![ঢাকা-৫ : তিন প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ](uploads/2023/12/24/1703398562.1702978031.Dhaka-Election.jpg)
ঢাকা-৫ আসনে (যাত্রাবাড়ী-ডেমরা) আসনে তিন হেভিওয়েট প্রার্থী হারুনুর রশীদ মুন্না (নৌকা), মশিউর রহমান সজল মোল্লা (স্বতন্ত্র-ট্রাক) এবং কামরুল হাসান রিপনের (স্বতন্ত্র-ঈগল) মধ্যে নির্বাচনি লড়াই জমে উঠেছে। গতকাল শনিবার তারা একে অপরের বিরুদ্ধে ব্যানার-পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ এনেছেন। কামরুল হাসান রিপন অভিযোগ করেছেন, তার এক নির্বাচনি এজেন্টকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন হারুনুর রশীদ মুন্নার কর্মীরা। তবে মুন্না তা অস্বীকার করেছেন।
হারুনুর রশীদ মুন্নার অনুসারীদের অভিযোগ, ঢাকা-৫ আসনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে রাতের আঁধারে নৌকার প্রার্থীর পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। অনেক জায়গায় পোস্টার টানাতে বাধাও দিচ্ছেন সজল মোল্লার অনুসারীরা। আবার সজল মোল্লার নেতা-কর্মীরা পাল্টা অভিযোগ এনে বলছেন, তাদের পোস্টার-ব্যানারও ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।
সজল মোল্লা খবরের কাগজকে বলেন, ‘পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমরা নোংরা রাজনীতি করি না। নিজেরা নিজেরা পোস্টার ছিঁড়ে বদনাম দেওয়ার মিথ্যা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’ পাল্টা অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘জনগণের সাপোর্ট দেখে নৌকার প্রার্থীর নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা যাত্রাবাড়ী, দোলাইরপাড়সহ বিভিন্ন জায়গায় ট্রাকের পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছেন।’ এ বিষয়ে হারুনুর রশীদ মুন্না বলেন, ‘এই আসনে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। অনেকে আওয়ামী লীগরে বিরুদ্ধে বদনাম দিতে এমন অভিযোগ করছেন।’
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল হাসান রিপনের নির্বাচনি এজেন্ট মোহাম্মদ সুজন প্রধানকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হারুনর রশীদ মুন্নার সমর্থক ও ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সালাউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সুজন ডেমরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে কামরুল হাসান রিপন খবরের কাগজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন করতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন। সেখানে এভাবে হত্যার হুমকি নির্বাচনে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করবে। একই সঙ্গে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাদের ভোটকেন্দ্রে আনা চ্যালেঞ্জ হতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী একটি সুষ্ঠু ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন আয়োজনে সবার সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি।’
অন্যদিকে তৃণমূল বিএনপির আবু হানিফ জানান, আজ রবিবার থেকে নিজেই প্রচারে নামবেন। বর্তমান তার ২০টি টিম মাঠে রয়েছে। তবে কোথাও বাধার মুখে পড়েনি। তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে গোপন কক্ষে ভোট দিতে হবে। কারণ এখনকার শিক্ষকরা আর শিক্ষক নেই, তারা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী।’
ঢাকা-৫ আসনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নৌকা-ট্রাক ও ঈগলের পোস্টারে অলিগলি সয়লাব। মাতুয়াইল, কোনাপাড়া, কাজলা, যাত্রাবাড়ীতে ফুটপাত ও সড়কের জায়গা দখল করে নির্বাচনি ক্যাম্প করেছেন হারুনুর রশীদ মুন্না। বাশের খুঁটি ও কাপড় দিয়ে তৈরি করা এই ক্যাম্পের (অস্থায়ী কার্যালয়) ভেতরে রাখা হয়েছে টেবিল-চেয়ার। আর মূল সড়কের অংশে রাখা হয়েছে নেতা-কর্মীদের বসার জন্য কিছু চেয়ার। আছে সাউন্ড বক্সও (শব্দযন্ত্র)। আর ক্যাম্পের সামনে মূল সড়কের ওপর অসংখ্য পোস্টার টানানো।
৬২ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার সানোয়ার হোসেন বলেন, দেখতেই তো পাচ্ছেন চারদিকে শুধু নৌকা, ট্রাক, ঈগলের প্রতীক লাগানো। এ দুই প্রার্থীর লোকজন এসে ভোট চাচ্ছেন। মিছিল-মিটিং করছেন। অন্য প্রার্থীদের প্রচারও নেই। যাত্রাবাড়ীর ভোটার লন্ড্রি ব্যবসায়ী আব্দুল করিম বলেন, ‘বিএনপি ভোট করলে নির্বাচন জমে উঠত, উৎসবমুখর হতো। বিএনপি না থাকায় নির্বাচন নিয়ে আমার মতো অনেকের আগ্রহ নেই।’