![সাবেক এমপি গোলাপের বিরুদ্ধে জামি দখলের অভিযোগ, ৫ মামলা](uploads/2024/06/05/Madaripur-1717558733.jpg)
মাদারীপুরের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের নামে জোর করে দখলের পর ব্যক্তি মালিকানা জমিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করায় পাঁচজন ভুক্তভোগী আদালতে ৫টি মামলা করেছেন। এমপি থাকা অবস্থায় জোর-জবরদস্তির প্রতিবাদ করলে হামলা ও মামলার ভয় দেখানো হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় মুখ খুলতে সাহস পাননি এলাকার মানুষ। দেরি হলেও আদালতের কাছে ন্যায়বিচার পাবেন বলে প্রত্যাশা ক্ষতিগ্রস্তদের।
মামলার আসামিরা হলেন, আবদুস সোবহান গোলাপ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সভাপতি, অধ্যক্ষ এবং আনারনেছা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের সভাপতি ও অধ্যক্ষ। আর উত্তর রমজানপুর মডার্ন একাডেমির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক এবং তৈয়ব আলী শিশুকল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক।
জানা যায়, আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ ছিলেন মাদারীপুর-৩ আসনের এমপি। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে কালকিনির উত্তর রমজানপুর নিজ এলাকার সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হলেও স্বতন্ত্রী প্রার্থী তাহমিনা বেগমের কাছে হেরে যান তিনি। এবার তার নিজ নামে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এক দিনেই আলাদা ৫টি মামলা করেছেন ৫ ভুক্তভোগী।
মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে মাদারীপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদুল হক চৌধুরীর আদালতে ভূমি আইনে মামলা করেন সাকিব হাসান, এবিএম সালাউদ্দিন, এবিএম নুরুল আলম, রেহেনা বেগম ও মাসুম বেপারি।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সংসদ সদস্য থাকাকালে জোর করে নিজ ও পরিবারের নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ। জমি লিখে না দেওয়ায় হত্যা ও মামলারও ভয় দেখানো হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। পরে রেজিস্ট্রি না করেই নির্মাণ করেন একাধিক ভবন।
ভুক্তভোগী এবিএম সালাউদ্দিন বলেন, ‘ভূমি দখল প্রতিকার আইন অনুযায়ী আমরা ৫ জন মিলে ৮ ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি। আমার পৈতৃক সম্পত্তি জোর করে নিয়ে ভবন নির্মাণ করেছে সাবেক এমপি গোলাপ।’
আরেক ভুক্তভোগী মেজর (অব.) মুক্তিযোদ্ধা এবিএম নুরুল আলম বলেন, ‘গোলাপ মিয়া ক্ষমতায় থাকাকালে তার রাজনৈতিক শক্তির কারণে আমরা কেউ জমির কাছাকাছিও যেতে পারিনি। গোলাপের তাণ্ডপের কারণেই অনেক মানুষ বাড়িঘরেও থাকতে পারেনি। অনেকেই বাড়ি ছেড়ে তাদের আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে থাকেন। গোলাপ মিয়া যে জমিগুলো দখলে নিয়েছেন, এই জমি তিনি বা তার প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো জমি নেই।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী আল আমিন প্রিন্স জানান, মামলার বাদী সবাই কালকিনির উত্তর রমজানপুরের বাসিন্দা। আর একই মৌজায় দখল হওয়া জমির পরিমাণ ৫ একর ৭৪ শতাংশ। ৪টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ৮ জনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পিবিআইকে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক এমপি আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ জানান, ‘তাকে হেয় করতেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ একাধিক মামলা করেছেন। তিনি অন্যায়ভাবে কারও জমি দখল করে প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেননি। তার দাবি, যাদের জমিতে প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেইসব জমি অর্থের বিনিময়ে, নতুবা কেউ স্বেচ্ছায় দান করেছেন। অথবা জমির পরিবর্তে কিছু ব্যক্তিকে অন্য জমি দেওয়া হয়েছে। এর আগেই নিজেদের জমি দাবি করে কেউ আদালতে মামলা করেছে। সেই মামলাও আদালত নিষ্পত্তি করেছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষে রায় দিয়েছেন। কিন্তু আবারও এই মামলা উদ্দেশ্যমূলক।