![বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করতে নির্বাচনি পোস্টার সংগ্রহ বিদ্যানন্দের](uploads/2024/01/09/1704812004.biddanondakk.jpg)
বিগত সময়ের ন্যায় এবছরেও জাতীয় নির্বাচন শেষে রাস্তায় টাঙানো নির্বাচনি পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন সংগ্রহ করছে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করতেই নির্বাচনি প্রচারসামগ্রী সংগ্রহ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
৭ জানুয়ারি দেশব্যাপী শেষ হয়েছে জাতীয় নির্বাচন। তবে ভোট শেষে বিপুল পরিমাণ নির্বাচনি প্রচারসামগ্রী এখন গলার কাঁটা। অপচনশীল এই বর্জ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য যেমন হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে, তেমনই অজানা এই বিশাল বর্জ্যের পাহাড়ের গন্তব্য কোথায়? এর বাইরেও অলিতে-গলিতে ঝুলে টাঙানো লক্ষ লক্ষ নির্বাচনি পোস্টার দেশকে বিশাল একটা ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করার ঝুঁকি তৈরি করছে। এ সকল নির্বাচনি পোস্টারকে রিসাইকল করার উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যানন্দ। পোস্টার থেকে খাতা, নোট বই তৈরির পাশাপাশি লেমিনেটিং করা পোস্টার দিয়ে বাজার ব্যাগ, মন্ড তৈরি করে কুটিরশিল্পের কাঁচামাল করা, দড়ি বা সুতালি দিয়ে বিভিন্ন চট নির্ভর প্রান্তিক ও দরিদ্র হস্তশিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর মতো বহুমুখী রিসাইকল প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
দেশে হাজারো সুবিধাবঞ্চিত শিশু শিক্ষা উপকরণের অভাবে সাহস পাচ্ছেনা লেখাপড়ার। ঝরে পড়ছে স্কুল থেকেই। নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যবহৃত পোস্টার, লিফলেট, ব্যানারগুলো সংগ্রহ করে সেগুলো থেকে প্রয়োজনীয় ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র বানানোর পাশাপাশি নোটবুক ও খাতা সমস্যাটিকে কিছুটা হলেও সমাধানের সুযোগ তৈরি করতে পারবে।
বিশাল এই কর্মযজ্ঞ জানি সহজ নয়, তবুও কাজটিতে সর্বোচ্চটা দিতে চায় বিদ্যানন্দের কর্মীরা। নির্বাচন শেষে তারা ছুটছে শহরের অলিতে-গলিতে টাঙানো সকল পোস্টার বর্জ্য অপসারণে। সংগ্রহের পর সেগুলো প্রাথমিক শর্টিং শেষে পোস্টারগুলো পাঠানো হবে রিসাইকল প্রসেসিংয়ে। প্রায় শত স্বেচ্ছাসেবীর আলাদা আলাদা টিম কাজ করছে প্রকল্পটিতে, একটা টিম ফিল্ডে পোস্টার সংগ্রহ করছে, অন্য টিম সেগুলো নিয়ে করছে প্রসেসিংয়ের কাজ।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন রুটে পোস্টার সংগ্রহের কাজ করে যাচ্ছে বিদ্যানন্দের কর্মীরা। বাঁশ, মই, কাচিসহ ট্রাকের উপরেরই বসানো হয়ে প্রাথমিক শর্টিং সেটআপ। নিজেদের সংগ্রহের পাশাপাশি কেউ চাইলে নিজেরাও পোস্টার সংগ্রহ শেষে বিদ্যানন্দের শাখায় পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে কিছু পোস্টার অব্যবহৃত থাকে টাঙানোর অভাবে, বিশেষ করে বিরোধী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। সেই জায়গাটি থেকেও বিদ্যানন্দ আহ্বান জানিয়েছে নির্বাচননি প্রার্থীসহ আপামর সকলকে কাজটিতে এগিয়ে আসতে এবং ব্যবহৃত পোস্টার সংগ্রহের পাশাপাশি অব্যবহৃত পোস্টারের খোঁজ দিতে।
উল্লেখ্য যে বিগত নির্বাচনেরও বিদ্যানন্দ দশ হাজার খাতাসহ হাজারও ভিন্ন ভিন্ন পণ্য তৈরি করেছিলো নির্বাচনি পোস্টার থেকে। যা পৌঁছে দেওয়া হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তিক হতদরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়- আমাদের একার পক্ষে সম্ভব নয় জেনেও এই কাজটি করে যাচ্ছি অন্যদের অনুপ্রাণিত করতে। আশা করবো সমাজের বিত্তবানেরা রিসাইক্লিং এর কাজটিতে সহায়তা করবেন। স্বেচ্ছাসেবক সংকটের পাশাপাশি আর্থিক সীমাবদ্ধতা ও রয়েছে আমাদের কাজটিকে বিশাল স্কেলে নিয়ে যেতে। দেশের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে তবুও কাজটি চালিয়ে যেতে চাই। বর্জ্য রিসাইকল করার পাশাপাশি তা দিয়ে হাজারও সুবিধাবঞ্চিত শিশুর শিক্ষাসামগ্রী তৈরি করতে পারলে তা হবে আমাদের জন্য বিশাল অর্জন।
অব্যবহৃত পোস্টার পাঠাতে চাইলে পেইজে মেসেজ করতে বা ০১৮৭৮১১৬২৩৪ নাম্বারে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রেস বিজ্ঞপ্তি