![সময় পেলেই ঠিক হবে সিলেটের আউটফিল্ড](uploads/2024/01/31/1706695371.Sylhet-Outfield.jpg)
চা বাগান ঘেরা নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। প্রকৃতির রূপে ভরপুর এই মাঠের প্রশংসা হয় বিশ্বজুড়ে। হাজারো প্রশংসা পাওয়া সিলেটের মাঠে লোপিত হয়েছে কালিমা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ চলাকালে আউটফিল্ডের কারণে পেয়েছিল ডিমেরিট পয়েন্ট। বাজে আউটফিল্ডের কারণে সমালোচনার মুখেও পড়েছিল। বিপিএলের সিলেট পর্বের শুরুতে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বাজে আউটফিল্ড নিয়ে হয়েছে সমালোচনা। এমন সমালোচনার মধ্যে মাঠটির কিউরেটরের দায়িত্বে থাকা টনি হেমিং জানান, আরও অনেক দূর যাওয়ার আছে।
টনি হেমিংয়ের আগে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের কিউরেটরের দায়িত্বে ছিলেন প্রবীণ হিঙ্গানিকর। এর আগে কাজ করেছিলেন আরেক ভারতীয় কিউরেটর সঞ্জীব আগারওয়াল। ২০২২ নারী এশিয়া কাপ চলাকালে তার তৈরি করা উইকেট নিয়ে হয়েছিল তুমুল সমালোচনা। টি-টোয়েন্টির জন্য সঠিক উইকেট নয়- এমন অভিযোগ তোলেন ক্রিকেটাররা। এর জেরে সঞ্জীব আগারওয়াল কিউরেটরের চাকরি হারান।
সঞ্জীবের স্থলাভিষিক্ত হন চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের কিউরেটরের দায়িত্বে থাকা প্রবীণ হিঙ্গানিকর। চট্টগ্রাম ও সিলেট- দুই ভেন্যুতে কিউরেটরের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ভারতের মাটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী হারা হওয়া হিঙ্গানিকর চাকরি ছেড়ে দিলে কিউরেটরহীন হয়ে পড়ে সিলেট। সবশেষ নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে বিসিবির হেড অব কিউরেটর টনি হেমিং বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে কাজ করছেন সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে।
তিন তিনবার কিউরেটরের বদল হওয়া সিলেটের আউটফিল্ড নিয়ে হেমিং নিজেও অসন্তুষ্ট। নিউজিল্যান্ড সিরিজে ডিমেরিট পয়েন্ট পাওয়া সিলেটের আউট ফিল্ডের কী অবস্থা? এমন প্রশ্নের জবাবে হেমিং খবরের কাগজকে বলেন, ‘আরও অনেকটা পথ যেতে হবে। রাতারাতি একটি মাঠের আউটফিল্ড ঠিক করা সম্ভব না। এখানে প্রাকৃতিক কিছু বিষয়ও থাকে। আউটফিল্ড ঠিক হতে আরও সময় লাগবে।’ কেন আউট ফিল্ড ঠিক হতে সময়ের প্রয়োজন সেটাও ব্যাখ্যা দিয়েছেন হেমিং। তার কথায়, ‘আমার কাছে সব ধরনের যন্ত্রপাতি আছে। কিন্তু রোদ-বৃষ্টি তো আর আমার হাতে নেই। রোদ-বৃষ্টি সবকিছু ঠিকঠাকভাবে পেলে আউটফিল্ড ঠিক হয়ে আসবে। এটার জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।’ সিলেটের মতো স্টেডিয়ামের আউটফিল্ড নষ্ট হওয়ায় খানিকটা আক্ষেপ আছে হেমিংয়ের। এর জন্য অবশ্য পূর্বসূরিদের দায় দেখেন। তিনি বলেন, ‘আগেই আউটফিল্ড নষ্ট হয়েছে। তারা সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে আউটফিল্ডটা ভালো থাকত। ব্রডকাস্টে সুন্দর দেখা যেতে মাঠটি।’
এবারের বিপিএলে সিলেটে চার-ছক্কার ওই বিধ্বংসী রূপের দেখা মেলেনি। ঢাকার পর সিলেটেও বিপিএল পায়নি রানের গতি। এ নিয়ে খবরের কাগজকে হেমিং বলেন, ‘উইকেট ঠিক আছে। ব্যাটারদের রান করতে হবে।’ হেমিং নিজের পক্ষে সাফাই গাইতেই পারেন। কারণ, বিপিএলে মিরপুরের উইকেট নিয়ে সমালোচনা হলেও সিলেটের উইকেট এখন পর্যন্ত পেয়েছে স্টার মার্ক। ক্রিকেটারদের উইকেট নিয়ে অভিযোগ না থাকায় স্পষ্ট সিলেটে ব্যাটাররা পারছেন না নিজেদের মেলে ধরতে।
বিপিএলের পর বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়োজনের কথা রয়েছে। এ ছাড়া চলতি বছরে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বেশ কয়েকটি ম্যাচ আয়োজন করবে ভেন্যুটি। বিপিএলের পরের আন্তর্জাতিক সিরিজ না হলেও নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে আউটফিল্ড পুরোপুরি ঠিক হয়ে আসবে বলে বিশ্বাস টনি হেমিংয়ের। তিনি বলেন, ‘এখনো অনেক সময় বাকি আছে। সামনের বর্ষা মৌসুমে ঠিকঠাক পানি পেলে ঘাসগুলো সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারবে। বিপিএলের পর খেলার চাপ খানিকটা কম থাকবে, তখন আউটফিল্ডের সঠিক যত্ন নেওয়া যাবে। তাই নারী বিশ্বকাপের (টি-টোয়েন্টি) আগে আউটফিল্ড ঠিক হয়ে আসবে বলে আমার মনে হয়।’