![অব্যবস্থাপনার ভিড়ে ইমরানুর-শিরিনের হাসি](uploads/2024/02/10/1707542760.Imran-Shirin.jpg)
আরও একবার বাংলাদেশে দৌড়ালেন এবং দ্রুততম মানবের খেতাব নিজের কাছেই রাখলেন লন্ডনপ্রবাসী স্প্রিন্টার ইমরানুর রহমান। আর শিরিন আক্তার তো নিজেকে নিয়ে গেলেন আরও ওপরে। ১৫তম বার দ্রুততম মানবীর খেতাব জিতলেন নৌবাহিনীর এই অ্যাথলেট। কিন্তু গতকাল শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অ্যাথলেটিকস ফেরার দিনেও ইমরানুর-শিরিনকে নিয়ে মাতামাতি হলো কই! হ্যাঁ, তারা দৌড় শেষে করে একসঙ্গে নিজ নিজ সংস্থার পতাকা নিয়ে ক্যামেরার সামনে পোজ দিলেন ঠিকই। পদক মঞ্চেও দাঁড়ালেন। কিন্তু সেই একই সময়ে আয়োজকদের নানা অব্যবস্থাপনাও ফুটে উঠল। এই অব্যবস্থাপনা এতটাই বেশি যে, ৪৭তম জাতীয় অ্যাথলেটিক্সের প্রথম দিনটা বিবর্ণই হয়ে রইল।
এবারের প্রতিযোগিতাটি মূলত গত বছরের প্রতিযোগিতা, যা কয়েক দফায় তারিখ পেছায় অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন। ৪০টি ইভেন্ট তারা মাত্র দুই দিনেই শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছে! সেটা করতে গিয়েই জোড়াতালির নানা বিষয় দৃষ্টির অগোচরে নিতে পারেননি কর্মকর্তারা। অ্যাথলেটিকসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্ট ১০০ মিটার স্প্রিন্ট, যা সাধারণত প্রতিযোগিতার শেষ দিনেই আয়োজিত হয়ে থাকে। কিন্তু অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন প্রথম দিনই এই দুটি ইভেন্ট রেখেছিল। সূচি অনুযায়ী পৌনে ৪টায় পুরুষদের ১০০ মিটার ও বিকেল ৪টায় মেয়েদের ১০০ মিটার স্প্রিন্ট হওয়ার কথা। কিন্তু ইমরানুর যখন দৌড় শেষ করলেন, তখন ঘড়িতে ৪টা ৫১! অর্থাৎ এক ঘণ্টারও বেশি সময় পর হয়েছে ইভেন্টটি। আর এর মূল কারণ দীর্ঘ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। যেখানে আসলে আনুষ্ঠানিকতা বলতে কিছু ছিল না। বিভিন্ন সংস্থার খেলোয়াড়রা মার্চপাস্ট করেছে শুধু। বাকি পর্বটাকে শুধু বক্তৃতাই বলা যায়। ফেডারেশন সভাপতি মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার প্রতিযোগিতার উদ্বোধন ঘোষণার কথা ছিল বেলা ৩টায়। কিন্তু সেই উদ্বোধনের ঘোষণা আছে ৪টা ২৪ মিনিটে! এতে করে ১০০ মিটার স্প্রিন্টসহ বেশ কিছু ইভেন্টই পিছিয়ে যায়।
শুধু তাই নয়, সাবেক পোল ভোল্টার শরিফুল ইসলাম ও সাবেক দ্রুততম মানবী নাজমুন নাহার বিউটি মশাল নিয়ে দৌড়ানোর সময়ও ঘটেছে অদ্ভুত কাণ্ড! নিম্নমানের মশাল থেকে আগুনের গোলটা পড়ে যায় ট্র্যাকের পাশে। বড়সড় দুর্ঘটনা যে হয়নি সেটাই অনেক। ইমরানুর-শিরিন সেরা হওয়ার পর দিনের বাকি ইভেন্টগুলো দ্রুততার সঙ্গে শেষ করতে চাচ্ছিল ফেডারেশন। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজকদের নানা অসহযোগিতার ঘটনা ঘটে। ফেডারেশন সভাপতি মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া তো পরে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন, ৪০ ইভেন্টের প্রতিযোগিতা দুই দিনে সম্পন্ন করা আসলে কঠিন। এমনটি হওয়া উচিত নয়। সময় আরও বেশি হওয়া উচিত।
এসব নানা ঘটনায় শুধু ইমরানুর-শিরিন নন, আড়ালে চলে গেছেন দিনের তিন নতুন রেকর্ডধারী অ্যাথলেট শামসুন্নার রত্না, রিতু আক্তার ও জাকিয়া আক্তারও। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর রত্না রেকর্ড গড়েছেন মেয়েদের ৫ হাজার মিটার দৌড়ে। তিনি সময় নেন ১৮ মিনিট ৪৯.৩৮ সেকেন্ড। মেয়েদের হাই জাম্পে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রিতু আক্তার নতুন রেকর্ড গড়েন। ১.৭৬ মিটার উচ্চতায় লাফিয়েছেন তিনি। মেয়েদের শটপুট ইভেন্টে রেকর্ড গড়েন নৌবাহিনীর জাকিয়া আক্তার। তিনি ১৩.৫২ মিটার দূরত্বে গোলক ছোড়েন।
টানা চারবার দ্রুততম মানব হওয়া সেনাবাহিনীর ইমরানুর ১০.৩৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে দৌড় শেষ করেন। আর শিরিন দৌড় শেষ করেন ১২.১১ সেকেন্ডে। দুজনের কারোরই এটি সেরা টাইমিং নয়।