ঢাকা ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪

হামবুর্গে বদলা না পুনরাবৃত্তি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:১৪ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:১৫ পিএম
হামবুর্গে বদলা না পুনরাবৃত্তি
অনুশীলনে ফ্রান্সের অলিভার জিরুদ ও ক্রিশ্চিয়ানে রোনালদো

১৯৭৮ থেকে ২০১৫, দীর্ঘ এই সময়ে টানা ১০ ম্যাচে ফ্রান্সের কাছে হেরেছিল পর্তুগাল। সেই খরা পর্তুগাল কাটায় ২০১৬ সালে, ইউরোর ফাইনালে (১-০)। ফরাসিদের হারিয়ে রোনালদোরা জেতে পরম আরাধ্যের প্রথম ইউরো শিরোপা। এরপর দুই দল মুখোমুখি হয়েছে ইউরোর সবশেষ আসরে। গ্রুপ পর্বের সেই লড়াইটি ছিল অমীমাংসিত (২-২)। সেই লড়াইয়ের চার বছর পর ফ্রান্স ও পর্তুগাল আবার মুখোমুখি। এবার কোয়ার্টার ফাইনালের মঞ্চ। সেমিতে যাওয়ার লড়াইয়ে আজ হামবুর্গে মুখোমুখি দুই সাবেক চ্যাম্পিয়ন। ফ্রান্সের সামনে ২০১৬ ফাইনাল হারের শোধ তোলার উপলক্ষ। পর্তুগালের চোখ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর প্রথম সেমিতে পা রাখা। হামবুর্গে কী হবে শুক্রবার (৫ জুলাই) , ফরাসিদের বদলা নাকি পর্তুগিজদের পুনরাবৃত্তি?

লড়াইটা শুক্রবার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো বনাম কিলিয়ান এমবাপ্পেরও। যদিও সময়ের দুই তারকা ফুটবলার এখনো নামের সুবিচার করতে পারেনি। এমবাপ্পে পেনাল্টি থেকে একটি গোল পেলেও রোনালদোর হিসেবটা শূন্য। দুই ঘুমন্ত দৈত্য আজ জেগে উঠতে চাইবে প্রাণপণ, তা অনুমেয়।

হেড টু হেড কিংবা সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স- সব দিক থেকেই এগিয়ে থাকছে ফ্রান্স। ২৮ বারের মোকাবিলায় ফ্রান্সের জয় ১৯টি। সেখানে পর্তুগালের জয় ৬টি। ড্র হয়েছে তিন ম্যাচ। ২০১৬ ইউরো ফাইনালে ফ্রান্সকে হারানোর পর আর জয় পায়নি পর্তুগাল। তিনবারের দেখায় হার দুটি, ড্র একটি। 

ইউরো ফুটবলে ফ্রান্স দুবারের চ্যাম্পিয়ন (১৯৮৪ ও ২০০০)। ২০১৬-তে ফাইনালে উঠলেও শিরোপা থেকেছে অস্পর্শ। গত আসরে দলটি বিদায় নেয় শেষ ষোলো থেকে। এবার কতদূর যাবে ফ্রান্স, তা সময়ই বলে দেবে। যদিও চলতি টুর্নামেন্টে ফ্রান্স অজেয়। কিন্তু নামের সঙ্গে পারফরম্যান্সের ব্যাপক তফাত দলটির। গ্রুপ পর্বে এক জয় ও দুই ড্রয়ের পর শেষ ষোলোয় বেলজিয়ামকে দিদিয়ে দেশমের দল হারায় ১-০ গোলে। গোলটি ছিল প্রতিপক্ষের আত্মঘাতী।

অন্যদিকে পর্তুগাল শেষ দুই ম্যাচে গোলহীন, শেষ ষোলোর বৈতরণী দলটি পার হয়েছে টাইব্রেকারে স্লোভেনিয়াকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে। যেখানে পেনাল্টি মিসের পর কেঁদেছিলেন রোনালদো। গোলরক্ষক দিয়েগো কস্তার অবিশ্বাস্য বীরত্বে শেষ আটে নাম লেখায় পর্তুগিজরা। 

তারপরও ফ্রান্সের বিপক্ষে লড়তে প্রস্তুত পর্তুগাল। দলটির হেড কোচ রবার্তো মার্তিনেজ বলেন, ‘আমাদের পূর্ণ মনোযোগ কোয়ার্টারের ম্যাচে এবং প্রস্তুত ফ্রান্সের জন্য। তারা খুব শক্তিশালী, তবে সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে মরিয়া আমরা।’ অন্যদিকে ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশমের চোখ সেমিতে।

তিনি বলেন, ‘এখনো আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে পারিনি। অথচ দল হিসেবে আমাদের আরও ভালো কিছু করা উচিত। সবাই ক্ষুধার্ত সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।’

ইউরোর চলতি আসরে সবচেয়ে বেশি শট নিয়েছেন রোনালদো (২০টি)। কম যাননি এমবাপ্পেও (১৫টি)। কিন্তু চেষ্টার সমান্তরালে মেলেনি ফল। এবার হামবুর্গের লড়াইয়ে ফরাসি দুর্গের পতন ঘটাতে পর্তুগাল তাকিয়ে থাকবে রোনালদোর দিকে। ফরাসিরা সওয়ার হতে চাইবে এমবাপ্পের কাঁধে। শেষ হাসি কে হাসবেন, তা সময়ই বলে দেবে। 

টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের ম্যাচের সময়সূচি

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:২৩ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:২৪ পিএম
টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের ম্যাচের সময়সূচি
ছবি : সংগৃহীত

সবশেষ ২০১৭ সালে হওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আবারও ফিরছে দীর্ঘ আট বছরের বিরতি শেষে ২০২৫ সালে বসতে যাচ্ছে আইসিসির এই আসর। আট দলের আসরটি অনুষ্ঠিত হতে পাকিস্তানের মাটিতে। সবশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ আট দল অংশ নিবে এই টুর্নামেন্টে। এরই মধ্যে আইসিসির কাছে খসড়া সূচি জমা দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।

বাংলাদেশ রয়েছে আসরটির ‘এ’ গ্রুপে। যেখানে বাংলাদেশের বাকি তিন সঙ্গী স্বাগতিক পাকিস্তান ও তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। অন্য দলটি নিউজিল্যান্ড। গ্রুপ ‘বি’তে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, আফগানিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

পাকিস্তানের প্রস্তাবিত টুর্নামেন্টের সময়সূচি আইসিসি অনুমোদন করেছে বলে জানিয়েছে ইংল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ। যদিও এ ব্যাপারে এখনও কিছু জানা যায়নি আইসিসির তরফ থেকে।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য খসড়া ফিক্সচার অনুযায়ী ১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হ্যবে টুর্নামেন্ট। উদ্বোধনী দিনে করাচিতে স্বাগতিক পাকিস্তান মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ডের। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে হাই-ভোল্টেজ ম্যাচ ভারত-পাকিস্তানের লড়াইটি অনুষ্ঠিত হবে ১ মার্চ লাহোরে।

ট্রেলিগ্রাফের প্রতিবেদন অনুযায়ী  বাংলাদেশ তাদের অভিযান শুরু হবে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। ২০ ফেব্রুয়ারি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে লাহোরে। তিনদিন পর ২৪ তারিখ রাওয়ালপিন্ডিতে মাঠে নামবে স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে। গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আবারও লাহোরে মাঠে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ২৭ ফেব্রুয়ারি।

১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ৯ মার্চ লাহোরের ম্যাচ দিয়ে শেষ হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। রিজার্ভ ডের জন্য ১০ মার্চ রাখা হয়েছে। সেমিফাইনাল হবে ৫ ও ৬ মার্চ করাচি ও রাওয়ালপিন্ডিতে। ১৫ ম্যাচ হবে লাহোর, করাচি ও রাওয়ালপিন্ডিতে।

লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ মুখোমুখি লড়াইয়ে খরুচে তাসকিন-মোস্তাফিজ

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:২০ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:২৩ পিএম
মুখোমুখি লড়াইয়ে খরুচে তাসকিন-মোস্তাফিজ
ছবি : সংগৃহীত

লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে মুখোমুখি হয়েছিল কলম্বো স্ট্রাইকার্স ও ডাম্বুলা সিক্সার্স। এই দুই দলের ম্যাচটি বাংলাদেশি সমর্থকদের জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমানের লড়াই। এই ম্যাচে মোস্তাফিজের দল ডাম্বুলা সিক্সার্স ৮ উইকেটের জয় পেলেও খরুচে ছিলেন তিনি। খরুচে ছিলেন তাসকিন আহমেদও।

কলম্বো স্ট্রাইকার্সের হয়ে তাসকিন ৪ ওভার বল করে ২ উইকেট পেলেও খরচ করেছেন ৪৫ রান। অন্যদিকে মোস্তাফিজ উইকেটশূন্য থেকেছেন ৪ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে।

মোস্তাফিজ বোলিংয়ে হাফসেঞ্চুরি করলেও জয় পেয়েছে তার দল ডাম্বুলা সিক্সার্সই। কলম্বোর দেওয়া ১৮৬ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৩ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ডাম্বুলা। ডাম্বুলার প্রথম জয়ের স্বাদ পাওয়ার দিনে দ্বিতীয় পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেয়েছে কলম্বো। 

বোলিংয়ে এসে প্রথম ২ ওভারে ১৬ রান দিয়ে বেশ ভালো শুরু করেছিলেব মোস্তাফিজ। ১৭তম ওভারে এসে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন ১৭ রান দিয়ে। সবচেয়ে খরুচে ছিলেন তার পরের ওভারে। তিন ছক্কায় ২০ রান দেন তিনি সেই ওভারে।

তাসকিন ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে দেন ২১ রান দেন। সেই ওভারটি তিনি করেন ১০ বলে। চারটি ওয়াইড থেকে এসেছিল ১২ রান। সঙ্গে ছিল দুটি চারও। পঞ্চম ওভারে এসে দেন ৮ রান। ১৩তম ওভারে দুই চারে খরচ করেন ১০ রান। ১৫তম ওভারে ৬ রান দিয়ে নেন রেজা হেনড্রিকস ও কুশল পেরেরাকে। যদিও তা যথেষ্ট ছিল না ডাম্বুলার জয় আটকানোর জন্য।

দাবা অলিম্পিয়াডে অংশ নেবেন ৮১ বছরের রানি হামিদ

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১১:৪০ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১১:১৮ এএম
দাবা অলিম্পিয়াডে অংশ নেবেন ৮১ বছরের রানি হামিদ
ছবি : সংগৃহীত

৮১ বছর বয়সেও দাবায় তরুণদের হারিয়ে ট্রফি জেতেন রানি হামিদ। এই বয়সেই আবার হাঙ্গেরি যাচ্ছেন তিনি দাবা অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে। সেপ্টেম্বরে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে অনুষ্ঠিত হবে এই টুর্নামেন্ট। সেখানে অংশ নিবেন তিনি।

ওপেন ও মহিলা দাবা অলিম্পিয়াডে দুই বিভাগেই অংশ নেবে বাংলাদেশ। দিনকয়েক আগে শেষ হওয়া জাতীয় মহিলা দাবার শীর্ষ পাঁচ দাবাড়ু সুযোগ পেয়েছেন এই টুর্নামেন্টে। সেখানে ষষ্ঠ অবস্থানে থাকায় প্রথমে এই প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হননি রানি হামিদ। কিন্তু কিন্তু টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় হওয়া মহিলা ফিদে মাস্টার নারায়ণগঞ্জের শারমীন সুলতানা শিরিন পারিবারিক কারণে অলিম্পিয়াড়ের দল থেকে নাম প্রত্যাহার করেছেন। ফলে ষষ্ঠ স্থানে থাকা রানি হামিদ পেয়ে গেছেন সুযোগ। 

রানি হামিদ হাঙ্গেরিতে দাবা অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম বলেন, ‘শিরিনের বাচ্চার বয়স এক বছরের কম। এই পরিস্থিতিতে সে যেতে ইচ্ছুক নয়। তাই ষষ্ঠ স্থানে থাকা রানী হামিদের নাম অলিম্পিয়াডে নিবন্ধন করা হয়েছে।’

ষষ্ঠ স্থানে থাকায় অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন ৮২ বছর বয়সি মহিলা আন্তর্জাতিক মাস্টার রানি হামিদ।

হুট করে অলিম্পিয়াডে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে বেশ ঊচ্ছ্বসিত এই কিংবদন্তী দাবাড়ু, ‘শেষ মুহূর্তে অলিম্পিয়াডে যেতে পারছি। অলিম্পিয়াডে গেলে সব দেশের দাবাড়ুদের সঙ্গে দেখা হয়। দুই বছর পর অলিম্পিয়াডে যাওয়ার মতো পারফরম্যান্স ও শারীরিক অবস্থা থাকবে কি না জানি না। তাই এই অলিম্পিয়াডেই সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসব।’

এমএলসি ব্যাট হাতে রান পেলেও বোলিংয়ে খরুচে সাকিব

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৫ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৩ পিএম
ব্যাট হাতে রান পেলেও বোলিংয়ে খরুচে সাকিব
ছবি : সংগৃহীত

মেজর লিগ ক্রিকেটে লস অ্যাঞ্জেলস নাইট রাইডার্সের দ্বিতীয় ম্যাচেও মাঠে নেমেছিলেন সাকিব আল হাসান। দলের পরাজয়ের দিনে ব্যাট হাতে উজ্জ্বল সাকিব ছিলেন বল হাতে মলিন। খরুচে ছিলেন দুই ওভার বল করে।

সোমবার (৮ জুলাই) ভোরে ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে সান ফ্রান্সিসকো ইউনিকর্নসের কাছে সাকিবের দল লস অ্যাঞ্জেলস নাইট রাইডার্স হেরেছে ৬ উইকেটের ব্যবধানে। এ ম্যাচে চার নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে ২৬ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলেন সাকিব।

প্রথমে ব্যাট করা লস অ্যাঞ্জেলস সংগ্রহ করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান। দলের হয়ে ২৫ বলে সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন আন্দ্রে রাসেল। ৬ চারে সাকিবের ৩৫ রানের ইনিংসটি দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

এই রান তাড়া করতে নেমে ফিন অ্যালেনের ৬৩ ও ম্যাথু শর্টের ৫৮ রানের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ইউনিকর্নস জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ২৮ বল হাতে রেখেই।

বোলিং করেছেন সাকিব মাত্র দুই ওভার। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে আসা সাকিব প্রথম ওভারে দেন ৮ রান। পরের ওভারে এসে দিন অ্যালেন তিন ছক্কায় তোলেন ১৯ রনা। দুই ওভারে ২৭ রান দেওয়ার পর সাকিবকে আর বোলিংয়ে আনেননি অধিনায়ক সুনীল নারাইন।

সাকিবের দলের পরের ম্যাচ বুধবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ছয়টায়। 

মননে অন্যরকম নীড়

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১০:২৬ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১০:২৬ এএম
মননে অন্যরকম নীড়
ছবি : সংগৃহীত

৪৮তম জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরেছেন মনন রেজা নীড়। সবে ১৪ পূর্ণ হয়েছে তার। আবেগ-উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়ার মতো বয়স। অথচ কি আশ্চর্য! দেশ সেরা হওয়াটা যেন বিন্দুমাত্রও প্রভাব ফেলেনি এই ফিদে মাস্টারের মনে। লক্ষ্য পূরণের আনন্দে মজবেন কি! এই এতটুকু বয়সেই চোয়াল শক্ত করে বলছেন, এটা সবে শুরু তার। মূল লক্ষ্য আরও অনেক বড়।

আসলে নবম শ্রেণি পড়া মনন রেজা নীড় মননে অন্য রকম। জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে এভাবে বললেন, ‘জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা অবশ্যই খুব গর্বের ব্যাপার। তবে জাতীয় দাবায় চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা কখনোই আমার লক্ষ্য ছিল না। আলটিমেট লক্ষ্য আসলে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া। কথাটা আমি সব ইন্টারভিউতেই বলি। সেই লক্ষ্য পূরণে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা আমাকে অনুপ্রাণিত করবে।’

২০১৬ সালে মাত্র ৬ বছর বয়সে জুনিয়র জাতীয় দাবা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন নীড়। ২০১৭ সালে প্রথমবার দাবার আন্তর্জাতিক আসরে অংশ নেয়। দেশ-বিদেশে জুনিয়র বিভাগে দারুণ সব সাফল্য লিখে জানান দেন আগমনী বার্তা। ২০১৭ সালেই ক্যান্ডিডেট মাস্টার ও ২০২৩ সালে হন ফিদে মাস্টার। বর্তমানে আন্তর্জাতিক মাস্টারের খুব কাছেই অবস্থান করছেন তিনি। নিজের লক্ষ্য পূরণে ধাপে ধাপেই এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন নীড়, ‘এখন পরবর্তী লক্ষ্য হতে পারে আইএম হওয়া, এরপর জিএম নর্ম পাওয়া, সুপার গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়া। ধীরে ধীরে এসব লক্ষ্য পূরণ করতে চাই। তবে আলটিমেট লক্ষ্য আমার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া।’

এবার চতুর্থ বারের মতো সিনিয়র জাতীয় দাবায় অংশ নিয়েছিলেন নীড়। সাফল্যের রহস্য জানতে চাইলে তার উত্তর, ‘জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাব, এটা আমি কোনোভাবেই প্রত্যাশা করিনি। আমি শুধু আমার সেরা খেলাটা খেলার চেষ্টা করেছি সব সময়।’ আসলে ফলাফলের ভাবনাকে একপাশে সরিয়ে চাপহীন থাকতে চেয়েছেন নীড়। ‘চ্যাম্পিয়ন হবো না কি হবো, এসব মনের মধ্যে কখনোই আনিনি। শুধু ভালো খেলার চেষ্টা করে গেছি। প্রেসার না নিলে খেলা ভালো হওয়ার সুযোগ বেশি থাকে। যখনই চাপ এসে যায়, তখন খেলা যায় না আসলে।’ -এই হচ্ছে নীড়ের ভাবনা। কে বলবে, সবে স্কুল পড়ুয়া এক দাবাড়ুর ভাবনা এটি!

তবে নীড় এবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন শোকের আবহের মধ্যে। তার চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত হওয়ার ঠিক আগের দিন খেলতে খেলতেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বাংলাদেশ দাবার কিংবদন্তি জিয়াউর রহমান। এই গ্র্যান্ডমাস্টারের কাছে এক সময় নীড় নিয়েছে দাবার পাঠ। অথচ সেই গুরুর জানাজা ও দাফন কাজ শেষ করে চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত করার ম্যাচে বসতে হয়েছিল নীড়কে। জিয়ার মৃত্যুর কারণে জাতীয় দাবার খেলা তিনদিন স্থগিত রাখা হয়েছিল। কিন্তু নীড় ওয়েস্টার্ন এশিয়ান ইয়ুথ দাবায় অংশ নিতে শ্রীলঙ্কায় যাবেন। তাই অমিত বিক্রম রায়ের সঙ্গে তার শেষ রাউন্ডের খেলাটি অনুষ্ঠিত হয় আগেভাগেই। শোকাবহ পরিবেশে দুজনের কেউই আসলে সেই অর্থে খেলার মানসিকতায় ছিলেন না। ৬ চালের পর ড্র মেনে নেন তারা। আর নীড়ের চ্যাম্পিয়ন হতে শুধু ড্র করলেই চলতো। তাই জাতীয় দাবা পায় এক নতুন চ্যাম্পিয়নকে। বেশ কয়েক বছর ধরেই যিনি এই অবস্থানে আসার জানান দিচ্ছিলেন।

কিন্তু এমন অর্জনের দিনে এক সময়ের গুরুকে হারানোর কষ্ট ভুলতে পারছেন না নীড়, ‘এটা খুবই দুঃখজনক। এমনটা তো কেউ আশাই করেনি। আমি যখন খবরটা পাই, আমি তো বিশ্বাসই করতে পারিনি।’ ৫ জুলাই জিয়ার মৃত্যুর দিনে নিয়াজ মোর্শেদের সঙ্গে খেলা ছিল নীড়ের। তারা দুজন খেলায় ড্র মেনে নেন। তাই দ্রুতই বাসায় ফিরেছিলেন নীড়। চলে যাওয়ার সময় জিয়াকে খেলা অবস্থায় দেখেছেন নীড়। সেই মানুষটাই খানিক পর সবকিছুর ঊর্ধ্বে চলে যাবেন, ভাবতেই পারছেন না নীড়, ‘স্যার আমাকে সব সময় উৎসাহ দিতেন। বলতেন ভালো করে খেল। ঠিকভাবে প্র্যাকটিস কর। আমাকে খুব ভালোবাসতেন। আমি ১১ দিন স্যারের বাসায় থেকে তার কাছে ট্রেনিং করেছি।’

অথচ সেই ‘স্যার’ই দেখে যেতে পারলেন না এক সময়ের শিষ্যের দেশ সেরা হওয়া! তবে কাকতালীয় একটা ব্যাপারই ঘটেছে। জাতীয় দাবায় রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়ন জিয়া প্রথম শিরোপা পেয়েছিলেন ১৪ বছর বয়সে। নীড়ও প্রথম শিরোপা জিতলেন ১৪ বছর বয়সে। এক কীর্তিমানের চিরপ্রস্থানের ক্ষণেই যেন নীড় জানালেন তার চূড়ান্ত আগমনী বার্তা।