চট্টগ্রামে রেলের রেয়াত পুনর্বহাল ও নারায়ণগঞ্জ-লাকসাম রেলপথ চালুর দাবিতে মানববন্ধন করেছে রেল-নৌ-যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকাল ১০টায় সংগঠনটির উদ্যোগে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ ছাড়াও একইদিনে পাহাড়তলী ও সীতাকুণ্ড স্টেশনেও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও মানববন্ধন করে সংগঠনটি।
মানববন্ধনে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনে চট্টগ্রামের বিভাগীয় সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন রেল-নৌ-যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির নির্বাহী পরিষদের সাবেক সভাপতি নাহিদ হাসান।
সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়ক হাসান মারুফ রুমি, গণতন্ত্র মঞ্চের বিভাগীয় সমন্বয়ক ডা. জবিউল হোসেন ও রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য নফিউল ইসলাম।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ৪ মে থেকে রেলে দূরত্বভিত্তিক রেয়াত বাতিল কার্যকর করা হয়েছে। রেয়াতি ব্যবস্থার কারণে দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে ছাড় পেয়ে থাকতেন যাত্রীরা। কিন্তু দূরত্বভিত্তিক রেয়াতের নতুন নিয়মে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ছাড়ের সুবিধা নেই। তবে ১০১ থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরত্বের ভ্রমণে ভাড়ার ওপর রেয়াতের হার ছিল ২০-৩০ শতাংশ।
বক্তারা আরও বলেন, ‘এরশাদের পতনের পর ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ রেলওয়েতে দূরত্বভিত্তিক ও সেকশনভিত্তিক রেয়াতি দেওয়া হয়। গত ১৬ মার্চ বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদাৎ আলী রেলের ভাড়া বাড়ছে বলে জানিয়েছিলেন। সে সময় ভাড়া বৃদ্ধির গুঞ্জন ওঠার পর রেলপথমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন- রেলের ভাড়া বৃদ্ধির কোনো পরিকল্পনা নেই। এ ছাড়াও রেলমন্ত্রী বলেছেন, যখন রেয়াতি দেওয়া হয়েছিল তখন তো রেলে প্যাসেঞ্জার চড়তো না। তখন রেয়াত দিয়ে যাত্রীদের আকর্ষণ করা হতো। এখন তো ট্রেনে প্যাসেঞ্জার ওঠে, পর্যাপ্ত যাত্রী ওঠে ট্রেনে।’
রেল-নৌ-যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির নির্বাহী পরিষদের সাবেক সভাপতি নাহিদ হাসান খবরের কাগজকে আজ দুপুরে বলেন, ‘রেলপথ ঢাকা থেকে দাউদকান্দি উপজেলা হয়ে লাকসাম প্রবেশ করলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের বর্তমান দূরত্ব ৩২১ কিমি থেকে ৯০ কিলোমিটার কমবে। অর্থাৎ এই রুটের দৈর্ঘ্য হবে ২৩১ কিলোমিটার। ফলে এই অঞ্চলের যাত্রীদেরও বাড়তি ৯০ কিলোমিটারের ভাড়া দিতে হবে। ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ রেলওয়েতে দূরত্বভিত্তিক ও সেকশনভিত্তিক রেয়াতি দেওয়া হয়। যাত্রীদের রেলপথ ব্যবহারে উৎসাহিত করার জন্য এটি করা হয়। অথচ রেয়াতি বাতিলের মাধ্যমে এখন রেলপথে যাত্রীদের নিরুৎসাহ করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একইভাবে রংপুর বিভাগের যাত্রীরা নাটোর-চাটমোহর ঘুরে বাড়ির কাছের সিরাজগঞ্জে ফিরে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ওঠেন। সেই কারণে বাড়তি সময় গেলেও সঙ্গে বাড়তি ভাড়াও দিতে হয় না। এখন বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেল লাইন চালু না করে রেলওয়ে সৃষ্ট ঘোরাপথের ১২০ কিলোমিটারের ভাড়ার দায় মেটাতে হবে রংপুর বিভাগের যাত্রীদের। অথচ রাষ্ট্রের চোখে ভাড়া বৃদ্ধির কথা অস্বীকার করা হচ্ছে।’
মনির/জোবাইদা/অমিয়/