ঢাকা ১০ ভাদ্র ১৪৩১, রোববার, ২৫ আগস্ট ২০২৪

গতি অধ্যায়ের ১১টি বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর, এসএসসি সমাজকর্ম

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৩ পিএম
আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৪, ০৬:৩১ পিএম
গতি অধ্যায়ের ১১টি বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর, এসএসসি সমাজকর্ম

নমুনা প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন: গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ।
উত্তর: গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম: গ্রামীণ ভূমিহীন ও দরিদ্র লোকদের আত্মনির্ভরশীল করার জন্য গ্রামীণ ব্যাংক কতিপয় মহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদন করে থাকে। গ্রামীণ ব্যাংকের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যকে সামনে রেখে বিভিন্ন শাখার মাধ্যমে তার যাবতীয় কার্যাবলি সম্পাদন করে। কমপক্ষে দুটি ইউনিয়ন নিয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের একটি শাখা স্থাপন করা হয়। প্রতিটি শাখার কাজ সম্পাদন করার জন্য ১ জন করে ম্যানেজার, ৩ জন নারী ও ৩ জন পুরুষ ব্যাংক কর্মী নিয়োগ করা হয়। এদের মূল কাজ হলো ঋণ বিতরণ ও কিস্তি আদায় করা। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে বহু ভূমিহীন আবার ভূমির মালিক হয়েছে, দুস্থ জনগোষ্ঠী পেয়েছে তাদের বাঁচার আশা। আর্থসামাজিক উন্নয়নে গ্রামীণ ব্যাংক ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছে।
গ্রামীণ ব্যাংক তার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যার্জনে যেসব কার্য সম্পাদন করে তা নিচে উপস্থাপন করা হলো- 

১। ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম: গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কাজ হচ্ছে ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া। এ কর্মসূচির আওতায় গ্রামীণ ব্যাংক গ্রামের দরিদ্র ও ভূমিহীন জনসাধারণকে বিনা জামানতে সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে থাকে। কৃষিকাজ, ব্যবসা-বাণিজ্য, পশুপালন, গ্রামীণ শিল্প, যানবাহন, মৎস্য চাষ, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, হাঁস-মুরগি পালন ও গাভি পালন ইত্যাদি বিষয়ে ঋণ দেওয়া হয়। গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ প্রদানের খাতগুলো হলো-
i) উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ: এ খাতের মাধ্যমে ঋণগ্রহীতাদের স্থানীয় সম্পদের সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, সঞ্চয় ও পুঁজিগঠন এবং আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের লক্ষ্যে ঋণ দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে যেসব বিষয়ের ওপর ঋণ দেওয়া হয় তা হলো— বাঁশ ও বেতের কাজ, ছাতা মেরামত, মিষ্টি তৈরি, দর্জির কাজ ইত্যাদি।
ii) পশুপালন ও মৎস্য চাষ: ভূমিহীনদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও দেশের পশুসম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে গ্রামীণ ব্যাংক গাভি পালন, গরু-বাছুর মোটা-তাজাকরণ, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি গবাদিপশু পালন এবং হাঁস-মুরগির খামার করার জন্য ঋণ দিয়ে থাকে। সে সঙ্গে মৎস্য চাষ, মাছ ধরার জাল ও নৌকা কেনার জন্যও ঋণ দিয়ে থাকে।
iii) কৃষি খামার ও বনায়ন: দরিদ্র কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য গ্রামীণ ব্যাংক ধান, গম, ভুট্টা আখ, শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদির চাষ, বৃক্ষরোপণ প্রভৃতি লাভজনক খাতে ঋণ দিয়ে থাকে।
iv) গৃহনির্মাণ কার্যক্রম: গ্রামীণ ব্যাংক দুস্থ ও বিত্তহীন সদস্যদের গৃহনির্মাণে সহায়তা করার জন্য ১৯৮৪ সালে গৃহনির্মাণ কার্যক্রম গ্রহণ করে। প্রতি গৃহের জন্য সর্বোচ্চ ঋণের পরিমাণ ১৫ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত মোট ৬ লাখ ৯১ হাজার ৩২২টি গৃহনির্মাণে ঋণ দেওয়া হয়েছে।

v) সেবা খাত: কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে গ্রামীণ ব্যাংক রিকশা কেনা, সেলুন পরিচালনা, ডেকোরেটর, নির্মাণকাজ ইত্যাদি খাতে ঋণ দিয়ে থাকে।
vi) দোকানদারি: গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণদানের অপর খাত হলো মুদি দোকান, চা দোকান, পল্লির উপযোগী মনিহারি দোকান পান দোকান ইত্যাদি।
vii) ফেরি ও ব্যবসা: গ্রামীণ ব্যাংক বাঁশের ঝুড়ি, বেতের ঝুড়ি, পাটের তৈরি জিনিস, কাপড়, সাবান, ধান, চাল, কাঠ, গুড় ও অন্যান্য ব্যবসায় ঋণ দিয়ে থাকে।
viii) যৌথ কার্যক্রম: অধিক আয় ও অধিক পুঁজি গঠনের মাধ্যমে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ও দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধিশালী করে তোলা এ খাতে ঋণদানের উদ্দেশ্য। এ খাতের ঋণ গ্রুপকে দেওয়া হয়। যৌথভাবে পরিচালনাযোগ্য কার্যক্রম যেমন- হাঁস-মুরগির খামার প্রতিষ্ঠা, বাজারঘাটের নিলাম, ধান ও চিড়ার কল কেনা ও প্রতিষ্ঠা, হ্যাচারি খামার, মৎস্য চাষ প্রভৃতি কার্যক্রমে গ্রামীণ ব্যাংক ঋণ দিয়ে থাকে।

কামরুন নাহার রুনু,প্রভাষক, সমাজকর্ম
শের-ই-বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মধুবাগ, মগবাজার, ঢাকা

আবরার জাহিন/ 

 

নারীদের ক্যালসিয়াম ঘাটতি

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ১২:৪২ পিএম
আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৪, ১২:৪৫ পিএম
নারীদের ক্যালসিয়াম ঘাটতি

ক্যালসিয়াম একটি অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান এবং এর ঘাটতি হলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। এটি সব ধরনের জীবের বেঁচে থাকার জন্য অত্যাবশ্যক। দাঁত এবং হাড়ের গঠনের জন্য ক্যালসিয়াম খুব জরুরি। পাশাপাশি পেশি সংকোচন, রক্ত জমাট বাঁধতে, স্নায়ুর কার্যকারিতা বজায় রাখতে এবং হৃদযন্ত্রের ছন্দ নিয়ন্ত্রণে ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেয়ার হাসপাতালের ওয়েবসাইট অবলম্বনে জানাচ্ছেন ফারজানা আলম

ক্যালসিয়ামের ঘাটতি যে কারও হতে পারে। তবে নারীদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়। নারীদের মেনোপজের পর ক্যালসিয়ামের ঘাটতি খুব সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া যাদের নিরামিষভোজী, নিরামিষাশী বা দুগ্ধজাত খাবারে অনীহা রয়েছে তাদের ক্যালসিয়ামের অভাবের ঝুঁকি দেখা দেয়।

৪৫ বছরের বেশি বয়সী নারীরা প্রায়শই ক্যালসিয়ামের ঘাটতিতে বেশি আক্রান্ত হন, কারণ তাদের মেনোপজ-পরবর্তী সময়ে শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যায়। নারীদের মধ্যে ইস্ট্রোজেন ক্যালসিয়াম বিপাকের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এস্ট্রোজেন এনজাইমকেও উৎসাহিত করে, যা সক্রিয় ভিটামিন-ডি তৈরি করে। শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণের জন্য ভিটামিন-ডি অপরিহার্য।

ক্যালসিয়ামের অভাবের লক্ষণ
কারও শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমে গেলে নানা ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পায়। এখানে নারীদের মধ্যে ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কয়েকটি সাধারণ

লক্ষণ হলো-
পেশির সমস্যা: পেশির ক্র্যাম্প, খিঁচুনি বা মোচড়, বিশেষ করে পায়ে।

হাড়ের সমস্যা: ভঙ্গুর হাড়। সহজেই ফ্র্যাকচার হয় বা অস্টিওপোরোসিস (দুর্বল হাড়)।

দাঁতের সমস্যা: দুর্বল দাঁত, দাঁতের ক্ষয় বা ঘন ঘন দাঁতের সমস্যা।

অসাড় অবস্থা বা টিংলিং: সুচের মতো আঘাত অনুভব করা, বিশেষ করে হাতে, পায়ে এবং মুখে।

ক্লান্তি: পরিশ্রম না করেও ক্লান্ত বোধ করা।

মেজাজ পরিবর্তন: বিরক্তি, উদ্বেগ এবং বিষণ্নতায় ভোগা।

স্মৃতির সমস্যা: ভুলে যাওয়া বা মনোযোগ দিতে অসুবিধা।

ত্বকের লক্ষণ: শুষ্ক ত্বক, একজিমা বা ত্বকের অন্যান্য সমস্যা।

হার্টের সমস্যা: অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন দেখা যায়। গুরুতর ক্ষেত্রে রক্তচাপ বেড়ে যায়।

ক্যালসিয়ামের অভাবের কারণ
ক্যালসিয়ামের অভাবে দেখা দেওয়ার নানা কারণ রয়েছে। যেমন মেনোপজের কারণে ইস্ট্রোজেনের নিম্ন স্তর থেকে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দেওয়া। এ ছাড়া জেনেটিক ফ্যাক্টর, কম মাত্রায় ক্যালসিয়াম গ্রহণ, দুগ্ধজাত খাবারে অনীহা বা ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের প্রতি অনীহা থেকেও এটা হতে পারে। ভিটামিন-ডি-এর নিম্ন স্তর, নিরামিষ খাবার খাওয়া (নিরামিষ খাবারে ক্যালসিয়াম কম থাকে) এবং অ্যামেনোরিয়া বা মাসিকের অনুপস্থিতি।

ক্যালসিয়ামের ঘাটতি নির্ণয়
নারীদের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি একটি সাধারণ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা যেতে পারে। চিকিৎসক রক্তে ক্যালসিয়াম এবং অ্যালবুমিনের মাত্রার জন্য নমুনা পরীক্ষা করান। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে স্বাভাবিক ক্যালসিয়ামের মাত্রা ৮.৮ থেকে ১০.৪ মিলিগ্রাম প্রতি ডেসিলিটার। মাত্রা এর চেয়ে কম হলে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি আছে বলে ধরে নিতে হবে।

চিকিৎসা
নানা ভাবে ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করা যেতে পারে।

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন: ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন- দুগ্ধজাত দ্রব্য, বাদাম, শাকসবজি খেয়ে দ্রুতই ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত সমস্যা দূর করা যেতে পারে।

ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট: ক্যালসিয়াম ওষুধ খেয়ে প্রাথমিকভাবে ক্যালসিয়ামের অভাব দূর করা যেতে পারে।

ভিটামিন এবং খনিজ গ্রহণ: ভিটামিন-ডি শরীরকে ক্যালসিয়াম ভালোভাবে শোষণ করতে সাহায্য করতে। এ ছাড়া ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন-কে হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি এগুলো গ্রহণ করাও গুরুত্বপূর্ণ।

ব্যায়াম: হাঁটা বা নাচের মতো ব্যায়াম হাড়কে মজবুত করতে পারে।

ক্যাফেইন এবং সোডিয়াম সীমিত করা: অত্যধিক ক্যাফেইন বা সোডিয়াম শরীরকে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা থেকে বিরত রাখতে পারে। এগুলো কমানো হাড়ের জন্য ভালো।

অ্যালকোহল গ্রহণ সীমিত করা: খুব বেশি অ্যালকোহল পান করলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট করে। তাই এটা কম পান করা বা একেবারেই না করা ক্যালসিয়ামের মাত্রা স্থির রাখতে সাহায্য করে।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: নিয়মিত বিরতিতে ডাক্তারের কাছে সেবা নিলে ডাক্তার ক্যালসিয়ামের অভাব থাকলে তা পূরণ করতে সহায়তা করতে পারেন।

 কলি

মাথা ঘোরা একটি সাধারণ রোগ

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ১২:৩৬ পিএম
মাথা ঘোরা একটি সাধারণ রোগ

মাথা ঘোরা, যাকে লাইটহেডনেস বলা হয়, হচ্ছে অস্থিরতা বা ভারসাম্য ক্ষতির অনুভূতি। এই অনুভূতি চেতনা হারানো বা ছাড়াও হতে পারে। এটি খুব সাধারণ অবস্থা। শিশু থেকে বয়স্ক সবারই হতে পারে। বেশির ভাগ সময় এর চিকিৎসা করা যায়। কদাচিৎ, অবস্থা গুরুতর হলে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হতে পারে। হেলথ লাইন অবলম্বনে লিখেছেন মো. রাকিব

মাথা ঘোরা হচ্ছে যখন শোয়া বা বসা অবস্থা থেকে দাঁড়ানো হলে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা। যখন মাথা ঘুরবে, তখন মনে হবে যে এক জায়গায় স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার পরও নড়াচড়া করছেন।

ভ্রমণের সময় মাথা ঘুরতে পারে (যেমন বাসে বা গাড়িতে ভ্রমণের সময়)। এই ধরনের মাথা ঘোরাকে মোশান সিকনেস বলা হয়। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ নিলে এর থেকে রেহাই পাওয়া যায়। কখনো কখনো মাথা ঘোরার কারণ দেহে অন্য কোনো অজানা রোগের উপস্থিতি। সুতরাং ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া এবং সঠিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো খুবই জরুরি, যাতে মাথা ঘোরার আসল কারণ জানা যায় এবং সঠিক চিকিৎসা শুরু করা যায়।

মাথা ঘোরার উপসর্গ
মাথা ঘোরা একটি অস্পষ্ট উপসর্গ। শুয়ে থাকা অবস্থা থেকে হঠাৎ উঠে দাঁড়ালে মনে হয় ভারসাম্য হারিয়ে যাচ্ছে। একটা অস্বস্তিকর অবস্থা যেখানে রোগী এক জায়গায় স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেন না। এক জায়গায় স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও মনে হচ্ছে যে নড়ছেন। মনে হচ্ছে যেকোনো সময় অজ্ঞান হয়ে যাবেন।

মাথা ঘোরার চিকিৎসা
মাথা ঘোরা কোনো ওষুধ ছাড়াই নিজে নিজে সেরে যেতে পারে। যদি মাথা ঘোরার কারণে অন্য কোনো অসুখ হয় তাহলে সে অসুখের চিকিৎসা করলে পরিস্থিতি ভালো হবে। পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যখন ডাক্তার রোগীর মাথা ঘোরার কারণ খুঁজে পাবেন, তখন সেই রোগের চিকিৎসা শুরু হবে এবং মাথা ঘোরার চিকিৎসাও সঙ্গে সঙ্গে হতে থাকবে। যদি তাতেও না সারে, তাহলে ডাক্তার আরও কিছু ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারেন।

মোশান সিকনেসের কারণে মাথা ঘুরলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এক ঘণ্টা আগে ওষুধ খেতে হবে। তাহলে মোশান সিকনেস বন্ধ করা যাবে। এসব ক্ষেত্রে এন্টিহিস্টামিনের মতো ওষুধ দেওয়া হয়। রক্তে চিনির মাত্রা কমে গেলে মাথা ঘুরতে পারে। এর চিকিৎসা হলো রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা। বারবার অল্প সময়ের ব্যবধানে হাল্কা এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে রক্তের চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। মাইগ্রেন থাকার কারণে মাথা ঘুরলে, ডাক্তার অ্যান্টি-মাইগ্রেন ওষুধ দেবেন।

নিম্ন রক্ত চাপের কারণে মাথা ঘুরলে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ইন্ট্রা-ভেনাস পদ্ধতির মাধ্যমে শরীরে তরল পদার্থ নিতে হবে। এতে রক্তের চাপ স্বাভাবিক হবে এবং মাথা ঘোরাও কমে যাবে।

মদ্যপানের কারণে যদি মাথা ঘোরে তাহলে ডাক্তার রোগীকে হাসপাতালে পাঠাতে পারেন এবং ওষুধ দিতে পারেন যাতে মদ্যপানের প্রভাব কেটে যায়। মাথা ঘোরা যদি কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য হয়, ডাক্তার সেই ওষুধের মাত্রা কম করে দিতে পারেন অথবা বন্ধ করে দিতে পারেন।

 কলি

মাঙ্কিপক্স: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ১২:২৯ পিএম
আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৪, ১২:৪৭ পিএম
মাঙ্কিপক্স: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার

মাঙ্কিপক্স, যাকে এমপক্সও বলা হয়, এটি ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট গুটিবসন্তের মতো একটি রোগ। আফ্রিকার বেশির ভাগ অঞ্চলে রোগটি দেখা যায়। তবে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলেও রোগটি হতে দেখা যাচ্ছে। মাঙ্কিপক্স হলে জ্বর, ঠাণ্ডা ও ফ্লু-এর মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এ ছাড়া শরীরের বেশির ভাগ এলাকায় ফুসকুড়ি হয়, যা পরিষ্কার হতে কয়েক সপ্তাহ সময় নিতে পারে। মাঙ্কিপক্স সাধারণত নিজে থেকেই সেরে যায়। আমেরিকার স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ক্লেভারল্যান্ড ক্লিনিক অবলম্বনে লিখেছেন ফখরুল ইসলাম

মাঙ্কিপক্স সংক্রমিত ব্যক্তি থেকে সুস্থ ব্যক্তির দেহে ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া এটি প্রাণী থেকেও মানুষের দেহে আসতে পারে। মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের দুটি প্রকার রয়েছে। প্রথমটি মধ্য আফ্রিকান ক্লেড-১ এবং দ্বিতীয়টি পশ্চিম আফ্রিকান ক্লেড-২। বর্তমান বিশ্বে মাঙ্কিপক্সের যে প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে, তা ক্লেড-২-বি দ্বারা সৃষ্ট। এটি পশ্চিম আফ্রিকান ক্লেডের একটি উপপ্রকার।

মাঙ্কিপক্সের উৎপত্তি কোথায়?
মাঙ্কিপক্স রোগটি কয়েক দশক ধরে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে দেখা গেছে। তবে এটি মাঝে মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশেও হতে দেখা গেছে। ২০২১ সালের গ্রীষ্মে, একজন মার্কিন বাসিন্দার মধ্যে মাঙ্কিপক্সের একটি কেস পাওয়া গেছে, যিনি নাইজেরিয়া ভ্রমণ করেছিলেন। তারপর ২০২২ সালে ইউরোপ, আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়াসহ আফ্রিকার বাইরের অঞ্চলে রোগটি ছড়িয়ে পড়ে।

মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ ও উপসর্গ কী কী?
মাঙ্কিপক্সের ভাইরাস শরীরে প্রবেশের পরে লক্ষণ প্রকাশ পেতে কয়েক দিন বা সপ্তাহ পার হয়ে যেতে পারে। মাঙ্কিপক্সের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রথমত জ্বর। এ ছাড়া শরীরে ফুসকুড়ি থাকতে পারে। ফোলা লিম্ফ নোড, ঠাণ্ডার সমস্যা, মাথাব্যথা, পেশি ব্যথা ও ক্লান্তি দেখা দিতে পারে।

আক্রান্তের পর শরীরে লাল ফুসকুড়ি দেখা দেয়। এগুলোয় ব্যথা থাকতে পারে। ফুসকুড়িগুলো ধীরে ধীরে ফোস্কায় পরিণত হয়, যা পুঁজে ভরে যায়। শেষ পর্যন্ত, ফোস্কাগুলো শুকিয়ে যায় এবং পড়ে যায়। পুরো প্রক্রিয়াটি দুই থেকে চার সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে। রোগীর মুখ, হাত, পা, লিঙ্গ, যোনি এবং মলদ্বারে ফুসকুড়ি হতে পারে।

মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগীদের সবার মধ্যে সব ধরনের লক্ষণ দেখা দেয় না। কারও মধ্যে শুধু একটি ফুসকুড়ি হতে পারে। অনেকের মধ্যে ফ্লুর মতো উপসর্গ, সঙ্গে ফুসকুড়ি হতে পারে। কিছু রোগীর একেবারেই ফুসকুড়ি নাও থাকতে পারে।

মাঙ্কিপক্স যেভাবে ছড়ায়
যখন কেউ ভাইরাসবাহী প্রাণী বা ব্যক্তির সংস্পর্শে আসে তখন মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হতে পারেন। ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির মধ্যে এটা ছড়ায়। কেউ যদি সংক্রমিত ব্যক্তির ঘা, স্ক্যাবস, নিশ্বাস-প্রশ্বাস অথবা লালার সংস্পর্শে আসে তবে তার মধ্যে রোগটি দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি ঘনিষ্ঠ পরিস্থিতি যেমন- আলিঙ্গন, চুম্বন বা যৌন আচরণ করে তাহলেও ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে। তবে ভাইরাসটি বীর্য বা যোনি তরলের মাধ্যমে ছড়ায় কি না, সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা এখনো নিশ্চিত নন। সুস্থ ব্যক্তি আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা দূষিত সামগ্রী যেমন পোশাক, বিছানা, জুতার সংস্পর্শে এসেও মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হতে পারেন।

পশু থেকে ব্যক্তির মধ্যেও মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ ঘটে। যেমন- কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে অথবা সংক্রমিত পশুর রক্ত, শারীরিক তরল বা পক্সের ক্ষত (ঘা) এর সঙ্গে সরাসরি সংযোগের মাধ্যমে।

কীভাবে মাঙ্কিপক্স নির্ণয় করা হয়?
যেহেতু মাঙ্কিপক্স বিরল, সেহেতু প্রথম দেখায় একজন স্বাস্থ্যসেবা কর্মী সমস্যাটিকে হাম বা চিকেনপক্সের মতো অন্যান্য ফুসকুড়ি অসুস্থতা হিসেবে সন্দেহ করতে পারেন। তবে ফোলা লিম্ফ নোড সাধারণত অন্যান্য পক্স থেকে মাঙ্কিপক্সকে আলাদা করে।

মাঙ্কিপক্স শনাক্ত করতে ডাক্তার রোগীর খোলা ঘা (ক্ষত) থেকে টিস্যুর নমুনা নেন। তারপর পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) পরীক্ষার (জেনেটিক ফিঙ্গারপ্রিন্টিং) জন্য ল্যাবে পাঠান। মাঙ্কিপক্স ভাইরাস বা রোগীর ইমিউন সিস্টেম যে অ্যান্টিবডি তৈরি করে, তা পরীক্ষা করে রোগ শনাক্ত করা যায়।

মাঙ্কিপক্স কি নিরাময়যোগ্য?
মাঙ্কিপক্স সাধারণত একটি স্ব-সীমিত রোগ (চিকিৎসা ছাড়াই ভালো হয়ে যায়)। এটি দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। তবে রোগ নির্ণয়ের পরে ডাক্তার রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে উপসর্গগুলো উপশম করার চেষ্টা করেন। সাধারণত রোগীর ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ এবং সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের বিকাশ হলে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে, মাঙ্কিপক্সের জন্য বর্তমানে অনুমোদিত কোনো অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা নেই।

কীভাবে মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধ করবেন?
মাঙ্কিপক্সের টিকা নিয়ে রোগটি থেকে নিরাপদে থাকা যায়। টিকা ছাড়া মাঙ্কিপক্সের বিস্তার রোধে অন্যান্য উপায়গুলোর মধ্যে রয়েছে সংক্রমিত প্রাণীদের (বিশেষ করে অসুস্থ বা মৃত প্রাণী) সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। বিছানাপত্র এবং ভাইরাস দ্বারা দূষিত অন্যান্য উপকরণ স্পর্শ না করা। পশুর মাংস বা অংশ আছে এমন সব খাবার পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে রান্না করা। সাবান পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়া। ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। কনডম এবং ডেন্টাল ড্যাম ব্যবহারসহ নিরাপদ যৌন অভ্যাস করা। এমন মাস্ক পরা, যা অন্যের আশপাশে থাকাকালীন মুখ এবং নাক ঢেকে রাখে। ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের যত্ন নেওয়ার সময় ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) ব্যবহার করা।

অন্যান্য তথ্য
মাঙ্কিপক্স সেরে উঠতে সাধারণত দুই থেকে চার সপ্তাহ সময় নেয়। এটি বিরল রোগ, কিন্তু কখনো কখনো মারাত্মক আকারে দেখা দেয়। মাঙ্কিপক্স ছাড়াও নিউমোনিয়া এবং মস্তিষ্কে সংক্রমণ (এনসেফালাইটিস) অথবা চোখের সমস্যা (জটিলতা) দেখা দিতে পারে, যা জীবন সংহারি।

কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত?
রোগীর মধ্যে যদি নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো বিকাশ করে, তবে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা। এ ছাড়া ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, বিভ্রান্তি বা স্পষ্টভাবে চিন্তা করতে অসুবিধা, কথা বলতে বা চলাফেরা করতে অসুবিধা হওয়া। পাশাপাশি চেতনা হারানো ও খিঁচুনির মতো লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

কলি

ভাইরাল জ্বর হলে করণীয়

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৪০ পিএম
আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৪৪ পিএম
ভাইরাল জ্বর হলে করণীয়

জ্বর একটি অবস্থা, যাতে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি থাকে। জ্বর হলে বোঝা যায়, বাইরে থেকে দেহে প্রবেশ করা প্রাণীর বিরুদ্ধে শরীর যুদ্ধ করছে। এই বাইরে থেকে দেহে প্রবেশ করা প্রাণীটির নাম ভাইরাস হয়, এ কারণে এটিকে ভাইরাল ফিভার বা জ্বর বলা হয়। অনেক ভাইরাল জ্বরের কারণ যেমন সাধারণ ঠান্ডা লাগা, ডেঙ্গু এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সংক্রমণ। মাই উপচার অবলম্বনে জানাচ্ছেন ফারজানা আলম

ভাইরাল জ্বর হলে শরীরে নানা ধরনের লক্ষণ এবং উপসর্গ দেখা দেয়। তার মধ্যে আছে শরীরে ব্যথা, শারীরিক দুর্বলতা। এ ছাড়া ওজন কমে যাওয়া, অবসাদ, বমি বমি ভাব ও বমি হতে হওয়া। পাশাপাশি ফুসকুড়ি, মাথাব্যথা, কাঁপুনিসহ শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দেয়।

কারণ
ভাইরাসের আক্রমণে ভাইরাল জ্বর হয়। ডেঙ্গু জ্বর, রেস্পিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস সংক্রমণ, এইচআইভি, কানের মাঝখানে সংক্রমণ থেকে ভাইরাল জ্বর হয়ে থাকে। এ ছাড়া সোয়াইন ফ্লু, চিকেন পক্স, হাম, হারপিস সিমপ্লেক্স, হেপাটাইটিস সিমপ্লেক্স, হেপাটাইটিস ও শিঙ্গল্স ভাইরাল ফিভারের জন্য দায়ী।

ভাইরাসের দ্বারা দূষিত খাবার খেলে ফুড পয়জনিংয়ের কারণে ভাইরাল জ্বর হতে পারে। সংক্রমিত ব্যক্তি থেকে অন্যের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সবচেয়ে সাধারণ পথ। মশার মতন কীটপতঙ্গ ডেঙ্গুর মতো ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার জন্য দায়ী।

রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা
শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং ভাইরাল ফিভারের অন্য উপসর্গগুলো শনাক্ত করার জন্য ডাক্তার শারীরিক পরীক্ষা করাতে পারেন। ভাইরাল অ্যান্টিবডিজের (বিভিন্ন ভাইরাল সংক্রমণের অ্যান্টিবডি) উপস্থিতি পরীক্ষা করার জন্য এবং জ্বরের নির্দিষ্ট কারণ নির্ণয় করার জন্য ডাক্তার রক্ত পরীক্ষা করার নির্দেশ দেবেন। আল্ট্রাসাউন্ড এবং বুকের এক্স-রের মতন ইমেজিং পরীক্ষাগুলোসহ ভাইরাস শনাক্ত করার জন্য অন্যান্য নির্দিষ্ট পরীক্ষা করা যেতে পারে।

এ ধরনের রোগের ক্ষেত্রে ডাক্তার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারেন। যার মধ্যে আছে ব্যথা হ্রাস করার জন্য পেইন রিলিভার। জ্বর কমানোর জন্য অ্যান্টি-পাইরেটিক। ভাইরাল সংক্রমণের চিকিৎসা করার জন্য অ্যান্টি-ভাইরাল ড্রাগস।

নিম্নলিখিত জীবনধারা পরিচালনার পদক্ষেপগুলো ভাইরাল জ্বর প্রতিরোধ করতে এবং চিকিৎসায় সাহায্য করতে পারে। যেমন চাপ কমানো। স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাবার খাওয়া। নিয়মিত শরীরচর্চা। পর্যাপ্ত বিশ্রাম। ভালো হাইড্রেশন।

জ্বরের পরে
জ্বরের পর শরীরের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য নানা ধরনের খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রোটিন ও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। বিভিন্ন ধরনের ডাল, মটরশুঁটি, ছোলা, সয়ামিট, মাশরুম, বাদাম, তিসি, চিয়াসিড এসব খাবারে ভালো পরিমাণে প্রোটিন থাকে। মাংস দিয়ে স্যুপ করে খেলে শরীরের দুর্বলতা দ্রুত কমায়।

মৌসুমি নানা রকমের তাজা ফল, কমলা, মাল্টা, আপেল, পেয়ারা, আমড়া, পাকা পেঁপে, আম, আনারস, আঙুর, ডালিম, আনার, লেবু-জাতীয় ফল, ডাবের পানি নিয়মিত খেতে হবে।

কচুশাক, পালংশাক, মিষ্টিকুমড়া, আলু, গাজর এগুলো শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ।
শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক রাখতে ডাবের পানি ও বিভিন্ন ধরনের ফলের রস খেতে হবে। এ ছাড়া নরম সেদ্ধ জাউ ভাত, খিচুড়ি, বিভিন্ন ধরনের সবজি স্যুপ খেতে হবে

এ সময় আদা দিয়ে চা পান করলেও উপকার পাওয়া যায়। আদা শরীর থেকে জীবাণু দূর করে শরীরকে টক্সিনমুক্ত করে। সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে, যা রোগীকে দ্রুত সুস্থ হতে সহায়তা করবে।

কলি

ফ্রোজেন শোল্ডার বা কাঁধের জয়েন্টে ব্যথা

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৩৫ পিএম
ফ্রোজেন শোল্ডার বা কাঁধের জয়েন্টে ব্যথা

ফ্রোজেন শোল্ডার এমন একটা রোগ, যাতে ব্যথার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং একসময় তা অসহনীয় হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে কাঁধের নড়াচড়াই অসম্ভব হয়ে পড়ে। লিখেছেন অর্থোপেডিক ও অর্থোপ্লাস্টি সেন্টারের হেড এবং চিফ কনসালট্যান্ট অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেন 

ফ্রোজেন শোল্ডারের তেমন কোনো কারণ জানা যায়নি। তবে ডায়াবেটিস, হাইপারলিপিডেমিয়া বা শরীরে অতিরিক্ত মেদ, হাইপার থাইরয়েড, হৃদরোগ ও প্যারালাইসিস রোগীদের মধ্যে ফ্রোজেন শোল্ডারের প্রকোপ বেশি দেখা গেছে। কাঁধের অস্থিসন্ধিতে যে পর্দা থাকে, তার দুটি আবরণ থাকে। একটি ভেতরের দিকে, আরেকটি বাইরের দিকে। এই দুই আবরণের মাঝখানে কিছুটা ফাঁকা জায়গা থাকে, যেখানে এক ধরনের তরল পিচ্ছিল পদার্থ থাকে, যা কাঁধের মসৃণ নড়াচড়ার জন্য জরুরি। এই রোগে ওই দুই পর্দার মাঝখানের জায়গা ও পিচ্ছিল পদার্থ কমে যায়, ফলে কাঁধের নড়াচড়াও মসৃণভাবে হয় না এবং প্রচুর ব্যথার সৃষ্টি করে। ব্যথা দিন দিন বাড়তে থাকে এবং একসময় তা অসহ্য হয়ে পড়ে। সাধারণত মধ্যবয়সেই এই রোগ বেশি দেখা যায়।

উপসর্গ
ফ্রোজেন শোল্ডার রোগীর কাঁধের নড়াচড়া, বিশেষ করে হাত ওপরের দিকে উঠানো এবং হাত ঘুরিয়ে পিঠ চুলকানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। কাঁধের এক্স-রে করলে তা প্রায় স্বাভাবিক পাওয়া যায়। কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে সেখানে আগে আঘাত ছিল বলে জানা যায়। কদাচিৎ কাঁধ কিছুটা শুকিয়ে যাওয়ার মতো মনে হতে পারে। এটা হয় ব্যথার কারণে, দীর্ঘদিন আক্রান্ত কাঁধ ব্যবহার না করলে। আবার কিছু রোগীর ক্ষেত্রে হাত ঝিঁঝি করা, শক্তি কম পাওয়া, এমনকি পাশাপাশি হাত একেবারেই উঠাতে না পারার মতো লক্ষণ দেখা যায়। তবে তাদের খুব সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা করা উচিত যে রোগটি ফ্রোজেন শোল্ডার নাকি স্নায়ুরোগজনিত কোনো সমস্যা বা অতীতের আঘাতের ফলে রোটেটর কাফের ছিঁড়ে যাওয়াজনিত কোনো সমস্যা। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসার ধরনও ভিন্ন হয়।

চিকিৎসা
কোনো রকম অপারেশন ছাড়াই এই রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রথমে রোগীকে আশ্বস্ত করতে হবে যে এটি খুব সাধারণ একটি সমস্যা। পাশাপাশি হালকা কিছু ব্যথানাশক দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে সঠিক ও বিশেষ কিছু ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনা থেকে ফ্রোজেন শোল্ডার ভালো হয়ে যায়, যদিও কিছুটা সময় লাগে।

তবে ব্যায়াম বা ব্যথানাশকে কাজ না হলে, অর্থোপেডিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে কাঁধের অস্থিসন্ধিতে স্টেরয়েড ইনজেকশন প্রয়োগও করতে হতে পারে। এটার অবশ্য ফল বেশ ভালো এবং রোগীরাও অনেক সময় এটি নেওয়ার জন্য উদগ্রীব থাকেন। তবে স্টেরয়েড ইনজেকশন দিলেও ফ্রোজেন শোল্ডার হলে ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই, যা সবসময় চালিয়ে যেতে হবে। হবে। তাই ফ্রোজেন শোল্ডার নামক অর্ধপঙ্গুত্ব নিয়ে আর বসবাস নয়। উপযুক্ত চিকিৎসা নিন, সুস্থ থাকুন।

 কলি