![ঝিনাইদহের কোনো মাদ্রাসায় নেই শহিদ মিনার](uploads/2024/02/19/1708325080.Jhenaidah.jpg)
ঝিনাইদহ জেলায় ৯০৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩০২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ১১৬টি মাদ্রাসা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৯০ ভাগ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং শতভাগ মাদ্রাসায় নেই কোনো শহিদ মিনার। আর যেসব প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার রয়েছে, তা সারা বছর অবহেলা-অযত্নে পড়ে থাকে। এসব শহিদ মিনারে সারা দিন ছাগল-গরু বিচরণ করে আর রাতে বসে বখাটেদের আড্ডা।
জানা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শহিদ মিনার না থাকায় ২১ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা কলাগাছ দিয়ে প্রতীকী শহিদ মিনার তৈরি করে ভাষাশহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।
১৯৪৭ সালে স্থাপিত হয় শহরের পৌর এলাকার সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা। প্রতিষ্ঠানটিতে নেই কোনো শহিদ মিনার।
মাদ্রাসার নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে, ‘পরিবারের মুখে শুনেছি শহিদ মিনার আমাদের গর্ব। আমাদের প্রতিষ্ঠানে কোনো শহিদ মিনার নেই। যদি আমাদের প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার থাকত, তাহলে সেটির দিকে তাকালেই আমাদের শহিদদের কথা মনে পড়ে যেত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার থাকলে নতুন শিশুরা এখানে এসেই শহিদদের সম্পর্কে জানতে পারত। এখন তাদের এ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। ওই দিন কাঠ দিয়ে প্রতীকী মিনার তৈরির মাধ্যমে তারা বিষয়টি জানতে পারে।’
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. রুহুল কুদ্দুস জানান, শহিদ মিনার না থাকায় প্রতিবছর কাঠ দিয়ে প্রতীকী মিনার তৈরি করে দিবসের কর্মসূচি পালন করা হয়। এ ছাড়া মাদ্রাসাটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে হওয়ায় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কেন্দ্রীয়ভাবে শহিদ দিবসের কর্মসূচি পালন করা হয়।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খসরুল আলম বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের শহিদ মিনারটি অনেক পুরোনো। শিক্ষকরা নিজ উদ্যোগে এটি তৈরি করেছিলেন। এটি বর্তমানে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নতুন একটি শহিদ মিনার তৈরি করা জরুরি। একটি শহিদ মিনার তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমি আবেদন জানাই।’
ঝিনাইদহ সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহা. আমজাদ হোসেন বলেন, ‘জেলার ৬ উপজেলার ৯০৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৮৮টি বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার রয়েছে। পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শহিদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে যেসব বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নেই, সেখানে স্থানীয়ভাবে নির্মাণের প্রক্রিয়া করা যেতে পারে। জেলার প্রায় ৯০ ভাগ বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নেই। যেসব বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নেই, সেখানে নির্মাণের জন্য ওপর মহলে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।’