছে, অন্যান্য দেশের সঙ্গে সংগতি রেখে বর্তমান বাস্তবতার নিরিখে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করা যেতে পারে, কিন্তু কোনোভাবেই বাতিল করা যাবে না।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অসম্মানজনক বক্তব্য ঔদ্ধত্যের শামিল: সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অসম্মানজনক বক্তব্য প্রদান করা বা কটাক্ষ করা অগ্রহণযোগ্য ও ঔদ্ধত্যের শামিল বলে মন্তব্য করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। গতকাল বিকেলে গণমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে এই মন্তব্য করেন জোটের নেতারা। তারা বলেন, যেকোনো বিষয়ে মত, ভিন্ন মত থাকতেই পারে। আলাপ-আলোচনা ও শান্তিপূর্ণ পন্থায় দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করার প্রত্যেক নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাজাকার বাহিনীর পরিচয়কে আত্মপরিচয় হিসেবে স্লোগান দেওয়ার পর বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বহন করার নৈতিক অধিকার থাকে কি?
কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত হয়ে যারা ‘বিভ্রান্ত’ হয়েছেন তারা মুক্তিযুদ্ধের মূলধারায় ফিরে আসবেন বলে প্রত্যাশা করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।