ঢাকা ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪

স্ট্রাইকরেট নিয়ে নাঈম শেখ ‘সামথিং ইজ রং’

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৯ পিএম
আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৯ পিএম
‘সামথিং ইজ রং’
ছবি : সংগৃহীত

মোহাম্মদ নাঈম শেখের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার মাত্র ৩ বছর পেরিয়েছে। এর মধ্যেই ক্রিকেট জীবনের অনেক রং দেখে ফেলেছেন তিনি। জাতীয় দলে আছেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। আবার ডাক পেয়েছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে। টি-টোয়েন্টিতে তার স্ট্রাইকরেট নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়। খবরের কাগজেও ‘নাঈমের সর্বনাশা ডট বল’ শিরোনামে প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়েছে। এ নিয়ে নাঈম খবরের কাগজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। সমালোচনাকারীদের বলেছেন, ‘সামথিং ইজ রং’। পাশাপাশি তিনি নিজেকে এখন অনেক পরিণত ক্রিকেটারও মনে করছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তোফায়েল আহমেদ।

প্রশ্ন: দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে বিপিএল শেষ করলেন। ১২ ম্যাচে দুই ফিফটিতে ৩১০ রান। নিজেকে নিয়ে কতটা খুশি?

নাঈম: একজন ক্রিকেটার হিসেবে যত বেশি রান করতে পারব, তত বেশি ভালো লাগবে। প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়তো আরও অনেক বেশি ভালো করার স্পেসিফিক জায়গা ছিল। ৪০ রানের ঘরে গিয়ে মনে হয় দুই-তিনটা আউট হয়েছি। এই ইনিংসগুলো যদি একটু লম্বা করতে পারতাম, হয়তো ভালো কিছু ফিগার পাওয়া যেত। ব্যক্তিগত জায়গা শুধু নয়, দলের জন্যও অনেক ভালো হতো। এমনিতে আলহামদুলিল্লাহ খুশি আমি। চেষ্টা থাকবে পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক, ফ্র্যাঞ্চাইজি বা ঘরোয়া যে প্রতিযোগিতাই হোক, ইনিংসগুলো যেন লম্বা করতে পারি।

প্রশ্ন: একটা সময় পর্যন্ত আপনি সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের তালিকায় শীর্ষে ছিলেন। আপনাদের দলের আরও কয়েকজন ব্যক্তিগত সাফল্যে উজ্জ্বল। কিন্তু দল মোটেও ভালো করতে পারেনি। নিশ্চয়ই খারাপ লাগছে?

নাঈম: হ্যাঁ, আমাদের দলে ব্যক্তিগত অর্জন আছে। যেসব দল ভালো করছে, দেখবেন তাদের বেশির ভাগ ক্রিকেটারই এভারেজ পারফরম্যান্স করছে। আমার ব্যক্তিগত মত যেটা, দল হিসেবে খেলতে পারলে হয়তো অনেক ভালো কিছু করতে পারতেন। আমাদের এরকম হয়েছে, বেশির ভাগেরই বাজে সময় গেছে। হয়তো সবার একসঙ্গে হয়েছে জিনিসটা। এটা না হলে দলীয় ফল ভিন্ন হতে পারত। সুপার ফোরে খেলতে না পারলে তো আপনি ভালো দল না। টিমমেট হিসেবে সবার জন্যই খারাপ লাগা কাজ করে। টিমের জন্য একটা ফিলিংস আছে যে জিততে পারিনি। ভালো কিছু ফিডব্যাক দিতে পারিনি। ওই আক্ষেপ বা খারাপ লাগা তো অবশ্যই আছে।

প্রশ্ন: ঘরোয়া ক্রিকেটে এমনিতে আপনার বেশ ভালো সময়ই যাচ্ছে। টি-টোয়েন্টি দলেও কামব্যক করলেন। নিজের সময়টা কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

নাঈম: যেকোনো ক্রিকেটার, বিশেষ করে ওপেনার যারা, তাদের জন্য ক্যাশইনের টাইমে যত বেশি ক্যাশইন করা যায়, ততই ভালো। যেকোনো ক্রিকেটারকে এটা জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন। অবশ্যই আবারও সুযোগ পেয়েছি আমি। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শেষ করার পর ওয়ানডেতে সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু সেভাবে ক্লিক করতে পারিনি। এখন যেহেতু আবারও টি-টোয়েন্টিতে সুযোগ এসেছে, ইন্শাআল্লাহ চেষ্টা থাকবে সুযোগগুলো যেন আর আগের মতো মিস না হয়। যেন ক্লিক করতে পারি।

প্রশ্ন: সেরা সময়ে ক্রিকেটাররা যা চায়, তেমনই হয়। এরকম একটা কথা তো আছে। বর্তমান সময়টা কাজে লাগাতে আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী?

নাঈম: ক্রিকেটার যখন যেমন চায়, ওরকমই হয়, বিষয়টা এমন না। ফর্মে যখন থাকে, তখন অবশ্যই অনেক কিছুতে লাক ফেভার করে। অনেক কিছুই পক্ষে থাকে। যখন থাকে তখন ওই জিনিসটা ক্যাশইন করতে হয়। আমার চেষ্টা থাকবে সামনের খেলাতে যেন আমি শতভাগ দিতে পারি।

প্রশ্ন: ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে অন্যতম সেরা ওপেনার হিসেবে গিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে বাদ পড়ে যান। সেই সময়ের নাঈম আর এখনকার নাঈমের মধ্যে পার্থক্য বলবেন?

নাঈম: অবশ্যই, এখানে একটা অভিজ্ঞতার ব্যাপার আছে। লম্বা একটা সময়, জাতীয় দলের ভেতর এবং বাইরে আমি ভালো অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। ২০১৯ সালে আমার অভিষেক হয়েছে। এখন ২০২৪। আমি এখন ম্যাচিউরড ক্রিকেটার। ২০২১ সালের কথা যদি ধরি, কোন উইকেটে কীভাবে খেলা উচিত, কোন পরিস্থিতিতে কীভাবে খেলা বা ব্যাট করা উচিত, এই জায়গাগুলোতে অভিজ্ঞতা কম ছিল। এখন এই জায়গাগুলোতে আমি অনেক ভালো, পরিণত। এখন যদি প্রোপার ও ঠিক জায়গায় ক্লিক করতে পারি, এটাই আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হবে।

প্রশ্ন: ঢাকা লিগে ভালো করার পরও বিশ্বকাপ খেলা হয়নি। এই নিয়ে আক্ষেপ আছে?

নাঈম: দেখেন, অনেক ক্ষেত্রে ভাগ্যও একটা বড় বিষয়। হয়তো ওই সময়টার জন্য আমি আনলাকি ছিলাম। আমার থেকে যে বেটার ছিল, সে সুযোগ পেয়েছে। তবে আমার নিজের কোনো আক্ষেপ নেই। একজন ক্রিকেটার হিসেবে আপনার যেমন সুযোগ আসবে, আবার সুযোগ মিসও করবেন। আপনি যদি ভালো ক্রিকেটার হন, অবশ্যই সেই জায়গায় আপনি আবার যেতে পারবেন। প্রমাণ করার সুযোগ আছে। তাই চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।

প্রশ্ন: জাতীয় দলে যখন নিয়মিত ছিলেন, তখন আপনার স্ট্রাইক রেট নিয়ে খুব কথা হতো। আর এবারের বিপিএলের স্ট্রাইক রেট নিয়েই বা আপনি কতটা খুশি?

নাঈম: এবার দেখেন বেশির ভাগ উইকেটই ভালো ছিল। হয়তো দুই-তিনটি ম্যাচে ১৩০ বা এর আশেপাশে রান হয়েছে। এ কারণে আমি পরিস্থিতি অনুযায়ী চেষ্টা করেছি যত বেশি স্ট্রাইকরেট রেখে খেলা যায়। যখন আমার স্ট্রাইক রেট নিয়ে কথা হয়েছে, তখন বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সিরিজ ছিল। এই চারটা সিরিজে আমি ম্যাচ খেলেছি কমপক্ষে ১৫-১৬টার মতো। ওই সময় বাংলাদেশ দল কত রান করেছে, সিরিজগুলোতে আসলে কেমন রান হয়েছে, এটাও কিন্তু বিষয়! ওই ১৫টি ম্যাচ বাদে আমার স্ট্রাইকরেটটা দেখলেও হয়তো বোঝা যাবে। এমনকি সাকিব ভাইও বলেছেন, এই দুই-তিন সিরিজ দেখে যদি কোনো খেলোয়াড়কে বিচার করা হয়, তাহলে এর থেকে বোকামি আর কোনো কিছু হতে পারে না। সাকিব ভাই, তামিম ভাইদের থেকে মনে হয় না ভালো ক্রিকেট কেউ বোঝে। এটা নিয়ে আমার তেমন কিছু বলার নেই। আপনি প্রশ্ন করলেন বলে আমি আমার ফিডব্যাকটা দিলাম। ওই সময়টায় তো শুধু নাঈম শেখ একা খেলেনি। বিশ্বের অনেক বড় খেলোয়াড়রা খেলেছেন। ওভারঅল সবারটা যাচাই করার পর যদি দেখেন, তখন হয়তো বলতে পারেন। কিন্তু সবারটা দেখার পর শুধু নির্দিষ্ট একটি খেলোয়াড়ের নাম বারবার মেনশন করা হলে তখন বলতেই হবে, ‘সামথিং ইজ রং’।

প্রশ্ন: এখন পর্যন্ত যে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার আপনার, এতে নিজেকে নিয়ে কতটা খুশি?

নাঈম: সত্যি বলতে, এভাবে কখনো চিন্তা করিনি। একজন ক্রিকেটার হিসেবে প্রত্যাশা তো অনেক বেশি। অনেক ভালো কিছু করার সুযোগ হয়তো ছিল। কিন্তু অভিজ্ঞতার অভাবে সেটা করতে পারিনি। এই জায়গায় হয়তো পিছিয়ে ছিলাম। এখন প্রত্যাশাটা অনেক বেশি। আগে যেটা ছিল না। আগে হচ্ছে সার্ভাইভ কীভাবে করব, সেটা চিন্তা করতাম। এখন নিজের কাছে প্রত্যাশা অনেক যে, দেশের জন্য ভালো করতে হবে। তবে খুশি না, এমন বলব না। আবার খুশি, এটাও বলব না। এখন যে সুযোগ এসেছে, এটা নিয়েই চিন্তা করছি। সামনে খেলা। এটা নিয়েই ভাবনা। অতীত নিয়ে ভাবছি না।

প্রশ্ন: টি-টোয়েন্টিতে ভালো করে নিশ্চয়ই ওয়ানডে দলেও ফের জায়গা ফিরে পেতে চাইবেন?

নাঈম: এমনভাবে সত্যিই আমি ভাবছি না। এখন আমার কাছে একটা সিরিজ আছে। সেই সিরিজে শতভাগ দেওয়াই হবে আমার চেষ্টা। এটিই মাথায় আছে। এই সিরিজটিতে ফোকাস করছি। যত ভালোমতো এটি শেষ করা যায়।

 

শ্রীলঙ্কার অন্তবর্তীকালীন কোচ হলেন জয়সুরিয়া

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৭ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৭ পিএম
শ্রীলঙ্কার অন্তবর্তীকালীন কোচ হলেন জয়সুরিয়া
ছবি : সংগৃহীত

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভরাডুবির পর ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন শ্রীলঙ্কার হেড কোচ ক্রিস সিলভারউড।  তার জায়গায় অন্তবর্তীকালীন কোচ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের কিংবদন্তী ক্রিকেটার সনাথ জয়সুরিয়াকে।

ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজের পর ইংল্যান্ডের মাটিতে হতে যাওয়া টেস্ট সিরিজেও শ্রীলঙ্কা দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। লঙ্কান সংবাদমাধ্যমগুলো বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।  

ঘরের মাঠে আগামী শ্রীলঙ্কা জুলাই ও আগস্টে ভারতের বিপক্ষে সমান ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ খেলবে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে তিনটি টেস্ট খেলবে লঙ্কানরা তার অধীনেই।

খেলোয়াড়ি জীবনে শ্রীলঙ্কার হয়ে ওয়ানডেতে ১৩ হাজারের বেশি রান করেছেন তিনি। উইকেট নিয়েছেন তিনশ’র বেশি। টেস্টে তার নামের পাশে রানের সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার রান এবং উইকেটসংখ্যা ৯৮। 

সালমান খানকে সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটলেন ধোনি

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম
সালমান খানকে সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটলেন ধোনি
ছবি : সংগৃহীত

ভারত তথা গোটা ক্রিকেটবিশ্বেরই অন্যতম সেরা অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্মদিন আজ। ৪৩ বছরে পা দেওয়া ভারতের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অধিনায়ক ভাসছেন সবার শুভেচ্ছা ও শুভকামনায়। তবে মাঝরাতে জন্মদিনের প্রথম প্রহরে ধোনির সঙ্গে সাক্ষাত করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলিউড তারকা সালমান খান।

মধ্যরাতে কেক কাটার সময় ধোনির স্ত্রী সাক্ষীসহ উপস্থিত ছিলেন বলিউডের এই জনপ্রিয় তারকা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় জন্মদিনের কেক কেটে ধোনি প্রথমে তার স্ত্রী সাক্ষীকে এবং পরে সালমান খানকে খাইয়ে দিচ্ছেন কেক।

ইনস্টাগ্রামে ধোনির সঙ্গে ছবি পোষ্ট করে সালমান খান ্লিখেছেন, ‘হ্যাপি বার্থডে কাপ্তান সাহেব!’

হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুযায়ী, মুকেশ আম্বানীর ছেলে অনন্ত আম্বানীর বিয়েতে যোগ দিতেই বর্তমানে মুম্বাইয়ে অবস্থান করছেন ধোনি। একই সময়ে সালমান খান ব্যস্ত রয়েছেন তার আসন্ন চলচ্চিত্র ‘সিকান্দার’ এর শুটিংয়ে। দুই তারকাকে একসঙ্গে দেখে আনন্দে ভাসছে ভক্তরাও।

এনদ্রিকের লক্ষ্য পরের বিশ্বকাপ

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
এনদ্রিকের লক্ষ্য পরের বিশ্বকাপ
ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকা কোথাও সাফল্য ধরা দিচ্ছে না ব্রাজিলের ঝুলিতে। বিশ্বকাপের পর কোপারও কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছে ব্রাজিলকে। দুই আসরেই টাইব্রেকারে হেরে বাদ পড়তে হয়েছে তাদের। উরুগুয়ের কাছে তারা হেরেছে ৪-২ ব্যবধানে।

আরও একবার ব্যর্থ হলেও নিজ দেশের সমর্থকদের আশার বাণীই শুনিয়েছেন ব্রাজিলের সবচেয়ে তরুণ ফুটবলার এনদ্রিক। ১৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড পরের বিশ্বকাপকে লক্ষ্যে রাখার কথা বলেছেন।

চলমান কোপা আমেরিকার মতোই ২০২৬ বিশ্বকাপও হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। তবে সহ আয়োজক হিসেবে থাকছে কানাডা ও মেক্সিকোও। সেই বিশ্বকাপ নিয়েই ভাবার কথা বলেছেন এনদ্রিক।

কোপা আমেরিকা থেকে ছিটকে যাওয়ার পর এনদ্রিক বলেছেন, ‘আমরা ব্রাজিলকে শীর্ষে তুলতে চাই। আমরা বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকব।’

২০২২ কাতার বিশ্বকাপে বিদায় নেওয়ার পর এমনটা তখনও বলেছিলেন ব্রাজিল দলের ফুটবলাররা।

পরপর দুই আসরে ব্যর্থ হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই মেনে নেওয়া কঠিন সমর্থকদের মতো দলের সদস্যদেরও। অনেক চেষ্টা করেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের দেখা মিলছে না পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।

এমন দুঃসহ অবস্থায় এনদ্রিক একটি অনুরোধও করেছেন দলের সমর্থকদের কাছে, ‘আমরা জানি যে এটা কঠিন মুহূর্ত। কিন্তু আমরা সব ব্রাজিলিয়ানদের কাছ থেকে সমর্থন আশা করছি।’

অবসরের ঘোষণা দিলেন জন সিনা

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৩৫ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:১০ পিএম
অবসরের ঘোষণা দিলেন জন সিনা
ছবি : সংগৃহীত

১৬ বারের চ্যাম্পিয়ন জন সিনা বিদায় বললেন রেসলিংকে। এর মধ্য দিয়ে শেষ হলো তার ২২ বছরের বর্ণাঢ্য রেসলিং ক্যারিয়ারের।

শনিবার (৬ জুলাই) টরন্টোর স্কোটিয়াব্যাঙ্ক অ্যারেনায় ডব্লিউডব্লিউই এর মানি ইন দ্য ব্যাংক পে-পার-ভিউতে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ৪৭ বছর বয়সী এই রেসলার।

সেখানে উপস্থিত সবাইকে অবাক করে দিয়ে জন সিনা দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দুই যুগের বেশ সময় ধরে আমি ডাব্লিউডাব্লিউই তে এবং এটাই সময়। যখন কেউ আমার নাম জানতো না, কেউ বন্ধু হতে চাইতো না তখন আমার পাশে ছিল সমর্থকরা। আমি এই সময়ে একটা জিনিস দেখেছি, শীত হোক বা গ্রীষ্ম সমর্থকরা সবসময় থাকেন।’

বিদায় বললেও ২০২৫ সালের রয়্যাল রাম্বল, এলিমিনেশন চেম্বার এবং রেসেলম্যানিয়া ৪১ এ শেষবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নামবেন রেসলিং রিংয়ে।

২০০২ সালে রেসলিং ক্যারিয়ার শুরুর পর বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। তবে ২০১৮ সাল থেকে নাম লেখান অভিনয় জগতেও। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূমিকায় কাজ করেছেন বিভিন্ন সিনেমায়। বর্তমানে অভিনয় জগতেই সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততা তার।

১৩ বার ডব্লিউডব্লিউ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পাশাপাশি তিনবার জিতেছেন ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ। ডব্লিউডব্লিউয়ের ইতিহাসে রিক ফ্লেয়ার ও জন সিনা সমান ১৬বার চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন। এছাড়া ডব্লিউডব্লিউই এর অন্য সব বেল্টও জিতেছেন সিনা।

অসীম শূন্যতা রেখে চির আড়ালে জিয়া

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০১:৫১ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:০৮ পিএম
অসীম শূন্যতা রেখে চির আড়ালে জিয়া
ছবি : সংগৃহীত

একদিন আগেই গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান পল্টনের দাবা ফেডারেশন কার্যালয়ে এসেছিলেন খেলায় অংশ নিতে। ২৪ ঘণ্টাও পেরোয়নি, গতকাল শনিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে সেই জিয়া এলেন নিথর, প্রাণহীন হয়ে। সাদা কাফনে আবৃত জিয়াকে নামানো হলো লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি থেকে। দাবা ও ক্রীড়াঙ্গনের মানুষরা জানালেন শেষ শ্রদ্ধা। জানাজা ও বিদায়ী আনুষ্ঠানিকতা সারতে মিনিট চল্লিশেক সময় লাগল। এরপর জিয়াকে নিয়ে ফের ছুটে চলল লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি। চিরদিনের মতো দাবার প্রাঙ্গণ ছেড়ে চলে গেলেন এক কিংবদন্তি। বাংলাদেশ দাবায় অসীম শূন্যতা তৈরি করে চির আড়াল হলেন তিনি।

পরশু শুক্রবার ৪৮তম জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের ১২তম রাউন্ডে আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীবের সঙ্গে খেলা ছিল জিয়ার। সন্ধ্যার দিকে খেলতে খেলতেই চেয়ার থেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নেওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। কিন্তু জাতীয় দাবার রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নকে আর ফেরানো যায়নি।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পুরান ভবনে দাবা ফেডারেশনের কার্যালয়। সেখানেই অনুষ্ঠিত হচ্ছিল ৪৮তম জাতীয় দাবা। জিয়া খেলতে খেলতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মিনিট দশেক সময়ের মধ্যে তাকে শাহবাগের ইব্রাহিম কার্ডিয়া হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তার পালস পাননি। দাবাসংশ্লিষ্টদের ধারণা, জিয়ার মৃত্যু হয়েছে দাবার হলরুমেই। যেখানে চলছিল জিয়া-রাজীবসহ বিভিন্ন প্রতিযোগীর খেলা। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দাবার চৌষট্টি খোপে ঘুঁটির চাল নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন জিয়া। আদতে যার জীবনটাই ছিল দাবাময়।

২০০২ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় দাবাড়ু হিসেবে গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব জিতেন জিয়া। এরপর আরও তিনজন মিলিয়ে বাংলাদেশে গ্র্যান্ডমাস্টারের সংখ্যাটা মাত্র ৫। গত ১৬ বছর ধরে সংখ্যাটা এই পাঁচে আটকে আছে। একই রকমভাবে ঠিক একটা নির্দিষ্ট জায়গায় আটকে আছে বাংলাদেশের সামগ্রিক দাবাও। কেন এই জায়গা থেকে দাবা আর এগোতে পারছে না, এই হাহাকারের মাঝেই সবাইকে কাঁদিয়ে জিয়ার চির প্রস্থান। জাতীয় দাবায় সর্বোচ্চবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি যিনি দাবা অলিম্পিয়াডেও বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন সবচেয়ে বেশিবার।

সাদাসিধে একজন মানুষ ছিলেন জিয়া। কোনো অহম ছিল না। সব সময় ভেবেছেন কীভাবে দেশের দাবাকে এগিয়ে নেওয়া যায়। দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম জানাজায় এসে বলেন, ‘দাবা পরিবারের জন্যই একটা অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। একজন গ্র্যান্ডমাস্টার কমে যাওয়ায় আমাদের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করতেও এখন অনেক বেগ পেতে হবে। তার অভাব পূরণ হওয়ার নয়।’ জিয়ার অবদান তুলে ধরে শাহাবুদ্দিন শামীম আরও বলেন, ‘গ্র্যান্ডমাস্টার হলেও জিয়া কখনো বেছে বেছে প্রতিযোগিতায় অংশ নিত না। অনেকে আছে প্রাইজমানি কম হলে খেলত না। কিন্তু সে কখনো এভাবে চিন্তা করত না। যে প্রাইজমানিই হোক, সে খেলত। বলত, আমি খেললে অন্যরা খেলার জন্য আসবে।’

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা বলেন, ‘জিয়ার অকালমৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাহত। তার যে পবিত্র স্থান, যে স্থানকে সে ভালোবাসত, সেখান থেকেই সে চলে গেল। দাবা খেলা অবস্থাতেই মারা গেল। ভালো একজন খেলোয়াড়কে হারিয়েছি আমরা।’ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি তরফদার রুহুল আমিন বলেন, ‘তার এই চলে যাওয়া জাতীয়ভাবে অপূরণীয় ক্ষতি। কারণ দাবার গ্র্যান্ডমাস্টাররাই কিন্তু লাল-সবুজের পতাকা সর্বপ্রথম বিশ্বমানচিত্রে তুলে ধরেছিল।’

জীবনের শেষ কয়েক ঘণ্টা দাবার বোর্ডে জিয়া যার সঙ্গে কাটিয়েছেন, সেই রাজীবও উপস্থিত ছিলেন জানাজায়। রাজীবের গাড়িতে করেই হাসপাতালে নেওয়া হয় জিয়াকে। সারাক্ষণ থমথমে লাগছিল তাকে। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছিল। রাজীবের চোখে জিয়াই বাংলাদেশের সেরা দাবাড়ু, ‘আমি মনে করি সে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত সেরা খেলোয়াড়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে আমি মনে করি তার পারফরম্যান্স সবচেয়ে ভালো। বাংলাদেশের দাবা যতদিন থাকবে, সব সময়ই তাকে মনে করবে সবাই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করা জিয়া নিজেকে অন্য কোনো পেশায় জড়াননি। নিজে দাবা খেলা এবং কোচিং করিয়ে গেছেন। স্বামীর দাবা ক্যারিয়ারের কথা ভেবেই তার স্ত্রী তাসমিন সুলতানা লাবণ্য বিসিএস ক্যাডারে যোগদান করেননি। জিয়ার চিরবিদায়ের দিনে তার স্ত্রী-সন্তানদের আর্থিক দিকের কথা বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে। বিওএ মহাসচিব শাহেদ রেজা বলেছেন, ‘উনার পরিবারের অর্থনৈতিক যে সমস্যা আছে, এই সমস্যার পাশে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন থাকবে।’ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি তরফদার রুহুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীমও ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জিয়ার পরিবারকে আর্থিক সহায়তার কথা জানিয়েছেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডে বাবার কবরে শায়িত করা হয়েছে জিয়াকে। এখন তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে।