ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

তেজগাঁও ব্যবসায়ী সমিতির হাতে ডিমের বাজারের নিয়ন্ত্রণ: পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৪, ০২:০৪ পিএম
আপডেট: ২৬ মে ২০২৪, ০২:০৪ পিএম
তেজগাঁও ব্যবসায়ী সমিতির হাতে ডিমের বাজারের নিয়ন্ত্রণ: পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন
ছবি: সংগৃহীত

সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজার কারসাজির অভিযোগ এনেছে বাংলাদেশ পোলট্রি আ্যসোসিয়েশন (বিপিএ)। বিপিএ নেতারা বলেছেন, সারা দেশে করপোরেট কোম্পানি ও আড়তদারদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ডিমের দাম বাড়ানো-কমানো হয়। ফলে প্রান্তিক খামারিরা ডিম উৎপাদনের জন্য যে খরচ করেন সেটি তুলতে পারেন না। আবার একচেটিয়া সিন্ডিকেটের কারণে ভোক্তাদের ডিম কিনতে বাড়তি টাকা খরচ করতে হয়।

শনিবার (২৫ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সারা দেশে হঠাৎ করেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ডিমের বাজার অস্থির হয়ে যায়। এর নেপথ্যে রয়েছে রাজধানীর তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির কারসাজি। কেননা তারাই সারা দেশের ডিমের বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে একটি ডিমের উৎপাদন করতে খামারির খরচ হয় সাড়ে ৯ টাকা থেকে সাড়ে ১০ টাকা। বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকা থেকে সাড়ে ১২ টাকা। আমরা ডিমের এই দাম যৌক্তিক বলে মনে করছি। এখন ডিমের বাজার স্থির থাকায় উৎপাদক (খামারি) ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে এবং ভোক্তাও ন্যায্যমূল্যে ডিম কিনে খেতে পারছে। কিন্তু ডিম ব্যবসায়ী সমিতি এবং করপোরেট কোম্পানিগুলোর কারসাজিতে মাঝে মধ্যে বাজার অস্থির হয়ে যায়। খামারিরা তখন ডিম উৎপাদন খরচও তুলতে পারেন না।

সুমন হাওলাদার বলেন, দেশের ডিমের বাজারের নিয়ন্ত্রণ আড়তদার এবং করপোরেট কোম্পানিগুলোর হাতে। তারা যখন ইচ্ছা দাম বাড়ান আবার যখন ইচ্ছা হয় তখন দাম কমান। যেমন- হঠাৎ করেই খুচরা পর্যায়ে ডিমের দাম ১০ থেকে ২০ টাকা কমিয়ে ৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আবার হঠাৎ করেই ১টি ডিমের দাম ১৩ টাকা হয়ে যায়।

তিনি দাবি করেন, প্রতিদিন মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে ও ফেসবুকে পোস্ট করে ডিমের বাড়তি বা কম দাম বাস্তবায়ন করে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতি। আর সারা দেশেই এই দামে বেচাকেনা হয়।

সিন্ডিকেট নিজেদের ইচ্ছামতো ডিমের দাম কমিয়ে কোল্ড স্টোরেজে জমা করে। পরবর্তী সময়ে সেই ডিমই আবার বাড়তি দামে বিক্রি করা হয়। এতে করে প্রান্তিক খামারিরা ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পোলট্রি ব্যবসা থেকে সরে যাচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি মাসে নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে বিভিন্ন করপোরেট কোম্পানি খামারিদের গলা কাটছে।

তাই এসব সংকট নিরসন করতে করপোরেট কোম্পানি, আড়তদারের পোলট্রি ফিড, মুরগির বাচ্চা ও ডিমের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে ন্যায্যমূল্য নির্ধারণের দাবিও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিপিএর উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও বাংলাদেশ এসএমই ফোরামের সভাপতি চাষি মামুন, বিপিএর সহসভাপতি বাপ্পি কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার এবং প্রান্তিক খামারিরা।

পুঁজিবাজারে আসবে ঢাকাথাই অ্যালকোম্যাক্স

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:২৩ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:২৩ পিএম
পুঁজিবাজারে আসবে ঢাকাথাই অ্যালকোম্যাক্স
ঢাকাথাই অ্যালকোম্যাক্স পিএলসি

দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চায় ঢাকাথাই অ্যালকোম্যাক্স পিএলসি। কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হবে। প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করবে।

এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কোম্পানিটি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) আইপিওর আবেদন করেছে।

বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অ্যালুমিনিয়াম প্রোফাইলের একটি শীর্ষস্থানীয় প্রস্তুতকারক কোম্পানি ঢাকাথাই অ্যালকোম্যাক্স, ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং স্থানীয় বাজারে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে পুঁজিবাজার থেকে ৩০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। এজন্য কোম্পানিটি ৩ কোটি শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ঢাকাথাই অ্যালকোম্যাক্স স্থানীয় অ্যালুমিনিয়াম প্রোফাইলের বাজারে প্রায় ২০ থেকে ২২ শতাংশ মার্কেট শেয়ার ধারণ করে। কোম্পানির লক্ষ্য হলো কমপ্লায়েন্ট এবং উচ্চমানের পণ্য প্রবর্তনের মাধ্যমে বাজারের অংশীদারিত্ব প্রসারিত করে ক্রমবর্ধমান চাহিদাকে পুঁজি করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, উচ্চতর কাঁচামাল এবং জ্বালানি খরচের কারণে অ্যালুমিনিয়াম কোম্পানিগুলোর কার্যক্ষম খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, শিল্প সংস্থাগুলোর জন্য লাভের মার্জিন হ্রাস পেয়েছে।

জুলাই থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত কোম্পানিটি ২১৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা আয় করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের ছিল ১৯৩ কোটি ০৯ লাখ টাকা। কর-পরবর্তী নিট মুনাফা ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে বছরে ৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা হয়েছে। এই সময়ের জন্য শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৫৫ পয়সা এবং ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদের মূল্য ছিল ১১ টাকা ৩২ পয়সা।

ঢাকাথাই অ্যালকোম্যাক্স পিএলসির ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে রয়েছে প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

পুঁজিবাজার ৪০০ কোটি টাকা ফিরিয়ে আনতে ডিএসইকে নির্দেশ

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:২০ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:২০ পিএম
৪০০ কোটি টাকা ফিরিয়ে আনতে ডিএসইকে নির্দেশ
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ৫৭টি স্টক ব্রোকার ও ডিলার প্রতিষ্ঠান তাদের মূল ব্যবসার বাইরে ব্যাংকে আমানত, জমি কেনা, একই গ্রুপের অন্য প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান, অতালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ, পরিচালকদের গাড়ি কেনার জন্য ঋণসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করেছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারবাজারের বাইরে ৩৯৯ কোটি ৪৯ লাখ ৫২ হাজার ৫৫২ টাকা বিনিয়োগের প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আগামী অক্টোবরে মধ্যে এই অর্থ প্রতিষ্ঠানগুলোয় ফিরিয়ে আনতে (ডিএসইকে নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।

সম্প্রতি এই বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়েছে, ডিএসইর কমপ্লায়েন্স প্রতিবেদন এবং স্টক ব্রোকার ও ডিলার প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী থেকে দেখা গেছে, এসব প্রতিষ্ঠান তাদের নিবন্ধিত মূল ব্যবসার বাইরে অন্য উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যয় করছে।

শেয়ারবাজারের স্বার্থে এই বিষয়ে ডিএসইকে দুটি নির্দেশনা দিয়েছে বিএসইসি। এর মধ্যে রয়েছে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে স্টক ব্রোকার ও ডিলার প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্য খাতে বিনিয়োগ করা অর্থ ফিরিয়ে এনে মূল ব্যবসায় ব্যবহার করতে হবে। অর্থ ফিরিয়ে এনে বিনিয়োগ করার বিষয়টি নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডিএসইকে।

এই বিষয়ে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে অর্থ ফেরত আসার সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিএসইসির কাছে কমপ্লায়েন্স প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে ডিএসইকে। অবিলম্বে এই নির্দেশনা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বিএসইসি।

পুঁজিবাজারে অন্য খাতে অর্থ বিনিয়োগ করা স্টক ব্রোকার ও ডিলার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে এবি ইস্পাহানি সিকিউরিটিজ, এসিই ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস, রশীদ ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিসেস, দৌলতুন্নেসা ইকুইটিজ, এম-সিকিউরিটিজ, এরিজ সিকিউরিটিজ, ফার্স্ট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজ, মাল্টি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড সার্ভিসেস, রয়েল গ্রিন সিকিউরিটিজ, লতিফ সিকিউরিটিজ, ইউনিরয়্যাল সিকিউরিটিজ, মো. ফখরুল ইসলাম সিকিউরিটিজ, সালতা ক্যাপিটাল, দায়তুন হোল্ডিংস, আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ, ইতিহাদ সিকিউরিটিজ, সুরমা সিকিউরিটিজ হোল্ডিং কো., নভেলি সিকিউরিটিজ, সিএমএসএল সিকিউরিটিজ, নবিউল করিম সিকিউরিটিজ, এএনএফ ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, ড্রাগন সিকিউরিটিজ, শেলটেক ব্রোকারেজ, রোজ সিকিউরিটিজ, আরএনআই সিকিউরিটিজ, মশিহুর সিকিউরিটিজ, কাজী ইকুইটিজ, আলহাজ জাহানারা সিকিউরিটিজ, মিডওয়ে সিকিউরিটিজ, কেএইচবি সিকিউরিটিজ, কসমোপলিটন ইকুইটিজ, ফরচুন সিকিউরিটিজ (প্রাইভেট), শাকিল রিজভী স্টক, ইএমইএস সিকিউরিটিজ, পিস সিকিউরিটিজ, ট্রাস্টি সিকিউরিটিজ, মোনা ফাইন্যান্সিয়াল কনসালটেন্সি অ্যান্ড সিকিউরিটিজ, সাবভ্যালি সিকিউরিটিজ, ডরিন ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট, জিএমএফ সিকিউরিটিজ, গ্লোব সিকিউরিটিজ, আনোয়ার খান মডার্ন সিকিউরিটিজ, স্টক অ্যান্ড বন্ড, টোটাল কমিউনিকেশন, প্রাইলিংক সিকিউরিটিজ, অশাধী সিকিউরিটিজ, এডি হোল্ডিংস অ্যান্ড সিকিউরিটিজ, মিকা সিকিউরিটিজ, আকিজ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট, ঢাকা সিকিউরিটিজ, প্রুডেনশিয়াল ক্যাপিটাল, বে রিচ, রহমান ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট, বিনিময় সিকিউরিটিজ, ইনোভা সিকিউরিটিজ ও গিবসন সিকিউরিটিজ।

সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির প্রভাবে পুঁজিবাজারে তারল্যপ্রবাহ কমবে

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:১৬ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:১৬ পিএম
সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির প্রভাবে পুঁজিবাজারে তারল্যপ্রবাহ কমবে
বাংলাদেশ ব্যাংক

ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় না আসা পর্যন্ত সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকবে।  এই বার্তা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে চলতি মাসের ১৮ তারিখ।  এদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে মুদ্রানীতি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, অর্থনীতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ থাকলেও এখনো উচ্চপর্যায়ে রয়েছে মূল্যস্ফীতি। এ কারণে মূল্যস্ফীতির অবস্থান সংকোচনমূলক থাকবে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকে স্বাভাবিক প্রবেশ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সাংবাদিকরা বেশ কিছুদিন ধরে গভর্নরের অনুষ্ঠান বর্জন করছেন। এ কারণে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণার জন্য কোনো সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। ওয়েবসাইটে এটি প্রকাশ করা হয়েছে।  

সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির ফলে মুদ্রাবাজারে অর্থের সরবরাহে নিয়ন্ত্রণ থাকবে। ফলে আমানতের সুদহার কমার সম্ভাবনা নেই। এ অবস্থায় পুঁজিবাজারে তারল্য প্রবাহের ক্ষেত্রেও চাপ থাকবে বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ‘মূল্যস্ফীতি সহনীয় মাত্রায় না আসা পর্যন্ত সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকবে। নতুন মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহার (রেপো রেট) ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে বিশেষ রেপো বা স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটির (এসএলএফ) ঊর্ধ্বসীমা ও সুদহার করিডোরের নিম্নসীমা রিভার্স রেপো বা স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ)। বর্তমানে এসএলএফ ও এসডিএফের সুদহার যথাক্রমে ১০ ও ৭ শতাংশ। তারল্যের প্রয়োজনে বাণিজ্যিক ব্যাংক যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে, তখন তার সুদহার ঠিক হয় রেপোর মাধ্যমে। আর রিভার্স রেপোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখে। রেপো রেটকে নীতি সুদহার নামে অভিহিত করা হয়।

সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির প্রভাবে দেশে ব্যাংক ঋণের সুদহার ৯ থেকে বেড়ে ১৬ শতাংশে ঠেকেছে। পাশাপাশি বেড়েছে আমানতের সুদহারও। ক্ষেত্র বিশেষে দুই অঙ্কের সুদও মিলছে আমানতের বিপরীতে। এ অবস্থায় ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে অনেকেই পুঁজিবাজারের তুলনায় ব্যাংকে আমানত রাখার দিকে ঝুঁকছেন। এতে করে তারল্য সংকটে পড়েছে পুঁজিবাজার। এ অবস্থায় সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকার কারণে পুঁজিবাজারে তারল্য প্রভাবের ক্ষেত্রে চাপ থাকবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, সুদের হার বাড়লে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী কমে। কারণ বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকে টাকা রাখাকে নিরাপদ মনে করেন।  সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির ফলে সুদের হারে ঊর্ধ্বমুখিতা বজায় থাকলে পুঁজিবাজারে  এর প্রভাব পড়বেই। সুদ হার না কমলে পুঁজিবাজারের তুলনায় বিনিয়োগকারীদের কেউ কেউ ব্যাংকে আমানত রাখাকেই বেশি নিরাপদ মনে করতে পারেন।

এবারের মুদ্রানীতিতে বাজেট ঘাটতি মেটাতে ঋণের জোগান দিতে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হবে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। আর সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য হবে ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ। দেশের পুঁজিবাজারে এ বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকেই নিম্নমুখিতা দেখা যাচ্ছে। সূচকের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও ক্রমে নিম্নমুখী। গত জুনে এক বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে সবচেয়ে কম লেনদেন হয়েছে। এ সময় গড়ে ৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছে। এর আগের মাস মে’তে লেনদেন হয়েছিল ৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার। 

অবশ্য সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির প্রভাব যা পড়ার সেটি এরই মধ্যে পুঁজিবাজারে প্রতিফলিত হয়েছে। ফলে নতুন করে আর প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন কেউ কেউ। ডিএসইর এক সদস্য বলেন, এবারের মুদ্রানীতিতে অনেক বিষয় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। তাই পুঁজিবাজারের মুদ্রানীতির প্রভাব তেমন একটা পড়বে না। 

তা ছাড়া এ বছরের এপ্রিলে ৪ কোটি ৭০ লাখ, মার্চে ৫ কোটি ৪০ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ১১ কোটি ৫০ লাখ ও জানুয়ারিতে ৬ কোটি ৫০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছিল। গত বছরের জুনে পুঁজিবাজারে গড়ে ৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছিল। গত বছরের জুলাইয়ে ৭ কোটি ২০ লাখ, আগস্টে ৪ কোটি, সেপ্টেম্বরে ৫ কোটি ৭০ লাখ, অক্টোবরে ৪ কোটি ২০ লাখ, নভেম্বরে ৩ কোটি ৯০ লাখ এবং গত ডিসেম্বরে পুঁজিবাজারে ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছিল।

হবিগঞ্জে চা উৎপাদন বেড়েছে ৩০ শতাংশ

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:০৮ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:০৮ পিএম
হবিগঞ্জে চা উৎপাদন বেড়েছে ৩০ শতাংশ
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় সুরমা বাগানে চা পাতা তুলছেন একজন শ্রমিক। ছবি : খবরের কাগজ

চলতি মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টি আর খড়ায় পুড়েছে চা বাগানগুলো। একই সঙ্গে আক্রান্ত হয়েছিল বিভিন্ন রোগে। এ অবস্থায় নতুন কুঁড়ি না আসায় উৎপাদনে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দেয়। তবে সম্প্রতি পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় ঘুরে দাঁড়াচ্ছে চা শিল্প। এরই মধ্যে নতুন কুঁড়িতে ভরে উঠেছে বাগানগুলো। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৃষ্টির এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে চায়ের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট ও মাধবপুরে বিভিন্ন চা বাগান ঘুরে দেখা যায়, চোখের সীমানাজুড়ে চা বাগানের সবুজ-সতেজ সেই চিরচেনা রূপ। বৃষ্টির পানির ছোঁয়ায় বাগানে গাছগুলো কুঁড়িতে ভরে উঠেছে। পরম যত্নে পাতা তুলছেন শ্রমিকরা।

চলতি বছর চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৮০ লাখ কেজি। তবে মৌসুম শুরুর দিকে এপ্রিল ও মে মাসে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি শিল্পটি। অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে লক্ষমাত্রা অর্জনে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা যায়। তবে মে মাসের শেষে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় জুন থেকে বাগানগুলোতে আসতে শুরু করে নতুন কুঁড়ি। এর পর থেকে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় জুলাইয়ে বাগানগুলোতে উৎপাদন অন্তত ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

মাধবপুরের সুরমা চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক মলয় দেবরায় বলেন, ‘প্রথমদিকে আমাদের বাগানের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। বৃষ্টি না হওয়ায় যেমন নতুন কুঁড়ি আসেনি, তেমনি বাগানগুলো রোগে আক্রান্ত হয়। মে মাসের শেষের দিকে যখন বৃষ্টি হয় তখন বাগানগুলোর অবস্থা পরিবর্তন হতে শুরু করে। এখন অবস্থা খুবই ভালো।’

তিনি বলেন, ‘তবে এই বৃষ্টির ধারাবাহিকতা ঠিক ছিল না। টানা বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু চা বাগানের জন্য সবচেয়ে ভালো হয়, এক দিন বৃষ্টি, এক দিন রোদ। এটা নতুন পাতা আসতে সহযোগিতা করে। সর্বশেষ এই বৃষ্টিতে আমাদের অনেক উপকার হয়েছে।’

সুরমা চা বাগানের ব্যবস্থাপক বাবুল সরকার বলেন, ‘প্রথম অবস্থায় আমরা খুবই হতাশ ছিলাম। কারণ, এর আগে বাগানের অবস্থা এত খারাপ হয়নি। পুরো বাগান পুড়ে যাচ্ছিল। তবে বৃষ্টি হওয়ার কারণে এখন বাগানের অবস্থা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। এর মধ্যে আমাদের বাগানে উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।’

আয় বেড়েছে শ্রমিকদের
বৃষ্টিতে বাগানগুলোর গাছে নতুন কুঁড়িতে ভরে যাওয়ায় আয় বেড়েছে চা শ্রমিকদেরও। নিয়ম অনুযায়ী একজন শ্রমিক দৈনিক মজুরি পান ১৭০ টাকা। তবে এর জন্য প্রত্যেক শ্রমিককে পাতা তুলতে হয় ২৪ কেজি। তবে ২৪ কেজির অতিরিক্ত পাতা তুললে কেজি প্রতি ৫ টাকা পান শ্রমিকরা।

বর্তমানে একজন শ্রমিক ৭০ থেকে ৮০ কেজি পর্যন্ত পাতা তুলতে পারছেন। এতে একেকজন শ্রমিক দৈনিক অতিরিক্ত আয় করছেন ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। চা শ্রমিক মিনতি বাউরি বলেন, ‘আগে বাগানের অবস্থা খারাপ আছিল। তখন আমরা ২৪ কেজি পাতাই তুলতে পারতাম না। এখন বাগানের অবস্থা ভালো হয়েছে। বৃষ্টি হইছে। এখন নতুন পাতা আইছে। আমরা পাতাও বেশি বেশি তুলতে পারছি।’

তিনি বলেন, ‘পাতা থাকলে একজন মানুষ ৭০ থেকে ৮০ কেজি পাতা তুলতে পারেন। আমরাও বেশি বেশি পাতা তুলছি।’

চাঁনপুর চা বাগানের শ্রমিক আরতি মুড্ডা বলেন, ‘২৪ কেজি পাতা তুললে আমরা ১৭০ টাকা মজুরি পাই। এখন বৃষ্টি আসায় পাতা বেশি তুলছি। প্রতিদিন ৬০-৭০ কেজি পাতা তুলছি। আমরা এক কেজিতে ৫ টাকা করে পাই। দৈনিক ২০০-২৫০ টাকা বেশি পাচ্ছি।’

বৃষ্টি না হওয়ায় বিপাকে আমন চাষিরা

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৫৯ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:০০ পিএম
বৃষ্টি না হওয়ায় বিপাকে আমন চাষিরা
নড়াইলের ধোপাখোলা এলাকায় সেচ পাম্পের পানি দিয়ে রোপা আমনের জমি চাষের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে । ছবি: খবরের কাগজ

রোপা আমন মৌসুমে কৃষকরা বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভর করে ধান চাষ করেন। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় রোপা আমন ধান চাষে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। বাধ্য হয়ে জমিতে সেচ দিয়ে ধানের চারা রোপণ করছেন তারা। এতে কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। 

কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভর করে আমরা ধানের চারা রোপণ করি। বৃষ্টির পানির কারণে রোপা আমন উৎপাদনে খরচ কম হয়। কিন্তু চলতি মৌসুমে ধানের চারায় সেচ দিতে হয়েছে। এতে করে আমাদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।’

ইস্রাফিল হাওলাদার বলেন, ‘আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল। শ্রাবণের প্রায় অর্ধেক মাস পেরিয়ে গেলেও তেমন বৃষ্টির দেখা মিলছে না। যার কারণে আমরা জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে পারছি না, এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’

দীপঙ্কর বিশ্বাস বলেন, ‘প্রচুর বৃষ্টির পানির দরকার ধানের চারা লাগানোর জন্য। বৃষ্টি না হওয়ার কারণে চারা তোলা সম্ভব হচ্ছে না।’

গৌতম বিশ্বাস বলেন, ‘বৃষ্টির পানি না পাওয়ার কারণে জমিতে সেচ দিয়ে ধানের চারা লাগাতে হচ্ছে। ধানের চারার বয়স বেশি হয়ে গেলে ফলন ভালো হয় না। সেচের কারণে প্রতি একর জমিতে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ বেশি হবে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৪২ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।

নড়াইল পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুবির দেব বলেন, ‘যেখানে পানির সরবরাহ আছে, সেখানে ধানের চারা রোপণ করতে আহ্বান জানাই। পাশাপাশি সমন্বিতভাবে জলাধার গড়ে তোলতে হবে।’ 

সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ‘অন্য জেলার তুলনায় এ জেলায় বৃষ্টিপাত কিছুটা কম হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকের উৎপাদন খরচ বাড়বে। তবে আগামী দিনগুলোতে বৃষ্টির হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে কৃষকদের ধান উৎপাদন খরচ কমে যাবে। আশা করি, তারা লাভবান হবেন।’