সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন
প্রশ্ন: কী প্রয়োগ করে অনুর্বর জমিকে উর্বর করা যায়?
উত্তর: রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে অনুর্বর জমিকে উর্বর করা যায়।
প্রশ্ন: আধুনিক প্রযুক্তির সবচেয়ে ভয়াবহ প্রয়োগ কোনটি?
উত্তর: আধুনিক প্রযুক্তির সবচেয়ে ভয়াবহ প্রয়োগ হলো- যুদ্ধের অস্ত্র নির্মাণ ও এর ব্যবহার।
প্রশ্ন: সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি কী?
উত্তর: সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি হলো তথ্যপ্রযুক্তি।
প্রশ্ন: কৃষিকাজে ব্যবহৃত দুটি প্রাচীন প্রযুক্তি ও দুটি আধুনিক প্রযুক্তির নাম লেখ।
উত্তর: কৃষিকাজে ব্যবহৃত দুটি প্রাচীন প্রযুক্তি হলো- কোদাল ও লাঙল এবং দুটি আধুনিক প্রযুক্তি হলো- ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার।
বর্ণনামূলক প্রশ্ন
প্রশ্ন: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মধ্যকার পার্থক্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পার্থক্য হলো-
বিজ্ঞান হলো প্রকৃতি সম্পর্কিত জ্ঞান, যা বিজ্ঞানীরা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাকৃতিক ঘটনাকে ব্যাখ্যা ও বর্ণনা করেন। প্রাকৃতিক ঘটনা সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করেন।
অন্যদিকে প্রযুক্তি হলো আমাদের জীবনের বাস্তব সমস্যা সমাধানের জন্য বিজ্ঞানের জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগ। যেমন- বিজ্ঞানীরা বিদ্যুৎ নিয়ে গবেষণা করে এ সম্পর্কে আমাদের ধারণা বা জ্ঞান সৃষ্টি করেছেন। এই বৈজ্ঞানিক জ্ঞান আমাদের জীবনের মানোন্নয়নের জন্য ও বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে যেমন- রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন, মোবাইল ও বৈদ্যুতিক বাতি উদ্ভাবনে কাজে লাগানো হয়।
প্রশ্ন: তুমি যে খাবার খেয়েছ তা কোন কোন প্রযুক্তির ভেতর দিয়ে তোমার কাছে এসেছে তা বর্ণনা করো।
উত্তর: প্রযুক্তির উন্নতির কারণে আমাদের নানা রকম খাদ্য উৎপাদন করা সহজতর হয়েছে। বর্তমান যুগ প্রযুক্তিবিদ্যার যুগ। শিল্পক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার অধিক হলেও কৃষি ক্ষেত্রে এর ব্যবহার কোনো অংশেই কম নয়। কৃষি ক্ষেত্রে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ইস্পাতের লাঙল, বীজ বোনা ও ফসল কাটার মেশিন আবিষ্কার করা হয়েছে। বিংশ শতাব্দীতে এসে কৃষকরা ইঞ্জিনচালিত মেশিন দ্বারা কৃষিকাজ শুরু করেছে। ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, বুলডোজার ইত্যাদি ইঞ্জিনচালিত মেশিন প্রযুক্তিরই অবদান। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক আবিষ্কারের ফলে কৃষি উৎপাদন অনেক গুণ বেড়েছে। পানি সেচের জন্য দোন, গভীর নলকূপ এবং নদীনালা থেকে পানি তোলার জন্য লো লিফট পাম্প ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব কৃষি প্রযুক্তি কৃষকদের পরিশ্রম অনেক কমিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে কৃষিতে জৈব প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটিয়ে বিপুলভাবে ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। এসব প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা বিভিন্ন খাবার পেয়ে থাকি।
অধ্যায়ভিত্তিক কাজের সমাধান
প্রশ্ন: কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার কীভাবে খাদ্য উৎপাদনে সাহায্য করছে?
উত্তর: চাষাবাদের জন্য মানুষ বিভিন্ন কৃষি প্রযুক্তি যেমন- শাবল, কোদাল, লাঙল উদ্ভাবন করেছে। বর্তমানে ট্রাক্টর, সেচপাম্প বা ফসল মাড়াইয়ের যন্ত্রের মতো আধুনিক যন্ত্রপাতি মানুষ ব্যবহার করছে। বাড়তি ফসল উৎপাদনের জন্য মানুষ ফসলে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করছে। এসব যন্ত্রপাতি মানুষকে স্বল্প সময়ে অধিক খাদ্য উৎপাদনে সাহায্য করছে। তাছাড়া জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ পোকামাকড় প্রতিরোধী এবং অধিক ফলনশীল উদ্ভিদ উৎপাদনে সহায়তা করছে।
প্রশ্ন: প্রযুক্তির ক্ষতিকর প্রভাব কী কী?
উত্তর: প্রযুক্তি বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে মানুষের জীবনকে নিরাপদ, উন্নত ও আরামদায়ক করছে। প্রযুক্তি আবার নানা রকম সমস্যাও সৃষ্টি করছে। নিচে তা উল্লেখ করা হলো-
পরিবেশ দূষণ: বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে কয়লা পুড়িয়ে আমরা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করি, কিন্তু এর ফলে বায়ু দূষিত হয়। বায়ুদূষণ বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও অ্যাসিড বৃষ্টির মতো পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করছে। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক অধিক খাদ্য উৎপাদনে সাহায্য করে। কিন্তু এগুলো ব্যবহারের ফলে আবার মাটি ও পানি দূষিত হয়, যা জীবের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
অস্ত্র তৈরি: আধুনিক প্রযুক্তির সবচেয়ে ভয়াবহ প্রয়োগ হলো যুদ্ধের অস্ত্র তৈরি ও এর ব্যবহার। যেমন- বন্দুক, বোমা, ট্যাংক ইত্যাদি।
অন্যান্য ক্ষতিকর প্রভাব: অনেক সময় প্রযুক্তির ব্যবহার নেশায় পরিণত হয়। টেলিভিশন ও কম্পিউটারের ব্যবহার যদি ভালো কাজে নিয়োজিত না হয় তা আমাদের সময়ের অপচয় ঘটায়। নিয়মিত খেলাধুলা, ব্যায়াম ও মুক্তচিন্তার পথে প্রযুক্তি বাধা সৃষ্টি করে। একনাগাড়ে দুই ঘণ্টার বেশি টেলিভিশন দেখা বা কম্পিউটার ব্যবহার করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
পিয়ারা আক্তার, শিক্ষক
ফকিরেরপুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঢাকা/আবরার জাহিন