![ইউটিউব দেখে আধুনিক চাষাবাদ](uploads/2024/05/15/kustia-1715756681.jpg)
ইউটিউব দেখে আধুনিক চাষাবাদ করে ছাত্রজীবনেই ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন মনিরুল ইসলাম। চলতি মৌসুমে প্রায় ১০ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল লালতীর পেঁয়াজ চাষ করেছেন তিনি। বিঘাপ্রতি ফলন পেয়েছেন ৮০ থেকে ১২০ মণ। সব মিলে ১০ বিঘায় প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০ মণ পেঁয়াজ পাবেন বলে জানান।
খরচ বাদে চলতি মৌসুমে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা লাভ করতে পারবেন বলে জানান এই কৃষক। এ ছাড়া তিনি চলতি মৌসুমে তিন বিঘা জমিতে রসুন এবং এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজ আবাদ করেছেন।
মনিরুল ইসলাম কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের কবুরাট এলাকার বাসিন্দা। তিনি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রি শেষ বর্ষের ছাত্র।
মনিরুল ইসলাম বলেন, চাকরিতে আয় সীমিত ও সীমাবদ্ধ। অন্যদিকে আধুনিক ও বাণিজ্যিক চাষাবাদ লাভজনক। সে জন্য পড়াশোনা করে চাকরির জন্য বসে না থেকে ইউটিউব দেখে চাষাবাদ শুরু করেছেন। রোপণ, পরিচর্যা, জমির ইজারাসহ প্রতিবিঘা চাষাবাদে তার খরচ হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা। আর প্রতিবিঘায় ৮০ থেকে ১২০ মণ পেঁয়াজ পেয়েছেন।
পড়শোনার পাশাপাশি কৃষিকাজের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মনিরুল বলেন, পড়াশোনা করে আধুনিক কৃষক ও কৃষিবিদ হতে চান। সে জন্য ইউটিউব দেখে এবং কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে পেঁয়াজ চাষে উদ্ধুদ্ধ হন। ২০১৫ সালে মাত্র ১৬ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করে লাভের মুখ দেখেছিলেন। এরপর থেকে তিনি চাষাবাদ বাড়াতে থাকেন। গত বছর ৫ বিঘা এবং চলতি মৌসুমে তিনি ১০ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের পেঁয়াজের চাষ করেছেন।
তিনি আরও জানান, চাষের পাশাপাশি বাড়িতে গরু, ছাগলের খামার তৈরির চেষ্টা করছেন। বর্তমানে তার বাড়িতে ৪টি গরু ও ১৭টি বিভিন্ন জাতের ছাগল রয়েছে। স্থানীয় কৃষক নুর ইসলাম জানান, তাদের এলাকায় প্রথমবারের মতো হাইব্রিড পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। এতে ফলন ভালো হওয়ার পাশাপাশি বাজারে দামও ভালো। সে জন্য তিনি আগামী বছর প্রায় চার বিঘা জমিতে হাইব্রিড পেঁয়াজ চাষ করবেন।
শহিদুল ইসলাম নামে আরেক কৃষক জানান, মনিরুলের চাষাবাদে মুগ্ধ অন্য চাষিরা। এখন অনেকেই তার কাছে পরামর্শ নিতে আসেন। অনেকের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করেছেন মনিরুল।
মনিরুলের মা মনিকা খাতুন জানান, চাষে ভালো ফলন হচ্ছে। অনেকেই তাদের বাড়িতে কাজ করছেন। অনেক টাকাও পাওয়া যাচ্ছে। তাই চাকরির জন্য আর দুঃখ হয় না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীস কুমার দাস জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শে উচ্চ ফলনশীল জাতের চাষাবাদ করে ছাত্রজীবনেই সফল মনিরুল ইসলাম। চলতি মৌসুমে মনিরুলের জমিতে ৮০ থেকে ১২০ মণ পেঁয়াজ হয়েছে। শিক্ষিতদের আধুনিক কৃষিতে উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ।
ইউএনও মাহবুবুল হক জানান, কৃষিবান্ধব সরকার কৃষিকে আধুনিকীকরণ ও বাণিজ্যিক রূপ দিয়েছে। মনিরুলের মতো অন্য তরুণ ও যুবকদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি প্রণোদনা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।