![আলোকচিত্রী সাইদা খানমকে নিয়ে দুটি বইয়ের প্রকাশনা উৎসব](uploads/2024/05/11/Saida-kahnam-1715404055.jpg)
সামরিক শাসনের জাঁতাকলে দেশ যখন পিষ্ট, নারীরা বাধা পড়েছেন সামাজিক বিধিনিষেধের বেড়াজালে; তখন ক্যামেরা হাতে দেশজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক তরুণী। নারীদের যাপিত জীবনের পাশাপাশি স্বাধিকার আন্দোলনে প্রতিবাদী নারীর ছবি তুলছেন তিনি। বঙ্গবন্ধু থেকে শুরু করে রানি এলিজাবেথ, সত্যজিৎ রায়ের ছবিও তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি লেখনীতে তুলে ধরছেন সমাজের নানা চালচিত্র। তিনি কিংবদন্তি আলোকচিত্রী সাইদা খানম।
ইতিহাসবিদ, আলোকচিত্রীদের ভাষ্যে, পঞ্চাশ থেকে নব্বইয়ের দশকে কিংবদন্তি আলোকচিত্রী সাইদা খানম যে ছবিগুলো তুলেছেন, তা ইতিহাস ও সময়কে কতটা ধারণ করেছে, তার বিশ্লেষণ অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। তিনি কখন, কার ছবি কীভাবে তুলেছেন, তা ধর্তব্যে না নিতে অনুরোধ করেছেন তারা।
শুক্রবার (১০ মে) আলোকচিত্রী সাহাদাত পারভেজের ‘একজন সাইদা খানম’ ও ডা. সারা ফাতিমা সম্পাদিত ‘সাইদা খানমের রচনা সংগ্রহ’ শিরোনামের বই দুটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব মন্তব্য করেন ইতিহাসের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, কিংবদন্তি আলোকচিত্রী পাভেল রহমান, বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী, চিত্রশিল্পী অধ্যাপক মতলুব আলী, অভিনেত্রী ও ক্রীড়া সংগঠক আলেয়া ফেরদৌসী। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হন আলোকচিত্রীদের অনেকে।
পাঠক সমাবেশ থেকে প্রকাশিত ১৯৩ পৃষ্ঠার ‘একজন সাইদা খানম’ বইটিতে সাহাদাত পারভেজ সাইদা খানমের ৬৪টি আলোকচিত্র, ৫টি চিঠি, ২টি স্কেচ, ৬টি প্রচ্ছদ, ১৫টি পেপার কাটিং, ১টি স্বহস্তে লেখা পাণ্ডুলিপি যুক্ত করেছেন। ৪৩টি অধ্যায়ে আলোকচিত্রী সাইদা খানমের জীবনকে ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস রয়েছে বইটিতে। বইটির মূল্য ৬৯৫ টাকা।
ডা. সারা ফাতিমা সম্পাদিত ‘সাইদা খানমের রচনা সংগ্রহ’ বইয়ে ১৯টি অধ্যায়ে সাইদা খানমের নানা রচনা সন্নিবেশিত হয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে প্রকাশিত লেখাগুলো পারিবারিকভাবে সংগ্রহ করা হয়েছিল বলে জানান সাইদা খানমের ভাগনি ডা. সারা ফাতিমা। ২০২০ সালে সাইদা খানমের মৃত্যুর পর ২০২২ সালে সারা সেই লেখাগুলো সংকলনের উদ্যোগ নেন।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘আমাদের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির আন্দোলনের সবচেয়ে উজ্জ্বলতম সময় ছিল পঞ্চাশের দশক। সে সময়ে যারা আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছিলেন, আমার মনে হয় এখনো আমরা তার প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারিনি। সেই সময়ে আলোকচিত্র শিল্পের যে বিকাশ ঘটিয়েছিলেন সাইদা খানম, তা আমরা প্রচারের অভাবে জানতে পারিনি। পঞ্চাশের দশকে সাইদা খানমের এই কাজ তো সমাজের বিদ্যমান ব্যবস্থার প্রতি একধরনের বিদ্রোহ। সাহাদাত পারভেজ যে গবেষণাধর্মী কাজটি করেছেন, তাতে সাইদা খানমকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন।’