সামরিক শাসন জারির স্বপক্ষ সমর্থন করে বিবৃতি দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) এক টেলিভিশন বিবৃতিতে জাতির উদ্দশ্যে ৪ ডিসেম্বর সামরিক শাসন জারির সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন তিনি।
এই বিবৃতিতে চলমান অভিশংসন প্রস্তাব প্রত্যাখান করে আইনি প্রক্রিয়ায় এর শেষ দেখে ছাড়বেন বলে জানান ইওল।
তিনি বলেন, ‘আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাব। সরকার ও দেশের সাংবিধানিক কার্যক্রম স্থবির করতে বিরোধীপক্ষ যে পায়তারা করছে এসব নসাৎ করে দেওয়া হবে।’
দক্ষিণ কোরিয়ার ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধির সঙ্গে কোনো আপস করা হবে না বলেও জানান তিনি।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর দেশটিতে অপ্রত্যাশিতভাবেই সামরিক আইন জারি করেন ইওল। তৎক্ষণাৎ রাজধানীজুড়ে গণবিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে মাত্র ছয় ঘণ্টার মাথায় সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হন তিনি।
এই ঘটনার জেরে দেশটির পার্লামেন্টে ইওলের বিরুদ্ধে অভিসংশন প্রস্তাব করা হয়। প্রথম দফার ভোটে পদত্যাগ এড়াতে পারলেও কার্যত তার কোনো প্রশাসনিক ক্ষমতা অবশিষ্ট নেই।
এদিকে ইওল সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই ঘটনার সব দায় স্বীকার করার পর গ্রেপ্তার হন। সিউলের এক ডিটেনশন সেন্টারে আটক অবস্থায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। তবে বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ প্রস্তাবে পার্লামেন্টে দ্বিতীয় দফায় ভোট হবে।
এই পরিস্থিতিতে জাতির কাছে নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করতেই ইওল ভাষণ দিয়েছেন।
ইউন তার ভাষণে জানান, দেশের প্রগতিশীল গণতন্ত্রকে বিরোধীদলের হুমকির মুখ থেকে রক্ষা করতেই সেনাশাসন জারি করা হয়েছিল।
দেশের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমি দেশদ্রোহী নই, আমার বিপক্ষে চলমান তদন্তের কোনো বৈধতা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিরোধীদল এখন নৈরাজ্যের ছুরি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’
এদিকে ইওলের বিবৃতির কয়েক ঘণ্টা পরেই বিরোধীদল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি তার বিরুদ্ধে অভিসংশনের দ্বিতীয় দফার প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে জানা গেছে। পার্লামেন্টে ১৪ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ প্রস্তাবে ভোট হবে।
এদিকে প্রেসিডেন্টের দল পিপল পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) নেতাই তার পদত্যাগের পক্ষে মন্তব্য করেছেন।
এ পরিস্থিতিতে ১৪ ডিসেম্বরের অপেক্ষায় আছে দেশটির জনগণ। সামরিক শাসনের অতীত অভিজ্ঞতা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ তৈরি করায় জনমত প্রেসিডেন্টের বিপক্ষে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
নাইমুর/