ঢাকা ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪

কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনারের বৈঠক ফসলের উচ্চফলনশীল জাত বাংলাদেশে অবমুক্তির আহ্বান

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:০৪ পিএম
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:২৩ এএম
ফসলের উচ্চফলনশীল জাত বাংলাদেশে
অবমুক্তির আহ্বান
ছবি : বাসস

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে এই বৈঠক হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার। এ সময় মো. আব্দুস শহীদ ভারতের উদ্ভাবিত বিভিন্ন ফসলের উচ্চফলনশীল জাত বাংলাদেশে অবমুক্তি, চাষ ও বীজ উৎপাদনের জন্য ভারতের সহযোগিতা কামনা করেন। এ ছাড়া সেচকাজে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার এবং বাংলাদেশকে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞামুক্ত রেখে রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ভারতের সহযোগিতা কামনা করেন।

ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, ভারতেও মাঝে মধ্যে কোনো কোনো পণ্যের ঘাটতি দেখা দেয়, দাম বেড়ে যায়। সে জন্য অনেক সময় রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অনেক সময় বিশেষ ছাড় বা স্পেশাল এক্সেমশন দেওয়া হয়ে থাকে।

পরে কৃষিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে কৃষি গবেষণা জোরদার করতে দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করার ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়। শিগগিরই উচ্চ পর্যায়ের সাইন্টিফিক ভিজিটের মাধ্যমে গবেষণার অগ্রাধিকার খাত চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি বিশেষ করে ড্রোনের ব্যবহার, এগ্রো-প্রসেসিং, পোস্ট হার্ভেস্ট ব্যবস্থাপনা, কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন প্রভৃতি বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন ভারতের হাইকমিশনার।

 

আছাদুজ্জামানের দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়নি

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:৪১ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:৪১ পিএম
আছাদুজ্জামানের দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়নি
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়নি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিষয়টি কমিশনের নিয়মিত বৈঠকে আলোচনার জন্য উঠলেও নির্বাচন কমিশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদন না আসায় সিদ্ধান্ত হয়নি বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে। 

এ ব্যাপারে বিকেলে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন সাংবাদিকদের বলেন, আছাদুজ্জামান মিয়ার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়নি। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে জানানো হবে। 

অস্বাভাবিক অর্থ-সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে কিছুদিন ধরেই ব্যাপক আলোচনায় আছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। এখন বিপুল সম্পদ অর্জন নিয়ে নতুন আলোচনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। আছাদুজ্জামান মিয়ার অবৈধ সম্পদ নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হয় ঈদুল আজহার আগের দিন গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আছাদুজ্জামান মিয়ার স্ত্রীর নামে ঢাকায় একটি বাড়ি ও দুটি ফ্ল্যাট, ছেলের নামে একটি বাড়ি ও মেয়ের নামে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে ৬৭ শতক জমি রয়েছে। এই তিন জেলায় তার পরিবারের সদস্যদের নামে রয়েছে আরও ১৬৬ শতক জমি। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এল ব্লকের লেন-১-এ ১৬৬ এবং ১৬৭ নম্বরে ১০ কাঠা জমির ওপর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান মিয়ার স্ত্রী আফরোজা জামানের মালিকানায় ছয়তলা একটি বাড়ি রয়েছে। রাজধানীর ইস্কাটনেও আছাদুজ্জামান মিয়ার স্ত্রীর নামে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। আরও একটি ফ্ল্যাট রয়েছে ধানমন্ডিতে। এর বাইরে সিদ্ধেশ্বরীতে আছাদুজ্জামানের মেয়ের নামে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। গাজীপুরের কালীগঞ্জের চাঁদখোলা মৌজায় ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে সর্বমোট ১০৬ শতক জমি কেনা হয় আছাদুজ্জামানের স্ত্রী আফরোজা জামানের নামে। 

এ ছাড়া ২০১৮ সালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কৈয়ামসাইল-কায়েতপাড়া মৌজায় আফরোজার নামে ২৮ শতক জমি কেনা হয়। একই বছর একই মৌজায় আরও ৩২ শতক জমি কেনা হয় তার নামে। পূর্বাচলে ১০ কাঠা জমি রয়েছে আছাদুজ্জামান মিয়ার নামে। এ ছাড়া আছাদুজ্জামানের পরিবারের সদস্যদের নামে রাজধানীর আফতাবনগরে ২১ কাঠা জমি রয়েছে। নিকুঞ্জ-১-এ আছাদুজ্জামানের ছোট ছেলের নামেও একটি বাড়ি রয়েছে।

স্ত্রী-সন্তানসহ বেনজীরের সম্পদের হিসাব চেয়ে দুদকের নোটিশ জারি

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম
স্ত্রী-সন্তানসহ বেনজীরের সম্পদের হিসাব চেয়ে দুদকের নোটিশ জারি

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জীশান মির্জা, দুই মেয়ে–ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাশিন রাইসা বিনতে বেনজীরের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ জারি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) গুলশানের র‍্যাংকন আইকন টাওয়ারে বেনজীরের বাসার ঠিকানায় নোটিশ পাঠিয়েছেন দুদকের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম। নোটিশে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেত ২১ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। 

বিকেলে নোটিশ জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন। 

এর আগে মঙ্গলবার সকালে কমিশনের বৈঠকে অনুসন্ধানের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। সে সময় কর্মকর্তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের মেয়াদ আরও ১৫ কার্যদিবস বাড়ানো হয়। 

দুদক সূত্র জানিয়েছে, অনুসন্ধানের জন্য নির্ধারিত ৪৫ কার্যদিবস শেষ হয় গত ২৭ জুন। নির্ধারিত সময়ে অনুসন্ধান শেষ না হওয়ায় আরও ১৫ কার্যদিবস সময় চান অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তারা। ফলে আইনের বিধান অনুযায়ী কমিশনের বৈঠকে অনুসন্ধানের মেয়াদ আরও ১৫ কর্মদিবস বাড়ানো হয়। 

বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের অগ্রগতি প্রতিবেদন দুই ভাগে করা হয়েছে। একটি হলো বেনজীরের অর্থসম্পদ। অপরটি হলো তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের অর্থসম্পদ-সংশ্লিষ্ট। একটি প্রতিবেদনে বেনজীরের বিরুদ্ধে সব রকম তথ্যপ্রমাণ যুক্ত করা হয়েছে। অপরটিতে তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ যুক্ত করা হয়েছে। দুটি প্রতিবেদনেই তাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহিভূর্ত সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। 

বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে গত ২১ এপ্রিল অনুসন্ধান শুরু হয়। তাদের নামে এখন পর্যন্ত ঢাকায় ১২টি ফ্ল্যাট, দেশের বিভিন্ন জেলায় ৬৯৭ বিঘা জমি, মৎস্য ও গরুর একাধিক খামার, রিসোর্ট, ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, বিও অ্যাকাউন্টসহ ৩৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, সিটিজেন টেলিভিশনসহ ৫টি পূর্ণ মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ৮টি ব্যবসায়িক শেয়ার পাওয়া গেছে। আদালতের নির্দেশে এসব অর্থসম্পদ ক্রোক ও ফ্রিজ করা হয়েছে। 

অবৈধ সম্পদের অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধান চলাকালে বেনজীর আহমেদ গত ৪ মে সপরিবারে দেশ ছাড়েন। তিনি ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশের মহাপরিদর্শক ছিলেন। তার আগে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত র‍্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

দেশে ফিরেছেন ৪০ হাজার ১১৫ হাজি, ৫৭ বাংলাদেশির মৃত্যু

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:১১ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:১১ পিএম
দেশে ফিরেছেন ৪০ হাজার ১১৫ হাজি, ৫৭ বাংলাদেশির মৃত্যু
ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছর পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে আরও একজন বাংলাদেশি হাজির মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭ জনে। এর মধ্যে পুরুষ ৪৪ ও নারী ১৩ জন। তাদের মধ্যে মক্কায় ৪৬ জন, মদিনায় ৪ জন, মিনায় ৬ জন ও জেদ্দায় ১ জন মারা গেছেন। সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সে দেশে দাফন করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) ভোররাতে হজ পোর্টালের সবশেষ বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়।

বুলেটিনে বলা হয়, পবিত্র হজ পালন শেষে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজার ১১৫ জন হাজি দেশে ফিরেছেন। সৌদি থেকে ১০২টি ফ্লাইটে এসব হাজি বাংলাদেশে এসেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ৩৬টি, সৌদি এয়ারলাইনস ৪০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করে।

হজ শেষে গত ২০ জুন থেকে দেশে ফেরার ফ্লাইট শুরু হয়। ওই দিন বাংলাদেশ বিমানের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ৪১৭ হাজি নিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৫ হাজার ২২৫ জন (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ) হজযাত্রী সৌদি আরবে গেছেন। আগামী বছর (২০২৫) বাংলাদেশের জন্য ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটা দিয়েছে সৌদি আরব।

সব ক্ষেত্রে সততা-জবাবদিহি-স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে: ড. মিজানুর রহমান

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:০২ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:০২ পিএম
সব ক্ষেত্রে সততা-জবাবদিহি-স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে: ড. মিজানুর রহমান
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান

আমাদের অবশ্যই রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে সততা, জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। 

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গতকাল সংসদে বলেছেন, তিনি ও তার সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ করেছেন। আমাদের উচিত, ওই নীতি বাস্তবায়নে তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা। প্রধানমন্ত্রীর আশপাশে এখন অনেক চাটার দল। তাদের হাত থেকে প্রধানমন্ত্রীকে রক্ষায় আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে বেসরকারি গবেষণা ও মানবাধিকার সংস্থা এম্পাওয়ারমেন্ট থ্রু ল অব দ্য কমন পিপল (এলকপ) আয়োজনে ‘বাংলাদেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনাসমূহ’ শীর্ষক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

মিজানুর রহমান বলেন, ‘দুর্নীতি আমাদের সমাজের মূলভিত্তিকে দুর্বল করে দেয়। রাষ্ট্রব্যবস্থা ও ন্যায়বিচারের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট করে দেয়। এই মহামারি মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি আমাদের সবাইকে একত্রিত হয়ে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।’

সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতির সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের রুখতে সরকারকে দুষ্টচক্রকে (সিন্ডিকেট) চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ করতে হবে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ দিতে হবে।’ 

তিনি আরও বলেন,  ‘নাগরিকদের জন্য টেকসই উন্নয়ন ও দেশের ন্যায়সঙ্গত অগ্রগতি নিশ্চিত করতে আমাদের অবশ্যই শক্তিশালী অর্থনৈতিক নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়াতে হবে।’ 

সভায় গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মাসুদ আখতার অভিযোগ করেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরিয়ে নেন। গ্রামীণ ব্যাংকের অবকাঠামো, লোকবল ও সুনাম ব্যবহার করে। তিনি কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিয়ে আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনুমোদন ছাড়া একান্ত অনুসারীদের নিয়ে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। প্রতিষ্ঠানগুলোতে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করছেন।’

শিক্ষকদের আন্দোলন অযৌক্তিক: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম
শিক্ষকদের আন্দোলন অযৌক্তিক: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন ‘অযৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে অর্থমন্ত্রীর অফিস কক্ষে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) দক্ষিণ, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াংমিং ইয়ংয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে এ কথা বলেন মন্ত্রী। 

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আন্দোলনে নেমেছেন সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বা কর্মসূচির প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে। গত সোমবার থেকে দেশের ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু হয়। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, প্রত্যয় স্কিম নিয়ে শিক্ষকদের আন্দোলনের কোনো যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না। 

প্রত্যয় কর্মসূচি গত পয়লা জুলাই থেকে চালু হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীন অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মিলিয়ে ৪০৩টির মতো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানে প্রত্যয় স্কিমের আওতায় পেনশন দেওয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে এই স্কিম প্রযোজ্য হবে। 

এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রত্যাশার চেয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বেশি সহায়তা করছে। আগামীতে তারা সহায়তা অব্যাহত রাখবে। 

পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা: এদিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এটি প্রত্যাহারের দাবিতে যখন আন্দোলন করছেন, তখন অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১ জুলাই ‘প্রত্যয়’ যাত্রা শুরু করেছে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে একটি টেকসই পেনশনব্যবস্থায় আনার জন্যই এই কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। প্রত্যয় স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত ও তার অঙ্গসংগঠনের প্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের জন্য প্রযোজ্য। বর্তমানে ৪০৩টি স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এদের মধ্যে ৯০টির মতো প্রতিষ্ঠানে পেনশনব্যবস্থা চালু আছে। বাকি ৩১৩টি প্রতিষ্ঠানে চালু রয়েছে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড (সিপিএফ)। সিপিএফ সুবিধার আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এককালীন আনুতোষিক পেয়ে থাকেন, পেনশন পান না।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে সরকারি পেনশনে ‘আনফান্ডেড ডিফাইন্ড বেনিফিট’ পদ্ধতির পেনশনব্যবস্থা চালু আছে। পেনশনের যাবতীয় ব্যয় বাজেট থেকে মেটানো হয়। এখন ‘ফান্ডেড ডিফাইন্ড বেনিফিট’ পদ্ধতির পেনশনব্যবস্থা চালু হওয়ায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বেতন থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণে মাসিক জমার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর প্রাপ্ত মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকার মধ্যে যেটা কম, সেটা কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বেতন হতে কর্তন করা হবে। যতটুকু কর্তন করা হবে, সেই পরিমাণ অর্থ দেবে প্রতিষ্ঠান। উভয় অর্থ সরকারি হিসাবে জমা হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলামের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আনফান্ডেড ডিফাইন্ড বেনিফিট পদ্ধতির পেনশনব্যবস্থায় সরকারের আর্থিক সংশ্লেষ ক্রমাগত বাড়ছে। এটি দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই ব্যবস্থা নয়। অন্যদিকে ফান্ডেড কন্ট্রিবিউটরি পেনশনব্যবস্থায় কর্মীদের চাঁদা এবং বিনিয়োগের মুনাফার ভিত্তিতে একটি তহবিল গঠিত হবে। ফলে এটি দীর্ঘ মেয়াদে একটি টেকসই পেনশনব্যবস্থা। নতুন ব্যবস্থায় ধীরে ধীরে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে টেকসই সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর মধ্যে আনা সম্ভব হবে। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও ২০০৪ সাল থেকে এ পেনশনব্যবস্থা চালু আছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত যেসব শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরিরত, তারা আগের মতোই পেনশন সুবিধা পাবেন। কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদনের পর নিজ বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে একই পদে বা উচ্চতর কোনো পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হলে তিনি সার্ভিস প্রোটেকশন ও পে-প্রোটেকশন প্রাপ্ত হন বলে এটিকে নতুন নিয়োগ হিসেবে গণ্য করা হয় না। সে ক্ষেত্রে তাদের বিদ্যমান পেনশন সুবিধার আওতায় থাকার সুযোগ থাকবে। তাদের অর্জিত ছুটি প্রাপ্যতার ভিত্তিতে দেওয়া হয় বলে ছুটি জমা থাকা সাপেক্ষে তা বহাল থাকবে।

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ বলেছে, কন্ট্রিবিউটরি পেনশন পদ্ধতিতে অংশগ্রহণকারীর সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এককালীন নয় বরং মাসিক পেনশনের যুক্তিসংগত পরিমাণ নির্ধারণ করাই অগ্রগণ্য। এ ক্ষেত্রে আনুতোষিকের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। বরং বিদ্যমান মাসিক পেনশনের কয়েক গুণ বেশি মাসিক পেনশন দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রত্যয় কর্মসূচিতে মাসিক ৫ হাজার টাকা বেতন থেকে কর্তন করা হলে এবং একই পরিমাণ অর্থ প্রতিষ্ঠান জমা করলে ৩০ বছর পর একজন পেনশনার প্রতি মাসে ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬০ টাকা হারে আজীবন পেনশন পাবেন। তার নিজ আয়ের মোট জমা করা অর্থের পরিমাণ ১৮ লাখ টাকা এবং তিনি যদি ১৫ বছর ধরে পেনশন পান, সে ক্ষেত্রে তার মোট প্রাপ্তি হবে ২ কোটি ২৪ লাখ ৩৮ হাজার ৮০০ টাকা। এ প্রাপ্তি তার জমার প্রায় সাড়ে ১২ গুণ। পেনশনে যাওয়ার পর ৩০ বছর জীবিত থাকলে পেনশনার পাবেন তার জমার প্রায় ২৫ গুণ অর্থ।

বিদ্যমান ব্যবস্থায় পেনশনার আজীবন পেনশন পান। তার অবর্তমানে পেনশনারের স্বামী বা স্ত্রী এবং প্রতিবন্ধী সন্তান আজীবন পেনশন পান। নতুন পেনশনব্যবস্থায়ও পেনশনার আজীবন পেনশন পাবেন। তবে পেনশনারের অবর্তমানে তার স্বামী বা স্ত্রী অথবা নমিনি পেনশন শুরুর তারিখ থেকে ১৫ বছর হিসাবে যে সময় বাকি থাকবে, সে পর্যন্ত পেনশন পাবেন। উদাহরণস্বরূপ, একজন পেনশনার অবসরে যাওয়ার পর ৫ বছর পেনশন পেয়ে এরপর মারা গেলেন। এ ক্ষেত্রে তার স্বামী বা স্ত্রী অথবা নমিনি আরও ১০ বছর পেনশন পাবেন। বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথাও তুলে ধরা হয়।