ঢাকা ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪

মোহামেডানের পথে আবাহনী!

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:২৫ পিএম
মোহামেডানের পথে আবাহনী!
ছবি : সংগৃহীত

ঢাকার ফুটবল কিংবা বাংলাদেশের ফুটবল বলতেই আবাহনী ও মোহামেডানের নাম এসে যায় সবার আগে। একটা সময় দুই দলের খেলা দেখার জন্য দর্শকরা হুমড়ি খেয়ে পড়তেন স্টেডিয়ামে। দেশ হয়ে পড়ত দুই ভাগে বিভক্ত। মহল্লায় মহল্লায় পতাকা উড়ত পাল্লা দিয়ে। লিগ কিংবা অন্য কোনো শিরোপা জিতত দুই দল ভাগাভাগি করে। কিন্তু সেই  দিন এখন আর  নেই। জনপ্রিয়তা হারিয়েছে দুটি ক্লাবই। সেই সঙ্গে হারিয়েছে নিজেদের অবস্থানও। শিরোপা জেতা তাদের জন্য হয়ে উঠেছে কঠিন। পেশাদার যুগে প্রবেশের পর চিত্র আরও করুণ।  মোহামেডান একেবারেই মলিন এক দলের নাম। আবাহনীর শুরুতে দাপট থাকলেও এখন তাদের অবস্থানও নিম্নগামী। বিশেষ করে বসুন্ধরা কিংসের আবির্ভাবের পর আবাহনীও যেন উল্টো রথেই যাত্রী। ২০১৮ সালের পর আর লিগ শিরোপার স্বাদ পায়নি দলটি। টানা চারটি মৌসুমে লিগ শিরোপা জিততে ব্যর্থ। গত মৌসুমে তো কোনো ট্রফিরই দেখা পায়নি। সবশেষ শিরোপা তারা জিতেছে ২০২২ সালের শুরুতে ফেডারেশন কাপ।

এবার মৌসুম শুরুর টুর্নামেন্ট স্বাধীনতা কাপে ফাইনালেও উঠতে পারেনি আবাহনী। এরপর লিগের প্রথম দুই ম্যাচ খেলে থেকেছে জয়শূন্য। ফলে খোদ আকাশি-নীলদের সমর্থকরাই প্রশ্ন তুলছেন, মোহামেডানের পথেই কি  হাঁটতে  শুরু করল আবাহনী?

গত মৌসুমে ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেডকে হারিয়ে ৯ বছরের শিরোপা খরা ঘোচায় মোহামেডান। এত দীর্ঘ সময় শিরোপা বঞ্চিত থাকাই বলে দেয় সাদা-কালো জার্সিধারীদের রুগ্ণ চিত্রের কথা। এক সময়ের জায়েন্ট দলটা এখন একেবারের মধ্যমসারির এক দলের নাম। যদিও গত মৌসুমে একটা শিরোপার দেখা পেয়েছে তারা, সেই সঙ্গে চলতি মৌসুম তারা শুরু করেছে স্বাধীনতা কাপে রানার্সআপ হয়ে। তবে লিগ শিরোপার দাবি আসলে তারা নিজেরাও তুলে না।

বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে হারের পর দলটির গোলকিপিং কোচ সাঈদ হাসান কাননের কথাই শুনুন, ‘ওদের দল (বসুন্ধরা কিংস) তো অনেক ভালো দল। ১০ জন নিয়েও ওরা যেভাবে খেলেছে, মোহামেডান যে ২-১ এ হেরেছে,  আমি মনে  করি এটা গুড রেজাল্ট।’ কাননের এই কথাতেই পরিষ্কার মোহামেডানের বর্তমান চিত্র। কিন্তু বসুন্ধরা কিংসকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে এমন দল ভাবা হয় যাদের, সেই আবাহনী?

এবার স্বাধীনতা কাপে গ্রুপ পর্বে ধানমন্ডির দলটি ভালোই করেছে। তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতেছে তারা। শেষ আটে শেখ জামালকে টাইব্রেকারে হারিয়ে উঠে সেমিফাইনালে। কিন্তু শেষ চারের মঞ্চে দলটাকে বিধ্বস্ত হতে হয় কিংসের কাছে। ৪-০ গোলের স্কোর লাইনই বলে দেয় কতটা অসহায় ছিল দলটা। তবু এটা ভেবে সান্ত্বনা নেওয়ার ছিল যে, এক ম্যাচে এমন হতেই পারে। কিন্তু লিগে আবাহনীর দুই ম্যাচের ফল বলছে ভিন্ন কিছু। প্রথম রাউন্ডে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটির বিপক্ষে পয়েন্ট হারিয়ে বসে দলটি। ১-১ ড্র হয় ম্যাচ। দ্বিতীয় রাউন্ডে তো ফর্টিস এফসির বিপক্ষে ০-১ গোলে হেরেই বসে। প্রতিপক্ষ বিবেচনায় এই ফল দলটির সমর্থকদের জন্য মেনে নেওয়ার মতো না।

দলটির ম্যানেজার ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক কাজী নজরুল ইসলাম বলছেন, ‘যেভাবে শুরু করা দরকার ছিল, সেভাবে আমরা শুরু করতে পারিনি। আমাদের দল আসলে এরকম রেজাল্ট করার মতো না। এমন ফল আমরা আশাও করি না। এখন যেটা হয়ে গেছে, সেটা তো আর বললে ফিরে আসবে না। আমরা এখন এখান থেকে ওভারকাম করার চেষ্টা করব।’ কিন্তু সকালের সূর্যই তো বলে দেয় অনেক কিছু। আবাহনী যেভাবে শুরু করেছে, তাতে লিগে চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইট দিতে না পারার শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। নজরুল বলছেন, ‘দেখুন আমাদের দল চ্যাম্পিয়নের মতো দল না, এমনটা কিন্তু না। আমাদের দল যথেষ্ট ভালো। যেটা হয়েছে খেলায় আসলে এমনটা হয়। দেখি, সামনের কয়েকটা ম্যাচে কতদূর কি করতে পারি।’

জাতীয় দলের সাবেক এই ডিফেন্ডারের চোখে এখন পর্যন্ত দলটার বড় যে ঘাটতি চোখে পড়েছে, সেটা হলো স্কোরিং। এ নিয়ে কোচ কাজ করছেন বলেও জানালেন তিনি। তবে সমর্থকদের মধ্যে কিন্তু হাহাকারের সুরই বেজে চলেছে। তারা এও বলেন, আবাহনী সেরা দল গড়তে ব্যর্থ। যার সঙ্গে একমত ক্লাবটির কিংবদন্তি স্ট্রাইকার শেখ মোহাম্মদ আসলাম, ‘অবশ্যই তারা সেরা দল গড়তে ব্যর্থ। যেহেতু চারটা বিদেশি ফুটবলার খেলানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তাহলে আপনি সে রকম বিদেশি ফুটবলার আনেন। যেটা বসুন্ধরা কিংস করেছে। তাদের ব্রাজিলিয়ান কালেকশন এত সুন্দর, অটোমেটিক তারা গোল পেয়ে যায়। প্রতি ম্যাচেই তারা ডোমিনেট করে খেলছে।’

সাম্প্রতিক সময়ের আবাহনীকে নিয়ে আসলামের মূল্যায়ন, ‘ওভারঅল যে চিত্র, আমার মনে হয় লিডারশিপ অনেক বড় ফ্যাক্টর। যারা কর্মকর্তা আছেন তাদের বলব আরও আন্তরিক হন। খেলোয়াড়দের সঙ্গে বসেন। কোথায় অসুবিধা, কেন হচ্ছে না, এগুলো খুঁজে বের করেন।’ আক্ষেপ করে আসলাম আরও বলেন, ‘আমরা শেখ কামালের আদর্শকে ধারণ করে খেলেছি। আমাদের সময়ের কর্মকর্তারা অনেক আন্তরিক ছিলেন। বর্তমানে যারা আছেন, তারা এর ধারে কাছেও নেই। এই জায়গায় আমার মনে হয় যোগ্য জায়গায় যোগ্য লোক দরকার। নেতৃত্বের জায়গাটায় আমার কাছে মনে হয় আবাহনী কিছুটা পিছিয়ে আছে।’

আবাহনী যে মোহামেডানের পথে হাঁটবে না, এই শঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না কিংবদন্তি ফুটবলার ও কোচ গোলাম সারোয়ার টিপু। তিনি বলেন, ‘আবাহনী আসলে বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে টক্কর দিয়ে পারছে না। কোয়ালিটি বিদেশি খেলোয়াড় আনতে পারছে না। দেশি খেলোয়াড়দের ব্যাকআপও সেভাবে নেই। মোহামেডানের যে সমস্যা ছিল, সেটা এখন আবাহনীর মধ্যেও দেখা যাচ্ছে। তবু তারা চালিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু গত দুই বছর যাবত তো দলটার কোনো ট্রফিই নেই। এটা যদি তারা কন্টিনিউ করে, তাহলে মোহামেডানের মতোই অবস্থা হবে।’

সালমান খানকে সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটলেন ধোনি

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম
সালমান খানকে সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটলেন ধোনি
ছবি : সংগৃহীত

ভারত তথা গোটা ক্রিকেটবিশ্বেরই অন্যতম সেরা অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্মদিন আজ। ৪৩ বছরে পা দেওয়া ভারতের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অধিনায়ক ভাসছেন সবার শুভেচ্ছা ও শুভকামনায়। তবে মাঝরাতে জন্মদিনের প্রথম প্রহরে ধোনির সঙ্গে সাক্ষাত করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলিউড তারকা সালমান খান।

মধ্যরাতে কেক কাটার সময় ধোনির স্ত্রী সাক্ষীসহ উপস্থিত ছিলেন বলিউডের এই জনপ্রিয় তারকা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় জন্মদিনের কেক কেটে ধোনি প্রথমে তার স্ত্রী সাক্ষীকে এবং পরে সালমান খানকে খাইয়ে দিচ্ছেন কেক।

ইনস্টাগ্রামে ধোনির সঙ্গে ছবি পোষ্ট করে সালমান খান ্লিখেছেন, ‘হ্যাপি বার্থডে কাপ্তান সাহেব!’

হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুযায়ী, মুকেশ আম্বানীর ছেলে অনন্ত আম্বানীর বিয়েতে যোগ দিতেই বর্তমানে মুম্বাইয়ে অবস্থান করছেন ধোনি। একই সময়ে সালমান খান ব্যস্ত রয়েছেন তার আসন্ন চলচ্চিত্র ‘সিকান্দার’ এর শুটিংয়ে। দুই তারকাকে একসঙ্গে দেখে আনন্দে ভাসছে ভক্তরাও।

এনদ্রিকের লক্ষ্য পরের বিশ্বকাপ

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
এনদ্রিকের লক্ষ্য পরের বিশ্বকাপ
ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকা কোথাও সাফল্য ধরা দিচ্ছে না ব্রাজিলের ঝুলিতে। বিশ্বকাপের পর কোপারও কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছে ব্রাজিলকে। দুই আসরেই টাইব্রেকারে হেরে বাদ পড়তে হয়েছে তাদের। উরুগুয়ের কাছে তারা হেরেছে ৪-২ ব্যবধানে।

আরও একবার ব্যর্থ হলেও নিজ দেশের সমর্থকদের আশার বাণীই শুনিয়েছেন ব্রাজিলের সবচেয়ে তরুণ ফুটবলার এনদ্রিক। ১৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড পরের বিশ্বকাপকে লক্ষ্যে রাখার কথা বলেছেন।

চলমান কোপা আমেরিকার মতোই ২০২৬ বিশ্বকাপও হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। তবে সহ আয়োজক হিসেবে থাকছে কানাডা ও মেক্সিকোও। সেই বিশ্বকাপ নিয়েই ভাবার কথা বলেছেন এনদ্রিক।

কোপা আমেরিকা থেকে ছিটকে যাওয়ার পর এনদ্রিক বলেছেন, ‘আমরা ব্রাজিলকে শীর্ষে তুলতে চাই। আমরা বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকব।’

২০২২ কাতার বিশ্বকাপে বিদায় নেওয়ার পর এমনটা তখনও বলেছিলেন ব্রাজিল দলের ফুটবলাররা।

পরপর দুই আসরে ব্যর্থ হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই মেনে নেওয়া কঠিন সমর্থকদের মতো দলের সদস্যদেরও। অনেক চেষ্টা করেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের দেখা মিলছে না পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।

এমন দুঃসহ অবস্থায় এনদ্রিক একটি অনুরোধও করেছেন দলের সমর্থকদের কাছে, ‘আমরা জানি যে এটা কঠিন মুহূর্ত। কিন্তু আমরা সব ব্রাজিলিয়ানদের কাছ থেকে সমর্থন আশা করছি।’

অবসরের ঘোষণা দিলেন জন সিনা

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৩৫ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:১০ পিএম
অবসরের ঘোষণা দিলেন জন সিনা
ছবি : সংগৃহীত

১৬ বারের চ্যাম্পিয়ন জন সিনা বিদায় বললেন রেসলিংকে। এর মধ্য দিয়ে শেষ হলো তার ২২ বছরের বর্ণাঢ্য রেসলিং ক্যারিয়ারের।

শনিবার (৬ জুলাই) টরন্টোর স্কোটিয়াব্যাঙ্ক অ্যারেনায় ডব্লিউডব্লিউই এর মানি ইন দ্য ব্যাংক পে-পার-ভিউতে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ৪৭ বছর বয়সী এই রেসলার।

সেখানে উপস্থিত সবাইকে অবাক করে দিয়ে জন সিনা দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দুই যুগের বেশ সময় ধরে আমি ডাব্লিউডাব্লিউই তে এবং এটাই সময়। যখন কেউ আমার নাম জানতো না, কেউ বন্ধু হতে চাইতো না তখন আমার পাশে ছিল সমর্থকরা। আমি এই সময়ে একটা জিনিস দেখেছি, শীত হোক বা গ্রীষ্ম সমর্থকরা সবসময় থাকেন।’

বিদায় বললেও ২০২৫ সালের রয়্যাল রাম্বল, এলিমিনেশন চেম্বার এবং রেসেলম্যানিয়া ৪১ এ শেষবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নামবেন রেসলিং রিংয়ে।

২০০২ সালে রেসলিং ক্যারিয়ার শুরুর পর বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। তবে ২০১৮ সাল থেকে নাম লেখান অভিনয় জগতেও। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূমিকায় কাজ করেছেন বিভিন্ন সিনেমায়। বর্তমানে অভিনয় জগতেই সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততা তার।

১৩ বার ডব্লিউডব্লিউ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পাশাপাশি তিনবার জিতেছেন ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ। ডব্লিউডব্লিউয়ের ইতিহাসে রিক ফ্লেয়ার ও জন সিনা সমান ১৬বার চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন। এছাড়া ডব্লিউডব্লিউই এর অন্য সব বেল্টও জিতেছেন সিনা।

অসীম শূন্যতা রেখে চির আড়ালে জিয়া

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০১:৫১ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:০৮ পিএম
অসীম শূন্যতা রেখে চির আড়ালে জিয়া
ছবি : সংগৃহীত

একদিন আগেই গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান পল্টনের দাবা ফেডারেশন কার্যালয়ে এসেছিলেন খেলায় অংশ নিতে। ২৪ ঘণ্টাও পেরোয়নি, গতকাল শনিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে সেই জিয়া এলেন নিথর, প্রাণহীন হয়ে। সাদা কাফনে আবৃত জিয়াকে নামানো হলো লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি থেকে। দাবা ও ক্রীড়াঙ্গনের মানুষরা জানালেন শেষ শ্রদ্ধা। জানাজা ও বিদায়ী আনুষ্ঠানিকতা সারতে মিনিট চল্লিশেক সময় লাগল। এরপর জিয়াকে নিয়ে ফের ছুটে চলল লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি। চিরদিনের মতো দাবার প্রাঙ্গণ ছেড়ে চলে গেলেন এক কিংবদন্তি। বাংলাদেশ দাবায় অসীম শূন্যতা তৈরি করে চির আড়াল হলেন তিনি।

পরশু শুক্রবার ৪৮তম জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের ১২তম রাউন্ডে আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীবের সঙ্গে খেলা ছিল জিয়ার। সন্ধ্যার দিকে খেলতে খেলতেই চেয়ার থেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নেওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। কিন্তু জাতীয় দাবার রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নকে আর ফেরানো যায়নি।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পুরান ভবনে দাবা ফেডারেশনের কার্যালয়। সেখানেই অনুষ্ঠিত হচ্ছিল ৪৮তম জাতীয় দাবা। জিয়া খেলতে খেলতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মিনিট দশেক সময়ের মধ্যে তাকে শাহবাগের ইব্রাহিম কার্ডিয়া হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তার পালস পাননি। দাবাসংশ্লিষ্টদের ধারণা, জিয়ার মৃত্যু হয়েছে দাবার হলরুমেই। যেখানে চলছিল জিয়া-রাজীবসহ বিভিন্ন প্রতিযোগীর খেলা। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দাবার চৌষট্টি খোপে ঘুঁটির চাল নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন জিয়া। আদতে যার জীবনটাই ছিল দাবাময়।

২০০২ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় দাবাড়ু হিসেবে গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব জিতেন জিয়া। এরপর আরও তিনজন মিলিয়ে বাংলাদেশে গ্র্যান্ডমাস্টারের সংখ্যাটা মাত্র ৫। গত ১৬ বছর ধরে সংখ্যাটা এই পাঁচে আটকে আছে। একই রকমভাবে ঠিক একটা নির্দিষ্ট জায়গায় আটকে আছে বাংলাদেশের সামগ্রিক দাবাও। কেন এই জায়গা থেকে দাবা আর এগোতে পারছে না, এই হাহাকারের মাঝেই সবাইকে কাঁদিয়ে জিয়ার চির প্রস্থান। জাতীয় দাবায় সর্বোচ্চবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি যিনি দাবা অলিম্পিয়াডেও বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন সবচেয়ে বেশিবার।

সাদাসিধে একজন মানুষ ছিলেন জিয়া। কোনো অহম ছিল না। সব সময় ভেবেছেন কীভাবে দেশের দাবাকে এগিয়ে নেওয়া যায়। দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম জানাজায় এসে বলেন, ‘দাবা পরিবারের জন্যই একটা অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। একজন গ্র্যান্ডমাস্টার কমে যাওয়ায় আমাদের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করতেও এখন অনেক বেগ পেতে হবে। তার অভাব পূরণ হওয়ার নয়।’ জিয়ার অবদান তুলে ধরে শাহাবুদ্দিন শামীম আরও বলেন, ‘গ্র্যান্ডমাস্টার হলেও জিয়া কখনো বেছে বেছে প্রতিযোগিতায় অংশ নিত না। অনেকে আছে প্রাইজমানি কম হলে খেলত না। কিন্তু সে কখনো এভাবে চিন্তা করত না। যে প্রাইজমানিই হোক, সে খেলত। বলত, আমি খেললে অন্যরা খেলার জন্য আসবে।’

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা বলেন, ‘জিয়ার অকালমৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাহত। তার যে পবিত্র স্থান, যে স্থানকে সে ভালোবাসত, সেখান থেকেই সে চলে গেল। দাবা খেলা অবস্থাতেই মারা গেল। ভালো একজন খেলোয়াড়কে হারিয়েছি আমরা।’ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি তরফদার রুহুল আমিন বলেন, ‘তার এই চলে যাওয়া জাতীয়ভাবে অপূরণীয় ক্ষতি। কারণ দাবার গ্র্যান্ডমাস্টাররাই কিন্তু লাল-সবুজের পতাকা সর্বপ্রথম বিশ্বমানচিত্রে তুলে ধরেছিল।’

জীবনের শেষ কয়েক ঘণ্টা দাবার বোর্ডে জিয়া যার সঙ্গে কাটিয়েছেন, সেই রাজীবও উপস্থিত ছিলেন জানাজায়। রাজীবের গাড়িতে করেই হাসপাতালে নেওয়া হয় জিয়াকে। সারাক্ষণ থমথমে লাগছিল তাকে। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছিল। রাজীবের চোখে জিয়াই বাংলাদেশের সেরা দাবাড়ু, ‘আমি মনে করি সে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত সেরা খেলোয়াড়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে আমি মনে করি তার পারফরম্যান্স সবচেয়ে ভালো। বাংলাদেশের দাবা যতদিন থাকবে, সব সময়ই তাকে মনে করবে সবাই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করা জিয়া নিজেকে অন্য কোনো পেশায় জড়াননি। নিজে দাবা খেলা এবং কোচিং করিয়ে গেছেন। স্বামীর দাবা ক্যারিয়ারের কথা ভেবেই তার স্ত্রী তাসমিন সুলতানা লাবণ্য বিসিএস ক্যাডারে যোগদান করেননি। জিয়ার চিরবিদায়ের দিনে তার স্ত্রী-সন্তানদের আর্থিক দিকের কথা বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে। বিওএ মহাসচিব শাহেদ রেজা বলেছেন, ‘উনার পরিবারের অর্থনৈতিক যে সমস্যা আছে, এই সমস্যার পাশে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন থাকবে।’ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি তরফদার রুহুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীমও ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জিয়ার পরিবারকে আর্থিক সহায়তার কথা জানিয়েছেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডে বাবার কবরে শায়িত করা হয়েছে জিয়াকে। এখন তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে।

২০ বছর পর ইউরোর সেমিতে নেদারল্যান্ডস

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০১:০০ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০১:০০ পিএম
২০ বছর পর ইউরোর সেমিতে নেদারল্যান্ডস
ছবি : সংগৃহীত

ম্যাচে আগে গোল করে এগিয়ে যাওয়ার পর সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্নে বিভোর থাকা তুরস্ককে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২-১ গোলে হারিয়ে ২০ বছর পর সেমিতে পা রেখেছে নেদারল্যান্ডস। ২০০৪ সালের পর ইউরোর সেমিফাইনালে পৌঁছেছে তারা।

সেমিফাইনালে ডাচদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড।

প্রথমার্ধে প্রতিপক্ষকে চাপে রেখে ৩৫ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় তুরস্ক। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের ৭০ ও ৭৬ মিনিটে দুই গোল হজম করে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি তুরস্ক। ফলে ২০ বছর পর ইউরোর সেমিফাইনালে পা রেখেছে নেদারল্যান্ডস।

ম্যাচের ৩৫তম মিনিটে তুর্কি সেন্টার-ব্যাক সামিত আকায়দিনের হেডে করা গোলেই এগিয়ে যায় তুরস্ক। গোলটিতে ক্রস করেছিলেন আলদা গুলেরর। প্রথমার্ধ শেষ হয় তুরস্ক ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই।

দ্বিতীয়ার্ধের ৭০ মিনিটে সমতায় ফেরে ইংল্যান্ড। মেম্ফিস ডিপাই কর্নার থেকে ওয়ান-টু খেলে বক্সে ক্রস ফেলেন। সম্পূর্ণ আনমার্কড অবস্থায় থাকা ডাচ সেন্টার-ব্যাক স্তেফান দে ফ্রাই হেডে গোল করেন।

সমতা ফেরানোর মাত্র ছয় মিনিটের মাথায় দ্বিতীয় গোলটিও পেয়ে যায়  নেদারল্যান্ডস। আর সেটি কিনা আত্মঘাতী গোল। ৭৬ মিনিটে ডেনজেল ডামফ্রিজে ক্রস তুর্কি রাইট ব্যাক মের্ত মুলডুর বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে পাঠিয়ে দেন নিজেদের জালেই। চলতি ইউরোয় এটি ১০ম আত্মঘাতী গোল।

সেই গোলেই সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত হয়ে যায় নেদারল্যান্ডসের আর নিজেদের জালে আত্মঘাতি গোল করে সেমিফাইনাল স্বপ্নের সমাধি গড়ে বিদায় নেয় তুরস্ক।