![মা, তোমায় ভীষণ ভালোবাসি](uploads/2024/05/11/----1715412878.jpg)
পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম শব্দের দীর্ঘতম অনুভূতির নাম হচ্ছে ‘মা’! আমাকে যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে, ‘মা’ মানে কি? আমি নিশ্চিন্তে বলব, ‘মা মানে পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল এবং নির্ভরতার জায়গা।’
একজন সন্তানের জন্য ‘মা’ কত বড় আশীর্বাদ, তা ভাষার প্রকাশ করা যাবে না। পৃথিবীর একমাত্র স্বার্থহীন সম্পর্ক হচ্ছে সন্তানের সঙ্গে মায়ের সম্পর্ক। জন্মের পর থেকে শুরু করে শৈশব, কৈশোর এবং যৌবনের প্রতিটি পর্যায়ে ‘মা’ জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। মায়ের হাতে ভর দিয়ে পদচারণা শুরু, মায়ের চোখে পৃথিবী দেখা, গল্প শোনা, কলম ধরে এলোমেলো কিছু লিখতে চেষ্টা করা। আবার কখনো একটু ভয় পেয়ে মুরগির ছানার মতো বুকের মধ্যে লুকিয়ে পড়া, খানিক বাদে বের হয়ে আবার আকাশ দেখা- এমন অসংখ্য স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই মানুষটির সঙ্গে। সেই স্মৃতি আমাদের বাঁচতে শেখায়, সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য এগিয়ে যাওয়ার ব্রত হিসেবে কাজ করে।
দুঃখ-কষ্ট, ভালো সময়, খারাপ সময় মাকে ভীষণ মনে পড়ে। মায়ের স্বপ্নপূরণের জন্য বাসার বাইরে চার বছর। মাঝে মধ্যে মনে হয় সবকিছু ছেড়ে মায়ের কাছে ছুটে যাই।
মায়ের মুখে হাসি মানে আমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। আমি বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। একমাত্র সন্তান হওয়ায় তাদের পৃথিবীর সব ভালোবাসা আমি একাই পেয়েছি। মায়ের সঙ্গে তৈরি হয়েছে পাহাড়সম স্মৃতি! ছোটবেলা থেকেই বেশির ভাগ সময় মায়ের সঙ্গেই কেটেছে। যখন থেকে বুঝতে শিখি, তখন থেকে মায়ের শাড়ির আঁচল আমি ছাড়িনি। মায়ের কোল আর শাড়ির আঁচল আমার সবচেয়ে শান্তির জায়গা। ইন্টারমিডিয়েটের আগ পর্যন্ত মাকে ছাড়া একা কোনো আত্মীয় বাড়ি বা কোথাও এক রাতও গিয়ে থাকিনি।
কিছু সময়ের জন্য মাকে না দেখলে আমার দম বন্ধ হয়ে যেত। আমার এখনো স্পষ্ট মনে আছে, আমি যখন জেএসসি সমাপনী পরীক্ষা দেই তখন শীত মৌসুম ছিল। পরীক্ষার দিন সকালবেলা ‘মা’ আমাকে পুকুরপাড়ে রোদের কাছে নিয়ে নিজ হাতে গোসল করিয়ে দিতেন। নিজ হাতে গরম ভাত খাইয়ে দিতেন। পরীক্ষার হলে যাওয়ার আগমুহূর্তে বিভিন্ন দোয়া-দরুদ পাঠ করে আমাকে ফুঁ দিয়ে দিতেন। মায়ের দেওয়া সেই ফুঁ আর দোয়াতেই চলছে আমার জীবন!
‘মা’ তোমারও নিশ্চয়ই মনে আছে। কত শত স্মৃতি আর গল্প জমে আছে স্মৃতির আঙিনায়। এসব স্মৃতি আজন্ম বেঁচে থাকুক মনের মণিকোঠায়। দীর্ঘায়িত হোক আমার মায়ের জীবনের আয়ুরেখা। আমার জীবনের আয়ুরেখার কিছু অংশ যদি মাকে দিতে পারতাম!
প্রিয় মা, তোমার ছেলে তোমাকে ভীষণ ভালোবাসে! অনেক ভালোবাসি ‘মা’। আমার জন্য তোমার পরিশ্রম, ত্যাগ, কত শত সংগ্রাম! যার বিনিময়ে আমি আজ এতদূর। তোমার স্বপ্ন ছেলে ডাক্তার হবে। সেই পথেই হেঁটে চলেছি।
জানো মা, আমার লেখালেখির অনেকটা অংশজুড়ে শুধুই তুমি। তোমার দেওয়া অনুপ্রেরণায় আমি আজ সামান্য লেখক। মানুষ যখন আমাকে লেখক বলে ডাকে, তখন তোমাকে ভীষণ মনে পড়ে মা। আমার সব অর্জন তোমার জন্যই।
ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ,গাজীপুর
কলি