ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৪, ১১:২৯ এএম
আপডেট: ২৬ মে ২০২৪, ১১:২৯ এএম
বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি
ছবি: সংগৃহীত

বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য আপনি এখন থেকেই রুটিন করে নিয়মিত পড়ালেখা শুরু করে দিন। একটা সময় দেখবেন, সিলেবাসের সব বিষয়ের প্রস্তুতি হয়ে গেছে। সিলেবাসের তুলনায় বিসিএসে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য আপনাদের হাতে সময় কম থাকে। বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অনেকের জন্য চ্যালেঞ্জ। তবে পরিকল্পনামতো রুটিন করে গুছিয়ে পড়ালেখা করলে পরীক্ষা শুরুর আগেই আপনি সব বিষয়ের প্রস্তুতি নেওয়া শেষ করতে পারবেন। আজ বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বাংলা ও বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির প্রস্তুতি নিয়ে লিখেছেন মোশাররফ হোসেন

বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ নম্বর পেলেই পাস। মানে ৯০০ নম্বরের মধ্যে আপনি ৪৫০ পেলেই পাস। কোনো একটি বিষয়ে আপনি ১০০-তে ৪০ পেয়েছেন। মানে ৫০ শতাংশের চেয়ে ১০ নম্বর কম পেয়েছেন। আবার কোনো একটি বিষয়ে আপনি ১০০-তে ৬০ নম্বর পেয়েছেন। মানে ৫০ শতাংশের চেয়ে ১০ নম্বর বেশি পেয়েছেন। এখন এ দুই বিষয়ের নম্বর যোগ করে আপনি ৫০ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন; সুতরাং আপনি পাস। তবে কোনো বিষয়ে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৩০-এর কম নম্বর পেলে সে বিষয়ে আপনি কোনো নম্বর পাননি বলে গণ্য হবে। উদাহরণস্বরূপ কোনো একটি বিষয়ে আপনি ১০০-তে ২৯ নম্বর পেয়েছেন, তাহলে আপনার এই ২৯ নম্বর যোগ হবে না। তবে এই ২৯ নম্বর বাদ দিয়েও যদি আপনি অন্য বিষয়গুলোর নম্বর যোগ করে ৯০০-তে মোট ৪৫০ নম্বর পান, তবে আপনি লিখিত পরীক্ষায় পাস করবেন। 
বিসিএস লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষার নম্বর যোগ করে ফাইনাল রেজাল্ট তৈরি করা হয়। আপনি ক্যাডার নাকি নন-ক্যাডার চাকরি পাবেন, নাকি আপনার পছন্দের ক্যাডারটিই পাবেন– সেটি লিখিত পরীক্ষার নম্বরের ওপরই নির্ভর করে। তাই লিখিত পরীক্ষার জন্য আপনার প্রস্তুতি হতে হবে সিলেবাস ও সাজেশনভিত্তিক এবং গোছানো। আজ বাংলা ও বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি প্রস্তুতি নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো-

বাংলা বিষয়ের প্রস্তুতি
(১) ব্যাকরণ থেকে ৫টি প্রশ্ন থাকবে। ব্যাকরণ থেকে যেসব বিষয়ের ওপর প্রশ্ন হবে তা হলো (ক) শব্দগঠন, (খ) বানানের শুদ্ধরূপ/বানানের নিয়ম, (গ) বাক্যশুদ্ধি/বাক্যের প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ, (ঘ) প্রবাদ-প্রবচনের নিহিতার্থ প্রকাশ, (ঙ) বাক্য গঠন।
বিগত বছরের প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে ব্যাকরণ অংশের জন্য যা পড়বেন তা হলো-

শব্দ গঠন থেকে যা পড়বেন
(ক) শব্দ কী? বাংলা ভাষায় শব্দ গঠনের পাঁচটি প্রক্রিয়া উদাহরণসহ লিখুন।
(খ) অর্থগতভাবে বাংলা ভাষার শব্দগুলোকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়? উদাহরণসহ আলোচনা করুন। 
(গ) উপসর্গযোগে শব্দ গঠন করুন।

বানান থেকে যা পড়বেন
(ক) বানানের শুদ্ধরূপ, (খ) বাংলা বানানে শ, স, ষ ব্যবহারের নিয়ম।
(গ) বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম অনুসারে তৎসম শব্দের বানানের সূত্রগুলো লিখুন।
(ঘ) বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম অনুসারে অ-তৎসম শব্দের বানানের সূত্রগুলো লিখুন।

বাক্য থেকে যা পড়বেন
(ক) বাক্য কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ ব্যাখ্যা লিখুন, (খ) কোন কোন বৈশিষ্ট্যের ওপর বাক্যের সার্থকতা নির্ভর করে লিখুন।
(গ) বাক্য শুদ্ধ করে লিখুন।
(ঘ) বাক্যে রূপান্তর করুন (সরল থেকে জটিল, জটিল থেকে সরল এমন)।

প্রবাদ প্রবচন থেকে যা পড়বেন 
(ক) প্রবাদ প্রবচন ব্যবহার করে অর্থপূর্ণ বাক্য গঠন করুন।
(খ) বাগধারার অর্থ উল্লেখ করে বাক্যে প্রয়োগ দেখান।
(গ) সাহিত্য অংশ থেকে ১০টি প্রশ্ন থাকবে। সাহিত্য থেকে সাধারণত কয়েকটি টপিকস থেকে প্রতি বছর প্রশ্ন থাকে। সেগুলো হলো- চর্যাপদ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ইত্যাদি।

সাহিত্য অংশ থেকে যা পড়বেন
চর্যাপদ কে, কবে, কোথায় আবিষ্কার করেন?
চর্যাপদের ভাষা সম্পর্কে লিখুন।
বাংলা সাহিত্যে চর্যাপদের গুরুত্ব আলোচনা করুন।
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের পরিচয় ও বিষয়বস্তু লিখুন।
মনসামঙ্গল কাব্যের বেহুলার চরিত্রটির বৈশিষ্ট্য লিখুন।

বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির প্রস্তুতি
বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বিভিন্ন রেফারেন্স বই, যেমন- মোজাম্মেল হকের উচ্চমাধ্যমিক পৌরনীতি দ্বিতীয় পত্র, বাংলাদেশের সংবিধান নিয়ে বই, মুক্তিযুদ্ধের বই, আব্দুল হাইয়ের বাংলাদেশ বিষয়াবলি ইত্যাদি বই পড়তে পারেন।

বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে সংবিধান, বাংলাদেশের ম্যাপ ও অর্থনৈতিক সমীক্ষার ওপর পড়ায় মনোযোগ দিন। এ বিষয়ে সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই সময়ানুযায়ী প্রশ্নের উত্তর লিখবেন। লেখার মাঝে ছোট ছোট ম্যাপ, ইনফোগ্রাফ, টেবিল, ডেটা দিলে ব্র্যাকেটে সোর্স, বাংলা অথবা শুদ্ধ ইংরেজিতে কোটেশন দেবেন।

প্রতিদিন ১ ঘণ্টা করে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি পড়বেন।

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে কনসেপচুয়াল প্রশ্ন থাকে। এর মধ্যে প্রশ্ন কমন পাওয়া কঠিন। লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নের উত্তরে মনীষীদের উক্তি, উদাহরণ দিলে বেশি নম্বর পাবেন।

প্রতিদিন অনলাইনে ৪-৫টা সংবাদপত্র খুব দ্রুত পড়বেন। সংবাদপত্র পড়ার সময় সংবাদপত্রের কলামগুলো পড়ে পড়ে বুঝে নেবেন কোন কোন টপিক থেকে পরীক্ষায় প্রশ্ন হতে পারে। সাধারণ জ্ঞানে সময়ের প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিকতা অনুসারে প্রশ্নের ধরন বদলাতে পারে।

উত্তর লেখার সময় প্রয়োজনীয় চিহ্নিত চিত্র ও ম্যাপ আঁকুন। যথাস্থানে বিভিন্ন ডেটা, টেবিল, চার্ট, রেফারেন্স দিন। সংবাদপত্র থেকে কোনো উদ্ধৃতি দিলে উদ্ধৃতির নিচে সোর্স এবং তারিখ উল্লেখ করে দেবেন। উইকিপিডিয়া কিংবা বাংলাপিডিয়া থেকে উদ্ধৃত দিতে পারেন। দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা কে, কী বললেন, সেটা প্রশ্নের উত্তরে প্রাসঙ্গিকভাবে লিখতে পারেন।

বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় কোনোভাবেই কোনো প্রশ্ন ছেড়ে আসবেন না। উত্তর জানা না থাকলে ধারণা থেকে কিছু না কিছু লিখবেন।

মাঝে মাঝে বিভিন্ন টপিক নিয়ে লেখার অনুশীলন করুন। পড়ার অভ্যাস বাড়ান। এতে আপনার লেখা মানসম্মত হবে। কোনো উত্তরই মুখস্থ করার দরকার নেই। ধারণা থেকে লেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন। লিখিত পরীক্ষায় সবাই বানিয়ে লেখে। ঠিকভাবে বানিয়ে লেখাটাও একটা আর্ট।

লিখিত পরীক্ষায় বেশির ভাগ প্রশ্নই কমন পড়ে না। এসব বই পড়া থাকলে উত্তর করাটা সহজ হয়। প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় বিভিন্ন লেখকের রচনা, পত্রিকার কলাম ও সম্পাদকীয়, ইন্টারনেট, বিভিন্ন সোর্স থেকে উদ্ধৃতি দিলে বেশি নম্বর পাবেন। পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তরে রেফারেন্স দিলে বেশি নম্বর পাবেন।

বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে প্রশ্ন আসলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক এবং আপনার নিজের মতামত সহকারে পয়েন্ট আকারে লিখলে বেশি নম্বর পাবেন।

যা মনে রাখবেন
লিখিত পরীক্ষায় ভালো করার উপায় হলো, ‘যত পড়া, তত লেখা’।
একজন প্রার্থী কতটুকু জানল, এটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি সে কতটুকু লিখতে সক্ষম; সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই পড়ার ফাঁকে ফাঁকে লেখার চর্চাও করবেন।
প্রতি সপ্তাহে মডেল টেস্ট পরীক্ষা দেবেন। 
নিজেদের সুবিধামতো রুটিন সাজিয়ে নিন। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঁচটি বিষয়ের (বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বাংলাদেশ বিষয়াবলি ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি) যেকোনো একটি এবং প্রতিদিন রাতে গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা এবং অনুবাদ অনুশীলন (ইংরেজি ও বাংলা) করতে পারেন।
গণিতের ওপর আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিন।

ঢাবির জনসংযোগ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তি ক্যাম্পাস ও ছাত্ররাজনীতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি উপাচার্য

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৩ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম
ক্যাম্পাস ও ছাত্ররাজনীতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যের বরাত দিয়ে ‘ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধ হবে না’ এমন একটি প্রতিবেদন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের অনলাইন ভার্সন, ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়িয়েছে। তবে উপাচার্য এমন কোনো মন্তব্য করেননি বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে দাবি করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, উপাচার্য শুক্রবার গণমাধ্যমে রাজনীতি নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করেননি এবং তিনি কখনোই বলেননি যে, ‘ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে’। মিথ্যা ও ভিত্তিহীন এই বক্তব্য জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। বিভ্রান্তি নিরসনের লক্ষ্যে গণমাধ্যমকে সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের অনুরোধ জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল লিখেছেন, ‘ছাত্ররাজনীতি-বিষয়ক কোনো কথা আমি কোথাও বলিনি। ছাত্ররাজনীতি-বিষয়ক কোনো প্রশ্নও আমাকে করা হয়নি এবং আমি মন্তব্যও করিনি।’ একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদকের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও লেখেন, ‘প্রতিবেদকের মুখ দিয়ে প্রকাশিত বক্তব্য সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অসত্য। সবাইকে অপপ্রচার ও গুজব থেকে সাবধান থাকার অনুরোধ রইল।’

এর আগে দুপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল এবং স্যার এএফ রহমান হল পরিদর্শন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান এবং সংশ্লিষ্ট হলের প্রাধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন।

আরিফ জাওয়াদ/এমএ/

শাবির প্রধান ফটককে ‘শহিদ রুদ্র তোরণ’ ঘোষণা

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৭:৫৬ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৭:৫৬ পিএম
শাবির প্রধান ফটককে ‘শহিদ রুদ্র তোরণ’ ঘোষণা
ছবি: খবরের কাগজ

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রধান ফটককে ‘শহিদ রুদ্র তোরণ’ ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (২৬ জুলাই) বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব এ ঘোষণা দেন। তারপর গণসংযোগের জন্য ৯ দফা দাবিতে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েন। এর আগে জুমার নামাজের পর কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহিদদের জন্য দোয়া করেন শিক্ষার্থীরা। 

নিহত রুদ্র সেন শাবিপ্রবির কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স (সিইপি) বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি গত ১৮ জুলাই রাতে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ভেলা দিয়ে খাল পার হওয়ার সময় ডুবে মারা যান।

প্রধান ফটককের নামকরণকালে সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘কাগজের এই লেখা যদি ছিঁড়ে ফেলা হয়, আমরা আবারও রক্ত দিয়ে লিখে রেখে আসব একই নাম। রুদ্র মরে গিয়েও আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে চিরকাল। সারা দেশের শহিদদের রক্ত আমরা বৃথা যেতে দেব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি দ্রুত আমাদের ৯ দফা মেনে নেওয়া না হয়, যদি অনতিবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিরস্ত্র করে রাজপথ থেকে অপসারণ, ইন্টারনেট কানেকশন স্বাভাবিক করা, ক্যাম্পাগুলোতে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করে সন্ত্রাসমুক্ত না করা হয়, যদি হল-ক্যাম্পাস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দেওয়া হয়, যদি এখনো টিয়ার শেল-গ্রেনেড-গুলি অব্যাহত থাকে তাহলে সরকারকেই সম্পূর্ণ দায় নিতে হবে। শহিদদের রক্তের ওপর কোনো সংলাপ হবে না। পুলিশ, ছাত্রলীগ-যুবলীগ সন্ত্রাসী দ্বারা নির্মমভাবে সব হত্যা (শহিদ), হামলা-নির্যাতন, মামলা, গ্রেপ্তারের চূড়ান্ত ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালমান থাকবে।’

এ সময় তিনি নিরাপত্তা বাহিনী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ছাত্রদের পাশে থাকার আহ্বান জানান। পাশাপাশি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার বা গুম হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করে দেশে চলমান গণহত্যা-নির্যাতনের ভয়াবহতা সর্বত্র তুলে ধরার আহ্বান জানান।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বেরোবি

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বেরোবি
নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নিহত আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিহত আবু সাঈদের মা-বাবার হাতে সাড়ে ৭ লাখ টাকার একটি চেক তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদল।

এ সময় নিহত আবু সাঈদের বৃদ্ধ বাবা মকবুল হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এর আগে আরেক দিন আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। সে সময় ভিসি আমার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন। তিনি আমাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। আমি স্যারকে বলেছিলাম, আমাদের পরিবারের একজনকে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়া হয়। ভিসি স্যার আশ্বস্ত করেছেন। সন্তানকে তো আর ফিরে পাব না। আমাদের পরিবারের একজনকে একটা চাকরি দিলে আমরা হয়তো একটু ভালোভাবে চলতে পারব।’ সাঈদের বাবা আরও জানান, প্রতিদিনই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ না কেউ খোঁজ রেখেছেন। এ ছাড়া পরিচিত-অপরিচিত অনেকেই সহায়তা করছেন। 

মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমার কলিজার টুকরা ছিল আবু সাঈদ। তার টিউশনির জমানো টাকায় চলতাম আমরা। সন্তান হারিয়েছি, এ শোকের কোনো সান্ত্বনা নেই। পিতা হয়ে সবচেয়ে ভারী কাজ হলো সন্তানের লাশ কাঁধে নেওয়া।’ আল্লাহর কাছে এখন শুধু সবার কাছে সন্তানের জন্য দোয়া চান বৃদ্ধ এ বাবা।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে আর্থিক সহায়তা প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মণ্ডল আসাদ, কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফিরোজুল ইসলাম।

প্রক্টর শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ভিসি স্যারের নির্দেশে সাঈদের মা-বাবার সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনি নিজেও সাঈদের পরিবারের খোঁজ রাখছেন, পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে আজ সাড়ে ৭ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।’ এ সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়ার পর গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেরোবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এর পর থেকেই নতুন মাত্রা পায় কোটাবিরোধী আন্দোলন। সেদিন সন্ধ্যার পর পরই দুঃখ ও শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। নিহত আবু সাঈদের পরিবারের পাশে বেরোবি থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হাসিবুর রশীদ। ১৭ জুলাই থেকে আবাসিক হল ও ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবি শিক্ষকের স্বেচ্ছায় অব্যাহতি

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৮ পিএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৮ পিএম
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবি শিক্ষকের স্বেচ্ছায় অব্যাহতি
অধ্যাপক জাহিদুল করিম

সারা দেশে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ ও কিছু প্রতিবাদী শিক্ষককের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়েছেন সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল করিম।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) তিনি তার ফেসবুক প্রোফাইলে অব্যাহতিপত্রটি পোস্ট করার পর ভাইরাল হয়ে যায়। 

এ ব্যাপারে ম্যাসেঞ্জারে খুদে বার্তা পাঠিয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর অব্যাহতিপত্র রেজিস্ট্রারকে মেইল করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।

জাহিদুল করিম ২০১০ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি করছেন। 

শিক্ষকদের ভূমিকা আজ জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলীয়করণের কারণে শিক্ষক সমাজের বিবেক লোপ পেয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।’ 

জাবিতে ১৪ বছর ধরে শিক্ষকতা করা এই শিক্ষক বলেন, ‘বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজের মূল্যবোধ ও নৈতিকতাবোধকে জাগ্রত করতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপকের চাকরি থেকে আমি অব্যাহতি ঘোষণা করছি।’

জবির হতাহত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার নির্দেশ উপাচার্যের

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৩ পিএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৭ পিএম
জবির হতাহত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার নির্দেশ উপাচার্যের
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে আহত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের তালিকা করে সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছেন উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) এ তথ্য জানান উপাচার্য। 

তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী  আহত হয়েছে, এমন সব শিক্ষার্থীদের তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছি প্রক্টরকে। তালিকার মাধ্যমে হতাহত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করা হবে। অনেক শিক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে গেছে তাদের তালিকা পেলে আমরা যেকোনো সাহায্য করতে পারব।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে চারজনকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে, অনিক নামের একজন শিক্ষার্থীকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। তার খাদ্যনালী ফুটাে হয়ে গিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক খোঁজখবর রাখা হয়েছে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে তালিকা করা শুরু করেছি। ৮-৯ জন শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার খোঁজ পেয়েছি। যাদের টাকার প্রয়োজন ছিল, দ্রুত টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। আমাদের তালিকার কাজ চলমান রয়েছে। আজ থেকে বিভাগ অনুযায়ী খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। যার যে ধরণের সহয়তা দরকার হবে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গুলিবিদ্ধ ৫ শিক্ষার্থী ঢামেকে ছিল। তাদের চারজন রিলিজ পেয়েছে। আরেকজনকে কেবিনে নেওয়া হয়েছে। আমরা সাবর্ক্ষণিক তাদের খোঁজ রেখেছি। আমি নিজেও নিয়মিত ঢামেকে যেয়ে তাদের দেখে এসেছি। উপাচার্য মহোদয়ও আমাদের মাধ্যমে তাদের খোঁজ নিয়েছেন নিয়মিত।’

মুজাহিদ বিল্লাহ/অমিয়/