![অন্য রকম রেলস্টেশন](uploads/2024/05/11/nwern-1715412024.jpg)
ভ্রমণের জন্য আরামদায়ক পরিবহন হলো ট্রেন। তাই ট্রেন চলাচলে পৃথিবীতে আছে অসংখ্য রেলওয়ে স্টেশন। বৈচিত্র্যের কারণে এসব স্টেশন অনেকের কাছেই দর্শনীয় স্থান। ব্যতিক্রমী কিছু রেলস্টেশন নিয়ে এবারের আয়োজন। বিস্তারিত জানাচ্ছেন টি এইচ মাহির
সবচেয়ে উঁচুতে: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫ হাজার ৫৮ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত টাংগুলা মাউন্টেন স্টেশনটিকে বিশ্বের সর্বোচ্চ ট্রেন স্টেশন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। চীনা রেলওয়ের কিংহাই-তিব্বত রুটে অবস্থিত টাংগুলা রেলওয়ে স্টেশন। এর চেয়ে কম উচ্চতায় আছে পেরুর টিকলিও স্টেশন। বিশ্বের সর্বোচ্চ উচ্চতায় থাকা এই স্টেশন অনেকটা জনশূন্য। তবে অনেক উঁচুতে এবং পর্বতমালায় অবস্থিত হওয়ার কারণে স্টেশন থেকে হ্রদ, নদী এবং হিমবাহের চমৎকার দৃশ্য দেখা যায়। কিংহাই-তিব্বত রুটে থাকা বাকি স্টেশনগুলোতেও মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা যায়।
কাঠের ওপর স্টেশন: তুরস্কের ইস্তাম্বুলের কাডিকোয় উপসাগরের সামনে এক চমৎকার রেলস্টেশন হায়দারপাসা রেলস্টেশন। ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ রেলস্টেশনটি অটোমান সাম্রাজ্য এবং জার্মানির মধ্যে বন্ধুত্বের প্রতীক ছিল। রেলস্টেশনটি নির্মিত হয়েছে ১ হাজার ১০০টি কাঠের স্তূপের ওপর। ঘড়ি, বারান্দাসহ এখানে চমৎকার একটি স্টেশন বিল্ডিং দাঁড়িয়ে আছে। ২০১২ সাল পর্যন্ত তুরস্ক এবং মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলোতে যাওয়ার জন্য ট্রেনগুলো ছাড়ত এখান থেকে। এটিকে বলা হতো তুরস্কের ব্যস্ততম রেল স্টেশন। পরে ২০১৩ সালের ১৯ জুন থেকে স্টেশনে ট্রেন পরিষেবা স্থগিত করা হয়। স্টেশন ভবনে এখনও রাজ্য রেলওয়ের সদর দপ্তর রয়েছে। যুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত কবরসহ এখানে চমৎকার মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য আছে পর্যটকদের জন্য।
পুরোনো আমলের ট্রেন: পুরোনো আমলের বাষ্পচালিত ট্রেনে চড়তে চাইলে আপনাকে যেতে হবে ইংল্যান্ডের পিকারিং স্টেশনে। যেখানে দেখা মিলবে পুরোনো আমলের বাষ্পচালিত ট্রেনের। আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগের ট্রেনের মডেল দেখা যাবে এখানে। এই স্টেশনে প্রতি সোমবার ঐতিহ্যবাহী বাজার বসে। প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো সব জিনিসপত্র পাওয়া যায় এখানে।
পৃথিবীর শেষ স্টেশন: পৃথিবীর শেষ রেলওয়ে স্টেশন বলা হয় উশুয়ায়া স্টেশনকে।
আর্জেন্টিনার টিয়েরার দেল ফুয়েগো উপত্যকায় অবস্থিত এই ট্রেন স্টেশন। এটির অবস্থান বিশ্বের সবচেয়ে দক্ষিণতম শহরে। এখানে গেলে দেখতে পাওয়া যাবে বরফের পথ, পাহাড়, নদী ও হ্রদ। মনে হবে আদিম কোনো জায়গায় পৌঁছেছেন আপনি। এখানে টিয়েরার দেল ফুয়েগো পার্ক নামে একটি পার্কও আছে। মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং পাহাড়ি উপত্যকায় রেলপথ এই স্টেশনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
আইকনিক ভবন: আমেরিকার শিকাগোতে আছে অনন্য স্থাপত্যের এক রেলওয়ে স্টেশন। যার নাম ইউনিয়ন স্টেশন। এই স্টেশনের নকশা এবং স্থাপত্য নজর কাড়বে যে কারও। ট্রেন থেকে নেমে মনে হবে কোনো মধ্যযুগীয় দর্শনীয় স্থাপনার সামনে থেমেছে ট্রেন। মার্বেল পাথরের দেয়াল, পিতলের বাতি, স্কাইলাইটসহ এই স্টেশন ভবন অন্য যেকোনো স্টেশনের চেয়ে আলাদা। তাই এই ভবনকে আইকনিক বলা হয়।
সুন্দর স্থাপত্যের স্টেশন: ফিনল্যান্ডের হেলসিংকির এই রেলওয়ে স্টেশনটি তার সুন্দর স্থাপত্য নান্দনিকতার জন্য বিখ্যাত। স্টেশনের ভেতরে দেয়ালে দেয়ালে সুন্দর পেইন্টিং রয়েছে। আর রয়েছে বিশাল একটি ক্লক টাওয়ার। এর একটি আকর্ষণীয় ইতিহাসও রয়েছে। লোকেরা বিশ্বাস করত যে, ঘড়িটি এক মিনিট দেরিতে সেট করা হয়েছিল। যাতে যাত্রীরা সময়মতো ট্রেন ধরতে পারে। পরবর্তীতে, এটি কেবল একটি মিথ হিসেবে পরিণত হয়েছে।
সূত্র- ওয়ার্ল্ড এটলাস, শিকাগো ইউনিয়ন, অল এবাউট ইস্তাম্বুল
কলি