বহির্নোঙর থেকে জেটিতে জাহাজ ভিড়তে শুরু করায় পুরোদমে সচল হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। চলছে জাহাজে পণ্য ওঠা-নামা কার্যক্রম।
সোমবার (২৭ মে) আবহাওয়া অধিদপ্তর ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি করার পর কার্যক্রম শুরু করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে সে সময় শুধু প্রশাসনিক ও পণ্য সরবরাহ কার্যক্রম শুরু হয়। সেদিন সাগর উত্তাল থাকায় সেদিন বহির্নোঙর থেকে কোন জাহাজ জেটিতে ভেড়াতে না পারায় শুরু করা যায়নি পণ্য ওঠা-নামার কাজ।
সূত্র জানায়, সোমবার (২৭ মে) ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি করার পর বহির্নোঙরে পাঠানো জাহাজগুলো বন্দর জেটিতে ফিরিয়ে আনতে পাইলটদের পাঠানো হয়। কিন্তু সাগর উত্তাল থাকায় সেদিন জাহাজগুলো আনা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল ৯টা থেকে জাহাজগুলো বন্দর জেটিতে ভেড়ানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সাগরের পরিস্থিতি আগের মত থাকায় সকাল থেকে জাহাজশূন্য থাকে বন্দরের জেটি। এরপর বেলা ১২টা থেকে সেখানে ভিড়তে শুরু করে বড় জাহাজ।
জানা গেছে, বৈরী আবহাওয়ায় যাবতীয় ক্ষয়-ক্ষতি এড়াতে গত শনিবার (২৫ মে) দিবাগত রাতে বন্দরের জেটি থেকে ১৯টি জাহাজ সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল থেকে বন্দর জেটিতে ১১টি জাহাজ ভিড়েছে। বাকি ৮টি জাহাজ বহির্নোঙর থেকে রওনা দিয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক খবরের কাগজকে বলেন, বহির্নোঙরে পাঠানো জাহাজগুলো জেটিতে ভেড়াতে গত সোমবার (২৭ মে) আমাদের পাইলটদের সেখানে পাঠানো হয়। কিন্তু সেদিন সাগর উত্তাল থাকায় জাহাজগুলো জেটিতে আনা সম্ভব হয়নি। মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুর থেকে জেটিতে জাহাজ ভিড়তে শুরু করে। সঙ্গে সঙ্গে জাহাজ থেকে পণ্য ওঠা-নামা ও খালাসসহ সবধরনের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে।
এর আগে আবহাওয়া অধিদফতরের সংকেত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরে নিজস্ব অ্যালার্ট-৪ জারি করা হয়েছিল। প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় শনিবার (২৫ মে) রাত ১০টায় জেটি থেকে ১৯টি বড় জাহাজ গভীর সমুদ্রে এবং ছোট জাহাজগুলোকে কালুঘাটের উজানে নিরাপদ স্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ ইক্যুইপমেন্ট জেটি এবং ইয়ার্ড থেকে সরিয়ে রাখা হয়। প্রায় ৩৬ ঘন্টা বন্ধ থাকার পর সোমবার (২৭ মে) সকাল থেকে শুরু হয় চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম।
উল্লেখ্য ঘূর্ণিঝড়কালীন সময়ে মাদারভেসেল বা বড় জাহাজ জেটিতে থাকলে ঢেউয়ের কারণে জাহাজ বা জেটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে সাগরে ডাবল ইঞ্জিন চালু রেখে ঢেউ বা ঝড়ের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করে জাহাজগুলো ভাসতে পারে। তাই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় বড় জাহাজগুলো গভীর সমুদ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে আভ্যন্তরীন নৌযানগুলোকে (লাইটার জাহাজ) কর্ণফুলী নদীর সদরঘাট হতে শাহ আমানত সেতুর উজানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেগুলোও বর্তমানে পুরোদমে চলছে।
বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি নবী আলম খবরের কাগজকে জানান, বৈরি আবহাওয়ায় প্রায় ৪০০ লাইটার জাহাজ শাহ আমানত সেতুর উজানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আজ মঙ্গলবার (২৮ মে) থেকে পুরোদমে পণ্য পরিবহনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তারেক মাহমুদ/এমএ/