![আন্তর্জাতিক নাবিক দিবস আজ](uploads/2024/06/25/Nabik-1719303160.jpg)
বাংলাদেশি মালিকানাধীন এমভি আবদুল্লাহ নামে একটি জাহাজ কয়লা নিয়ে আফ্রিকার মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে। এ সময় ওই জাহাজে ২৩ জন নাবিক ছিলেন। সে সময় সারা দেশের মানুষের নজর ছিল তাদের দিকে। ছিল সহানুভূতিও। টানা ৩২ দিন জিম্মি থাকার পর গত ১৪ মে তারা দেশে ফেরেন।
জিম্মি থাকা অবস্থায় একদিকে নাবিকরা যেমন ছিলেন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে, অন্যদিকে তাদের স্বজনরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় সময় পার করেছেন। এমন পেশায় নিজেকে উজাড় করে দেয় দেশের এক দল সাহসী মানুষ।
পরিবার-পরিজন থেকে দূরে থেকেও তারা নানা চ্যালেঞ্জ পার করে সমুদ্রগামী জাহাজগুলোতে চাকরি নেন। তবে অনেকে চাকরি পেতে নানা হয়রানির শিকার হন বলে অভিযোগ রয়েছে। অনেকে চাকরি পেলেও দূর দেশে গিয়ে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ভিসা জটিলতায় পড়েন। আবার অনেকে বিদেশে গিয়ে পালিয়ে যান। তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে অন্যদের ওপর। এমন অবস্থার মধ্যেই আজ মঙ্গলবার পালন করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক নাবিক দিবস।
বিশেষজ্ঞরা জানান, দেশের নৌ খাতে দিন দিন নানা সূচকে উন্নতি ঘটছে। বিশ্বমানের জাহাজ নির্মাণ শুরু হয়েছে। অভ্যন্তরীণ জাহাজেও বিদেশ নির্ভরতা কমছে। সেই সঙ্গে দেশের নাবিকদের কদর বাড়ছে বহির্বিশ্বে। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘মানগত দক্ষতা’ নজর কাড়ছে বিদেশি জাহাজ মালিকদের।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাদের এখন প্রায় দুই হাজার নাবিক রয়েছেন। যাদের বেশির ভাগই বিদেশি জাহাজে কর্মরত। তাদের দক্ষতা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। তবে একশ্রেণির নাবিক ইউরোপের বিভিন্ন দেশের গিয়ে জাহাজ থেকে পালিয়ে যান। এতে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়। ফলে ওই জাহাজ আমাদের অন্য নাবিকদের চাকরি দেয় না। আরেকটি সমস্যা হচ্ছে ভিসা জটিলতা। কোনো কোনো দেশ আমাদের নাবিকদের কর্মস্থলে যেতে সময়মতো ভিসা দেয় না।’
একই অধিদপ্তরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার ও শিপ সার্ভেয়ার মঞ্জরুল কবীর খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিদেশি জাহাজে আমাদের নাবিকদের দক্ষতা বেশ ভালো। ফলে কোনো নাবিকই এখন আর একটানা বেশি দিন বেকার বসে থাকেন না। কোনো না কোনো জাহাজে চাকরি হয়ে যায়।’
অন্যদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নাবিক খবরের কাগজকে জানান, অনেকেই পড়াশোনা ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ শেষ করে সনদ নিতে নৌপরিবহন অধিদপ্তরে গিয়ে হয়রানির শিকার হন। সনদের জন্য অনেক দিন অপেক্ষা করতে হয়। সময় মতো সনদ না পাওয়ায় অনেকে চাকরি পেতেও বিড়ম্বনার শিকার হন।
এ বিষয়ে চিফ ইঞ্জিনিয়ার ও শিপ সার্ভেয়ার মঞ্জরুল কবীর আরও বলেন, সনদ দেওয়ার জন্য কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। স্বাভাবিকভাবেই এতে সময় লাগে। কাউকে ইচ্ছাকৃত হয়রানি করা হয় না।