দৈনিক খবরের কাগজ ‘বন্ধুজন-সিডব্লিওএফ অদম্য মেধাবী বৃত্তি’র পর এবার জন্মান্ধ ঐতি রায়ের পাশে আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী ঐতির বাবা অনুপম রায়ের হাতে নগদ অর্থ তুলে দেন জেলা প্রশাসক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার সৈয়দ তাজবিহা রনি।
ঐতির বাবা অনুপম রায় বলেন, “গত ২৭ জুন দৈনিক খবরের কাগজ ‘বন্ধুজন-সিডব্লিওএফ অদম্য মেধাবী বৃত্তি’ কর্মসূচির মাধ্যমে ঐতিকে আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছে। আর আজ (মঙ্গলবার) জেলা প্রশাসক আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। এ জন্য আমি খবরের কাগজ ‘বন্ধুজন’ ও জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানাই।”
ঐতির বাবা আরও বলেন, ‘জন্ম থেকে দৃষ্টিহীন আমার মেয়ে। সে এসএসসিতে ভালো রেজাল্ট করবে, তা ভাবতে পারিনি। ছোটবেলা থেকে তার পড়াশোনার ব্যাপারে খুবই আগ্রহ ছিল। আমরা তাকে যত্ন করে স্কুলে ভর্তি করে পড়াশোনা করাই। ঐতিকে মোংলা সরকারি কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করেছি।’
অনুপম রায় জানান, একমাত্র মেয়েকে তার মা প্রথমে শ্রুতিলিখনের মাধ্যমে বাড়িতে পড়ালেখা শেখান। এভাবে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় তার মেয়ে। পরীক্ষার হলে ঐতি মুখস্থ বলেছে, আর একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী বিজয়া হালদার তা পরীক্ষার খাতায় লিখেছে। এভাবেই এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে ঐতি।
জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন বলেন, “খবরের কাগজের ‘বন্ধুজন’ দৃষ্টিহীন অদম্য মেধাবী ঐতিকে আর্থিক সহযোগিতা করায় আমি তার খবর পেয়েছি। আজ ঐতির বাবাকে আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আর্থিক সহযোগিতা করেছি।” জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরে আরও সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।
ঐতি বলেন, ‘জন্ম থেকে আমি দৃষ্টিহীন। কিন্তু পড়ালেখা করার খুব ইচ্ছা ছিল আমার। সেই ইচ্ছা থেকেই আমি এসএসসি পাস করেছি। পড়াশোনার কাজে আমার মা আমাকে সহযোগিতা না করলে আজ এ পর্যন্ত আসতে পারতাম না। মা পাশে বসে পড়ত, আমি সেটা মুখস্থ করতাম। এভাবেই লেখাপড়া চালিয়ে এসেছি।’ পড়াশোনা শেষ করে সরকারি একটা চাকরি এবং আবৃত্তির শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নের কথাও জানায় ঐতি।
মায়ের শ্রুতিলিখন ও পঠনের সহায়তায় পড়ালেখা এবং একই এলাকার অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ঐতি রায়। বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার হলদিবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৪ দশমিক ৩৯ পেয়ে ‘এ’ গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছে ঐতি।