
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকার মূল্য পরিশোধ করতে ভারতের হাতে একের পর এক দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ তুলে দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি বদরুদ্দীন উমর ও সম্পাদক ফয়জুল হাকিম।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) ভারত সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এক বিবৃতিতে দলটির নেতৃদ্বয় এসব কথা বলেন।
‘শেখ হাসিনা এই দেশকে বিক্রি করে না’ উদ্ধৃত করে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ২০১০ সালে নদী নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত যে ফ্রেমওয়ার্ক করা হয়েছিল সেখানে তিস্তা-ব্রহ্মপুত্র-গঙ্গা অববাহিকা ভিত্তিক সমাধানের দিকে নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু গত ১৪ বছরে তার কিছুই হয়নি। ৫৪টি অভিন্ন নদীর উপর বাংলাদেশের ন্যায্য অধিকার ভারতকে ছেড়ে দিয়ে, তিস্তার পানি বন্টনের বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়ার ব্যাখ্যা কি?
তারা বলেন, ভারত কর্তৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সহায়তার অর্থ এই নয় যে বাংলাদেশকে ভারতের গোলাম হয়ে থাকতে হবে। বাংলাদেশের বিদেশ নীতি দিল্লিনির্ভর হবে। সরকারের জাতীয় স্বার্থ বিরোধী নীতি ও কাজের সমালোচনাকারীদের প্রধানমন্ত্রী ‘পাকিস্তানের দালাল’ বলে চিহ্নিত করার যে পরিচিত কৌশল নিয়েছেন। যা অতীতে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীও ষাটের দশকে করে থাকত। এইভাবে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নদিকে চালিত করার সরকারি কৌশল কোনো কাজে আসবে না।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় আরও বলা হয়, ১৫ বছর ধরে কানেক্টিভিটির নামে হাসিনা সরকার ভারতের স্বার্থ দেখে এসেছে। এমনকি মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের চাইতে ভারতের ব্যবসায়ীদের স্বার্থ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এভাবে মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরে ভারতের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা কি দেশ বিক্রির সঙ্গে তুলনীয় নয়?
বিবৃতিতে বলা হয়, সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক গত ১৫ বছরে কয়েক শতাধিক বাংলাদেশি নাগরিক গুলি করে হত্যা করার মতো ঘটনা ইউরোপসহ পৃথিবীর কোন দেশের সীমান্তে ঘটে চলে কি? ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সীমান্তে বিএসএফকে দায়মুক্তি দিয়ে চলেছে। এখন সেই ভারতের সঙ্গে সীমান্ত ব্যবস্থাপনার অর্থ কি?
ট্রানজিট-এর নামে ভারতকে করিডোর প্রদানের কঠোর সমালোচনা করে নেতারা বলেন, জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্নকারী যে-কোন চুক্তি সমঝোতা স্মারক বাংলাদেশের জনগণ মেনে নিবে না। শেখ হাসিনা বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকার মূল্য পরিশোধ করতে ভারতের হাতে একের পর এক দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়ে। সাম্রাজ্যবাদী ভারতের কাছে বাংলাদেশের জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দিয়ে, দেশের জনগণের রাজনৈতিক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে একদলীয় ফ্যাসিবাদী শাসন অব্যাহত রাখার সকল চক্রান্ত মোকাবেলায় দেশের সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। বাংলাদেশের রাজনীতিতে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদসহ সাম্রাজ্যবাদী ভারতের হস্তক্ষেপের সকল চক্রান্তকে চূর্ণ করে দিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
শফিক/এমএ/