![অর্থনীতি গতিশীল রাখাই নতুন সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ : অর্থমন্ত্রী](uploads/2024/01/09/1704814879.1698759942.finance minkk.jpg)
দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখাই নতুন সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমিও একমত যে, আগামীতে আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অর্থনীতি। এটাকে গতিশীল ও শক্তিশালী রাখতে হবে। অর্থনীতি যাতে কোনোভাবেই পথ না হারায়, সেদিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।’
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
কুমিল্লা-১০ আসনে (লালমাই–নাঙ্গলকোর্ট) জয়ী হওয়ার পর মঙ্গলবার তিনি সচিবালয়ে প্রথম আসেন। এ সময় অর্থমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ নিয়ে টানা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মুস্তফা কামাল, যিনি আগের মেয়াদে পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ব্যাংক খাতসহ অর্থনীতির নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বর্তমানে রিজার্ভের যে মজুত আছে, অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো। গ্রস বলেন, নিট বলেন, আমি দাবি করি রিজার্ভ ভালো অবস্থানে আছে।’ এ সময় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, বিদায়ী বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত আইএমএফ যে টার্গেট দিয়েছে তা পূরণ হয়নি। এর জবাবে তিনি বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল যে টার্গেট দিয়েছে, তা কখনো পূরণ হবে না। সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন করেন অর্থমন্ত্রী। আইএমএফ কী টার্গেট দিয়েছে বলেন? ১২ দিনের ইনকাম হচ্ছে আমাদের লাইবেলিটি (দায়)। আমাদের যে রেমিট্যান্স আসে সেই পরিমাণও তো আমরা ঋণ নিচ্ছি না। আমি এখনো বিশ্বাস করি, বর্তমানে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স আসে তার চেয়ে দ্ধিগুণ আনা যাবে।’
নির্বাচনের পরের দিন সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামীতে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অর্থনীতি, আপনি কী বলেন, এ প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঠিকই বলেছেন। আমাদের এবং ওনার (প্রধানমন্ত্রী) চিন্তা একই। তিনি যা চিন্তা করেন, আমরা একই চিন্তা করি। কারণ, আমাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হয়। অর্থনীতি দুর্বল হলে সরকারের টিকে থাকা কঠিন হবে। দেশ এগোবে না। আমি মনে করি, বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে।’
ব্যাংক খাত নিয়েও কথা বলেন মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতে আমরা রিফর্ম (সংস্কার) এনেছি। এই রিফর্মের কারণে এখনো জীবিত আছি। যদি আমাদের ৯-৬ সুদের হার না থাকত... আমরা যদি আগের মতো সুদের হার ২২-২৪ শতাংশ রাখতাম, তাহলে এতদিন আমরা কোথায় চলে যেতাম, হারিয়ে যেতাম। দেশের অর্থনীতি হারিয়ে যেত। দেশের মানুষ হারিয়ে যেত।’
অর্থনীতির অগ্রগতির কথা তুলে ধরে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতির তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৩৫তম। আমরা যেভাবে এগোচ্ছি তাতে ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের উন্নত শীর্ষ ২০টি দেশের কাতারে যাবে বাংলাদেশ।’
মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি চালাতে গেলে দরকার মূল্যস্ফীতির। মূল্যস্ফীতি ছাড়া অর্থনীতি চলতে পারে না। গত আট-দশ বছরে আমরা মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রেখেছি। এর চাইতে ভালো কেউ রাখতে পারবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে- এমন গুঞ্জনের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘জোর করে কেউ কিছু করলে আমরা কি কিছু করতে পারি? কোনো অপরাধ করলে শাস্তি আছে, কিন্তু বাংলাদেশ কোনো অপরাধ করে নাই। অপরাধ করলে ধরা পড়ত।’
এমএ/