![আমের স্বাদে-গন্ধে মুগ্ধ কূটনীতিকরা](uploads/2024/06/28/chapai-mango-1719547707.jpg)
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক নাচোলে নিরাপদ আম চাষ ঘুরে দেখেছেন বিভিন্ন দেশের একদল কূটনীতিক। শুধু ঘুরে দেখাই নয়, আম খেয়ে স্বাদে-গন্ধে রীতিমতো মুগ্ধ ও বিমোহিত হয়েছেন তারা। সরেজমিনে বাগান ঘুরে দেখা বিদেশি কূটনীতিকদের মধ্যে ঢাকায় নিযুক্ত প্রায় ২০টি দেশের রাষ্ট্রদূত-মিশনপ্রধানরা ছিলেন। বাংলাদেশে নিরাপদ আম উৎপাদন কার্যক্রম দেখে তারা প্রশংসা করেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দিনভর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কান্দবোনা গ্রামে উত্তম কৃষি চর্চা (গ্যাপ) অনুসরণ করে পরিচালিত আমচাষি রুহুল আমিনের আমবাগান পরিদর্শন করেন তারা।
পরিদর্শনকালে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মো. আব্দুল ওয়াদুদ, স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহা. জিয়াউর রহমান, কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার এবং ব্রুনাই, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, স্পেন, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভুটান, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার ও লিবিয়ার রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিরা ছিলেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধিও এ টিমে ছিলেন।
পরিদর্শন শেষে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের আম স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় এবং বিদেশেও খুবই জনপ্রিয়। প্রতিবছর দেশ থেকে লক্ষাধিক টন আম রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু আমরা মাত্র তিন হাজার টনের মতো আম রপ্তানি করতে পারি। এ ক্ষেত্রে মূল প্রতিবন্ধকতা ছিল গ্যাপ অনুসরণ না করা। সে জন্য গ্যাপ মেনে আমরা নিরাপদ আম উৎপাদন শুরু করেছি। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা এ কার্যক্রম ঘুরে দেখেছেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বেশি পরিমাণ আম রপ্তানির চেষ্টা করছি। এ পরিদর্শনের মাধ্যমে রাষ্ট্রদূতদের উৎসাহিত করছি, যাতে করে বেশি পরিমাণ আম রপ্তানি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হয়। আমি মনে করি, এ ভিজিটের ফলে আম রপ্তানি বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।’
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘কৃষি, বাণিজ্য এবং পররাষ্ট্র তিন মন্ত্রণালয় মিলে আমরা আমাদের আমকে বিদেশে ব্র্যান্ডিং করব। যাতে বিদেশে রপ্তানি আরও বৃদ্ধি পায়। আম রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের বহু সমস্যা আছে, থাকতে পারে। এগুলো আমরা সমাধান করব।’
তিনি বলেন, ‘গ্যাপ না থাকলে চাইলেই বিদেশে আম রপ্তানি করা যায় না। গ্যাপ বাস্তবায়ন আমরা শুরু করেছি। সামনে কোনো সমস্যা থাকবে না।’
কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, ‘আমরা উত্তম কৃষিচর্চা শুরু করেছি। এটি সারা বিশ্বের প্রতিনিধিরা দেখলেন। এটা আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।’
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আমাদের আমের কোয়ালিটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে প্রতিটি দেশেই ফাইটোস্যানিটারি ইস্যু আছে, এর একটা নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড আছে। গ্যাপ মেনে আম উৎপাদন করতে পারলে বিশ্বের সব দেশেই আম রপ্তানি করা যাবে।’
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ৩৮টি দেশে আম রপ্তনি হচ্ছে; যদিও এর পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। ২০২১ সালে বিশ্বে প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের আম রপ্তানি হয়। আর বাংলাদেশ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ হাজার ৭৫৭ মেট্রিক টন আম রপ্তানি এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩ হাজার ১০০ মেট্রিক টন আম রপ্তানি হয়েছে।