![উন্নয়ন হওয়ায় মানুষের ভালোবাসা বেড়েছে](uploads/2023/12/31/1704004967.Farhad-Hossain-Pic.jpg)
সদর ও মুজিবনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত মেহেরপুর-১ আসন। সীমান্তবর্তী এ জেলায় নানা সমস্যা থাকলেও উন্নয়নের ঝুলিতেও যোগ হয়েছে অনেক কিছু। আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছহীউদ্দিনের ছেলে। ২০১৪ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করেন তিনি। ২০১৮ সালে ফরহাদ হোসেনের মাধ্যমে মেহেরপুরকে মন্ত্রিত্ব উপহার দেন শেখ হাসিনা। তৃতীয়বারের মতো নৌকা প্রতীক নিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। জেলার উন্নয়নের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কথা বলেছেন খবরের কাগজ-এর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মেহেরপুর প্রতিনিধি বেন ইয়ামিন।
খবরেরর কাগজ: বর্তমান সময় কেমন ব্যস্ততম সময় পার করছেন?
ফরহাদ হোসেন: মুক্তিযুদ্ধের তীর্থভূমি মেহেরপুর আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। আগামী নির্বাচন উপলক্ষে এখানে এরই মধ্যে ভোটের উত্তেজনা সাধারণ মানুষের মাঝে রয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে নিজের নির্বাচনি এলাকায় সময় দিচ্ছি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলছি। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করছি।
খবরেরর কাগজ: সাধারণ মানুষের কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
ফরহাদ হোসেন: যেহেতু মেহেরপুরে বিভিন্ন খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে, তাই আমার প্রতি সাধারণ মানুষের ভালোবাসা আরও বেড়েছে। প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় এখন নৌকার জয়জয়কার। যেখানেই যাচ্ছি সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।
খবরেরর কাগজ: মেহেরপুরকে নিয়ে আগামীতে কী চিন্তা করছেন?
ফরহাদ হোসেন: আমরা মেহেরপুর নিয়ে অনেক প্রকল্প গ্রহণ করেছি। আরও অনেক প্রকল্প নিয়ে মেহেরপুরবাসীকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করব। শিক্ষিত যুবকদের এগিয়ে নেওয়ার জন্য এবং তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করব। ইতোমধ্যে মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে চেকপোস্ট ও স্থলবন্দরের অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে সেখানে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। এ ছাড়া বেকার সমস্যা দূরীকরণে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
খবরেরর কাগজ: শিক্ষা খাতের উন্নয়নের জন্য কি পরিকল্পনা রয়েছে?
ফরহাদ হোসেন: আপনারা জানেন, মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। এর ফলে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মেহেরপুর আরও একধাপ এগিয়ে গেল। এ ছাড়া প্রতিটি স্কুল-কলেজে নতুন ভবন তৈরি করেছি আমরা। জেলায় আবেদন করা কোনো স্কুল বাকি নেই যেগুলো আমরা এমপিও অন্তর্ভুক্ত করিনি। এ ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়নে বিভিন্ন বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে এই জেলায়। বিশেষ করে নারী শিক্ষার জন্য গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা ছিল, আগামীতেও থাকবে।
খবরেরর কাগজ: নারীদের উন্নয়নে কী চিন্তা করছেন?
ফরহাদ হোসেন: আমরা সব সময়ই নারী জাগরণের পক্ষে কাজ করে আসছি। এই জেলায় নারী ভোটার বেশি রয়েছেন। নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য অনেক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। নারীদের বিভিন্নভাবে প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। মেহেরপুরে ১ হাজার ৪০০ নারীকে গরু ও ১ লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে। মুজিবনগর উপজেলাতেও শিগগিরই একই কার্যক্রম চালু হবে। এভাবেই নানা উদ্যোগের মাধ্যমে নারীদের এগিয়ে নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে।
খবরেরর কাগজ: মেহেরপুরে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য কী চিন্তা করছেন?
ফরহাদ হোসেন: আগামীতে প্রতিটি পেশার মানুষকে প্রশিক্ষণের আওতায় এনে তাদের আরও দক্ষ করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। মধু চাষ, খাদ্য প্রক্রিয়াকজাতকরণ, মাশরুম চাষ, বিউটিফিকেশন কোর্স- এমন নতুন নতুন ব্যবসাতে সাধারণ মানুষকে সংযুক্ত করা সম্ভব। এ জন্য ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে তাদের পাশে দাঁড়ানো হবে। দপ্তরগুলোর বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারলে এলাকার জনগণ আরও উপকৃত হবেন।
খবরেরর কাগজ: কৃষিনির্ভর মেহেরপুরের কৃষি উন্নয়নে কী কাজ করবেন?
ফরহাদ হোসেন: মেহেরপুর কৃষিনির্ভর জেলা। এখানকার ৭০ শতাংশ মানুষ কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। মেহেরপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রণোদনার সার, বিষ ও কৃষি উপকরণ ব্যাপকভাবে বিতরণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মেহেরপুরে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন অনুমোদিত হয়েছে। এ ছাড়া মেহেরপুরের বিভিন্ন সবজি বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। আগামীতে আধুনিক কৃষক তৈরির লক্ষ্যে কৃষি খাতে প্রযুক্তি নির্ভরতা বাড়ানো হবে। সে ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত।
খবরেরর কাগজ: মুজিবনগরকে ঢেলে সাজাতে বা পর্যটক আকৃষ্ট করতে কী করতে চান?
ফরহাদ হোসেন: মুজিবনগরকে নিজের মতো করে সাজাতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই মধ্যে আমরা ৪১০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প তৈরি করেছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে ঢেলে সাজাতে চান। প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা অনুযায়ী মুজিবনগরকে সাজাতে পারলে আন্তর্জাতিক মহলে স্থানটির কদর আরও বাড়বে। সে ক্ষেত্রে মেহেরপুর পর্যটন নগর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
খবরেরর কাগজ: জয়ের বিষয়ে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
ফরহাদ হোসেন: মেহেরপুরের মাটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। বিগত দুবার এখানে সংসদ সদস্য ছিলাম। আমার বিরুদ্ধে কেউ কোনো দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি। প্রতিটি ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের কমিটি অনেক শক্তিশালী। আমরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে চলি, সাধারণ মানুষের কথা বলি। আর সে জন্যই সাধারণ মানুষ নৌকাকেই বেছে নেবেন। আমি জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী।