![বিএনপির কর্মসূচি রেলপথের হুমকি: মন্ত্রী](uploads/2023/12/19/1702989211.Nurul_Islam_Sujon.jpg)
সিলেটে উপবন এক্সপ্রেসে আগুন, গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে রেললাইন উপড়ে ফেলার পর আজ ভোরে রাজধানীর তেজগাঁও স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে আগুনের ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে দেখছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। এমন কর্মকাণ্ডকে তিনি রেলপথের জন্য হুমকি হিসেবে মনে করছেন।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) রেলপথে নাশকতা নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন তিনি।
এ সময় নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘রাজনৈতিক সন্ত্রাস ও নাশকতা নিরাপদ রেল চলাচলের জন্য হুমকি। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যোগাযোগ ব্যবস্থায় যে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছিল সেখানে একমাত্র রেল চলাচল স্বাভাবিক ছিল। এখন রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে নিরাপদ রেলযাত্রাকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে।’
মঙ্গলবার সকালে তেজগাঁওয়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিনটি কোচ পুড়ে যায়। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪ জন মারা গেছেন।
ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী জানান, রেলপথে সরাসরি আক্রমণের প্রথম ঘটনা ঘটে ১৬ নভেম্বর। সেদিন টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের ২টি কোচে ব্যাপক ক্ষতি হয়। ১৯ নভেম্বর জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে যমুনা এক্সপ্রেসে পরিকল্পিত নাশকতা করা হয়। এ দুই ঘটনায় কোনো প্রাণহানি না হলেও বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়। ২২ নভেম্বর সিলেটে উপবন এক্সপ্রেসে আগুন ধরানো হয়। ১৩ ডিসেম্বর গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে ২০ ফুট রেলওয়ে ট্রাক কেটে ফেলা হয়। এ ঘটনায় এক যাত্রী মারা যান, ৫০ জন আহত হন।
রেলপথে নাশকতার ঘটনায় বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচির সংযোগ দেখছেন রেলমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো যে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়েছিল, এরপর থেকে রেল সম্পর্কিত সহিংসতা বাড়ছে। রেলকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্যে ফেলে হুমকি তৈরি করেছে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যাত্রী হয়ে ট্রেনে উঠে নিরাপদ রেলে নাশকতার ঘটনা ঘটাচ্ছে। বাসের বদলে ট্রেনকেই এখন প্রধান হাতিয়ার করা হচ্ছে এবং পরিকল্পিত দুর্ঘটনা ঘটাতে ফিশপ্লেট খুলে দিচ্ছে।’
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রেলপথেও নাশকতার প্রচেষ্টা করা হয়েছে জানিয়ে নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘কর্ণফুলী সেতু থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথের অনেক যন্ত্রাংশ চুরি করার নামে খুলে নেওয়া হয়েছে, যেন ট্রেন চলাচল করতে না পারে। তারা মনে করছে, এ ধরনের নাশকতা ঘটিয়ে মনে করছে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা করা সম্ভব। যদিও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন কিন্তু তারা কর্মসূচি না দিলে তো এটা হতো না।’
রেলপথে নিরাপত্তা দিতে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ সম্পর্কে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘এ পর্যন্ত ২ হাজার ৭০০ আনসার সদস্য চাওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে। মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি, আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে এই জনবল পেয়ে যাব। প্রতিদিন সারা দেশে ৩০০ ট্রেন চলাচল করে। আর রেলযাত্রা নিরাপদ করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানান, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে রেল দুর্ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।