নড়াইল সদর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আজিজুর রহমান ভূঁইয়ার বিপক্ষে যারা এজেন্ট হবেন এবং ভোট দিতে আসবেন তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন সদর উপজেলার চণ্ডিবরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য মোস্তফা কামাল।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সদর উপজেলার চালিতাতলা বাজারে তিনি এ বক্তব্য দেন। তার ওই বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়া ৫৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি ভ্যানের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন মোস্তফা কামাল। তার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন ওই ইউনিয়নের আরেক ইউপি সদস্য জাহিদুর রহমান। এ সময় মাইক হাতে নিয়ে উপস্থিত জনগণের উদ্দেশে মোস্তফা কামাল বলছেন, ‘কিছু দালাল, কিছু রাজাকার চিহ্নিত হয়েছে। যারা টাকার বিনিময়ে ইউনিয়নের বাইরে গিয়ে ভোট করছেন। আমরা তাদের শক্তভাবে এর জবাব দেব। ২১ তারিখে ভোটকেন্দ্রে এসে কীভাবে আজিজ ভূঁইয়ার বিপক্ষে ভোট দেয়, আমরা সেটা দেখব।’ এ ব্যাপারে মোস্তফা কামালকে একাধিকবার ফোন দিলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে প্রকাশ্যে জনসভায় এমন বক্তব্য নিয়ে উদ্বিগ্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে আজিজুর রহমান ভূঁইয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তোফায়েল মাহমুদ তুফান। তিনি বলেন, ‘শত শত লোকের মধ্যে প্রকাশ্যে যেভাবে হুমকি দিচ্ছে তাতে নির্বাচন করতে পারব কিনা সে শঙ্কায় আছি। জেলা রিটানিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’
আজিজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘প্রতিপক্ষের লোকজন এর আগে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে আমার লোকদের খেপিয়ে তুলেছে। আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নাই। আমি বা আমার কোনো লোক সহিংস নয়।’
নড়াইল সদর ও লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শ্বাশ্বতী শীল বলেন, ‘সহিংসতামূলক বক্তব্যের ওই ভিডিওটি আমরা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে থানার ওসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওই ইউপি সদস্যের বাড়িতে গিয়েছিল। কিন্তু তিনি পলাতক রয়েছেন। তাকে পাওয়া মাত্রই গ্রেপ্তারের নির্দেশনা দেওয়া আছে এবং ইতোমধ্যে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়েছে। যেকোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আগামী ২১ মে নড়াইল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখানে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৬০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২০ হাজার ১২৯ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ২১ হাজার ৬৩০ জন।