ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

বরিশালে শেষ হলো বই বিনিময় উৎসব

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৪, ০৪:০৩ পিএম
আপডেট: ১২ মে ২০২৪, ০৪:০৩ পিএম
বরিশালে শেষ হলো বই বিনিময় উৎসব
ছবি: সংগৃহীত

বৃহত্তর বরিশাল বইবন্ধু বই বিনিময় উৎসব (বরিশাল পর্ব-১) সফল ভাবে শেষ হয়েছে। দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে গত শুক্রবার (১০ মে) বরিশালের শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বইপ্রেমীদের মাঝে জ্ঞান ও ভালোবাসা বিনিময় করেছে বইবন্ধু। এর আগে ঢাকায় দুই বার এবং চট্টগ্রামে তিন বার বই বিনিময় উৎসব সফল ভাবে আয়োজন করেছিল বইবন্ধু। 

তাদের হিসেবে সেখানে প্রায় এক লাখ বই বিনিময় করেছেন পাঠকরা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রায় দুই সহস্রাধিক বই টেবিলে সাজিয়ে রেখেছিলেন তারা। সেই বইগুলোর পরিবর্তে পাঠকরা তাদের ঘরে থাকা বই বদলে নিয়েছেন। 

হাজারো বইয়ের ভিড়ে নিজের পছন্দের বইটি খুঁজে পেতে একজন বইপ্রেমীর অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘক্ষণ।

শিক্ষক, শিক্ষার্থী, লেখকসহ সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে উৎসবটি পরিণত হয়েছিল জ্ঞানপিপাসুদের মিলনমেলায়। বইপ্রেমীদের উত্তেজনা ছড়িয়েছিল ঈদের আনন্দের মতো।

বইবন্ধুর এই আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল যেন সবাই বই নিয়ে উৎসাহ দেখায়।

বরিশালে প্রথমবারের মতো এই আয়োজন ইতোমধ্যে বইপ্রেমীদের মাঝে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। পাঠকদের অভিযোগ, কেন এই আয়োজন একদিন হয়েছে? তারা চেয়েছেন এই আয়োজন যেন প্রতি সপ্তাহে কিংবা মাসে আয়োজন করা হয়। 

এই উৎসবে বরিশালে বইবন্ধু প্রায় সাত হাজার বই বিনিময় করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু সংখ্যাটা ছোট হলেও বরিশালের জন্য বিশাল। কারণ যাতায়াতের অসুবিধার জন্য জেলার দূরবর্তী স্থানে থাকা বইপ্রেমীরা অংশগ্রহণ করতে পারেনি। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই লক্ষ্যমাত্রা কাছাকাছি গিয়ে থেমে যেতে হয়েছে বইবন্ধুকে।

বইবন্ধু বই বিনিময় উৎসব (বরিশাল পর্ব-১) এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মনদীপ ঘরাই।

বেলা সাড়ে ১০টায় তিনি এই ব্যতিক্রমী উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন এবং বই বিনিময় পর্বে অংশ নিয়ে একটি বই বিনিময় করেন। 

এ ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও প্রকাশক মোরশেদ আলম হৃদয়।

লেখকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মানজুলুল হক, রেজওয়ান শুভ, রুদ্র শামীম, বিপ্রতীপ শাহ তন্ময়সহ অসংখ্য বইপ্রেমী।

বই বিনিময় উৎসব সম্পর্কে আয়োজক ও বইবন্ধু টিম ম্যানেজমেন্ট আরিফ হোসেন তাহসিন বলেন, ‘বাংলাদেশের পাঠকদের মধ্যে ইতোমধ্যে এই প্রোগ্রাম ঈদের মতো বাড়তি আনন্দ দিচ্ছে। প্রতিটি বিভাগ ও জেলা থেকে প্রতিনিয়ত আমাদের কাছে ফোন এবং মেসেজ আসে কবে তাদের ওখানে বই বিনিময় উৎসবের আয়োজন করবে বইবন্ধু। সর্বোপরি বই বিনিময় উৎসব পাঠকদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করছে প্রতিনিয়ত।’ 

কেন এই ব্যতিক্রমী আয়োজন জিজ্ঞেস করলে বইবন্ধুর ভলান্টিয়ার ইব্রাহীম নিরব জানান, ‘আমরা এখন এতই ডিজিটাল হয়ে গেছি যে অবসর সময়টাতে অযথাই স্ক্রিনের দিকেই তাকিয়ে থাকি। এতে ব্রেইন ও চোখের যে পরিমাণ ক্ষতি হয় তা ধারণার বাইরে। ফলে আমাদের আজকাল বই পড়ে সময় কাটানো একদম হারিয়ে যাচ্ছে। বাড়িতে অনেক বই পড়ে থাকেন। সেই বইটি যদি অন্য কেউ পড়ে উপকৃত হয় তাহলে বিষয়টা একইসাথে দারুণ খবর ও আনন্দময়। আর বই পড়লে মানুষের চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে সমাজের কুসংস্কার, অপসংস্কৃতি, উগ্রতা, মারামারি কমে আসে। কারণ একজন পাঠক সব সময় নিজেকে নম্র ভদ্র রেখে সমাজে চলাফেরা করে।’ 

বইবন্ধুর ভবিষ্যৎ কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে আয়োজক ও বইবন্ধু টিম ম্যানেজমেন্ট আরিফ হোসেন তাহসিন বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে বইপ্রেমী মানুষদের মাঝে আন্তঃসম্পর্ক বাড়ানো, নতুনদের বই পড়ার অভ্যাস ও আগ্রহ তৈরি করা। বই বিনিময় উৎসব ছাড়াও আমরা নিয়মিতভাবে মানুষকে সাহিত্যের সাথে সংযুক্ত রাখতে টু আওয়ারস লাইব্রেরি, স্বশিক্ষা পাঠশালা, বইয়ের ইতিকথা, গণপরিবহন পাঠাগার, হাসপাতাল পাঠাগার, নৌ পাঠাগার ও পর্যটন পাঠাগারসহ বিভিন্ন আয়োজন করে যাচ্ছি। এগুলো ছাড়াও পরিবেশ রক্ষার্থে সিড ফর প্লাস্টিক নামে আমাদের কার্যক্রম রয়েছে।’  

ব্যতিক্রমী এই আয়োজনে উপস্থাপনা করেন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর তনিমা রহমান। 

জাতীয় সংগীত, কুরআন থেকে তেলাওয়াত এবং গীতা পাঠ দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে শেষ হয়ে বরিশাল টিমের সদস্যদের ক্রিয়েটিভ কার্যক্রমের পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে। 

এর মাঝে দিনব্যাপী একে অন্যের বই বিনিময়, বই আলোচনা, কবিতার আসর ও কবি, সাহিত্যিক ও গুণীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। 

অমিয়/

একুশে পদকপ্রাপ্ত ড. মাহবুবুল হক মারা গেছেন

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪০ এএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪০ এএম
একুশে পদকপ্রাপ্ত ড. মাহবুবুল হক মারা গেছেন
ড. মাহবুবুল হক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত, ভাষাবিদ, গবেষক ও প্রাবন্ধিক ড. মাহবুবুল হক মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মাহবুবুল হক ১৯৪৮ সালের ৩ নভেম্বর ফরিদপুরের মধুখালিতে জন্মগ্রহণ করেন। তবে শৈশব থেকে বেড়ে ওঠেছেন চট্টগ্রামে। 

তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৭০ সালে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন। ১৯৯৭ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষকতা করেছেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া কলেজ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে।

শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রায়োগিক বাংলা ও ফোকলোর চর্চা, গবেষণা, সম্পাদনা, অনুবাদ ও পাঠ্যবই রচনা করে পরিচিতি লাভ রয়েছে ড. মাহবুবুল হকের।

প্রবন্ধে অবদানের জন্য তিনি ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। গবেষণায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করেন।

অমিয়/

কথায় গানে বাতিঘরের ২০ বছর

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৪ পিএম
আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫২ এএম
কথায় গানে বাতিঘরের ২০ বছর
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। ছবি: খবরের কাগজ

গল্প, কবিতা, উপন্যাস, অনুবাদ- সাহিত্যের সব শাখার বরেণ্য লেখকরা জড়ো হলেন বিকেলে। এসেছিলেন এ প্রজন্মের সব নন্দিত কবি, গল্পকার, অনুবাদকরা। শুভেচ্ছা আশীর্বাদ জানাতে এসেছিলেন অগ্রজ প্রকাশকরা। লেখক, প্রকাশকের অভূতপূর্ব মিলনমেলা হয়ে উঠেছিল চেইন বুক শপ বাতিঘরের ২০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠান।

ঢাকার বাংলামোটরে চেইন বুক শপ বাতিঘরের ‘মুক্ত আলাপ ও গান’ আয়োজনে মুখর ছিল শনিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে। 

আয়োজনের মধ্যমণি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘বাংলাদেশ একটা ভয়ংকর জায়গা। এখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়ালে তাকে পালিশ করতে অনেক লোক দাঁড়িয়ে যায়। সেখানে লাইব্রেরি করা তো খুবই কঠিন।’

বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা শহরে লাইব্রেরি থাকলেও সেগুলো কেন চলে না, তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘শহরে শহরে লাইব্রেরিগুলো চলছে না। কারণ পাঠক হেঁটে গিয়ে বই পড়তে চায় না। আমরা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকে যখন বই পড়া কর্মসূচি শুরু করেছিলাম, তখন প্রতিজ্ঞা করেছিলাম মানুষের হাতে বই ধরাব। ইতোমধ্যে দুই কোটি পাঠকের হাতে বই ধরিয়েছি। কিন্তু এর পেছনেও অনেক লোক লেগে গেছে। মানুষ এত ক্ষুদ্রমনা!’

সারা দেশে ২০০টি বইমেলার আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে একটি বড় বইমেলা হয়, সেটি ঢাকায়। কিন্তু সারা দেশকে বঞ্চিত রেখে শুধু রাজধানীকে বৈভবপূর্ণ করে জাতি সম্পূর্ণ হতে পারে না। এই বইমেলা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।’

প্রকাশকদের উদ্দেশে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘যারা বইয়ের দোকান করে, তাদের প্রকাশক হওয়ার দরকার নেই। আবার যারা প্রকাশক, তাদের বইয়ের দোকান করার দরকার নেই। চেইন বুক শপকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলেই তারা যেন প্রকাশনায় যুক্ত হয়।’

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘বইয়ের দোকান পরিচালনা করা বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ। সেখানে ২০ বছর ধরে বুক শপ পরিচালনা ও প্রকাশনার মাধ্যমে বইপ্রেমীদের আকৃষ্ট করার জন্য বাতিঘরকে অভিনন্দন জানাতে হয়। তবে বাতিঘরকে শুধু ব্যবসায়িক সাফল্য দিয়ে বিবেচনা করলে হবে না। বাতিঘর একটি সামাজিক উদ্যোগ, এটিকে সামাজিক ব্যবসা হিসেবে মূল্যায়ন করতে হবে। এটি জ্ঞানপিপাসু মানুষের আকর্ষণের জায়গা হয়ে থাকুক।’ 

লেখক-গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, বাতিঘর বই বিক্রেতা, নাকি প্রকাশনা এ নিয়ে দ্বিধা রয়েছে। কখনো মনে হয়, বাতিঘরে প্রকাশনা কম গুরুত্ব পাচ্ছে। আসলে প্রকাশক হিসেবে টিকে থাকা খুব চ্যালেঞ্জের। সে চ্যালেঞ্জ বাতিঘর একা মোকাবিলা করবে, নাকি আরও সব প্রকাশনার সঙ্গে মিলে করবে, তাও দেখার বিষয়। কথা হলো, পাঠক যদি থাকে তাহলে লেখকও থাকবে, প্রকাশকও থাকবে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, এই কংক্রিটের শহরে বাতিঘর হলো মরূদ্যান। ওয়াটারস্টোনের মতো একটি চেইন বুক শপ হবে এই ঢাকায়, সেখানে বই পড়ার অভ্যাস ফিরে আসবে, বইয়ের জন্য এত টাকা বিনিয়োগ হবে, এটিই তো ছিল অবিশ্বাস্য।

কথাসাহিত্যিক নাসরীন জাহান, আলতাফ পারভেজ, কবি ও প্রাবন্ধিক এজাজ ইউসুফী, ইফতেখারুল ইসলাম, মোহিত কামাল, লেখক কিযী তাহনিন, কবি-সাংবাদিক সোহরাব হাসান, লেখক-অনুবাদক মোজাফফর হোসেন, লেখক অরুণ বিশ্বাস শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়াও সময় প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ, অনুপম প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মিলন কান্তি নাথ, ভাষাচিত্র প্রকাশক খন্দকার সোহেল এই মিলনমেলায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। 

‘নানা প্রভাববলয়ে আত্মসমর্পণ করছে সাহিত্য’, অভিমত সাহিত্যিক-প্রকাশকদের

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ১১:১৯ পিএম
আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৭ এএম
‘নানা প্রভাববলয়ে আত্মসমর্পণ করছে সাহিত্য’, অভিমত সাহিত্যিক-প্রকাশকদের
ছবি: সংগৃহীত

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পরিবর্তিত সমাজব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে সাহিত্য নানাভাবে প্রভাববলয়ের কাছে আত্মসমর্পণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী ও প্রকাশকরা। প্রভাবাচ্ছন্ন প্রক্রিয়া-সৃষ্ট সাহিত্যকে তারা উল্লেখ করছেন হলুদ সাহিত্য নামে। এমন সাহিত্যকে তারা সমাজ ধ্বংসের অন্যতম উপকরণ হিসেবেও চিহ্নিত করেন।

শুক্রবার (১২ জুলাই) রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে সময় প্রকাশন আয়োজিত হুমায়ূন কবিরের প্রবন্ধ ‘হলুদ সাহিত্যের ছলচাতুরী ও অন্যান্য প্রবন্ধ’ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় তারা এসব কথা বলেন। সময় প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমদের সভাপতিত্বে এই আলোচনা সভায় আলোচক ছিলেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। অনুষ্ঠানে লেখক হুমায়ূন কবিরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক আলম খোরশেদ, দীপু মাহমুদ, মোহিত কামালসহ আরও অনেকে।  

হুমায়ূন কবিরের  ‘হলুদ সাহিত্যের ছলচাতুরী ও অন্যান্য প্রবন্ধ’ প্রবন্ধগ্রন্থে ৮০ পৃষ্ঠায় ৪টি বিষয়ে ৮টি নিবন্ধ সংকলিত হয়েছে। 

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘হলুদ সাহিত্য বলতে আমি বুঝি, যেখানে উদ্দেশ্যমূলক প্রচার আছে। যার মধ্যে সত্য নেই কিন্তু সত্যের ভান আছে। সেখানে আলোচ্য বিষয় হলো সাহিত্য ও সত্যের মধ্যে সম্পর্ক কী? চিন্তার মধ্যে যে দুর্বলতা রয়েছে, সে প্রশ্নও রয়েছে হলুদ সাহিত্যে। আমরা বিশেষ করে বিশ্বসাহিত্য উচ্চারণ করছি। এই বিশ্বসাহিত্যের কত আনা সবুজ, কত আনা হলুদ, কত আনা কালো? এসব আলোচনা করলে অনেক সমস্যা বেরিয়ে আসবে।’

মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘বইটিতে ৮টি প্রবন্ধ রয়েছে। প্রবন্ধগুলোর মধ্যে বর্তমানময়তা রয়েছে। প্রতিটি প্রবন্ধ যাপিতজীবন ও স্থান-কালের সঙ্গে নিজের অবস্থান বাস্তবতার কাঠামোতে বর্ণনা করেছেন প্রাবন্ধিক।

প্রাবন্ধিক হুমায়ূন কবির পেশায় চিকিৎসক। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে বিপ্লবোত্তর ইরানে কাটিয়েছেন দুই বছর। ওই সময়ে তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা উপন্যাস ‘পারস্য পরবাসে’ ইতোমধ্যেই বিপুলভাবে আলোচিত।

জয়ন্ত/এমএ/

প্রবর্তিত হচ্ছে ‘ঐতিহ্য-শান্তনু কায়সার সাহিত্য পুরস্কার’

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫৩ পিএম
আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫৯ পিএম
প্রবর্তিত হচ্ছে ‘ঐতিহ্য-শান্তনু কায়সার সাহিত্য পুরস্কার’
ছবি: সংগৃহীত

বহুমাত্রিক লেখক প্রয়াত শান্তনু কায়সারের স্মৃতিতে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘ঐতিহ্য’ এবং ‘শান্তনু কায়সার স্মৃতি পাঠাগার ও চর্চা কেন্দ্র, সাজনমেঘ’-এর যৌথ উদ্যোগে প্রবর্তিত হতে যাচ্ছে ‘ঐতিহ্য-শান্তনু কায়সার সাহিত্য পুরস্কার’। শান্তনু কায়সারের সাহিত্যচর্চার পাঁচটি ক্ষেত্র- কবিতা, কথাসাহিত্য (গল্প/ উপন্যাস), প্রবন্ধ-গবেষণা, নাটক এবং অনুবাদ বিষয়ে উদ্ভাবনাময়, মৌলিকতামণ্ডিত এবং প্রতিশ্রুতিবান বাংলা ভাষায় রচিত পাণ্ডুলিপির জন্য এ পুরস্কার প্রদান করা হবে।

গত ২৮ মে ২০২৪ তারিখ পুরানা পল্টনস্থ ঐতিহ্য কার্যালয়ে ঐতিহ্য’র প্রধান নির্বাহী আরিফুর রহমান নাইম এবং শান্তনু কায়সারের পরিবারের পক্ষে তার কনিষ্ঠ পুত্র রাসেল রায়হানের মধ্যে এ সংক্রান্ত যৌথ আলোচনায় ‘ঐতিহ্য-শান্তনু কায়সার সাহিত্য পুরস্কার’ প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। 

ঐতিহ্য’র কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাকিবুজ্জামান জানিয়েছেন, প্রতি বছর পাঁচটি বিষয়ে জমাকৃত পাণ্ডুলিপির মধ্যে পুরস্কারের জন্য গঠিত বিচারকদের বাছাই করা সেরা তিনটি পাণ্ডুলিপির (পাঁচটি ক্ষেত্রের যে কোনও ক্ষেত্রের তিনটি সেরা পাণ্ডুলিপি) লেখককে প্রতিটি ৫০ হাজার টাকা অর্থমূল্যের এ পুরস্কার, ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হবে। সেরা তিনটি পাণ্ডুলিপি পরবর্তী বছর অমর একুশে বইমেলায় ‘ঐতিহ্য’ থেকে বই আকারে প্রকাশিত হবে।

রাকিবুজ্জামান জানান, প্রতি বছর অধ্যাপক শান্তনু কায়সারের জন্মদিন ৩০ ডিসেম্বর একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ পুরস্কার ঘোষণা ও প্রদান করা হবে। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট নবীন বা প্রবীণ লেখক ‘শান্তনু কায়সার স্মারক বক্তৃতা’ প্রদান করবেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী ৩০ ডিসেম্বর তারিখে সর্বোচ্চ ত্রিশ বছর অথবা এর নিম্নে যে কোনও বয়সী জন্মসূত্রে বাংলাদেশি কবি-লেখককরা এ পুরস্কারে জন্য আবেদন করতে পারবেন। ‘ঐতিহ্য-শান্তনু কায়সার সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’-এর জন্য ১৫ জুলাই থেকে পাণ্ডুলিপি আহ্বান করেছেন আয়োজকরা। পাণ্ডুলিপি জমাদানের শেষ তারিখ ১৫ নভেম্বর। পাণ্ডুলিপির পৃষ্ঠা বা শব্দসংখ্যার কোনো সীমারেখা নেই। [email protected] ই-মেইল ঠিকানায় ‘ঐতিহ্য-শান্তনু কায়সার সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪-এর জন্য পাণ্ডুলিপি জমা দেওয়া যাবে। পাণ্ডুলিপি ওয়ার্ড ফাইল বা ও পিডিএফ ফরমেটে মেইল করতে হবে অথবা ডাকযোগে হার্ডকপি পাঠাতে হবে ঐতিহ্য শান্তনু কায়সার সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪, ঐতিহ্য, ৩/১-এইচ পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০)। 

ইতোমধ্যে বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে এমন রচনা পাণ্ডুলিপি আকারে জমা দেওয়া যাবে না। কোনো ধরণের চৌর্যবৃত্তি বা প্ল্যাজারিজম আশ্রয় নিলে পুরস্কার ঘোষিত হলেও অভিযোগ পাওয়া মাত্র বাতিল হবে। পুরস্কারের জন্য যেকোনো ধরনের সুপারিশ বা অনুরোধ পুরস্কারপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।

জয়ন্ত/এমএ/

কবি মাকিদ হায়দার মারা গেছেন

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৪, ১১:৩০ এএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৪, ১১:৩৪ এএম
কবি মাকিদ হায়দার মারা গেছেন
কবি মাকিদ হায়দার

কবি মাকিদ হায়দার মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। 

বুধবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে আটটায় উত্তরার নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন সত্তর দশকের অন্যতম এই কবি।

তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
 
মাকিদ হায়দারের ছেলে আসিফ হায়দার সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, কবি দীর্ঘদিন নানা রোগে ভুগছিলেন। তাকে বিকেলে পাবনায় পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হবে।

মাকিদ হায়দার ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর পাবনা জেলার দোহারপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা হাকিমউদ্দিন শেখ ও মা রহিমা খাতুন। তারা সাত ভাই ও সাত বোন। তিনি ছেলেদের মধ্যে ষষ্ঠ। তার ভাই রশীদ হায়দার, জিয়া হায়দার, দাউদ হায়দার, জাহিদ হায়দার, আবিদ হায়দার ও আরিফ হায়দার সবাই দেশের সাহিত্য-সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত।

তার উল্লেখযোগ্য লেখার মধ্যে রয়েছে, ‘রোদে ভিজে বাড়ি ফেরা’ ‘আপন আঁধারে একদিন’ ‘রবীন্দ্রনাথ: নদীগুলা’ ‘বাংলাদেশের প্রেমের কবিতা’ ‘যে আমাকে দুঃখ দিলো সে যেনো আজ সুখে থাকে’ ‘কফিনের লোকটা’ ‘ও প্রার্থ ও প্রতিম’ ‘প্রিয় রোকানালী’ ‘মমুর সাথে সারা দুপুর’।

মাকিদ হায়দার ২০১৯ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তাছাড়া বিভিন্ন সাহিত্য পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন তিনি।

অমিয়/