![হাজারীবাগের ডা. আশরাফের বিরুদ্ধে তদন্তে মানবাধিকার কমিশন](uploads/2024/06/27/Untitled-1719504270.jpg)
‘চিকিৎসার আড়ালে ভয়ংকর যৌন নিপীড়ক ডা. আশরাফ’ শিরোনামে গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদন মতে, রাজধানীর হাজারীবাগের বেড়িবাঁধে অবস্থিত ১০ শয্যার শামসুননেছা আরজু মনি মা ও শিশুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে চিকিৎসকসহ বহু নারীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নারী সহকর্মীকে যৌন হয়রানি করা তার নেশায় পরিণত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন ডা. আশরাফ। এ পদের প্রভাব খাটিয়ে একাধিক নারী সহকর্মীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন তিনি। বিভিন্ন অজুহাতে কাছে ডেকে যৌন হয়রানি করেন তিনি। তবে চাকরি টিকিয়ে রাখা এবং সামাজিক লজ্জার ভয়ে দীর্ঘদিন মুখ বুজে এসব নির্যাতন সহ্য করেছেন ভুক্তভোগী নারীরা। যৌন হয়রানির শিকার একাধিক নারীর বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে গণমাধ্যমে।
প্রতিবেদনটিতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সূত্রে উল্লেখ রয়েছে, ডা. আশরাফের যৌন হয়রানির শিকার হয়ে একাধিক নারী গত বছরের নভেম্বরে ঢাকা বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগ আমলে নিয়ে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। তবে অদৃশ্য কারণে তদন্ত করা হয়নি। পরে ডা. আশরাফের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ৮-১০ জন নারী যৌন হয়রানির অভিযোগ দিলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. মুনীরুজ্জামান সিদ্দীকীকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে। গত এপ্রিলে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। তবে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি অধিদপ্তর। গত ৬ মে ভুক্তভোগী নারীরা আবারও যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) আসিব আহসানের কাছে যান। তবে তিনি তাদের অভিযোগ গ্রহণ করেননি বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মানবাধিকার কমিশন গৃহীত সুয়োমটোতে উল্লেখ রয়েছে, ডা. আশরাফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের যে অভিযোগ উঠেছে তা অত্যন্ত ঘৃণিত ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন। উল্লিখিত ঘটনায় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি গঠন এবং পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ৩ সদস্যবিশিষ্ট পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন ও প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হলেও কী কারণে তা আলোর মুখ দেখেনি তা কমিশনের কাছে বোধগম্য নয়। কমিশন মনে করে, অভিযোগের বিষয়ে সঠিক তদন্তপূর্বক বিভাগীয় শাস্তির পাশাপাশি যথাযথ আইনে মামলা হওয়া আবশ্যক। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনসহ সে আলোকে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তা অনতিবিলম্বে কমিশনকে জানাতে সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। আগামী ২৮ জুলাই প্রতিবেদনের জন্য তারিখ ধার্য করা হয়েছে।