![পুঁজিবাজারবান্ধব বাজেট চায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ](uploads/2024/06/02/csekk-1717334865.jpg)
আগামী বাজেটে পুঁজিবাজার উন্নয়ন কৌশলপত্রে স্বল্প ও মধ্য মেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)র চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেছেন, পুঁজিবাজারবান্ধব বাজেট প্রয়োজন। পুঁজিবাজারকে আরও বড় করার জন্য, কোম্পানির সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য, আর্থিক নিরাপত্তা, মেগা প্রকল্প উন্নয়নে পুঁজিবাজারকে কাজে লাগাতে হবে। এরজন্য সরকারকেই বাজেটে এর রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।
রবিবার (২ জুন) দুপুরে চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জ লি. (সিএসই)র চট্টগ্রামের প্রধান কার্যালয়ে আসন্ন ২০২৪-২০২৫ বাজেট পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এবং পুঁজিবাজার নিয়ে এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, বর্তমানে ৩৪৯টি কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আছে। স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের জন্য গুণগত মান সম্পন্ন কোম্পানি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এ সংখ্যা একটি সন্তোষজনক সংখ্যায় উন্নীতকরণ করা প্রয়োজন। দেশে ক্রমবর্ধমান অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের লক্ষ্যে একটি স্থিতিশীল শক্তিশালী বন্ড মার্কেট অতীব জরুরি। একটি শক্তিশালী বন্ড মার্কেট গঠন ও নতুন বন্ডের তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বাজারে পণ্যের বৈচিত্র্যতা আনয়নের নিমিত্তে বন্ড থেকে উদ্ভুত আয়কে কর অব্যহতি প্রদান করা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, একটি যথোপযুক্ত অর্থ বাজার কাঠামো (Financial Market Structure) তৈরি করা খুবই গুরুত্বপুর্ণ। একটি টেকসই বাজার কাঠামোর জন্য অর্থ বাজার, পুঁজিবাজার এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক কাঠামোর একটি সমন্বিত ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমাদের আর্থিক বাজার কাঠামো কার্যত অনেকাংশে ব্যাংকব্যবস্থা তথা অর্থবাজারের উপর নির্ভরশীল। যার বিভিন্ন নেতিবাচক প্রভাব আমাদের অর্থনীতিতে ইতিমধ্যে প্রতীয়মান হচ্ছে। আমরা মনে করি আগামী বছরের জাতীয় বাজেটে পুঁজিবাজারের গুণগত সম্প্রসারণ এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য যথাযথ কৌশল নির্ধারণ করে দিকনির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
সিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে দক্ষ বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্কট রয়েছে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে কম। এই সংখ্যা একটি কাঙ্খিত স্তরে উন্নিত করা প্রয়োজন ।
গুনগতমান সম্পন্ন তালিকাভুক্ত কোম্পনির সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য প্রস্তাব করে আসিফ ইব্রাহিম বলেন, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হারের ব্যবধান নূন্যতম ১০ শতাংশ বৃদ্ধিকরণ। নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পনিকে ২/৩ বছরের জন্য কর অব্যহতি প্রদান করা। কার্যকরী বেসরকারি বন্ড মার্কেট প্রস্তুতকরণ জরুরি।
বন্ড মার্কেটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশের করপোরেট বন্ড মার্কেটের আকার খুবই ছোট । যথোপযুক্ত প্রণোদনার মাধ্যমে একটি যথোপযুক্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। বর্তমানে করপোরেট বন্ড মার্কেটের আকার দেশের জিডিপির তুলনায় এক শতাংশের কম। যা একটি দুর্বল আর্থিক খাতের নির্দেশক। কার্যকর বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তালিকাভুক্ত বন্ডের সুদকে বিনিয়োগকারী নির্বিশেষে কর অব্যহতি প্রদান করার প্রস্তাব করছি ।
পাশাপাশি দেশীয় এবং বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ উৎসাহিত করণের লক্ষ্যে ব্লু বন্ড এবং গ্রিন বন্ডকে সম্পূর্ণ কর অব্যহতিসহ কর রেয়াত প্রদান করা হলে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা ভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাপক অংশে বৃদ্ধি করা সম্ভব।
তিনি বলেন, আমাদের জনসংখ্যার তুলনায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা খুবই কম। যা গত কয়েক বছর ধরে নিন্মমুখী ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাজারের প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য নিন্মোক্ত কৌশল অবলম্বন করা যায়: লভ্যাংশের উপর দ্বৈত কর প্রত্যাহার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর মূলধনী লাভের উপর কর প্রত্যাহার, মিউচুয়াল ফান্ড এবং ইটিএফ ইত্যাদি কালেকটিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিমে কর রেয়াতি সুবিধা বৃদ্ধি করণ, মূলধনী লাভের উপর কর কর্তন করা হলে তা চূড়ান্ত করদায় হিসাবে বিবেচনা করণ।
এতে উপস্থিত ছিলেন সিএসইর পরিচালক মেজাজ (অব) এমদাদুল ইসলাম, মোহাম্মাদ নকিব উদ্দিন খান, মোহাম্মেদ আখতার পারভেজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার, এফসিএ, এফসিএমএ।
আবদুস সাত্তার/এমএ/