![নেইমার থেকে দিবালা, কোপায় নেই একঝাঁক তারা](uploads/2024/06/21/naymer-1718944820.jpg)
বিশ্বজুড়ে লাতিন ফুটবলের ভিন্ন আবেদন বা সৌরভ আছে। সেই সৌরভেই এখন বুঁদ থাকার সময়। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) থেকে (বাংলাদেশ সময় আজ সকাল) শুরু হয়ে গেছে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই-কোপ আমেরিকাকোপ আমেরিকা। লিওনেল মেসি, অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া, ভিনিসিউস জুনিয়র, রদ্রিগোদের নিজ নিজ দেশের জার্সিতে নৈপুণ্য দেখানোর সময় এখন। যুক্তরাষ্ট্রে আগামী ১৪ জুলাই পর্যন্ত চলবে ঐতিহ্যবাহী এই টুর্নামেন্ট। ১৬টি দলের হয়ে অংশ নিতে যাওয়া খেলোয়াড়ের সংখ্যাটা কম নয়। যাদের মধ্যে সুপারস্টারও অনেক। তবে এবার এক ঝাঁক সুপারস্টার অনুপস্থিতও থাকছে।
ব্রাজিলের নেইমার থেকে আর্জেন্টিনার পাওলো দিবালা, বিভিন্ন কারণে এবারের কোপায় না থাকাদের নিয়ে চাইলে শক্তিশালী একটা একাদশই বানিয়ে ফেলা যায়। যে একাদশ নিয়ে নিশ্চিতভাবেই শিরোপার জন্যও লড়াই করা যাবে!
কোপায় না থাকাদের মধ্যে সবচেয়ে হাইপ্রোফাইল নামটা অবশ্যই নেইমার। ৩২ বছর এই ফরোয়ার্ড সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলারদের একজন। তার না থাকার কারণ চোট। গত বছর ১৭ অক্টোবর বিশ্বকাপে বাছাইয়ে উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে হাঁটুর এসিএল চোটে পড়েন নেইমার। এরপর অস্ত্রোপচারের টেবিলে যেতে হয়েছে তাকে। এখনো আছেন পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে। ঠিক কবে তাকে মাঠে পাওয়া যাবে, সুনির্দিষ্টভাবে এ উত্তর মেলেনি। কোপায় যে তার খেলা হচ্ছে না, এটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বেশ আগেই। গত বছর ডিসেম্বরেই বিষয়টি নিশ্চিত করে দিয়েছিলেন ব্রাজিল দলের চিকিৎসক। এর আগে ২০১৯ কোপা আমেরিকাতেও চোটের কারণে খেলা হয়নি নেইমারের। সেবার মহাদেশীয় টুর্নামেন্টটির শিরোপা জিতে নেয় ব্রাজিল। পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সেটিই সবশেষ বড় কোনো শিরোপা জয়। কিন্তু নেইমারের সেই শিরোপার স্বাদ পাওয়া হয়নি।
২০১০ সাল থেকে ব্রাজিল দলে খেলছেন নেইমার। বিশ্বকাপ ও কোপা আমেরিকা- দুই শিরোপাই তার কাছে এখনো সোনার হরিণ। ২০১৩ সালে কনফেডারেশন্স কাপ জেতে ব্রাজিল। দেশের হয়ে এখন পর্যন্ত এটিই তার একমাত্র আন্তর্জাতিক শিরোপা। এবারের কোপায় থাকলে নিশ্চিতভাবেই সোনার হরিণ হয়ে থাকা ট্রফিটা নিজের করতে চাইতেন নেইমার।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা কোপা আমেরিকারও ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। ২০২১ সালে কোপা জয়ের মধ্য দিয়েই দেশটি দীর্ঘ শিরোপা খরা কাটায়। এরপর ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপ ট্রফিটাও নিজেদের করে। দুটি ট্রফিই আসে কোচ লিওনেল স্কালোনির হাত ধরে। শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে স্কালোনি এবারের কোপায় তার দলে রাখেননি দিবালাকে। ৩০ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকারের না থাকাটা বেশ বড়সড় চমকই। কারণ আর্জেন্টিনার কাতার বিশ্বকাপ জয়ের সারথী রোমার হয়ে দারুণ একটা মৌসুম কাটিয়েছেন। দিবালাকে না রাখার কারণ ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে স্কালোনি বলেছিলেন, ‘তার জন্য আমাদের সবারই ভালোবাসা আছে, কিন্তু দল সব সময় সবার আগে। সব পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং কিছু জায়গায় আমাদের সমস্যা রয়েছে। সে কারণে তাকে দলে রাখিনি আমরা।’
কোপার ফেভারিটের তালিকায় আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের পর উরুগুয়ের নামটাই আসে সবার আগে। যে দলের হয়ে এবার এডিনসন কাভানিকে দেখা যাবে না। কাতার বিশ্বকাপের পর থেকেই দেশের জার্সিতে পাওয়া যাচ্ছিল না কাভানিকে। হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন কোচ মার্সেলো বিয়েলসার কোপার দলেও থাকবেন না। তাই তো উরুগুয়ে দল ঘোষণার আগেই আন্তর্জাতিক ফুটবলের ইতি টানার ঘোষণা দেন কাভানি। উরুগুয়ে দলে নেই সেবাস্টিয়ান কোটসও।
চিলির কোচ রিকার্দো গারেকা দুই অভিজ্ঞ তারকা আর্তুরো ভিদাল ও গ্যারি মেডেলকে রাখেননি। পেরু তাদের অধিনায়ক রেনাতো তাপিয়ার সার্ভিস পাবে না। ফেডারেশনের সঙ্গে মতৈক্যের কারণে নিজেকে সেরিয়ে নিয়েছেন এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। গোলরক্ষকদের মধ্যে দুটি বড় নাম এবারের কোপায় থাকছেন না। একজন কেইলর নাভাস। কোস্টা রিকার ফুটবলের ইতিহাসের অংশ এই গোলরক্ষক কোপার আগেই আন্তর্জাতিক ফুটবলের ইতি টেনে দিয়েছেন। তার আগ পর্যন্ত অবশ্য কোপায় তার থাকা না থাকা নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছিল। আরেকজন মেক্সিকোর গিয়ের্মো ওচোয়া। কাতার বিশ্বকাপে যিনি দারুণ নৈপুণ্য দেখান। তাকে ছাড়াই মেক্সিকো কোপার দল গড়েছে।
চোটের কারণে যারা এবারের কোপায় নেই, তাদের মধ্যে আরও একটি বড় নাম ইকুয়েডরের ডিফেন্ডার পেরভিস এস্তুপিনিয়ান। অস্ত্রোপচারের পর পুনর্বাসন চলছে তার। অবসর নেওয়ায় মার্সেলো মোরেনোকে পাবে না বলিভিয়া। কলম্বিয়ার হয়ে দেখা যাবে না রাদামেল ফালকাওকে। হুয়ান কুয়াদ্রাদোও নেই দলটিতে। নিশ্চিতভাবেই এই তারকাদের মিস করব এবারের কোপা।