ঢাকা ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪

নির্বাচনি সহিংসতা বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ গুলি, আগুন

প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪০ পিএম
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:১৬ পিএম
বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ গুলি, আগুন
প্রতীকী ছবি।
  • পাবনায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, গুলি
  •  বাকেরগঞ্জে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনি কার্যালয়ে আগুন
  •  মোংলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় নৌকার দুই কর্মী আহত
  •  লক্ষ্মীপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলার অভিযোগ

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশজুড়ে এখন ভোটের আমেজ। চলছে প্রার্থী ও সমর্থকদের প্রচার-প্রচারণা। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই ঘটছে নির্বাচনি সহিংসতা। পাবনায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। বরিশালের বাকেরগঞ্জে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনি কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে। বাগেরহাটের মোংলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় নৌকার দুই কর্মী আহত হয়েছেন। টাঙ্গাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ও লক্ষ্মীপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবরের কাগজ প্রতিনিধিদের পাঠানো এ-সংক্রান্ত আরও খবর-

পাবনায় বিএনপি-আ.লীগ পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, গুলিবর্ষণ

বিএনপির নির্বাচন বর্জনের লিফলেট বিতরণ ও নৌকার নির্বাচনি প্রচারের সময় দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বেলা ১১টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদী শহরের পিয়ারপুর মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ভোট বর্জনের লিফলেট বিতরণ করছিলেন বিএনপির কারাবন্দি নেতা জাকারিয়া পিন্টুর সমর্থকরা। একপর্যায়ে তারা ওই এলাকায় থাকা ঈশ্বরদী পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে পৌঁছেন। এ সময় আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে কয়েকজন বের হয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওই এলাকা ছাড়তে বলেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।

বাকেরগঞ্জে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনি কার্যালয়ে আগুন

বরিশালের বাকেরগঞ্জে স্বতন্ত্র প্রার্থী শামসুল আলম চুন্নুর ট্রাক মার্কার নির্বাচনি কার্যালয়ে সোমবার গভীর রাতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যান প্রতিপক্ষরা। এতে কার্যালয়ের চেয়ার টেবিল ও ট্রাক মার্কার ব্যানার পুড়ে ছাই হয়ে যায়। রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড বোতরা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। স্বতন্ত্র প্রার্থী শামসুর আলম চুন্নু অভিযোগ করে বলেন, ‘বিভিন্ন স্থানে আমার ব্যানার, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। সোমবার রাতে রঙ্গশ্রী ইউনিয়নে আমার নির্বাচনি কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে নৌকা মার্কার সমর্থকরা।’ 

মোংলায় স্বতন্ত্র সমর্থকদের হামলায় নৌকার দুই কর্মী আহত 
 
মোংলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঈগল প্রতীকের কর্মীদের হামলায় নৌকা প্রতীকের দুই কর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে একজনকে খুলনা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোংলায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আহতদের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নৌকার কর্মী উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা শেখ সাদী বাদলকে (৩২) গতকাল বেলা ১১টার দিকে পৌর শহরের কবরস্থানের বান্ধাঘাটা এলাকায় মারধর করেন ঈগল প্রতীকের কর্মীরা। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের প্রধান কাঁচাবাজারে নৌকার কর্মী নাসির খাঁকে (৪০) মারধর করেন ঈগল প্রতীকের কর্মীরা। 

টাঙ্গাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ

প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন, প্রচারে বাধা, মিথ্যা মামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ করেছেন টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন। গতকাল দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, নির্বাচনের উৎসবমুখর পরিবেশকে নষ্ট করার জন্য একটি মহল অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, কর্মীদের শারীরিক নির্যাতন-মারধর, পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা ও পোস্টার লাগাতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া চিহ্নিত সন্ত্রাসী দিয়ে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে।

লক্ষ্মীপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলার অভিযোগ

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, ভাঙচুর, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া ও এলাকা ছাড়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নের বিরুদ্ধে। গতকাল সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সংরক্ষিত আসনের এমপি কাজী সেলিনা ইসলাম। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরউদ্দিন চৌধুরীর নির্দেশে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর বেশ কয়েকজন সমর্থককে তুলে নিয়ে নয়নের বাসায় আটকে রাখেন। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে যেন ভোট বা প্রচারে অংশ না নেন, এ ধরনের হুমকি-ধমকি দিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রচার মাইক ভাঙচুর ও নির্বাচনি কার্যালয় দখলের চেষ্টাও করেন নৌকা প্রার্থীর সমর্থকরা। 

এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, সব প্রার্থী শান্তিপূর্ণভাবে মিলেমিশে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কোনো লোকজনকে ধরে নিয়ে আসা হয়নি। এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি।

বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:২০ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:২০ এএম
বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে
বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী জীশান মীর্জা। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান এখন শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

রবিবার (৭ জুলাই) সাংবাদিকদের তিনি জানান, অনুসন্ধান শেষ হলে কমিশনের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। এরপর মামলা হবে কী না, তা কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।

এ ছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট নেওয়ার ঘটনায় আরেকটি অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ জারি হয়েছে। সম্পদবিবরণী দিতে তাদের ২১ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।

বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে গত ২১ এপ্রিল অনুসন্ধান শুরু হয়। বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে এখন পর্যন্ত ঢাকায় ১২টি ফ্ল্যাট, দেশের বিভিন্ন জেলায় ৬৯৭ বিঘা জমি, একাধিক মৎস্য ও গরুর খামার, রিসোর্ট, ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, বিও অ্যাকাউন্টসহ ৩৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, সিটিজেন টেলিভিশনসহ ৫টি পূর্ণ মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ৮টি ব্যবসায়িক শেয়ার পাওয়া গেছে। আদালতের নির্দেশে এসব অর্থ-সম্পদ ক্রোক ও ফ্রিজ করা হয়েছে। 

অবৈধ সম্পদের অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধান চলাকালে বেনজীর আহমেদ গত ৪ মে সপরিবারে দেশ ছাড়েন। তিনি ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ছিলেন। এর আগে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত র‍্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হিসেবেও দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেন।

 

রাজধানীতে সহপাঠীর হাতে শিক্ষার্থী খুন, গ্রেপ্তার ১

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:৫২ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:৫২ এএম
রাজধানীতে সহপাঠীর হাতে শিক্ষার্থী খুন, গ্রেপ্তার ১
মিরপুর কমার্স কলেজের একাদশ শ্রেণির (বিজ্ঞান বিভাগ) শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান রাফিত। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান রাফিত (১৮) হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চৌধুরী রাজিন ইকবালকে (১৮) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। 

রবিবার (৭ জুলাই) রাতে হবিগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে রাজিন ও তার বাবা ইকবাল হোসাইনকে আসামি করে মামলা করেন নিহত রাফিতের বাবা আবুল বাশার। রাত সাড়ে ১০টার দিকে র‍্যাবের একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। 

গত শনিবার বিকেলে সহপাঠী রাফিতকে কোচিং শেষে বাসায় ডেকে নিয়ে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে বাসার সামনে ফেলে রাখেন রাজন। এ ঘটনা জানাজানি হলে আত্মগোপনে চলে যান তিনি।

আরাকান আর্মির বোমায় টেকনাফে রোহিঙ্গা নিহত

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৫ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:২০ এএম
আরাকান আর্মির বোমায় টেকনাফে রোহিঙ্গা নিহত
বোমার আঘাতে নিহত মোহাম্মদ জুবায়ের। ছবি: খবরের কাগজ

কক্সবাজারের টেকনাফের জালিয়ার দ্বীপ পয়েন্টের নাফ নদীতে মাছ শিকারের সময় মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির নিক্ষেপ করা বোমার আঘাতে এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। তার নাম মোহাম্মদ জুবায়ের। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২ রোহিঙ্গা জেলে।

রবিবার (৭ জুলাই) রাত ১০টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওসমান গনি।

নিহত জুবায়ের হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া ক্যাম্পের হামিদ হোসেনের ছেলে। আহতরা হলেন, লেদা-২৪ নম্বর ক্যাম্পের কামাল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ জাবের ও ২৭ নম্বর ক্যাম্পের মোহাম্মদ শুক্কুর। পেশায় তারা তিনজনই কাঁকড়া শিকারি। 

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওসমান গনি জানান, বিকেলে নাফ নদীর জালিয়ার দ্বীপের আশেপাশে কাঁকড়া শিকার করছিলেন তিনজন। এ সময় মায়ানমারের দিক থেকে ছোড়া বোমার আঘাতে তিনজনই গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান মোহাম্মদ জুবায়ের। আহত দুজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মুহিববুল্লাহ মুহিব/এমএ/

কোটাবিরোধী আন্দোলন এবার একদফা দাবিতে দেশজুড়ে ব্লকেড কর্মসূচি

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ১১:১৫ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:০৮ এএম
এবার একদফা দাবিতে দেশজুড়ে ব্লকেড কর্মসূচি
ছবি: খবরের কাগজ

সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে চার দফা দাবিতে টানা লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছে। এবার লাগাতার আন্দোলনের সপ্তম দিনে এসে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি দেশ জুড়ে পালন শেষে এক দফা দাবির ঘোষণা দেন। দাবিটি হলো- সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে সংস্কার করতে হবে। ঘোষিত এই দাবিতে দেশজুড়ে ব্লকেড কর্মসূচি এবং ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত থাকার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীদের দুই সমন্বয়ক।

রবিবার (৭ জুলাই) রাত ৮টায় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দেলন’ এর প্রধান মুখপাত্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম এবং আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এ ঘোষণা দেন। 

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এতোদিন ধরে আমাদের চার দফা দাবি ছিল। কিন্তু সোমবার থেকে সারাদেশে এক দফা দাবিতে কার্যক্রম চলবে। আমাদের দাবিটি হচ্ছে— সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটাকে সংস্কার করতে হবে।

এদিকে শাহবাগে অবরোধ চলাকালীন এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সরকারের একটি অংশের সঙ্গে আলোচনা হয়। পরে রাত পৌনে ৮টায় শাহবাগে আন্দোলনকরীদের অস্থায়ী মঞ্চে ফিরে আসেন। ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং প্রধান সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন আমরা বলেছি আমরা রাজপথ থেকে এই ফয়সালার স্পষ্ট জানতে চাই। কোন আলাপ, সংলাপ, গোলটেবিল হবে না ৷ আমাদেরকে বলা হচ্ছে এটি সাব জুডিশিয়ারি ম্যাটার, একটি আদালতের বিষয়। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমরা নির্বাহী বিভাগ এবং সরকারের কাছে জানতে চেয়েছি কেন ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল করা হলো। সরকারের কাছে এখনো সুযোগ রয়েছে, নতুন একটি পরিপত্র ঘোষণা করার।

তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের আংশিক সমাধান হয়েছিল, দ্বিতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে কোটা সংস্কারের যৌক্তিক সমাধান আমরা পাইনি। এবার যখন আমরা রাস্তায় নেমেছি, আমরা এখন সকল গ্রেডের কোটা সংস্কার নিয়ে ঘরে ফিরতে চাই।

পরবর্তী কর্মসূচির প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, আমাদের আন্দেলন নগর থেকে নগরে, মহানগর থেকে মহানগরে সাড়া ফেলেছে। কাল থেকে এই আন্দোলন আরও অধিক বেশি ছড়িয়ে পড়বে। ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আমাদের যে ছাত্র ধর্মঘট চলছে, সেটি অনির্দিষ্টকালের জন্য অব্যাহত থাকবে এবং আমাদের যে ব্লকেড কর্মসূচি সেটি আরও বৃদ্ধি করে দেশের বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে এর কার্যক্রম চলবে। আজকে আমরা শাহবাগ থেকে কাওরান বাজার পর্যন্ত গিয়েছি, আগামীকাল আমরা ফার্মগেট পার হয়ে যাব। সোমবার সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সবাই জমায়েত হয়ে আমরা আবার আমাদের ব্লকেড কর্মসূচি পালন করব। তারা ভেবেছিল আমরা ক্লান্ত হয়ে ফিরে যাব কিন্তু সেটিকে আমরা ভুল প্রমাণিত করব। দাবি না আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা পড়ার টেবিলে ফিরব না। আমরা ’৫২, ’৬৬, ’৭১, ’১৮ সালে হারিনি এবং ’২৪ সালেও হারব না।’

পরে রাত ৮টা ৫ মিনিটে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিলে শাহবাগে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিকেল সোয়া তিনটা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রাজু ভাস্কর্য-চারুকলা শাহবাগ মোড়ে গিয়ে শিক্ষার্থীরা অবরোধ করেন। 

এদিকে শাহবাগ অবরোধের দশ মিনিট যেতে না যেতে ৪টা ৫ মিনিটে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় দখল করেন। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জাতীয় পতাকা উড়াতে থাকেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

অন্যদিকে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে রাখে ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা এবং সায়েন্সল্যাব অবরোধ করে রাখে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী। এছাড়াও রাজধানীর চাঁনখারপুল, মহাখালী-মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড় অবরোধ করে রাখে আন্দোলনকারীরা। পরে রাত আটটার পূর্ব মূহুর্তে বিভিন্ন সময়ে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার, বুধবার, বৃহস্পতিবার, ও শনিবার (৬ জুলাই) একই দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। ঘণ্টা খানেক অবরোধ শেষে শাহবাগ ত্যাগ করেন আন্দোলনকারীরা। গত শনিবার দেড় ঘণ্টার বিক্ষোভ মিছিল এবং আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে শাহবাগ অবরোধ শেষে রবিবার থেকে সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ব্লকেড করার ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীরা এর নাম দেয় ‘বাংলা ব্লকেড।’

আরিফ জাওয়াদ/এমএ/

বন্যার পূর্বাভাসমূলক পদক্ষেপ : ৬২ লাখ ডলার সহায়তা জাতিসংঘের

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৪০ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৪০ পিএম
বন্যার পূর্বাভাসমূলক পদক্ষেপ : ৬২ লাখ ডলার সহায়তা জাতিসংঘের
জাতিসংঘ

পূর্বাভাসমূলক পদক্ষেপের উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের যমুনা অববাহিকার পাঁচটি জেলায় ঝুঁকিপূর্ণ ৪ লাখ মানুষকে ৬২ লাখ ডলার দিয়েছে জাতিসংঘ কেন্দ্রীয় জরুরি ত্রাণ তহবিল (সিইআরএফ)। এটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলোকে সহায়তা করবে এবং বন্যার প্রভাব প্রশমিত করবে।

রবিবার (৭ জুলাই) জাতিসংঘের বাংলাদেশ অফিসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। 

এতে বলা হয়, পূর্ব-বিন্যস্ত তহবিল জাতিসংঘের চারটি সংস্থাকে প্রদান করা হয়েছিল। এগুলো হলো খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। পূর্বাভাস দেওয়া এলাকায় বন্যার আগেই মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য এসব সংস্থাকে তহবিল দেওয়া হয়েছিল। 

আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা এবং দুর্যোগের পূর্বাভাসে বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি ব্যবহার করে এই সিইআরএফ বাস্তবায়নকারী অংশীদারদের বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া এবং সিরাজগঞ্জ জেলায় চার লাখ মানুষের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম করেছে, যার মধ্যে ৯২ হাজার ৮৯ জন পুরুষ, ১ লাখ ২৭ হাজার ৯০ জন মহিলা, ১ লাখ ৫৯ হাজার ১২১ জন শিশু এবং ৬ হাজার ৪৫ জন প্রতিবন্ধী আছেন। 

৮০ হাজার পরিবারের প্রত্যেকটি প্রত্যাশিত বহুমুখী নগদ স্থানান্তর, পানি পরিশোধন সরবরাহ, কৃষি সহায়তা, মর্যাদা এবং শিশুর কিট এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার তথ্য পরিষেবা পাবে উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস সময়মতো তহবিল বিতরণকে স্বাগত জানিয়েছেন।