![আমার অবস্থান অনেকের চেয়ে ভালো](uploads/2024/01/03/1704296416.dewan_Jahid_ahmed.jpg)
সিংগাইর, হরিরামপুর ও সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে মানিকগঞ্জ-২ আসন। শিল্পপতি হিসেবে এলাকায় পরিচিত থাকলেও দায়িত্ব পালন করছেন মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে। নৌকার মনোনয়ন না পেলেও প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। নির্বাচিত হলে নিজ এলাকা সিংগাইরে গড়তে চান ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন। একান্ত আলাপে মানিকগঞ্জ-২ আসন নিয়ে নানা চিন্তাভাবনার কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন খবরের কাগজ-এর মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি আসাদ জামান।
খবরের কাগজ: আপনি প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, অনুভূতি কেমন?
দেওয়ান জাহিদ আহমেদ: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপ্তি অনেক বড়। আমি মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম। মনোনয়ন পাইনি কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তারপরও আমাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। তাই নৌকা প্রতীক না পেলেও আমি এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ট্রাক প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। তাই সব মিলে আলহামদুলিল্লাহ্ আমার অনুভূতি অনেক ভালো।
খবরের কাগজ: নৌকাসহ এই আসনে আরও নয়জন আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আছেন; ভোটারদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
দেওয়ান জাহিদ আহমেদ: আপনারাতো মানিকগঞ্জ-২ আসনসহ জেলার বিভিন্ন আসনে চষে বেড়াচ্ছেন। আলহামদুলিল্লাহ্ এই আসনের সিংগাইর, হরিরামপুর ও সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের প্রতিটি এলাকা থেকে আমি ভালো সাড়া পাচ্ছি। তা ছাড়া, এই আসনে আরও অনেক প্রার্থী আছেন তাদের উপস্থিতি তেমন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। আমি যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই প্রচুর জনগণ, মা-বোন, ভাইয়েরা আমার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছেন। তারা কথা দিয়েছেন, আগামী ৭ জানুয়ারি আমাকে ট্রাক মার্কায় ভোট দেবেন। এমন সাড়া আমি ব্যাপকভাবে পাচ্ছি।
খবরের কাগজ: আপনি তো দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী; আপনার সঙ্গে দলীয় নেতা-কর্মী বা জনপ্রতিনিধিরা আছেন কি না?
দেওয়ান জাহিদ আহমেদ: মানিকগঞ্জ-২ আসনে যারা আওয়ামী লীগ দলটাকে ধারণ করেন এমন নেতৃস্থানীয় কয়েকজন ছাড়া সিংহভাগই আমার সঙ্গে আছেন। এ ছাড়া সিংগাইরের ১০ জন চেয়ারম্যান আমার জন্য কাজ করছেন। এবং হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে সাতজন চেয়ারম্যান আমার সঙ্গে আছেন। এ ছাড়া, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগের অনেক নেতা-কর্মী আমার হয়ে নির্বাচনি কাজ করছেন। এ ছাড়া আলেম, সংখ্যালঘুরা জানেন আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী; তারাও আমার সঙ্গে আছেন। সুধী সমাজের একদল লোক যারা কোনো দলের না এমন অনেকে আমাকে সাপোর্ট করছেন। সব মিলে আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
খবরের কাগজ: আপনাকে মানুষ কেন ভোট দেবে?
দেওয়ান জাহিদ আহমেদ: আমি কোনো জনপ্রতিনিধি না হয়েও বিগত ২০ বছর ধরে এই আসনের বিভিন্ন এলাকায় মানবিক, সামাজিক, ধর্মীয়, শিক্ষা, খেলাধুলা নিয়ে কাজ করে আসছি। ভোটের মাঠে নেমে আমি কিন্তু সেগুলোর ফিডব্যাক পাচ্ছি। আমি নতুন মুখ হলেও জনগণের কাছে আমার পরিচিতি অনেকের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে।
খবরের কাগজ: স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় প্রচারে নৌকার প্রার্থীদের কাছে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে কি না?
দেওয়ান জাহিদ আহমেদ: আমরা চাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনটা উৎসবমুখর হোক। কিন্তু ট্রাকের কর্মী-সমর্থকদের নৌকা প্রার্থীর সমর্থকরা বিভিন্নভাবে হয়রানি ও হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। এ নিয়ে যাদের হয়রানি ও হুমকি দেওয়া হয়েছে তারা থানায় মামলা করেছেন। আমার প্রশ্ন নৌকা প্রার্থীর যদি সকলের কাছে জনপ্রিয় হয়ে থাকেন তাহলে জনগণতো আপনাকে ভোট দিবে। সে পর্যন্ত জনগণের রায়ের জন্য অপেক্ষা করেন। নির্বাচনকে প্রশ্নের মুখে ফেললে দল ও দেশের ক্ষতি হয়ে যাবে।
খবরের কাগজ: ভোটাররা আগের নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে যায়নি, এবারও কি এমন কোনো পরিস্থিতি লক্ষ্য করছেন কি না?
দেওয়ান জাহিদ আহমেদ: এই আশঙ্কাটা আসলে ব্যাপকভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে ভোটারদের মাঝে। ভোটারদেরকে ভোট কেন্দ্রে আনাই আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আপনারা জানেন, বিএনপিসহ বেশ কিছু বড় দল নির্বাচন বর্জন করেছে এবং তারা ভোটারদের কাছে যেয়ে ভোট প্রদানে তাদের নিরুৎসাহিত করছে। তারা মানুষের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিচ্ছে ভোটের দিন মারামারি, হামলা হবে কি দরকার ভোট দেওয়ার। তাই আমি বলব আমি ছাড়াও এই আসনে যেসব প্রার্থী আছেন আপনারাও ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আসার জন্য সহযোগিতা করেন। কারণ এই নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশের উন্নয়ন নির্ভর করছে।
খবরের কাগজ: আপনি নির্বাচিত হলে কোন কাজগুলো অগ্রাধিকার পাবে?
দেওয়ান জাহিদ আহমেদ: আপনারা জানেন হরিরামপুর উপজেলার বাসিন্দাদের একমাত্র দুঃখ নদী ভাঙন। প্রতিবছরই এই সমস্যা পড়তে হচ্ছে নদী পাড়ের মানুষদের। আল্লাহর রহমতে আমি যদি এই আসনে নির্বাচিত হতে পারি তাহলে হরিরামপুরে একটি স্থায়ী বাঁধ করে দেব। আর আমাদের সিংগাইর উপজেলায় তেমন কোনো কাজই হয়নি। শহিদ রফিক সেতুর টোল ফ্রি করা, সিংগাইর উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণ করা, তারপর হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কটাকে চারলেনে উন্নীত করবো। এ ছাড়া, সিংগাইর উপজেলা ঢাকার খুব কাছে তারপরও সেখানে কোনো উল্লেখযোগ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান হয়নি। আমি সিংগাইরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন প্রতিষ্ঠা করব। যাতে এই অঞ্চলের বেকার ছেলে-মেয়েদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। এ ছাড়া, যেখানে রাস্তাঘাটের সমস্যা আছে সেগুলো ঠিক করা হবে।
খবরের কাগজ: ভোটারদের কাছে আপনার আহ্ববান কি?
দেওয়ান জাহিদ আহমেদ: ভোটের মাধ্যমেই একটা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। আপনার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। তাই সব ভোটারদের কাছে আমার উদাত্ত আহ্বান আপনারা সকালবেলা থেকেই ভোট কেন্দ্রে আসবেন।
খবরের কাগজ: মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য খবরের কাগজের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
দেওয়ান জাহিদ আহমেদ: ধন্যবাদ খবরের কাগজের পাঠক ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি।