![মায়ানমারের মর্টারশেলের শব্দে আতঙ্কে হোয়াইক্যং সীমান্তবাসী](uploads/2024/02/26/1708954422.teknafkk.jpg)
টেকনাফের হোয়াইক্যং নাফনদী সীমান্তে থেমে থেমে মায়ানমার থেকে মর্টারশেলের বিকট শব্দে আতঙ্কে রয়েছে স্থানীয়রা।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ও সন্ধার পর টেকনাফের হোয়াইক্যং উংচিপ্রাং, কাঞ্জরপাড়া নাফনদী সীমান্তে মায়ানমারের ওপার থেকে মর্টারশেলের শব্দে আতঙ্কে সীমান্ত এলাকার লোকজন। রবিবার সকাল ৮টায় হোয়াইক্যং সীমান্তে ১০-২০টি মর্টারশেলের শব্দ শুনতে পান জেলেরা।
জানা যায়, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মায়ানমার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মিদের সঙ্গে চলছে সংঘর্ষ। হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের পূর্বে মায়ানমার কুমিরহালি, নাইচদং, কোয়াংচিগং, শিলখালী, নাফপুরা এই গ্রামগুলোতে সংঘর্ষ চলছে। সংঘর্ষের প্রভাব পড়ছে সীমান্ত এলাকা টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে।
হোয়াইক্যং কাঞ্জরপাড়া বাসিন্দার দেলোয়ার হোসাইন বলেন, দীর্ঘদিন গোলাগুলি ও মর্টারশেলের শব্দ বন্ধ থাকলেও নতুন করে গতরাত থেকে থেমে থেমে ভারী মর্টারশেলের শব্দ কানে লাগে। কখন যে সীমান্তে গোললাগুলি বন্ধ হবে জানি না। সীমান্ত এলাকায় যারা বসবাস করে তারা আতঙ্কে রয়েছে। আমাদের গ্রামে অনেকে কৃষিকাজ, লবণ চাষ, মাছের পজেক্টে কাজ করে সংসার চালায়। ভয়ে ভয়ে কাজ করতে হয় কোন সময় কোন দিক দিয়ে এসে গায়ে গোলা পড়ে।
হোয়াইক্যং উত্তর পাড়া এক জেলে বলেন, রাতে ও সকালে থেমে থেমে মায়ানমারে মর্টারশেলের শব্দ হয়। ভয়ে আছি নাফ নদীতে মাছ শিকারে যেতে পারছি না। কষ্টে আছি এবং পরিবার কেমনে চালাব সেটি অনেক চিন্তায় আছি। গত সপ্তাহখানিক মায়ানমারে গোলাগুলির বন্ধ ছিল। হঠাৎ কয়েকদিন ধরে আবারও শুরু হয় মর্টারশেলের শব্দ।
হোয়াইক্যং ২নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য সিরাজুল মোস্তাফা লালু বলেন, আমার বাড়ির পেছন থেকে মিয়ানমার সীমান্ত দেখা যায়। গতরাতে মর্টারশেলের এমন শব্দ হয়েছি সেটি বলে বুঝাতে পারব না। মায়ানমারের মর্টারশেলের শব্দে আমার বাড়ি কাঁপছে। বাড়ির পেছনে দাঁড়ালে শুনতে পারবেন কী পরিমাণ শব্দ হয়।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, দীর্ঘদিন মায়ানমার সীমান্তে গোলাগুলি ও মর্টারশেলের শব্দ শোনা না গেলেও রাতে মাঝে মধ্যে থেমে থেমে মৌলভীবাজার, ওয়াব্রাং সীমান্তের পূর্বে মায়ানমারে মর্টারশেলের শব্দ শোনা যায়। সীমান্ত এলাকার লোকজন আতঙ্কে রয়েছে। তাদের খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।
একিকে, শনিবার সন্ধা ৬টার পর থেকে বিরতিহীনভাবে ঘন্টাখানিক টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ জালিয়া পাড়ার পূর্বে মর্টারশেলের শব্দ শুনতে পায় স্থানীয়রা। মায়ানমার মংডুও শহরের পাদংসা, কাদির বিল, হাইন্দা পাড়া গ্রামে মায়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে।
উল্লেখ্য, টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফনদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত নাফনদী ও সীমান্ত সড়কে টহল বৃদ্ধি করেছে। সেটি চলমান এবং যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সব সময় প্রস্তুত বিজিবি ও কোস্টগার্ড।