ঢাকা ২০ আষাঢ় ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪

ব্যক্তির অপকর্মের দায় বাহিনী নেবে না: আইজিপি

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩৬ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৯ পিএম
ব্যক্তির অপকর্মের দায় বাহিনী নেবে না: আইজিপি
ছবি: খবরের কাগজ

কোনো ব্যক্তির দায় বাহিনী নেবে না বলে জানিয়েছেন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।

তিনি বলেন, ‘স্পষ্ট করে বলতে চাই, কখনো কোনো ব্যক্তির অপকর্মের দায় বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী নেবে না। যেকোনো ক্ষেত্রে অপরাধের খবর পাওয়া গেলে তা আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কোনো কিছুকে আমরা খাটো করে দেখি না। ফলে এই ইস্যুতেও (বেনজীর) যেভাবে তদন্ত চলছে সেভাবেই এটি নিষ্পত্তি করা হবে।’

মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুরে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি বলেন, ‘অপরাধীদের অপরাধের ধরন পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমরা পুলিশ বাহিনীকেও আধুনিকায়ন করছি। অত্যাধুনিক সরঞ্জাম ও মানবসম্পদ বাহিনীতে যুক্ত করা হচ্ছে। উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী গঠনে সম্ভাব্য সব প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। পুলিশ বাহিনী গৌরবের সঙ্গে পেশাদারি বজায় রেখে দেশের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। কোনো ব্যক্তিবিশেষের দায় পুলিশ বাহিনীর ওপর পড়বে না।’

পুলিশের শুদ্ধি অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুলিশ বসে নেই, তারা কাজ করছে। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ এলেই পুলিশ তদন্তে নামে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

মঙ্গলবার সকালে রাজশাহীতে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে র্যালি, বৃক্ষরোপণ ও আলোচনাসভাসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আরএমপির ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।

বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। এরপর র্যালিতেও অংশ নেন তিনি।

সোমবার (১ জুলাই) সন্ধ্যায় আরএমপি সদর দপ্তরে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধন করেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম (বার), পিপিএম।
এ সময় সঙ্গে ছিলেন আরএমপির কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, বিপিএম।

এনায়েত করিম/সাদিয়া নাহার/অমিয়/

৮ জেলায় বন্যার পরিস্থিতির অবনতি

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১১:৩০ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১১:৩০ পিএম
৮ জেলায় বন্যার পরিস্থিতির অবনতি
ছবি : খবরের কাগজ

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানির কারণে সিলেট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও ফেনীতে বন্যা দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন এসব জেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বানভাসি মানুষের সংখ্যা। পাশাপাশি আশ্রয়, খাবার ও বিশুদ্ধ পানি নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছে দুর্গত এলাকার মানুষ।

আমাদের সিলেট ব্যুরো ও প্রতিনিধিরা জানান-

সিলেট ব্যুরো: সিলেটে ধীরগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে নদ-নদীর পানি। তবে বিভিন্ন উপজেলায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বিশেষ করে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীবেষ্টিত উপজেলাগুলোর নতুন এলাকা বেশি প্লাবিত হচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি ছয় স্থানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সিলেটে গতকাল বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ১৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। একই সময় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। 

সিলেট জেলা প্রশাসন জানায়, ১ হাজার ১৬০টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে ৬ লাখ ১৭ হাজার ৭৯৩ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত রয়েছে। জেলায় ৬৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ৮ হাজার ৯৫১ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি 

কুড়িগ্রামে বেড়েই চলছে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীর পানি। এর ফলে বৃহসপতিবার উলিপুর, সদর, নাগেশ্বরী উপজেলার বেশ কিছু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এতে নতুন করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত পাঁচ হাজার পরিবারের মানুষ। এ নিয়ে জেলায় বন্যায় আক্রান্ত রয়েছে ১৫ হাজার পরিবারের প্রায় অর্ধলাখ মানুষ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চরবালাডোবার মানুষ। বন্যাকবলিতদের অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। তবে তাদের মাঝে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আরও দুই থেকে তিন দিন ভারী ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ কারণে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যেতে পারে। 

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বানভাসিদের মধ্যে শুকনো খাবার ও চাল বিতরণ করা হচ্ছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। 

ফেনীতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত

ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হলেও ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। দুই উপজেলার এখনো অন্তত দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। এদিকে বসতবাড়ি থেকে পানি নামলেও তলিয়ে আছে ফসলি জমিসহ রাস্তাঘাট। অন্যদিকে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ফুটে উঠছে বন্যার ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্য।

গতকাল বুধবার রাতে সিলোনিয়া নদীতে বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে জানায় জেলা প্রশাসন। এর আগে গত সোমবার রাতে ফেনীর মুহুরী ও কহুয়া নদীর আটটি স্থান ভেঙে পরশুরাম ও ফুলগাজীর ২৮ গ্রাম প্লাবিত হয়।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। পানি কমলে ভাঙনস্থলের মেরামতকাজ শুরু হবে।

গাইবান্ধার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত 

গাইবান্ধায় জেলার সব নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে গাইবান্ধা সদর উপজেলার নদী-তীরবর্তী কামারজানি, মোল্লারচর, গিদারি, ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া, এরেন্ডাবাড়ি, ফজলুপুর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া তারাপুর, হরিপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় গাইবান্ধা পাউবোর নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি তিস্তামুখঘাট পয়েন্ট, ঘাঘটের পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্ট, করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চকরহিমাপুর পয়েন্টে ও তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ উপজেলাসংলগ্ন কাউনিয়া পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানিয়েছেন, নদ-নদীর পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বাড়লেও আপাতত বড় বন্যার আশঙ্কা নেই। 

সিরাজগঞ্জে ৪০টি ইউনিয়নে পানি প্রবেশ

সিরাজগঞ্জে যমুনা করতোয়া, হুরাসাগরসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এদিকে যমুনার পানি বৃদ্ধির ফলে কাজীপুর, জেলা সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার ৪০টি ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করেছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের ফসলি জমি প্লাবিত হতে শুরু করেছে। ফলে স্থানীয়দের মাঝে বন্যা-আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ছাড়া পানির তীব্র স্রোতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ও কৈজুরী দুটি ইউনিয়নে নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ফলে নদীতীরের মানুষের নির্ঘুম রাত কাটছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, আরও কয়েক দিন যমুনা নদীর পানি বাড়বে। এতে করে ছোট থেকে মাঝারি বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

টাঙ্গাইলে তলিয়ে গেছে চরাঞ্চলের নিচু এলাকা

টাঙ্গাইলের সব কয়টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তার মধ্যে ঝিনাই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে পানিতে তলিয়ে গেছে নদী-তীরবর্তী চরাঞ্চলের নিচু এলাকা। এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে কয়েকটি উপজেলায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। 

নেত্রকোনার শতাধিক গ্রাম জলমগ্ন

১০ দিন পর পুনরায় বন্যার ঝুঁকিতে নেত্রকোনার কলমাকান্দা, মোহনগঞ্জ, বারহাট্টা, সদর ও খালিয়াজুরী উপজেলার মানুষ। এর ফলে এসব উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। কোথাও কোথাও সড়ক তলিয়ে গিয়ে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। 

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারোয়ার জাহান জানান, প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বেড়ে গেছে। 

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ জানান, শুকনো খাবার, ওষুধ বরাদ্দ করা হয়েছে। ৮৫টি মেডিকেল টিম দুর্গত এলাকায় কাজ করছে।

জামালপুরে পানিবন্দি ১০ হাজার 

জামালপুরে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, জিঞ্জিরামসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে জেলার দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার অন্তত ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

বন্যার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের দুর্ভোগও বাড়তে শুরু করেছে। এদিকে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার কাঠারবিল এলাকায় দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দবাড়ি আঞ্চলিক সড়কের ৩০ মিটার অংশ বন্যার পানির স্রোতে ভেঙে গেছে। এ ছাড়া একই উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ি সড়কে একটি সেতুর সংযোগ সড়ক ভেসে যাওয়ায় খোলাবাড়ি ও গাইবান্ধা জেলার সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। 

এক মাসের মধ্যে মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়ছে না

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১০:২৭ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১০:২৭ পিএম
এক মাসের মধ্যে মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়ছে না
ছবি : সংগৃহীত

মেট্রোরেলে ভ্যাট বসানো নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) সদস্যদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে জানাবে কীভাবে মেট্রোরেলের ভাড়ার ওপর ভ্যাট বসানো হবে। এতে করে আগামী এক মাসের মধ্যে ভাড়া বাড়ছে না মেট্রোরেলের। 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বেলা আড়াইটায় সভা হয় এনবিআর ও ডিএমটিসিএলের মাঝে। জানা যায়, মূলত এই সভা ছিল মেট্রোরেলের ভাড়ার ওপর ভ্যাট আরোপ কীভাবে করা হবে- তা নিয়ে। 

এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা আজ এনবিআরের সঙ্গে যে বৈঠক করেছি, তাতে মেট্রোরেলের ভাড়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এনবিআর ও মেট্রোরেল সদস্যদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা এক মাসের মধ্যে জানাবে মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর ভ্যাট কীভাবে ইনক্লুড করা যায়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সড়ক বিভাগ বা ডিএমটিসিএল কিন্তু কখনো বলিনি এনবিআরকে ভ্যাট দেব না। আমরা ভ্যাট দিতে চাই, তবে এ ভ্যাট ইনক্লুড করার পর যাত্রীসাধারণের ওপর যেন চাপ না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এসব বিষয় নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে আজ।’ 

এর আগে সোমবার থেকেই মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর বর্তমানে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট যুক্ত হয়েছে। সেই অনুযায়ী সেদিন থেকেই মেট্রোরেলের টিকিটের মূল্যের সঙ্গে অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ অর্থ দেওয়ার কথা যাত্রীদের। তবে তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এর আগে গত ৪ এপ্রিল এনবিআর চিঠি দিয়ে ডিএমটিসিএলকে জানায়, জুলাই থেকে মেট্রোরেলের সেবা ও টিকিটে মূসক পরিশোধ করতে হবে। এরপর ডিএমটিসিএলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন মেট্রোরেলে ভ্যাট না বসানোর অনুরোধ করে। মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর ভ্যাট মওকুফের সময়সীমা ছিল ৩০ জুন পর্যন্ত। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে ওই সুবিধা দিচ্ছে এনবিআর। 

মূলত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) ট্রেনের টিকিটের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ আছে। একইভাবে মেট্রোরেলের ভাড়া থেকেও ভ্যাট আদায় করতে কঠোর অবস্থানে আছে এনবিআর। যাত্রীদের বিদ্যমান ভাড়া থেকেই ভ্যাট পরিশোধ করতে বলেছে প্রতিষ্ঠানটি। ভ্যাট পরিশোধের পর বাকি টাকা পাবে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে বর্তমান ভাড়ার সঙ্গে ভ্যাট যোগ করে এখনই ভাড়া বাড়াতে রাজি না ডিএমটিসিএল। এ ক্ষেত্রে তারা ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ আরও বাড়িয়ে যা ভাড়া আছে তাই রাখতে আগ্রহী। 

এদিকে মেট্রোরেলের টিকিটের বর্তমান ভাড়া থেকে ভ্যাট হিসেবে টাকা কেটে সেটা এনবিআরকে দিলে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের আয় কমে যাবে বলে এ সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছেন ডিএমটিসিএলের একাধিক কর্মকর্তা। হিসাব অনুযায়ী, বর্তমান ভাড়ার সঙ্গে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট যোগ করা হলে যাত্রীদের ১০০ টাকার টিকিটের দাম বেড়ে হবে ১১৫ টাকা। অন্যদিকে ভ্যাটের টাকা যাত্রীর বর্তমান ভাড়া থেকে কেটে নেওয়ারও আইনি সুযোগ আছে। ১০০ টাকার টিকিট থেকে ১৫ টাকা এনবিআরকে দিতে হবে, সে ক্ষেত্রে ভাড়া না বাড়লেও মেট্রোরেলের আয় কমবে।

সপ্তাহে দুই দিন ঢাকায়, বাকি সময় সারা দেশ ঘুরবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১০:২৫ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১০:২৫ পিএম
সপ্তাহে দুই দিন ঢাকায়, বাকি সময় সারা দেশ ঘুরবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন নিজের কাজের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে বলেছেন, ‘সপ্তাহে সোম ও মঙ্গলবার ঢাকা থাকব আর বাকি দিনগুলো সারা দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা পরিদর্শন করব। জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে উন্নত করতে পারলে এবং সেখানে রোগীর যথাযথ চিকিৎসা হলে ঢাকা শহরে রোগীদের ভিড় হবে না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘শিশুরাই দেশের ভবিষ্যৎ। শৈশব থেকেই যদি আমরা তাদের মানসিক বিকাশ ঘটাতে পারি, নিঃসন্দেহে তারা ভবিষ্যতে দেশের কাণ্ডারি হবে।’ 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাজধানীর মহাখালীতে আন্তর্জাতিক উদরাময় রোগ গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সাসাকাওয়া অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ কর্মসূচি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. বেগম রোকেয়া সুলতানা বলেন, ‘শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে আইসিডিডিআরবির কাজ প্রশংসনীয়। শিশুরা যে পরিবেশে বেড়ে উঠছে তা বিবেচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

আইসিডিডিআরবির মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের (এমসিএইচডি) ইমেরিটাস বিজ্ঞানী ড. জেনা দেরাখশানি হামাদানি বলেন, ‘সরকার আইসিডিডিআরবির সঙ্গে অংশীদারত্বে ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার অধীনে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে শৈশব বিকাশ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এর উদ্দেশ্য অভিভাবকদের জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়ানো এবং শিশুর সামগ্রিক বিকাশ সম্পর্কে প্রচার করা। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় আশা করি, আমরা দেশের সব কমিউনিটি ক্লিনিকে কার্যক্রমটি কার্যকরভাবে সম্প্রসারণ করতে পারব এবং একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সহায়তা করতে পারব।’

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিশেষ করে বাংলাদেশে পাঁচ বছরের নিচের প্রায় ২৫ কোটি শিশু দারিদ্র্য, পুষ্টিহীনতা এবং অপর্যাপ্ত অভিভাবকত্ব দক্ষতার কারণে তাদের সম্পূর্ণ বিকাশের সম্ভাবনা অর্জনে ব্যর্থ হয়। শিশুদের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি প্রাথমিক শৈশব উদ্দীপনা কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রচার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, ডিজিএইচএসের বিভিন্ন লাইন ডিরেক্টর, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং শিশু বিকাশ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিসহ অনেকে।

ওমানে বাংলাদেশি শ্রমিকরা দুদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫৯ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১০:০৪ পিএম
ওমানে বাংলাদেশি শ্রমিকরা দুদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে: প্রধানমন্ত্রী
ওমানের রাষ্ট্রদূত আবদুল গাফফার বিন আবদুল করিম আল-বুলুশি শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওমানে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, ‘তারা উভয় দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। উভয় দেশের অর্থনীতিই এই শ্রমশক্তির দ্বারা উপকৃত হচ্ছে।’

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ওমানের রাষ্ট্রদূত আবদুল গাফফার বিন আবদুল করিম আল-বুলুশি শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশিদের ওপর ভিসা ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আল-বুলুশি বলেন, ‘প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশি জনশক্তি আমাদের শ্রমবাজারে কাজ করছে। আমরা শ্রমের চাহিদা পূরণের জন্য পর্যায়ক্রমে শ্রমবাজার পর্যালোচনা করি। সেই পর্যালোচনার ভিত্তিতে কখনো কখনো আমরা দেশগুলোতে স্থগিতাদেশ দিয়ে থাকি। বিধিনিষেধের উপায় দেখে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের ওপর ব্যাপক ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আসলে কিন্তু তেমন নয়। জনশক্তি ভিসা ছাড়া বাকি সব ভিসা যেমন ফ্যামিলি ও ট্যুরিস্ট ভিসা খোলা আছে। বাংলাদেশিদের জন্য ওমানের ১০টি ক্যাটাগরির ভিসা এখন উন্মুক্ত।’ 

সার আমদানির বিষয়ে রাষ্ট্রদূত জানান, তার সরকার ব্যবস্থাটি জি-টু-জি ভিত্তিতে করার প্রস্তাব করেছেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখবে।’

এই প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তার সরকারের কাছে একটি অনুরোধপত্র পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, এতে তিনি বাংলাদেশের পক্ষে তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে সক্ষম হবেন। এ সময় অ্যাম্বাসেডর এট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ ও স্পেনের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারস্পরিক সুবিধার জন্য বাংলাদেশ ও স্পেনের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ ও স্পেনের মধ্যে ব্যবসা বাড়াতে চাই।’

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৃহস্পতিবার তার সরকারি বাসভবন গণভবনে স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল মারিয়া সিস্তিয়াগা ওচোয়া ডি চিনচেত্রু সৌজন্য সাক্ষাতে এলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্প্যানিশ বিনিয়োগকারীদের সেখানে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে স্পেনের সমর্থন চান।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান বলেন, বৈঠকে জানানো হয় যে, দুই দেশের মধ্যে অংশীদারত্ব চুক্তির জন্য আলোচনা হবে, যা আগামী সেপ্টেম্বরে শুরু হবে। স্পেনে বর্তমানে প্রায় ৬০ হাজার বাংলাদেশি বসবাস করে। প্রধানমন্ত্রী স্পেনের প্রতি বিশেষ করে আইটি খাত থেকে আরও বেশি বাংলাদেশি নেওয়ার আহ্বান জানান।

স্পেনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বর্তমানে তার দেশ বাংলাদেশ থেকে শুধু তৈরি পোশাক (আরএমজি) আমদানি করে এবং বাংলাদেশের সিমেন্ট খাতে স্পেনের বিনিয়োগ রয়েছে। তিনি চলতি অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের বাজেটের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, সরকার শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীকে গুরুত্ব দিয়েছে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীতে আপনার বর্ধিত আগ্রহ ও বরাদ্দ আমাদের দেশের সঙ্গেও মিলেছে।’ 

রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে তাকে স্পেন সফরের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পেনের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। বাসস

ফয়সালকে এনবিআর থেকে বিদায়

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪২ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪২ পিএম
ফয়সালকে এনবিআর থেকে বিদায়
কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল

দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব (কর) কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালকে এনবিআর থেকে ‘অবমুক্ত’ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকেলে তাকে অবমুক্ত করে এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে।

এর আগে গত ৩০ জুন কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালকে বগুড়ায় বদলি করা হয়। বগুড়া কর অঞ্চলের পরিদর্শী রেঞ্জ-১-এ তার নতুন কর্মস্থল। এনবিআর থেকে ‘অবমুক্ত’ করার অর্থ হলো, তাকে এনবিআর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বদলির কারণে বিদায় করা হয়েছে। এখন তাকে বগুড়ায় যোগদান করতে হবে। 

গত ২৭ জুন বৃহস্পতিবার ঢাকার আদালতের কাছে কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিবরণ তুলে ধরেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে এ ঘটনার পর তিনি আর এনবিআরে অফিস করেননি বলে জানা গেছে।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কাজী ফয়সাল ও তার স্ত্রীর নামে থাকা ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ৫ কাঠার দুটি প্লট, শ্বশুরের নামে থাকা ঢাকার রমনা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট, খিলগাঁওয়ে শাশুড়ির নামে ১০ কাঠা প্লট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।