![মৌলভীবাজারে বেড়েছে ছাগলের চাহিদা](uploads/2024/06/14/1706770691.berirpar-1718338320.jpg)
প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজার শহরের পশুর হাটটি জমে উঠছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যাপারীরা এখানে গরু-ছাগল নিয়ে আসছেন। পাশাপাশি স্থানীয় খামারি এবং ব্যক্তি উদ্যোগে পালিত কোরবানিযোগ্য ছাগলও আনা হচ্ছে। জাতভেদে এক একটি ছাগলের দাম হাঁকা হচ্ছে ২০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা। ব্যবসায়ীদের দাবি, তারা হাটে কোনো বিদেশি ছাগল তোলেননি, সবই দেশি। দামও সহনীয় পর্যায়ে। তবে ক্রেতারা বলছেন, বিক্রেতারা তুলনামূলক বেশি দাম চাচ্ছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে শুরু হওয়া জেলা স্টেডিয়ামসংলগ্ন মাঠে পৌরসভা আয়োজিত অস্থায়ী গবাদিপশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা জেলা শহরের বৃহৎ এই হাটে ট্রাক বোঝাই করে ছাগল নিয়ে আসছেন। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে হাটে ছাগলের সরবরাহ বেড়েছে। নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ থেকে এখানে ছাগল আনা হয়েছে।
তারা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। এ বছর কোরবানির জন্য গরুর পাশাপাশি ছাগলের চাহিদা বেড়েছে। সামর্থ্যবানরা একাধিক গরু কোরবানি দেন, পাশাপাশি তারা ছাগলও কিনে থাকেন। এ ছাড়া যারা কম টাকায় কোরবানির পশু কিনতে চান, তারা ভরসা রাখছেন ছাগলে।
‘এই হাটে দাম ভালো পাওয়া যায়, লাভও হয়। তাই প্রতিবছরই এখানে আসি। বিক্রিও ভালো হয়।’ নরসিংদী থেকে আসা ছাগলের ব্যাপারী আলামিন মিয়া এভাবেই জানাচ্ছিলেন তার ব্যবসার অভিজ্ঞতা। তিনি এবার ৩০টি ছাগল নিয়ে এসেছেন। বলেন, ‘আকারভেদে এক একটি ছাগলের দাম চাচ্ছি ৬০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা। ছাগলকে কাঁঠালের পাতা, বুটের (ছোলা) আটা, গমের কুঁড়া (ভুসি) অ্যাঙ্কার ডালের ভুসি খেতে দিতে হয়। খরচ বেশি পড়ে যায়। তাই দাম একটু বেশি।’
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল ছাড়াও বিভিন্ন সংকর জাতের ছাগল নিয়ে এসেছেন মানিকগঞ্জের আসাদ মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমাদের এলাকা থেকে ছাগল কিনে এখানে নিয়ে এসেছি। এই হাটে দাম তুলনামূলকভাবে ভালো পাওয়া যায়। লাভও ভালো হয়।’
কোরবানিতে ছাগলের চাহিদা প্রসঙ্গে ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন, ‘অনেকের গরু কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য নেই। এক লাখ টাকার কমে ভালো গরু মিলবে না। কিন্তু ছাগল কম টাকায় সবাই কোরবানি দিতে পারেন। ধনী, গরিব সবাই ছাগল কোরবানি দিতে পছন্দ করেন। ছাগলের মাংস অনেকেই পছন্দ করেন।’
মাতারকাপন গ্রামের রশিদ উদ্দিন বলেন, ‘লাখ টাকার গরু কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য নেই বলে এবার কোরবানির জন্য ছাগল কিনব। কিন্তু দরদামে হচ্ছে না।’
গরুর পাশাপাশি ছাগল কোরবানি দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে অনেক জায়গায় আছে। এমন এক জায়গার স্থানীয় কনকপুর এলাকার বাসিন্দা রহমান মিয়া। এবার তিনি দুটি গরুর সঙ্গে দুটি ছাগলও কোরবানি দেবেন। গরু আগেই তিন লাখ ৭০ হাজার টাকায় কিনে রেখেছেন। এখন ছাগল কিনতে হাটে এসেছেন।
হাটের ইজারাদার মোসাইদ মিয়া জানান, পৌরসভার এই হাট ৫৪ লাখ টাকায় ইজারা নেওয়া হয়েছে। আরও চার লাখ টাকা আনুষঙ্গিক খরচ হয়েছে। এই হাটে গরুর পাশাপাশি ছাগলের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। তবে কেনাবেচা কম। ধারণা করা হচ্ছে, ঈদের আগের রাতে বিক্রি বাড়বে।