![বৃষ্টির সময় ‘কই মাছ’ কেন মাটিতে উঠে আসে?](uploads/2024/06/08/bith-1717829028.jpg)
আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো পড়ছে মাছ। আর তা কুড়িয়ে নিচ্ছে পথচারীরা। ইন্টারনেটের কল্যাণে এমন দৃশ্য হরহামেশাই দেখা যায়। সাধারণত প্রবল বাতাস বা জলস্রোতের কারণে সমুদ্র থেকে মাছ বৃষ্টি হয়। যখন কোনো ঝড় বা টর্নেডো সমুদ্র অতিক্রম করে তখন প্রবল টানে মাছগুলো আকাশে উঠে যায়। ঝড়ের গতি কমলে বৃষ্টির মতো আকাশ থেকে মাছ পড়ে। হন্ডুরাস, শ্রীলঙ্কা, ইরান, যুক্তরাষ্ট্র, জাপানসহ বিভিন্ন দেশে এ ধরনের ঘটনা দেখা যায়।
কিন্তু একটা ব্যাপার খেয়াল করেছেন, বর্ষাকালে যখন প্রচুর বৃষ্টি হয়, তখন আশপাশের পুকুর, খাল-বিল থেকে কই মাছ মাটিতে উঠে আসে। কখনো কি ভেবেছেন কেন এমন হয়?
বর্ষাকালে প্রচণ্ড বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় আশপাশের পুকুর, খাল-বিল, নদীর পাড়ে জীবন্ত কই মাছ লাফালাফি করে, এই ঘটনাকে গ্রামের ভাষায় ‘মাছ উজানো’ বলে। উজান হলো স্রোতের বিপরীত দিকে যাওয়া। কেন এমন হয়? নিশ্চয়ই প্রশ্নটা আপনার মনেও এসেছে। এই বিষয়ে জানতে হলে প্রথমে ট্যাক্সিস সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
ট্যাক্সিস একটা টার্ম; যার অর্থ প্রাণীর দিকমুখিতা। সহজভাবে বললে, বিভিন্ন পরিবেশে (যেমন- তাপ, চাপ, আলো, শব্দ) প্রাণীর ছুটে চলা। যখন বিভিন্ন পরিবেশের দিকে প্রাণী ছুটে চলে, তখন তাকে পজিটিভ ট্যাক্সিস বলা হয়। কই মাছের ট্যাক্সিস হলো পজিটিভ ট্যাক্সিস।
কোনো প্রাণী যখন স্রোতের দিকে চলে কখন তাকে রিওট্যাক্সিস বলে। যা এক প্রকার পজিটিভ ট্যাক্সিস। বৃষ্টি হলে পুকুর বা নদীতে পানি বেড়ে যায়। তখন স্রোতের দিকে কই মাছ চলতে শুরু করে; বিষয়টিকে অনেকেই নতুন পানিতে যাওয়া বলে থাকেন। আর কই মাছের পাখনা বেশ শক্ত তাই তারা মাটির ওপরেও নড়াচড়া করতে পারে।
আরেকটি কারণও আছে অবশ্য। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হলে পুকুর বা জলাশয়ের পানিতে অক্সিজেন এবং খাবারের ঘাটতি তৈরি হয়। কই মাছ বৃষ্টির পানি পাওয়ায় সে অক্সিজেন ও খাবারের জন্য স্রোতের সঙ্গে রিওট্যাক্সিসে সাড়া দেয়। শুধু কই-ই নয়; শিং, মাগুর, গুতুম মাছও বৃষ্টির সময় স্রোতের দিকে এবং পুকুর পাড়ে উঠে আসে। তাই শুধুমাত্র বৃষ্টি বা বজ্রপাতের জন্যই যে কই মাছ ডাঙায় উঠে আসে এই বিষয়টি ঠিক নয়।
কলি