ঢাকা ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪

সীতাকুণ্ড সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কোটিপতি ঝাড়ুদার

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৫ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৭ পিএম
সীতাকুণ্ড সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কোটিপতি ঝাড়ুদার
সীতাকুণ্ড সাব-রেজিস্ট্রি অফিস

ঝাড়ু দেন না অফিসে, অথচ পদবিতে তিনি একজন অস্থায়ী ঝাড়ুদার। চায়ের দোকানের কর্মচারী থেকে এখন তিনি উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কোটিপতি ঝাড়ুদার। তার সঙ্গে বনিবনা না হলে কোনো রেজিস্ট্রি করান না সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবিব। 

এ বিষয়টি নিয়ে সীতাকুণ্ডের সার্ভেয়াররা লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অভিযোগও দিয়েছেন। তবুও দমেননি তিনি। পাত্তা দেন না অফিসের অন্যদেরও। এক হাতে গোটা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস শাসন করে বছরের ব্যবধানে এই ঝাড়ুদার বনে গেছেন কোটি টাকার গাড়ি-বাড়ির মালিক। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এয়াকুব আলী ঝাড়ুদারের কাজ করতেন দৈনিক ৭০ টাকা মজুরিতে। প্রতিদিন সকালে অফিসে ঝাড়ু দিতেন। ধীরে ধীরে তিনি সাব-রেজিস্ট্রারের আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। যখন যে সাব-রেজিস্ট্রারই আসেন, তিনি তার ওপর আস্থা রাখেন। তার বৈধ-অবৈধ কাজ সম্পাদনের জন্য সাব-রেজিস্ট্রার ও অন্য কর্মচারীকে ম্যানেজ করে একপর্যায়ে গড়ে তোলেন বিশাল ঘুষ বাণিজ্যের সিন্ডিকেট। এরপর থেকে তিনি আর ঝাড়ু দেন না।

ঝাড়ুদার এয়াকুবের রয়েছেন আরও দুই সহযোগী। তাদের নাম জামশেদ আলম ও হারুন। এদিকে কমিশনে দলিল রেজিস্ট্রেশন করার ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত ঘুষ আদায়ের অভিযোগ আছে সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবিবের বিরুদ্ধে। এমনকি সরকারি স্টাফ না হওয়া সত্ত্বেও এয়াকুবকে কমিশনে পাঠান রায়হান হাবিব।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদের সামনে একটি হোটেলে (ভাতের দোকানে) চাকরির সুবাদে এয়াকুব সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য দুপুরে ভাত নিয়ে যেতেন। এরপর ২০০৬ সালে তিনি ঝাড়ুদার হিসেবে কাজ শুরু করেন সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে। ঝাড়ুদার থেকে সাব-রেজিস্ট্রারদের অঘোষিত পিএস হয়ে উঠেন তিনি। সেই ক্ষমতাবলে সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় জুড়ে চলে তার শাসন। এরপর শুরু করেন ঘুষ লেনদেনের কারবার। হোটেল মালিক শাহ আলমের দোকানে কর্মচারী থাকাকালীন তার মেয়ের সঙ্গে এয়াকুবের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অবশেষে অল্পদিনে কোটিপতি বনে যাওয়া এয়াকুবের সঙ্গেই তার মেয়ের বিয়ে দেন।

ঝাড়ুদার মো. এয়াকুব রাঙ্গুনিয়া থানার কোদালা গ্রামের মোহাম্মদ ইউছুফের ছেলে। রাঙ্গুনিয়ায় বাড়ি করেছেন। সেখানে তার বাবা-মা থাকেন বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে সীতাকুণ্ড সদরসহ উপজেলার বিভিন্ন মৌজায় তার শ্বশুর-শাশুড়ি, শালী, নানিশাশুড়ির নামে নিয়েছেন জমি। পরে সেসব তার স্ত্রীর নামে হেবা করেন তিনি। সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে কাজ করেন তার চাচাতো শ্যালিকা নাসরিন। এয়াকুবের রয়েছে দু-দুটি প্রাইভেট কার। চলাফেরা করেন বড় কর্মকর্তাদের মতো। জায়গাজমি নিয়ে রেখেছেন নানিশাশুড়ি সকিনা বিবির নামেও। 

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সীতাকুণ্ড উপজেলার আমিরাবাদ মৌজায় ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর তাজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৬ শতক জমি কিনেছেন এয়াকুব (যার দলিল নম্বর- ৭৪৯৭/২৩ ইং)। ওই জমিটি কিনেছেন প্রায় ৭০-৮০ লাখ টাকায়। দলিল রয়েছে সকিনা বিবি নামে নব্বই বছর বয়সী এক নারীর নামে। ওই মহিলা সম্পর্কে ঝাড়ুদার এয়াকুবের নানিশাশুড়ি হন। বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রতিবেদক সরেজমিন গেলে স্থানীয় লোকজন এর সত্যতা নিশ্চিত করেন। 

সেবা নিতে আসা অনেকেই জানান, যাচাই-বাছাই শেষে সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে গেলে তিনি দলিলের নানা খুঁত ধরেন। এ সময় দেনদরবার করতে তিনি এয়াকুবের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। এয়াকুব এই সুযোগটি কাজে লাগান। সাব-রেজিস্ট্রার কত টাকা হলে দলিল রেজিস্ট্রি করবেন, তা ওই ঝাড়ুদার এয়াকুবই নির্ধারণ করে দেন। সাব-রেজিস্ট্রার তার নির্ধারিত পরিমাণ কম বা বেশি হলে জমি রেজিস্ট্রি করেন না। সেই ক্ষমতার দাপটে ঝাড়ুদার এয়াকুব আলী ঘুষের টাকায় কোটিপতি হয়েছেন।

এদিকে সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবিব চলতি বছরের ২২ এপ্রিল সীতাকুণ্ড উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে যোগদানের পর থেকে সীতাকুণ্ড দলিল লেখক সমিতি তার উপর ক্ষুব্ধ। 

উপজেলা দলিল লেখক সমিতি এই সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মহাপরিদর্শক (নিবন্ধন অধিদপ্তর) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে।

ওই অভিযোগে সাব-রেজিস্ট্রারকে বদলিরও অনুরোধ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়েও দেওয়া হয়েছে দরখাস্ত। 

দলিল লেখকদের অভিযোগ, সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবিব ঘুষ ছাড়া কোনো দলিল রেজিস্ট্রি করেন না। গত ২২ এপ্রিল তিনি এই অফিসে যোগদানের পর থেকেই চলছে ঘুষের অবাধ বাণিজ্য। জমি হস্তান্তর করতে আসা দলিল লেখক ও সাধারণ মানুষ অগ্রিম ঘুষ চুক্তি না করে রেজিস্ট্রি করতে এসে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। নথিতে কোনো সমস্যা না থাকলেও কিছু ত্রুটি বের করে দলিল ফেরত দিয়ে দিচ্ছেন সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবিব। তিনি ক্রমাগত দলিল লেখকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। সাব-রেজিস্ট্রারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন ঝাড়ুদার এয়াকুব। সব কথা তার সঙ্গেই বলতে হয়। সাব-রেজিস্ট্রারের নির্দেশে দলিলের মূল্য অনুযায়ী ১৫ হাজার টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ চান এয়াকুব। চুক্তি চূড়ান্ত হলে সাব-রেজিস্ট্রারকে সবুজ সংকেত দেন এয়াকুব। তারপর তিনি আর কোনো পরীক্ষা না করেই নথিটির কাজ সম্পাদন করেন।

তারা আরও জানান, একটি দলিলের জমির মূল্য ১ কোটি টাকা হলে অফিস ফি দিতে হবে ৫০-৬০ হাজার টাকা। এটি সরকারি ফি-এর বাইরে সম্পূর্ণ অতিরিক্ত অর্থ। এটা ওপেন সিক্রেট। আমরা আগে থেকেই দিয়ে আসছি। তাই এ নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কারণ এটা একটা অলিখিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই নতুন সাব-রেজিস্ট্রার আসার পর যেকোনো অজুহাতে কাগজপত্র ফেরত দিচ্ছেন। ঘুষের চুক্তি ছাড়া রেজিস্ট্রি অফিসে নথি নিয়ে যাওয়া লোকদের সঙ্গে তিনি চরম দুর্ব্যবহার করেন। আমরা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে গত ৬ ও ৯ জুন দুবার বৈঠক করেছি। কোনো লাভ হয়নি। 

দলিল লেখক সমিতির সভাপতি রফিকউদ্দিন আহাম্মদ খবরের কাগজকে জানিয়েছেন, সাব-রেজিস্ট্রারের অস্বাভাবিক ঘুষের দাবি মেটাতে গিয়ে দলিল সম্পাদন করতে ব্যর্থ হচ্ছি আমরা। সমস্যার সুরাহা করতে আমরা একাধিকবার সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবিবের সঙ্গে বসেছি। কিন্তু তার দাবি, অনেক টাকা ঘুষ দিয়ে তিনি সীতাকুণ্ডে বদলি হয়ে এসেছেন। এ টাকা তাকে তুলতে হবে। 

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সাব-রেজিস্ট্রারের ঘুষ-দুর্নীতির প্রসঙ্গ উল্লেখপূর্বক তাকে অপসারণের লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাব-রেজিস্ট্রারকে অপসারণ করা না হলে দলিল লেখকরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে যাবেন। 

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবিব বলেন, আমার নামে এসব অভিযোগ মিথ্যা। আমি আইনবহির্ভূত কোনো কাজ করি না বিধায় দলিল লেখকদের একটি সিন্ডিকেট আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। 

তিনি বলেন, ‘দলিল লেখকদের কাজ শুধুমাত্র দলিল লেখা। তারা দাতা-গ্রহীতাকে দলিল লিখে দিয়ে ফি নিয়ে রশিদ দেবেন। দলিল সাবমিট করা তাদের কাজ নয়। এ কাজ দাতা-গ্রহীতা যে কেউ করতে পারেন।

তিনি বলেন, আগে দলিল রেজিস্ট্রি বিভিন্ন নিয়মে করা হতো। এখন দলিল রেজিস্ট্রির জন্য এনবিআর আমাদের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম করে দিয়েছে। তাই হয়তো দলিল লেখকদের সঙ্গে আমাদের কিছু ভুল বোঝাবুঝি আছে। এ ছাড়া এসব অপপ্রচারকারীরা ঘুষ খেয়ে বা ঘুষ দিয়ে সীতাকুণ্ডে আসে। এক পক্ষ আমার বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে এসব অপবাদ ছড়াচ্ছে।

এয়াকুব আলী বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ মিথ্যা। আমি এখনো তেমন কিছু করিনি। নানিশাশুড়ির নামে কেন জায়গা নেব? তবে সকিনা বিবি নামে যে নানিশাশুড়ি আছে, সেটা স্বীকার করেন তিনি (এয়াকুব)। 

জৈন্তাপুরে চিনির লাইনে ধরা পড়ল চেতনানাশক ওষুধ

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:৫৫ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩৪ পিএম
জৈন্তাপুরে চিনির লাইনে ধরা পড়ল চেতনানাশক ওষুধ
ছবি : বিজ্ঞপ্তি

সিলেটের সব সীমান্ত এখন চোরাই চিনির লাইন হিসেবে পরিচিতি। এ পথে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে মাদকসহ নানা অবৈধ পণ্যও ধরা পড়ছে।

শনিবার (৬ জুলাই) মধ্যরাতে সীমান্ত উপজেলা জৈন্তাপুরে চোরাই চিনির বিরুদ্ধে অভিযানে ধরা পড়ছে আমদানিনিষিদ্ধ চেতনানাশক ওষুধ। 

তাছাড়া পৃথক আরেকটি অভিযানে ১০৫ বস্তা চোরাই চিনি জব্দ করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  

রবিবার (৭ জুলাই) বিকেলে জৈন্তাপুর থানার মিডিয়া সেল থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

পৃথক দুটি অভিযানে ১০৫ বস্তা চোরাই চিনি, ১৩৮ বোতল চেতনাশক ওষুধ জব্দের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।

মামলায় চিনির সঙ্গে আটক তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাছাড়া, চোরাচালানে ব্যবহার করা একটি মোটরসাইকেল ও একটি নৌকা জব্দ করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে চোরাই চিনির লাইন হিসেবে পরিচিতি জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট মাহুতহাটি গ্রামের রাস্তা দিয়ে চোরাকারবারি চক্রের সদস্যরা টমটমে করে ভারতীয় ১৩৮ বোতল চেতনানাশক ওষুধ পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিল। খবর পেয়ে উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে দুটি কার্টনে ভারতীয় ১৩৮ বোতল চেতনানাশক ওষুধ জব্দ করে। এ সময় চোরাকারবারিরা তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ফেলে পালিয়ে যায়। পরে মোটরসাইকেলের মালিকানা সূত্র ধরে দুজনকে শনাক্ত করা হয়।

এ ঘটনায় রবিবার (৭ জুলাই) উপজেলার লামনী গ্রামের কুতব উদ্দিন (৩২) ও ভিত্রিখেল কন্যাখাই গ্রামের তোফায়েল আহমেদের (২৫) বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। 

এর পর রাত ১টায় জৈন্তাপুর থানার এসআই আব্দুল লতিফের নেতৃত্বে পুলিশের আরেকটি দল ডুলটিরপাড় এলাকার সারী নদীর পূর্বপাড়ে অভিযান চালিয়ে ১০৫ বস্তা ভারতীয় চিনিবোঝাই নৌকা জব্দ করে। এ সময় কটাই মিয়া (৪৬), সিরাজ (৫১) ও আতিক (২১) নামের তিনজনকে আটক করে। তাদের বাড়ি গোয়াইনঘাট উপজেলায়। তাদের সঙ্গে থাকা আরেকজন পালিয়ে যায়।

জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, চোরাই চিনির পথে এখন মাদকসহ নানা অবৈধ পণ্য আসছে। এর আগে আরও একটি অভিযানে চিনির সঙ্গে মাদকও উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার রাতে পৃথক দুটি অভিযানে ১৩৮ বোতল ভারতীয় চেতনানাশক ওষুধ ও ১০৫ বস্তা চিনি জব্দের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। আটক তিনজনকে চিনি চোরাচালান মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিকেলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। চেতনানাশক ওষুধ চোরাচালানের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

উজ্জ্বল মেহেদী/জোবাইদা/অমিয়/

সৌদিতে বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যু

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:৫১ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩৫ পিএম
সৌদিতে বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যু
মো. ফরিদ মিয়া

সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে মো. ফরিদ মিয়া (২৮) নামে এক বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (৬ জুলাই) স্থানীয় সময় রাত ১১টায় রাজধানী দাম্মামের বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

মো. ফরিদ মিয়া কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার গুণধর ইউনিয়নের খয়রত গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম মো. আবদুল কাদির। 

ফরিদের ছোট ভাই নয়ন মিয়া বলেন, ফরিদ গ্রামে কৃষিকাজের পাশাপাশি অটোরিকশা চালাতেন। আড়াই বছর আগে তিনি সৌদি আরবে যান। সেখানে নির্মাণকাজে সুপারভাইজারের দায়িত্ব পান তিনি। গত বছর তাকেও তিনি সৌদিতে নিয়ে যান।

রবিবার (৭ জুলাই) বিকেলে ফরিদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শোকে পরিবারের সবাই কাতর। 

লাশ কবে আসছে এই খবর জানার জন্য লোকজন বাড়িতে ভিড় জমায়। 

তার বাবা আব্দুল কাদির বলেন, ‘ফরিদ আমার বড় ছেলে। বাড়িতেও পরিশ্রমী ছিল। সংসারের আর্থিক সচ্ছলতা আনার জন্য বিদেশে গিয়েছিল। প্রথমে কষ্ট করলেও সেখানে পরে তার ভালো অবস্থান তৈরি হয়। মেজো ভাইটাকে তার কাছে নিয়ে যায়। ছোট ভাই সুজনকে মালয়েশিয়ায় পাঠায়। আমার ছেলে নেই। সংসারই এখন এলোমেলো হয়ে গেল। আমি কী করে সব সামলাবে। আমার ছেলের লাশ দ্রুত দেশে নিয়ে আসতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করি।’

তাসলিমা মিতু/জোবাইদা/অমিয়/

সাতক্ষীরায় সন্তানকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার মা

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:৪৯ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩৬ পিএম
সাতক্ষীরায় সন্তানকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার মা

সাতক্ষীরায় তিন মাসের সন্তানকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার অভিযোগে মা সুরাইয়া ইয়াসমিনকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রবিবার (৭ জুলাই) রাত ১১টার দিকে সাতক্ষীরা পৌরসভার রইচপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সুরাইয়া ইয়াসমিন ওই গ্রামের মুজাফফর হোসেনের মেয়ে ও খুলনার গিলাতলার মুছা শেখের স্ত্রী। তিনি বাবার বাড়িতেই দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন।

স্থানীয়রা জানান, সুরাইয়া ইয়াসমিনের শিশু মেয়ে মমতাজ খাতুনকে দুপুর ২টা থেকে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ির পুকুর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।

তারা জানান, সুরাইয়া মাঝে মধ্যে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এর আগে তিনি তার ছেলেকে দুবার খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। রাতে পুলিশ এসে সুরাইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি মেয়েকে পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সাতক্ষীরা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাজরিয়া হোসাইন বলেন, শিশুটির লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যার কথা স্বীকার করায় ইয়াসমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

নাজমুল শাহাদাৎ/জোবাইাদা/অমিয়/

বিষের বোতল নিয়ে পুলিশ সদস্যের বাড়িতে কলেজছাত্রীর অনশন

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:১০ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩৬ পিএম
বিষের বোতল নিয়ে পুলিশ সদস্যের বাড়িতে কলেজছাত্রীর অনশন
ছবি : খবরের কাগজ

ঢাকার ধামরাইয়ে বিয়ের দাবিতে বিষের বোতল নিয়ে এক পুলিশ সদস্যের বাড়িতে অনশনে বসেছেন এক কলেজছাত্রী। বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তিনি এ বাড়ি ছাড়বেন না। যদি বিয়ে না করে তাহলে বিষ পান করে আত্মহত্যা করবেন বলে জানান অনশনরত তরুণী।

রবিবার (৭ জুলাই) দুপুরের দিকে উপজেলার বাইশাকান্দা ইউনিয়নের বেরশ গ্রামের ঘটনা এটি।

জানা যায়, উপজেলার বাইশাকান্দা ইউনিয়নের বেরশ গ্রামে পুলিশ সদস্য সুব্রত বৈরাগী বাড়িতে সকালে অবস্থান নেন ওই তরুণী। তাকে বাড়িতে দেখে সুব্রত বৈরাগী পালিয়ে যায়। 

সুব্রত ওই গ্রামের গণেশ বৈরাগীর ছেলে। তিনি বর্তমানে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী থানায় কর্মরত আছেন বলে জানা গেছে।

অনশনরত তরুণী মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার কাট্রাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সাভারে ভাড়া বাসায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করেন। তিনি লালমাটিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী।

অনশনরত তরুণী বলেন, ‘এক বছর আগে পুলিশ সদস্য সুব্রতর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে প্রেম। আমি প্রথম দিকে পাত্তা দেইনি কিন্তু আমাকে কলেজে গিয়ে মাঝে মধ্যে বিরক্ত করে। এই নিয়ে কলেজে তাকে আটকিয়েছিল। এরপর সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। পরে আমি রাজি হই। আমাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে নিয়ে বিয়ের কথা বলে সুব্রত আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। তবে আমি তাকে বারবার নিষেধ করার পরও সে আমার কথা মানেনি। এতদিন পর্যন্ত ভালোভাবেই চলছিল।’

তিনি বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার বিয়ের কথা বলে সুব্রত। কিন্তু এরপর থেকে সুব্রত আর আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে না। পরে আমি নিরুপায় হয়ে আজ সকালে ওদের বাড়িতে অবস্থান নিই। কিন্তু সুব্রতর মা-বাবা ও বোন আমাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেয়। শেষে সুব্রতর বাবা কয়েকদিন পরে বিয়ে দেবে বলে জানান।’ 

তরুণী আরও বলেন, ‘এখন যদি সুব্রত আমাকে বিয়ে না করে তাহলে আমি এই বাড়িতে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করব। এলাকার লোকজন বিচারে বসবে বলে জানিয়েছে। তারা যদি সঠিক বিচার না করে, তাহলে আমি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করব।’

এই বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, ‘তরুণী প্রেমের সম্পর্কের কথা আমাদের জানিয়েছেন। আমরা এই বিষয়ে নিয়ে পুলিশ সদস্যর বাবার সঙ্গে কথা বলি কিন্তু ছেলের বাবা মানতে নারাজ। তরুণী আমাদের ছেলের সঙ্গে অন্তরঙ্গ কিছু ছবিও দেখান।’

তবে অনশনের ব্যাপারে বাইশাকান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ‘মেয়ের সঙ্গে সুব্রতর দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক আছে। এর আগেও আমার কাছে বিচার চেয়েছিল। সুব্রত হাজির হয়নি। তবে আমি চাই মেয়েটাকে বিয়ে করুক।’

এ বিষয়ে বাইশাকন্দা ইউনিয়নের বিট পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফয়েজ উদ্দিন  বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি না। ভুক্তভোগী যদি অভিযোগ করেন তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রুহুল আমিন/জোবাইদা/অমিয়/

টাঙ্গাইলে বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা উদ্বোধন

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৩ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০২:৫৪ পিএম
টাঙ্গাইলে বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা উদ্বোধন
ছবি: খবরের কাগজ

টাঙ্গাইলে ‘বৃক্ষ দিয়ে সাজাই দেশ, সমৃদ্ধ করি বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে সাত দিনব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযান এবং বৃক্ষমেলা উদ্বোধন করা হয়েছে।

সোমবার (৮ জুলাই) সকালে শহরের শহিদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. ছানোয়ার হোসেন।

৮ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এ বৃক্ষমেলা আগামী ১৪ জুলাই শেষ হবে। 

এ উপলক্ষে সোমবার সকালে টাঙ্গাইল বন বিভাগের আয়োজনে এবং জেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একটি র‌্যালি বের হয়। 

র‌্যালিটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহিদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান বিন মোহাম্মদ আলী, টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান। 

পরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শতাধিক গাছের চারা বিতরণ করা হয়।

জুয়েল রানা/পপি/অমিয়/