![এক গাভির চার বাছুর](uploads/2023/12/27/1703664420.Manikganj-News.jpg)
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উলাইল গ্রামে একটি গাভি একসঙ্গে চারটি বাছুরের জন্ম দিয়েছে। সম্প্রতি ওই গ্রামের কৃষক আখের আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। বিরল এই ঘটনার সাক্ষী হতে প্রতিদিনই আখের আলীর বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন উৎসুক জনতা। স্থানীয়দের পাশাপাশি বিভিন্ন অঞ্চল থেকেই মানুষ আসছে বাছুরগুলো দেখতে।
উলাইল গ্রামের কৃষক আখের আলী আড়াই বছর আগে ৯০ হাজার টাকা দিয়ে বাছুরসহ একটি গাভি কিনেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ান ক্রস জাতের ওই গাভিটি গত ২৬ নভেম্বর একসঙ্গে চারটি বাছুরের জন্ম দেয়। মা অস্ট্রেলিয়ান ক্রস জাতের হলেও বাছুরগুলো হয়েছে ফ্রিজিয়ান জাতের। চারটির মধ্যে তিনটি ষাড় ও একটি বকনা বাছুর। এদিকে চারটি বাছুরের জন্ম দেওয়াতে খাবারের জোগান দিতে পারছে না গাভিটি। প্রতিদিন তাদের খাবারের জোগান দিতে হচ্ছে প্যাকেটের দুধ দিয়ে।
কৃষক আখের আলী বলেন, ‘আড়াই বছর আগে বাছুরসহ একটি গাভি কিনেছিলাম। তখন প্রতিদিন চার লিটার করে দুধ দিত গাভিটি। গেল বছর কোনো বাচ্চা না হওয়ায় মনটা খারাপ ছিল। তবে এবার একটি নয়, দুটি নয়, একসঙ্গে চারটি বাছুর জন্ম দিয়েছে গাভিটি। এক মাস আগে জন্ম নেওয়া চারটি বাছুরই আল্লাহর রহমতে সুস্থ আছে। তবে চারটি বাছুরের দুধের জোগান দিতে পারছে না ওদের মা। তাই প্রতিদিন প্যাকেটের দুধ বাজার থেকে এনে সেগুলো গুলিয়ে ওদের খাওয়ানো হচ্ছে। এতে আমার চার থেকে পাঁচশ টাকা প্রতিদিন খরচ হচ্ছে। চারটি বাছুরের খাবারের খরচ জোগাতে কষ্ট হলেও ওদের পেয়ে আমার পরিবারের অন্য সদস্যরাও বেশ খুশি।’
কৃষক আখের আলীর স্ত্রী সুলতানা বলেন, ‘একটি গাভির চারটি বাছুর হয়েছে। এদের অনেক যত্ন করা লাগে। মায়েরা যেমন তার বাচ্চাকে যত্ন করে, ঠিক তেমনভাবেই ওদের যত্ন করতে হচ্ছে। প্রতি বেলায় এক লিটার করে একেকটি বাচ্চার দুধ লাগে। তাই ওদের জন্য প্যাকেটের দুধ পানি দিয়ে মিশিয়ে খাওয়াচ্ছি। এই এক মাসে আমাদের বাড়িতে এই বাছুরগুলো দেখার জন্য কম করে হলেও ১০ হাজারের বেশি মানুষ এসেছে।’
শিবালয় উপজেলার তেওতা গ্রামের মোহাম্মদ রহিজ উদ্দীন বলেন, ‘ফেসবুকে দেখতে পেলাম একটি বাছুরের চারটি বাছুর হয়েছে। সাধারণত এমন ঘটনা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। যেহেতু এই গ্রামে আমার আত্মীয় বাড়ি, তাই বেড়াতে এসে এখানে সেই বাছুরগুলো দেখলাম। বাছুরগুলো বেশ ছোটাছুটি করছে।’
উলাইল গ্রামের পাশের গ্রাম দক্ষিণ উলাইল থেকে এই বাছুরগুলো দেখতে এসেছেন গীতা রানি মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘ছেলে কার কাছ থেকে শুনেছে উলাইল গ্রামে একসঙ্গে চারটি বাছুর জন্ম দিয়েছে। এমন ঘটনা দেখা তো দূরের কথা, এমন কথা কখনো শুনিনি। তাই ছয় বছরের ছেলেকে নিয়ে দেখতে চলে এসেছি। বিষয়টা প্রথমে আমার কাছে অবাক লেগেছে।’
জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ডা. হাবিবুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা জানি, স্বাভাবিকভাবে একটি গাভি বছরে একটি করে বাচ্চা দেয়। একাধিক শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলনের ফলেই এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। একসঙ্গে চারটি বাছুরের জন্মের এমন ঘটনা অস্বাভাবিক না হলেও বিরল।’