ঢাকা ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪

অদম্য মেধাবী মিনারজিমকে খবরের কাগজ-সিডব্লিওএফের বৃত্তি

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০২:২৭ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০২:৫২ পিএম
অদম্য মেধাবী মিনারজিমকে খবরের কাগজ-সিডব্লিওএফের বৃত্তি
ফুলবাড়ী প্রেস ক্লাব সভাকক্ষে অদম্য মেধাবী মিনারজিম ও তার বাবা-মায়ের হাতে বৃত্তির টাকা তুলে দেওয়া হয়। ছবি: খবরের কাগজ

‘ছেলের ভর্তির টাকার জন্য আমরা দুশ্চিন্তায় ছিলাম। সেই টাকা ব্যবস্থা করে দিলেন। এ উপকারের কথা বলে শেষ করা যাবে না। এই টাকা আমাদের কাছে ৫ লাখ টাকার সমান।’ 

আবেগে আপ্লুত হয়ে কথাগুলো বলছিলেন দিনমজুরি করে এসএসসিতে এ প্লাস পাওয়া শিক্ষার্থী মিনারজিমের মা হালিমা বেগম।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকালে ফুলবাড়ী প্রেস ক্লাবের সভাকক্ষে মিনারজিম ও তার বাবা-মায়ের হাতে বৃত্তির টাকা তুলে দেওয়া হলে কথাগুলো বলেন তিনি। এ সময় চোখে পানি আসে তার।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আমার ছেলেকে মানুষের মতো মানুষ করতে চাই। আপনারা দোয়া করবেন। সহযোগিতা করবেন।’

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্বধনিরাম গ্রামের প্রতিবন্ধী মনিরুজ্জামান ও হালিমা বেগমের ছেলে অদম্য মেধাবী মিনারজিম বড়ভিটা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে এ প্লাস পেয়েছে এবার।

প্রতিবন্ধী বাবা কাজ করতে না পারায় দিনমজুরি করতেন মিনারজিম। পাশাপাশি শিক্ষকদের সহযোগিতায় পড়ালেখা চালিয়ে যায়। তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক খবরের কাগজ। 

এরপর দৈনিক খবরের কাগজের পাঠক সংগঠন বন্ধুজন ও সিডব্লিওএফের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার তাকে ৫ হাজার টাকা শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়।

এ সময় দৈনিক খবরের কাগজের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি গোলাম মওলা সিরাজ, ফুলবাড়ী প্রেস ক্লাব সভাপতি এমদাদুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি শাহিনুর রহমান শাহীন, ইত্তেফাকের প্রতিনিধি অনীল চন্দ্র রায়, মানবজমিনের প্রতিনিধি বেলাল হোসেন, ফুলবাড়ী মডেল প্রেস ক্লাবের সভাপতি ইউনুছ আলী আনন্দ, সাংবাদিক এ এইচ এম বাবুল, মোস্তাফিজুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্য সংবাদকর্মী, সুধীজন ছাড়াও অদম্য মেধাবী মিনারজিমের বাবা মনিরুজ্জামান, মা হালিমা বেগম উপস্থিত ছিলেন।

খবরের কাগজের প্রতিনিধি গোলাম মওলা সিরাজ বলেন, ‘দৈনিক খবরের কাগজ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের পাশাপাশি দায়বদ্ধতা থেকে সামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। অল্প সময়ে পাঠকের মন জয় করা দৈনিকটি সিডব্লিওএফের সহযোগিতায় এবারে সারা দেশের বেশ কিছু অদম্য মেধাবীকে এককালীন বৃত্তি দিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা মিনারজিমের হাতেও দৈনিক খবরের কাগজের পাঠক সংগঠন বন্ধুজন ও সিডব্লিওএফের পক্ষ থেকে ৫ হাজার টাকা তুলে দিতে পারলাম। আশা করি খবরের কাগজ এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে।’

টাকা পেয়ে মিনারজিম বলেন, ‘আমার পড়ালেখার পেছনে আমার মাকে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। আপনাদের সহযোগিতা আমাকে আরও উৎসাহ দেবে। আরও ভালো ফল করতে উৎসাহ দেবে প্রেরণা জোগাবে।’

পড়ালেখা করে প্রকৌশলী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশের পাশাপাশি দৈনিক খবরের কাগজের কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় মিনারজিম। 

ফুলবাড়ী প্রেস ক্লাবের সভাপতি এমদাদুল হক মিলন বলেন, দৈনিক খবরের কাগজের এ মহান উদ্যোগে আমাদের এলাকার মেধাবী মিনাজিমকে রাখার জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই। ভবিষ্যতেও এ উদ্যোগ রাখে আমরা সে প্রত্যাশা করি। 

সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান বলেন, মিনারজিম আমাদের এলাকার ছেলে। তার সংসারের কথা বা পড়ালেখার পেছনে কষ্টের কথা জানি। বিষয়টি যে খবরের কাগজও বুঝতে পেরেছে, এজন্য পত্রিকার প্রতিনিধিসহ কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের অশেষ কৃতজ্ঞতা থাকবে।

মা হালিমা জানান, একমাত্র ছেলে মিনারজিমকে ইসলামী শিক্ষার ইচ্ছে ছিল তাদের। ছোটবেলা থেকে কোরআন শিক্ষা দেয়। পাশাপাশি পাঠ্যশিক্ষাও চালিয়ে যায়। ২০২১ সালে ফুলবাড়ী ফায়ার সার্ভিস তালিমুল কোরআন মডেল বালক ও বালিকা মাদরাসা থেকে কোরআনে হাফেজ হয়। পরে বড়ভিটা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষা দেয় সে।

কিন্তু পড়ালেখাটা সহজ ছিল না মিনারজিমের। দিনমজুরি করে পড়তে হয় তাকে। অন্যের বাড়িতে কাজ করে খাদ্যের সন্ধান করেন মা। আত্মীয়-স্বজন, বিদ্যালয়ের প্রধানসহ শিক্ষকদের সহযোগিতায় মোট ১১৫৩ নম্বর পায় মিনারজিম।

গোলাম মওলা/সাদিয়া নাহার/অমিয়/

চট্টগ্রামে খবরের কাগজ বন্ধুজনের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৭:২০ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৩ পিএম
চট্টগ্রামে খবরের কাগজ বন্ধুজনের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি
চট্টগ্রামে খবরের কাগজ বন্ধুজনের উদ্যোগে গাছের চারা বিতরণ করছেন সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী। ছবি : খবরের কাগজ

দৈনিক খবরের কাগজের পাঠক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বন্ধুজন’ এর উদ্যোগে এবং চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম নগরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (৭ জুলাই) বিকেলে মহানগরের অপর্ণাচরণ সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন চট্টগ্রামের সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী। 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়ছার, চসিকের কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, অপর্ণাচরণ সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবু তালেব বেলাল, সহকারী প্রধান শিক্ষক গোলাম হক্কানী, খবরের কাগজের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান ইফতেখারুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার আবদুস সাত্তার, এম কে মনির, স্টাফ ফটোগ্রাফার মোহাম্মদ হানিফ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবু এবং বিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

অনুষ্ঠানের শুরুতে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি গাছের চারা রোপণ করেন। পরে তিনি খবরের কাগজ বন্ধুজন আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নেন। এতে আমন্ত্রিত অতিথি, শিক্ষক-শিক্ষিকার পাশাপাশি বিদ্যালয়টির ২ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। 

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘গাছ আমাদের আলো, বাতাস, ফল ও ছায়া দেয়। এ ছাড়াও গাছ পাহাড় ধস ঠেকায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে। গাছের উপকার বলে শেষ করতে পারব না। গাছ আমাদের পরম বন্ধু। তাই পরিবেশ সমুন্নত রাখতে আমাদের বেশি বেশি গাছ রোপণ করতে হবে। তোমরা সবাই একটি করে হলেও গাছ রোপণ করবে। নিজের জমি না থাকলে অন্যের জমিতে হলেও রোপণ করবে। কোনো জমি না থাকলে বাড়ির ছাদে গাছ লাগাবে তোমরা।’ 

অনুষ্ঠানে মেয়র আরও বলেন, “আমি খবরের কাগজের বন্ধুজন সংগঠনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সংগঠনটি সারা দেশে যে এই কর্মসূচি পালন করছে সেগুলো নিঃসন্দেহে মানবিক এবং পরিবেশবান্ধব। আমি সাধুবাদ জানাই এমন মহতী উদ্যোগকে। সেই সঙ্গে ‘খবরের কাগজ’ চট্টগ্রাম পরিবারকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে খবরের কাগজের চট্টগ্রামের ব্যুরো প্রধান এসএম ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, ‘খবরের কাগজ বন্ধুজনের উদ্যোগে চট্টগ্রাম থেকেই বৃক্ষরোপণের সূচনা করা হয়েছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে বিভিন্ন ফলদ, বনজ এবং ঔষধি গাছের চারা বিতরণ করা হচ্ছে, যা অব্যাহত থাকবে। চট্টগ্রামের নগরপিতা এ সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে আমাদেরকে ধন্য করেছেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ ও অপর্ণাচরণ সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজকে খবরের কাগজের পক্ষ থেকে আমরা বিশেষ ধন্যবাদ জানাই।’ 

অপর্ণাচরণ সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবু তালেব বেলাল বলেন, ‘মানুষ আর গাছ একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ও নির্ভরশীল। গাছ ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারবে না। কারণ মানুষের বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন গাছ সরবরাহ করে। আবার গাছের প্রয়োজনীয় কার্বন ডাই অক্সাইড মানুষ গাছকে দেয়।’ 

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) এসএম কায়ছার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ঘরে ঘরে গাছের চারা রোপণ করতে হবে। গাছকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। বিভিন্ন প্রকারের ঔষধি গাছ আমাদের বাড়ির আঙিনায় রোপণ করতে হবে। আগামী ২০ জুলাই জাতীয় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু হবে। এতে সবার অংশগ্রহণ প্রয়োজন।’ 

চসিকের কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু বলেন, ‘এখন ছাদবাগানও বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। চট্টগ্রাম শহরে যাদের বাড়ির কোনো আঙিনা নেই, তারা বাড়ির ছাদে ফলদ এবং ঔষধি গাছ লাগাতে পারে। আমাদের পরিবেশকে গাছ লাগিয়ে রক্ষা করতে হবে। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ, বনজ এবং ঔষধি চারা গাছ শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়।’ 

খবরের কাগজে সংবাদের পর ঐতির পাশে দাঁড়ালেন ডিসি

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৭ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০২:২৯ পিএম
খবরের কাগজে সংবাদের পর ঐতির পাশে দাঁড়ালেন ডিসি
‘খবরের কাগজ বন্ধুজন-সিডব্লিওএফ অদম্য মেধাবী’ বৃত্তি পাওয়ার পর ঐতির হাতে এবার আর্থিক সহায়তা তুলে দেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন

দৈনিক খবরের কাগজ ‘বন্ধুজন-সিডব্লিওএফ অদম্য মেধাবী বৃত্তি’র পর এবার জন্মান্ধ ঐতি রায়ের পাশে আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী ঐতির বাবা অনুপম রায়ের হাতে নগদ অর্থ তুলে দেন জেলা প্রশাসক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার সৈয়দ তাজবিহা রনি।

ঐতির বাবা অনুপম রায় বলেন, “গত ২৭ জুন দৈনিক খবরের কাগজ ‘বন্ধুজন-সিডব্লিওএফ অদম্য মেধাবী বৃত্তি’ কর্মসূচির মাধ্যমে ঐতিকে আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছে। আর আজ (মঙ্গলবার) জেলা প্রশাসক আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। এ জন্য আমি খবরের কাগজ ‘বন্ধুজন’ ও জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানাই।”

ঐতির বাবা আরও বলেন, ‘জন্ম থেকে দৃষ্টিহীন আমার মেয়ে। সে এসএসসিতে ভালো রেজাল্ট করবে, তা ভাবতে পারিনি। ছোটবেলা থেকে তার পড়াশোনার ব্যাপারে খুবই আগ্রহ ছিল। আমরা তাকে যত্ন করে স্কুলে ভর্তি করে পড়াশোনা করাই। ঐতিকে মোংলা সরকারি কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করেছি।’

অনুপম রায় জানান, একমাত্র মেয়েকে তার মা প্রথমে শ্রুতিলিখনের মাধ্যমে বাড়িতে পড়ালেখা শেখান। এভাবে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় তার মেয়ে। পরীক্ষার হলে ঐতি মুখস্থ বলেছে, আর একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী বিজয়া হালদার তা পরীক্ষার খাতায় লিখেছে। এভাবেই এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে ঐতি।

জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন বলেন, “খবরের কাগজের ‘বন্ধুজন’ দৃষ্টিহীন অদম্য মেধাবী ঐতিকে আর্থিক সহযোগিতা করায় আমি তার খবর পেয়েছি। আজ ঐতির বাবাকে আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আর্থিক সহযোগিতা করেছি।” জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরে আরও সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।

ঐতি বলেন, ‘জন্ম থেকে আমি দৃষ্টিহীন। কিন্তু পড়ালেখা করার খুব ইচ্ছা ছিল আমার। সেই ইচ্ছা থেকেই আমি এসএসসি পাস করেছি। পড়াশোনার কাজে আমার মা আমাকে সহযোগিতা না করলে আজ এ পর্যন্ত আসতে পারতাম না। মা পাশে বসে পড়ত, আমি সেটা মুখস্থ করতাম। এভাবেই লেখাপড়া চালিয়ে এসেছি।’ পড়াশোনা শেষ করে সরকারি একটা চাকরি এবং আবৃত্তির শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নের কথাও জানায় ঐতি।

মায়ের শ্রুতিলিখন ও পঠনের সহায়তায় পড়ালেখা এবং একই এলাকার অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ঐতি রায়। বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার হলদিবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৪ দশমিক ৩৯ পেয়ে ‘এ’ গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছে ঐতি।

পায়ে লিখে জিপিএ-৫ রাব্বির পাশে খবরের কাগজ বন্ধুজন-সিডব্লিওএফ

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০৯:২৩ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০২:৩০ পিএম
পায়ে লিখে জিপিএ-৫ রাব্বির পাশে খবরের কাগজ বন্ধুজন-সিডব্লিওএফ
ছবি: খবরের কাগজ

পা দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারীর অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম রাব্বির পাশে দাঁড়িয়েছে দৈনিক খবরের কাগজ-এর পাঠক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বন্ধুজন।

শুক্রবার (২৮ জুন) সকাল ১০টায় সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী ইউনিয়নে রাব্বির গ্রামের বাড়িতে ‘অদম্য মেধাবী বৃত্তি-২০২৪’-এর আর্থিক সহায়তা তার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

চিলড্রেন ওয়াচ ফাউন্ডেশনের (সিডব্লিওএফ) আর্থিক সহায়তায় ‘অদম্য মেধাবীদের পাশে আছি’ এই মূলমন্ত্র নিয়ে খবরের কাগজ বন্ধুজন-সিডব্লিওএফ রাব্বিকে এককালীন এ বৃত্তি দিয়েছে। শারীরিক অক্ষমতা, পারিবারিক দৈন্যসহ নানা প্রতিবন্ধকতা ডিঙিয়ে পড়াশোনায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখায় রাব্বি এ বৃত্তি পেল।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দীন, খবরের কাগজের চট্টগ্রাম ব্যুরোপ্রধান ইফতেখারুল ইসলাম, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম, রাব্বির বাবা বজলুর রহমান, খবরের কাগজের চট্টগ্রাম ব্যুরোর স্টাফ রিপোর্টার এম কে মনির, স্টাফ ফটোগ্রাফার মোহাম্মদ হানিফ, স্থানীয় সংবাদকর্মী মুসলেহ উদ্দিনসহ অন্যরা।

এ সময় ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন বলেন, রাব্বি আমাদের গর্ব। সে অন্যরকম এক প্রতিভাবান ছেলে। ছোটবেলা থেকেই সে খুব পরিশ্রমী। তার কাছে কোনো বাধাই বাধা নয়। দুই হাত না থাকলেও সে পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ পেয়েছে। আমি চাই রাব্বি অনেক বড় হোক। আর খবরের কাগজ বন্ধুজন-সিডব্লিওএফকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এমন উদ্যোগের জন্য। এ সময় তিনি খবরের কাগজের বন্ধুজন ও সিডব্লিওএফের সারা দেশে চলা মানবিক কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

রফিকুল ইসলাম রাব্বির বাবা বজলুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, আপনাদের ছোট ছোট সহযোগিতাগুলো আমার ছেলেকে অনেক দূর নিয়ে যাবে। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, তার মা ছোটবেলায় তিন কিলোমিটার দূরের স্কুলে নিয়ে যেতেন প্রখর রোদে হেঁটে। আর হেঁটে হেঁটে ছেলেকে পড়াতেন। তার মা আর শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় সে এতদূর এসেছে।

২০১৬ সালের ৫ অক্টোবর স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় আগ্রহের বশে বন্ধুদের সঙ্গে ফুটওভার ব্রিজ দেখতে যায় রফিকুল ইসলাম রাব্বি। কিন্তু সেদিন তার শখ পরিণত হয় চিরদুঃখে। ব্রিজে বিদ্যুতায়িত হয়ে গুরুতর আহত হয় সে। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার দুটো হাত কেটে ফেলা হয়। রাব্বিকে সুস্থ করতে তার বাবাকে কয়েক লাখ টাকা ঋণ করতে হয়েছে। একপ্রকার নিঃস্ব হয়ে পড়েন তিনি। সংসারে দেখা দেয় চরম অভাব। সেই সঙ্গে রাব্বির শারীরিক অক্ষমতা। এত কিছুর পরও ভেঙে পড়েনি অদম্য রাব্বি। চালিয়ে যায় লেখাপড়া। একসময় মুখ দিয়ে লেখার অভ্যাস গড়ে তোলে সে। পিএসসি পরীক্ষায়ও রেখেছেন কৃতিত্বের স্বাক্ষর। মুখ দিয়ে লিখতে সমস্যা হওয়ায় পরে পায়ে লেখার অভ্যাস করে ছেলেটি। এভাবেই সব বাধা-বিপত্তিকে ডিঙিয়ে রাব্বি এসএসসিতে জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। রাব্বি এখন অগণিত মানুষের প্রশংসায় ভাসছে। রাব্বি একজন শিক্ষক হতে চায় বলে জানিয়েছে। বর্তমানে নগরের একটি সরকারি কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য সে নির্বাচিত হয়েছে।

অদম্য মেধাবী সিয়াম পেল ‘বন্ধুজন-সিডব্লিওএফ’ শিক্ষাবৃত্তি

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০৪:২০ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ০৪:২৪ পিএম
অদম্য মেধাবী সিয়াম পেল ‘বন্ধুজন-সিডব্লিওএফ’ শিক্ষাবৃত্তি
খবরের কাগজ বন্ধুজন-সিডব্লিউএফ ‘অদম্য মেধাবী বৃত্তি ২০২৪’-এর এককালীন আর্থিক সহায়তা পেল সিয়াম। ছবি : খবরের কাগজ

অদম্য মেধাবী বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সিয়াম মিয়ার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন পূরণের সারথি হতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে দৈনিক খবরের কাগজের পাঠক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বন্ধুজন’।

চিলড্রেন ওয়াচ ফাউন্ডেশন (সিডব্লিউএফ)-এর আর্থিক সহায়তায় ‘অদম্য মেধাবীদের পাশে আছি’ এই মূলমন্ত্র নিয়ে খবরের কাগজ বন্ধুজন-সিডব্লিউএফ ‘অদম্য মেধাবী বৃত্তি ২০২৪’-এর আওতায় সিয়াম মিয়াকে এককালীন আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেলে জামালপুরের সরিষাবাড়ী প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তাকে সহায়তা দেওয়া হয়।

সরিষাবাড়ী প্রেস ক্লাবের সভাপতি সোলায়মান হোসেন হরেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী।

এ ছাড়া সাংবাদিক এ এস এম জুলফিকুর রহমান, জহুরুল ইসলাম ঠান্ডু, মিজানুর রহমান, এম এ রউফ, মোস্তাক আহমেদ মনির, বাদশা ভূঁইয়া, সরিষাবাড়ী রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি ইসমাইল হোসেনসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে সিয়াম মিয়া ও তার মা জোসনা বেগম উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, ‘অদম্য মেধাবী সিয়াম মিয়া প্রমাণ করেছে প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলে আর্থিক অনটন, প্রতিবন্ধিতা বা যেকোনো বাধা অতিক্রম করে লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব। সিয়াম অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।’ তবে সিয়ামের পাশাপাশি তার মতো আরও যারা সুবিধাবঞ্চিত, পিছিয়ে পড়া বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন রয়েছে তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

সিয়ামের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা করে তাকে আর্থিক সহায়তার জন্য খবরের কাগজ বন্ধুজন ও সিডব্লিউএফের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন বক্তারা।

পরে লেখাপড়ায় খবরের কাগজ বন্ধুজন-সিডব্লিওএফের সহায়তা হিসেবে অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী, সোলায়মান হোসেন হরেকসহ অন্যরা সিয়াম ও তার মায়ের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন খবরের কাগজের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি আসমাউল আসিফ।

জন্মগতভাবে দুটি হাত নেই উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের উদনাপাড়া গ্রামের দিনমজুর দম্পতি জিন্নাহ মিয়া-জোসনা বেগমের তৃতীয় সন্তান সিয়াম মিয়ার। শৈশবে ভাই, বোন ও বন্ধুদের সঙ্গে স্কুলে যাতায়াত করতে করতে আগ্রহ জন্মায় লেখাপড়ার প্রতি। শিক্ষকদের সহায়তায় সিয়াম পা দিয়ে লেখা শিখতে থাকে। উপজেলার উদনাপাড়া ব্র্যাক শিশু নিকেতন স্কুল থেকে ২০১৮ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চাপারকোনা মহেশ চন্দ্র স্কুল অ্যান্ড কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয় সিয়াম। ২০২১ সালে অষ্টম শ্রেণিতে জেএসসি পরীক্ষায়ও কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয় সে, এতে করে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়ে তার।

আরও পড়ুন : পা দিয়ে লিখে এসএসসিতে উত্তীর্ণ সিয়াম

এবার একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পরীক্ষায় কারও কোনো সহায়তা ছাড়া অংশ নেয় সিয়াম। মনের অদম্য শক্তি, স্বপ্ন পূরণের তীব্র আকাঙ্ক্ষা, দারিদ্রতা ও শারীরিক প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে পা দিয়ে লিখে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয় সিয়াম, মানবিক বিভাগ থেকে অর্জন করে জিপিএ ৩.৮৩।

শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে সিয়াম বলে, ‘জন্ম থেকেই আমার হাত নেই। বাবা-মা আমাকে স্কুলে নিয়ে যেত, শিক্ষকদের সহায়তায় পা দিয়ে লেখা শিখি। পা দিয়ে লিখে আমি এবার এসএসসি পাস করেছি, আমার স্বপ্ন একজন সরকারি বড় কর্মকর্তা হওয়া।’ এই প্রথম খবরের কাগজ থেকে বৃত্তি পেয়ে সে খুব খুশি বলে জানায় সিয়াম।

সিয়ামের মা জোসনা বেগম বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়েছি। অসহায় সন্তানের হাত না থাকলে একমাত্র মা জানে তার ছেলের কষ্ট। পা দিয়ে লিখে সে এসএসসি পাস করেছে, এখন কলেজে ভর্তি হবে এতে আমি খুবই খুশি, আমার অনেক আনন্দ লাগছে। আমার ছেলে সিয়ামের ইচ্ছা বড় হয়ে সে সরকারি চাকরি করবে।’

অর্থনৈতিক সংকটের কারণে প্রাথমিকের মাঝপথে সিয়ামের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিদ্যালয় থেকে বেতন মওকুফ করলে আবার পড়ালেখা শুরু করে সিয়াম। তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট সিয়ামের বিশেষ কৃতিত্ব অর্জনের জন্য পরিবার, স্বজন, প্রতিবেশী ও শিক্ষকরা অনেক খুশি। তবে কলেজে ভর্তিচ্ছু সিয়ামের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ায় জন্য সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন সবাই।

আসমাউল আসিফ/সাদিয়া নাহার/

অদম্য মেধাবী ঐতির পাশে বন্ধুজন ও সিডব্লিওএফ

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ০৪:২৭ পিএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ০৬:৩৬ পিএম
অদম্য মেধাবী ঐতির পাশে বন্ধুজন ও সিডব্লিওএফ
অদম্য মেধাবী ঐতির হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দিচ্ছেন জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন

যদি লক্ষ্য অটুট থাকে তাহলে কোনো বাধা থামাতে পারে না কাউকে। এমনই দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে ঐতি রায়। সব প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে আলোকিত হওয়ার পথে এগিয়ে চলছে ঐতি। চোখের আলো নেই, তবে মনের আলোয় জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার স্বপ্নে এগিয়ে চলা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এই শিক্ষার্থী এবারের এসএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল করেছে।

মায়ের শ্রুতিলিখন ও পঠনের সহায়তায় পড়ালেখা এবং একই এলাকার অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় পরীক্ষায় অংশ নেয় ঐতি। বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার হলদিবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৪.৩৯ পেয়ে ‘এ’ গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছে সে।

অদম্য মেধাবী এই ঐতির পাশে আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে দৈনিক খবরের কাগজের পাঠক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বন্ধুজন’। বন্ধুজনের ‘অদম্য মেধাবী বৃত্তি’ কর্মসূচিতে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে চিলড্রেন ওয়াচ ফাউন্ডেশন (সিডব্লিওএফ)।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকালে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কক্ষে অদম্য মেধাবী ঐতির হাতে বন্ধুজন ও সিডব্লিওএফের আর্থিক সহায়তা তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন খবরের কাগজের বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি রিফাত আল মাহামুদ, জেলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান, ঐতির মা শংকরী রায় ও বাবা অনুপম রায়।

ঐতির বাবা অনুপম রায় বলেন, ‘আর্থিক সহযোগিতা করায় খবরের কাগজ বন্ধুজনকে ধন্যবাদ জানাই। আমার মেয়ে জন্ম থেকে দৃষ্টিহীন। সে এসএসসিতে ভালো রেজাল্ট করবে ভাবতে পারিনি। ছোটবেলা থেকে পড়াশোনার প্রতি খুবই আগ্রহ ছিল তার। আমরা তাকে যত্ন করে স্কুলে ভর্তি করে পড়াশোনা করাই।’ ঐতি মোংলা কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করেছে বলে জানান তার বাবা।

তিনি জানান, একমাত্র মেয়েকে তার মা প্রথমে শ্রুতিলিখনের মাধ্যমে বাড়িতে পড়ালেখা শেখান। এভাবে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় তার মেয়ে। পরীক্ষা হলে ঐতি মুখস্থ বলত আর একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী বিজয়া হালদার তা পরীক্ষার খাতায় লিখত। এভাবে সে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।

ঐতির মা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে ঐতির পড়াশোনার আগ্রহ দেখে তাকে স্কুলে নিয়ে যেতাম। এখন সে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ভালোভাবে পাস করেছে। আমরা ভীষণ খুশি। স্রষ্টার কাছে কৃতজ্ঞ। একই সঙ্গে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন ও দৈনিক খবরের কাগজকে। আমার মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে নিতে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন বলে।’

আরও পড়ুন : দৃষ্টিহীনতা বাধা হতে পারেনি অদম্য মেধাবী ঐতির

জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন খবরের কাগজ বন্ধুজন-এর এমন উদ্যোগকে ম্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘খবরের কাগজ বন্ধুজন দৃষ্টিহীন অদম্য মেধাবী ঐতিকে আর্থিক সহযোগিতা করেছে। এতে একদিকে ঐতির আর্থিক সহযোগিতা হলো, অন্যদিকে তার পড়াশোনার প্রতি আগ্রহও বাড়ল।’ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ঐতিকে সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।

খবরের কাগজ বন্ধুজনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ঐতি রায় বলে, ‘খবরের কাগজ বন্ধুজন আমাকে যে আর্থিক সহযোগিতা করেছে, তা আমার ইচ্ছাকে আরও বাড়িয়ে দিল। এই সহযোগিতা আমার স্বপ্ন পূরণের প্রেরণা।’

ঐতি আরও বলে, ‘জন্ম থেকে আমি দৃষ্টিহীন। কিন্তু পড়ালেখা করার খুব ইচ্ছে ছিল। সেই ইচ্ছে থেকেই এসএসসি পাস করেছি। পড়াশোনার কাজে মা আমাকে সহযোগিতা না করলে আজ এ পর্যন্ত আসতে পারতাম না। মা পাশে বসে রিডিং পড়ত, আমি সেটা মুখস্থ করতাম। এভাবেই লেখাপড়া চালিয়ে এসেছি।’ পড়াশোনা শেষ করে সরকারি চাকরি এবং আবৃত্তির শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন তার।

রিফাত/সালমান/