ঢাকা ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ‘কার্যকর’ কমিটি চান বিএনপির নেতা-কর্মীরা

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ১০:৪৮ এএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ১০:৫৪ এএম
ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ‘কার্যকর’ কমিটি চান বিএনপির নেতা-কর্মীরা

শিগগিরই ঘোষণা করা হতে পারে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নতুন কমিটি। কমিটিতে কারা আসছেন, তা নিয়ে আলোচনা-গুঞ্জন চলছে। ঢাকা মহানগরের কাণ্ডারি হতে ইচ্ছুক, এমন অনেক নেতা ইতোমধ্যে বিএনপির হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন।

তবে মহানগরের নেতা-কর্মীরা জানান, এবার তারা কার্যকর ও গ্রহণযোগ্য কমিটি চান। আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে দলকে এগিয়ে নিতে পারেন, সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, নিজস্ব সাহসী কর্মী বাহিনী রয়েছে- এমন স্থানীয় নেতাদের ঢাকা মহানগর বিএনপির কাণ্ডারির দায়িত্ব দেওয়া উচিত। না হলে আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু ঢাকাতে আবারও ব্যর্থ হতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিগত দিনে যারা দলের জন্য কাজ করেছেন, কমিটিতে তারা মূল্যায়িত হবেন। তবে সংগঠনকে এগিয়ে নিতে পদ-পদবি ভুলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’ 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী খবরের কাগজকে বলেন, ‘মহানগর কমিটি নিয়ে হাইকমান্ড এখনো কিছু জানাননি। হাইকমান্ড যখনই কমিটি অনুমোদন করবেন, তখনই প্রেসে পাঠানো হবে।’ 

মহানগরের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, মহানগরের নেতৃত্বে সিনিয়র-জুনিয়র সমন্বয় থাকা প্রয়োজন। বিশেষ করে সাবেক এমপি, এমন কাউকে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হলে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা ও মিটিংয়ের সময়ে পরিবেশ কিছুটা অনুকূলে থাকবে। প্রশাসন সাবেক এমপিদের মূল্যায়ন করলেও বর্তমান নেতাদের সেভাবে মূল্যায়ন করতে চায় না। তবে স্থানীয় সাবেক এমপি যারা আছেন, তারাও দলের বড় দায়িত্ব পালন করছেন। 

তারা আরও বলেন, ‘পদ বাণিজ্য’ এবং ‘মাইম্যান’ দিয়ে কমিটি গঠন করলে দলই আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। টাকা দিয়ে কেউ পদে এলে আন্দোলনের সময় রাজপথে থাকেন না। আন্দোলনে যারা দলকে এগিয়ে নিতে পারবেন, এমন ৫০০ নেতা বাছাই করতে হবে। নতুন কমিটিতে পরীক্ষিত সিনিয়র-জুনিয়র নেতাদের সমন্বয় থাকতে হবে। না হলে মহানগরে যারা ৪০-৫০ বছর ধরে রাজনীতি করছেন, তারা বেকায়দায় পড়বেন। জুনিয়র নেতাদের সঙ্গে তাদের সমন্বয়ে সমস্যা হবে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন, এমন নেতাও এই তালিকায় রয়েছেন। তারা ঠিকানাবিহীন হয়ে পড়বেন এবং রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হবে।

প্রায় ৪০ ধরে ঢাকার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক তিনবারের কমিশনার ও গেন্ডারিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মকবুল ইসলাম খান টিপু। তিনি বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশের বাইরে থেকেও দলকে পুনর্গঠনের চেষ্টা করছেন। আমি মনে করি, সাবেক এমপি কাউকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত। আরও যাচাই-বাছাই করে সাহসী নেতাদের দায়িত্বে আনতে হবে। স্থানীয় ব্যক্তিত্ববান নেতাদের সমন্বয়ে কার্যকর কমিটি গঠন করতে হবে। না হলে কাজের কাজ কিছুই হবে না।’

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর মির হোসেন মিরু খবরের কাগজকে বলেন, ‘কার্যকরী কমিটি দিতে পারলে রাজপথে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বিএনপি। আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিতে পারেন, তাদেরই কমিটিতে আনতে হবে। দলের একজন কর্মী হিসেবে বিএনপির রাজনীতি করে যাচ্ছি। কমিটি রাখলেও আছি, না রাখলেও থাকব।’ 

সূত্রমতে, আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু ঢাকা মহানগর। কিন্তু ঢাকায় আন্দোলন জমিয়ে তুলতে পারছে না বিএনপি। বর্তমান প্রতিকূল পরিবেশের পাশাপাশি মহানগর নেতৃত্ব কি পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছে? থানা এবং ওয়ার্ড কমিটি গোছানোর সঙ্গে সঙ্গেই মহানগর কমিটি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। নতুন কমিটি এসে আবার থানা-ওয়ার্ড কমিটি ভেঙে দিচ্ছে। এতে নেতা-কর্মীরাও বিভক্ত হয়ে পড়েন। ২০১৪ সালে ঢাকা মহানগরের আহ্বায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়ান প্রয়াত সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। ওই বছরের ১৮ জুলাই মির্জা আব্বাসকে আহ্বায়ক ও হাবীব-উন-নবী খান সোহেলকে সদস্যসচিব করে কমিটি গঠিত হয়। তখন কেউ কাউকে সহযোগিতা করেননি বলেও অভিযোগ ওঠে। প্রায় তিন বছর পর মহানগর দক্ষিণে নবী খান সোহেল এবং উত্তরে এম এ কাইয়ুমকে সভাপতি করে কমিটি দেওয়া হয় ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল। ২০২১ সালের ২ আগস্ট প্রায় সাড়ে চার বছর পর আব্দুস সালামকে দক্ষিণের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম মজনু এবং আমানউল্লাহ আমানকে আহ্বায়ক ও আমিনুল হককে সদস্যসচিব করে কমিটি গঠিত হয়। কিন্তু আড়াই বছরের মাথায় গত ১৩ জুলাই এই কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের বিলুপ্ত আহ্বায়ক কমিটির নেতা-কর্মীরা বলছেন, সংগঠনে সাহসী নেতা-কর্মীদের সঠিক স্থানে বসাতেও সময় লাগে। এখন আবার নতুন কমিটি এলে তারা থানা ও ওয়ার্ড কমিটিতে তাদের নিজস্ব বলয়ের নেতা-কর্মীদের স্থান দেবে। এতে দলের সাহসী-ডেডিকেটেড নেতা-কর্মী অনেকেই বাদ পড়েন। ফলে আন্দোলন-সংগ্রামে এক গ্রুপ ঝুঁকি নিলেও আরেক অংশ নিষ্ক্রিয় থাকে। তাদের মতে, দলে সাহসী ও নিবেদিত নেতা-কর্মীর অভাব রয়েছে। 

তারা বলেন, ‘তিন বছরে আন্দোলন-সংগ্রাম বেগবান করেছি, নির্যাতন-নিপীড়ন ও হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন অসংখ্য নেতা-কর্মী। এখন পুলিশ নেতা-কর্মীদের না পেয়ে বাবা-মা ও সন্তানকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এর পরও রাজপথে থাকার চেষ্টা করেছে সবাই। বর্তমান বাস্তবতার প্রকৃত তথ্য পাচ্ছেন না ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তাকে একটি গ্রুপ প্রতিনিয়ত ভুল তথ্য দিয়ে আসছে। শেষ মুহূর্তে এসে ঢাকার আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পেছনে সঠিক পরিকল্পনার অভাব রয়েছে।

দক্ষিণের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী খবরের কাগজকে বলেন, ‘অস্থায়ী লোক দিয়ে কমিটি করলে আন্দোলনের সময় তাদের রাজপথে পাওয়া যায় না। সিনিয়র-জুনিয়র সংমিশ্রণে হলে কমিটি কার্যকরী হবে। আন্দোলন-সংগ্রামে দলকে এগিয়ে নিতে পারেন, এমন নেতাদের নেতৃত্বে প্রয়োজন। অর্থবিত্ত ও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, নিজস্ব কর্মী-সমর্থক রয়েছে, ২ ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ-সাত হাজার নেতা-কর্মী জড়ো করতে পারেন-তাদের কমিটিতে জায়গা দিতে হবে।’

সাবেক সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম মজনু খবরের কাগজকে বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আগামী দিনে দলের প্রয়োজনে যে সিদ্ধান্ত নেবেন, তার সঙ্গে আমরা একমত।’

ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সদস্যসচিব আমিনুল হক বলেন, ‘কমিটি ভেঙে দেওয়া সাংগঠনিক কার্যক্রমের প্রক্রিয়া। প্রায় সব থানা-ওয়ার্ড কমিটি পুনর্গঠন করেছি। যারা দলের জন্য সাহসী ভূমিকা পালন করতে পারবেন, যারা দলের জন্য নিবেদিত, তাদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করার চেষ্টা করেছি।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির কমিটির সুপার ফাইভে যাদের নিয়ে আলোচনা রয়েছে তারা হলেন সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম মজনু, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিন, বিএনপি নেতা আ ন ফ সাইফুল ইসলাম, ইশরাক হোসেন।

অন্যদিকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সুপার ফাইভে আলোচনায় রয়েছেন যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাবেক সদস্যসচিব আমিনুল হক, বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়াল, যুবদল নেতা এস এম জাহাঙ্গীর, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, দপ্তর সম্পাদক এ বি এম রাজ্জাক। 

উত্তরের একাধিক নেতা জানান, বিদায়ী কমিটিতে আমান উল্লাহ আমানকে আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হলেও তিনি স্থানীয় নেতা নন। আমান উত্তরের রাজনীতির সঙ্গেও কখনোই সম্পৃক্ত ছিলেন না। তাই স্থানীয় নেতাদের দায়িত্বে চান তারা। 

মহানগর উত্তরের দুবারের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এ বি এম রাজ্জাক খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা আশা করি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ার‌ম্যান কমিটিতে যোগ্য ও পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়ন করবেন। প্রায় ৩৫ বছর ধরে মহানগর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আছি। তদবির-লবিংয়ে নেতা নির্বাচন নয়, রাজপথের পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়িত করতে হবে। যোগ্য নেতাদের মূল্যায়ন না হলে দলই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

বিএনপির সংবাদ সম্মেলন দেশকে আজীবন ভারতের গোলামে পরিণত করবে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ১০:০৪ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১০:০৪ পিএম
দেশকে আজীবন ভারতের গোলামে পরিণত করবে: মির্জা ফখরুল
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন বর্তমান সরকার ভারতের সঙ্গে যে ১০টি সমঝোতা স্মারক সই করেছে সেগুলো গোলামির নবতর সংস্করণ মাত্র। কানেক্টিভিটির নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের এক অংশ থেকে আরেক অংশ পর্যন্ত রেল যোগাযোগের নামে করিডোর প্রদানের মাধ্যমে যা করা হয়েছে তাতে দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই ১৯৭২ সালে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ২৫ বছরের গোলামি চুক্তির কথা স্মরণ আছে। ৫২ বছর পর সে ধারাবাহিকতায় গত ২২ জুন ভারতের সঙ্গে সমঝোতার আড়ালে যে সকল সমঝোতা স্মারক করা হয়েছে তা দেশকে আজীবন ভারতের গোলামে পরিণত করবে। বিএনপি দেশবিরোধী এসব চুক্তি-সমঝোতা প্রত্যাখান করছে। 

রবিবার (৩০ জুন) বিকালে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফর, চুক্তি-সমঝোতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। 

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, এসব চুক্তি-স্মারকের মাধ্যমে দেশের প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে ভারতের জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার অংশে পরিণত করা হয়েছে, যা খুবই বিপজ্জনক এবং দেশের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি। এসব সমঝোতা ও চুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতে নিরাপত্তাকৌশলগত “বাফার স্টেট” হিসেবে ভারতকে ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে চান। এর ফলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার জটিলতার মধ্যে পড়বে। 

বাংলাদেশের জনগণের প্রাপ্তি শূন্য

বিএনপি মহাসচিব বলেন, শাসকগোষ্ঠী দাবি করে ভারতের সাথে সম্পর্ক ‘অনন্য উচ্চতায়’ পৌঁছেছে। কিন্তু সম্পর্কের তথাকথিত ‘সোনালি অধ্যায়’ সময়কালে বাংলাদেশের জনগণের প্রাপ্তি শূন্যের কোঠায়। এ সময়ে দুই দেশের মধ্যকার লেনদেনের প্রধান অংশজুড়ে রয়েছে কানেক্টিভিটির নামে একের পর এক ভারতকে ট্রানজিট ও করিডোর সুবিধা প্রদান। ট্রানজিট-করিডোর দেওয়ার রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ও কৌশলগত ঝুঁকি সত্ত্বেও সবকিছুই একতরফাভাবে করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বার্থকে কোনো গুরুত্বই দেওয়া হয়নি। একদিকে ভারত পেয়েছে অবাধ স্থল ও নৌ ট্রানজিট, যা ভারতের অবশিষ্ট অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব ভারতের সেভেন সিস্টার্সের যোগাযোগের সময় ও দৈর্ঘ্য কমিয়েছে অন্তত তিন-চতুর্থাংশ। কলকাতা-আগরতলার ১৭০০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫০ কিলোমিটারে। ভারত পেয়েছে বাংলাদেশের পায়রা, মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের অগ্রাধিকার সুবিধা। অন্যদিকে বাংলাদেশ নেপালের মাত্র ২১/২২ কিলোমিটারের ট্রানজিট সুবিধা ভারতের কাছে থেকে আদায় করতে পারেনি। নানা নাম দিয়ে যে দশটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হলো তাতে বাংলাদেশের প্রাপ্তি শূন্য।

তিনি বলেন, রেল করিডোরের ফলে বাংলাদেশের লাভ নিয়ে দারুণ সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। একতরফাভাবে ভারতকে করিডোর সুবিধা দেওয়ার জন্য এ চুক্তি করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশের কোনো লাভ হবে না। তার মতে, একতরফা আগ্রাসী বাণিজ্যে বাংলাদেশকে ভারতের অবাধ বিপণিকেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে। দু’দেশের সামগ্রিক ২৬ বিলিয়ন বার্ষিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের হিস্যা মাত্র দুই বিলিয়ন। এর মাঝেও রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি। তীব্র বেকারত্বের বাংলাদেশে কাজ করছে লাখ লাখ ভারতীয় যুবক। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী সংসদে জানিয়েছেন, গত ১০ মাসে ভারতীয়রা নিয়ে গেছে ৫০.৬০ মিলিয়ন ডলার। আমরা জানি, এর বাইরেও অবৈধ পন্থায় নিয়ে যাচ্ছে লাখ লাখ ডলার।

সীমান্তে হত্যা নিয়ে সরকার চূড়ান্তভাবে নির্লিপ্ত

বাংলাদেশ—ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে প্রতিবছর রেকর্ডসংখ্যক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পরও এ সফরে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সরকার চূড়ান্তভাবে নির্লিপ্ত থেকেছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত অন্তত ১১ বাংলাদেশি সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৯ জন। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের তথ্যমতে, ২০০০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ভারতীয় সীমান্ত বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ১ হাজার ২৩৬ বাংলাদেশি নিহত এবং ১ হাজার ১৪৫ জন আহত হয়েছেন। এমনকি বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সদস্যরাও রেহাই পাননি। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের তিনদিনের মাথায়ও একজনকে হত্যা করা হয়েছে। 

সকল চুক্তি-সমঝোতা জনসমক্ষে প্রকাশ করুন

মির্জা ফখরুল বলেন, অবৈধ সরকার রাষ্ট্রের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে কেবলমাত্র ক্ষমতার দখলদারত্ব অব্যাহত রাখতে দেশি-বিদেশি সহযোগী গোষ্ঠী কিংবা প্রভুদের নিরন্তর আস্থা অর্জনে সচেষ্ট। ‘ঢাকা ও দিল্লি নতুন যাত্রা শুরু করেছে, উভয় দেশ রূপকল্প ২০৪১ ও বিকশিত ভারত ২০৪৭ অনুসরণ করে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ নিশ্চিত করার জন্য ভবিষ্যতের কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়েছে’- শেখ হাসিনার এ বক্তব্যের মাধ্যমেই তার ভারত সফরের প্রকৃত স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে। যা দেশবাসীও গভীরভাবে উপলব্ধি করেন বলে বিএনপি বিশ্বাস করে। এ সফরসহ ভারতের সঙ্গে ইতোপূর্বে স্বাক্ষরিত সব চুক্তি অবিলম্বে জনসমক্ষে প্রকাশ করার দাবি জানান। 

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ ও জহির উদ্দিন স্বপন উপস্থিত ছিলেন।

সবুজ/এমএ/

খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবি সাবেক ১৬৬ কর্মকর্তার

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:১৯ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:১৯ পিএম
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবি সাবেক ১৬৬ কর্মকর্তার
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতকরণে বিদেশে আধুনিক চিকিৎসা সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত হাসপাতালে পাঠানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত ১৬৬ জন সরকারি কর্মকর্তা। 

রবিবার (৩০ জুন) বিকালে পলিসি ম্যানেজমেন্ট অ্যন্ড রির্সাচ সোসাইটি চেয়ারম্যান ইসমাইল জবিউল্লাহ ও মহাসচিব মো. আবদুল বারী স্বাক্ষরিত এক বিবৃবিতে তারা এই দাবি জানান। 

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ভয়াবহ অবনতিতে গভীর উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করে নেতৃদ্বয় বলেন, মেডিকেল বোর্ড বলেছে, খালেদা জিয়ার বয়স এবং অসুস্থতার যে জটিল অবস্থা তাতে যে ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন, তা দেশে সম্ভব নয়। তার এমন সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংম্বলিত যে সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন তা দেশে নেই। তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা খুবই নাজুক, ঝুঁকিপূর্ণ, জটিল ও সংকটাপন্ন। তিনি এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। ফলে খালেদা জিয়াকে সুস্থ করে তুলতে হলে, তার জীবন বাঁচাতে হলে বিদেশের উন্নত মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যথাযথ চিকিৎসার কোনো বিকল্প নেই। দেশের প্রতিটি নাগরিকের মতো সাংবিধানিক অধিকার অনুসারে তারও বিদেশে যথাযথ চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

তারা বলেন, খালেদা জিয়ার বর্তমান সংকটপূর্ণ শারীরিক অসুস্থতায় বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগকে রাজনৈতিক ঘেরাটোপে বন্দি না রেখে এবং তার চিকিৎসার আবেদনকে আইনের দোহাই দিয়ে প্রত্যাখ্যান না করে সম্পূর্ণ মানবিক কারণ বিবেচনায় নিয়ে মেডিকেল টিমের পরামর্শ অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

বিবৃতিদাতারা হলেন, এ এস এম আব্দুল হালিম, মো. আবদুল কাউয়ুম, মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ, সৈয়দ সুজাউদ্দিন আহমেদ, মো. আব্দুর রশীদ সরকার, ইকতেদার আহমেদ, কর্ণেল (অব.) মুহাম্মদ ইসহাক মিয়া, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিজন কান্তি সরকার, এ কে এম জাহাঙ্গীর, এ বি এম আব্দুস সাত্তার, মকসুমুল হাকিম চৌধুরী, তপন চন্দ্র মজুমদার, আখতার আহমেদ, মো. আবদুজ জাহের, আফতাব হাসান, মো. আবদুল বারী, এস এম শমসের জাকারিয়া প্রমুখ।

শফিক/এমএ/

এবি পার্টির কাউন্সিল ডিসেম্বরে

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৮:৩৮ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৮:৩৮ পিএম
এবি পার্টির কাউন্সিল ডিসেম্বরে
ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে দলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি। 

শনিবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর বিজয়নগর দলের কার্যালয়ে এক সভায়  এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। 

এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু’র সঞ্চালনায় সভায় বিগত সভার কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা এবং অর্থনৈতিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন পার্টির অর্থসম্পাদক আমিনুল ইসলাম এফসিএ।

সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো হল- কাউন্সিল সম্পন্ন করতে অভ্যন্তরীণ নির্বাচন পরিচালনা কমিটিকে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ এবং সারাদেশে পার্টির কার্যক্রম শক্তিশালী করার পরামর্শ দেওয়া হয়। দেশের গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন বেগবান করার লক্ষ্যে গণসংযোগ পরিকল্পনাসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সদস্যরা কার্যবিবরণী পর্যালোচনা ও অনুমোদন করেন। 

সভায় সদ্য যোগদানকৃত সাবেক যুগ্মসচিব সুলতান মাহমুদ, লে. কর্ণেল (অব.) দিদারুল আলম এবং লে. কর্ণেল (অব.) হেলাল উদ্দিনকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়। 

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক, আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর কাসেম, হারুনর রশীদ, বিএম নাজমুল হক, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, ব্যারিস্টার খান আজম ও অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা প্রমুখ।

শফিক/এমএ/

জামিনে মুক্ত বিএনপি নেতা চাঁদ, বিকেলে স্ত্রীর জানাজা

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৩:৪০ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৪:১২ পিএম
জামিনে মুক্ত বিএনপি নেতা চাঁদ, বিকেলে স্ত্রীর জানাজা
ছবি : খবরের কাগজ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যার হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগের মামলায় গ্রেপ্তারের ১১ মাস ৫ দিন পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ।

রবিবার (৩০ জুন) দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

এর আগে, শনিবার দুপুরে আবু সাঈদ চাঁদের স্ত্রী শাহানা বেগম (৬০) মারা গেছেন। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার মাড়িয়া গ্রামে রবিবার বিকেলে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ফলে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েই স্ত্রীর মরদেহ দেখতে ছুটে যান আবু সাঈদ চাঁদ।

আবু সাঈদ চাঁদ কারাগারে থাকা অবস্থায় গত ২৪ মার্চ তার মা আশরাফুন্নেশা মারা যান। ওইদিন আড়াই ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাজায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

গত বছরের ১৯ মার্চ রাজশাহীর পুঠিয়ায় জেলা বিএনপির সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে আবু সাঈদ চাঁদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যার হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগ উঠে। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে কবরে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।’ তার এ বক্তব্যের জেরে দেশের বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে মামলা হতে শুরু করে। এরপর ২৪ মার্চ রাজশাহী মহানগর পুলিশ নগরীর ভেড়িপাড়া মোড় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

চাঁদের আইনজীবী ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যরিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন জানান, চাঁদের বিরুদ্ধে মোট ২১টি মামলা হয়েছিল। সব মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিতে হয়েছে। সবশেষ ঈদের আগে ফরিদপুরের একটি মামলায় চাঁদের জামিন হয়। এরপর থেকে তিনি মুক্তির অপেক্ষায় ছিলেন। রবিবার দুপুরে উচ্চ আদালত থেকে জামিনের আদেশ রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছায়। এরপর কারা কর্তৃপক্ষ তাকে মুক্তি দেন।

এনায়েত করিম/জোবাইদা/অমিয়/

খালেদার অসুস্থতার মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে: কাদের

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০২:০৯ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০২:১৫ পিএম
খালেদার অসুস্থতার মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে: কাদের
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

বিএনপির নেতারা খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি এবং তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

রবিবার (৩০ জুন) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ অভিযোগ করেন। 

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপির বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি জনগণ বার বার প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বিএনপি আজ একটি ব্যর্থ রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। এখন তাদের তথাকথিত আন্দোলনের বিষয় দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত অসুস্থ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। 

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হওয়ার পরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে নিজ বাসায় থেকে দেশের সর্বাধুনিক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ করে দিয়েছেন। সেখানে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তির মুক্তভাবে এভাবে চিকিৎসাসেবা নেওয়ার কোনো নজির নেই। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, কিন্তু বিএনপি গত কয়েক বছর ধরে আইনগত পদ্ধতি ব্যতিরেখে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি করছে। এমনকী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে গুজব ছড়িয়ে জনগণকে উস্কানি দিচ্ছে এবং আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে জনগণের কাছ থেকে করুণা আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছে। 

বিবৃতিতে তিনি বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সংবিধান ও আইনগত প্রক্রিয়ার বাইরে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামির মুক্তি দাবি ধৃষ্টতা ছাড়া কিছু নয়। আইনগত প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে কোনো সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির দেশ ছাড়ার কোনো বিধান নেই। মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করে সাজা স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসাগ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছেন।

বিএনপি এ বিষয়ে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, উচ্চ-আদালতে না গিয়ে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের বলেন, ঐতিহ্যগতভাবে বিএনপি কখনো আইনের শাসনে বিশ্বাস করে না এবং চিরাচরিতভাবে আইন, বিচারব্যবস্থা, সংবিধান ও গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশে সংবিধান ও আইনের শাসন বজায় রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কোনো প্রকার বেআইনি, অযাচিত ও অযৌক্তিক দাবি কোনো গণতান্ত্রিক সরকার মানতে পারে না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অতীতের মতো আন্দোলনের নামে যে কোনো সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির যড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করবে।

অমিয়/