![জাবিতে ধর্ষণের প্রতিবাদে রাবিতে বিক্ষোভ, ছাত্রলীগের ‘বাধা’](uploads/2024/02/06/1707201686.rabi.jpg)
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ক্রিয়াশীল আটটি ছাত্রসংগঠন। তবে মিছিলে ছাত্রলীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ায় ছাত্রলীগ তাদের কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রসংগঠনগুলো।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছন থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সৈয়দ নজরুল প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
তবে মিছিলে বাধা দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
মিছিলে ‘জাবিতে ধর্ষক কেন? শেখ হাসিনা জবাব চাই’, ‘ধর্ষক তৈরির কারখানা জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও’, ‘শিক্ষা-সন্ত্রাস, একসাথে চলে না’, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন? শেখ হাসিনা জবাব চাই’, ‘ছাত্রলীগের কালো হাত, জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও’, ‘রুখে দিতে ধর্ষণ, রাবি করো গর্জন’ ইত্যাদি স্লোগান দেন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের জন্য প্রস্তুতি নেয় সংগঠনগুলো। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিব তার নেতা-কর্মীসহ সেখানে উপস্থিত হয়ে তাদের ‘আপত্তিকর’ স্লোগানের প্রতিবাদ করেন। তবে বিষয়টিকে গণতান্ত্রিক অধিকারে ‘বাধা’ হিসেবে উল্লেখ করে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী ছাত্রসংগঠনগুলো।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতার মাধ্যমে এক নারী ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে আমরা একটি বিক্ষোভ মিছিল করি। এতে আমরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকি। এ সময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গালিব এসে আমাদের বলে ছাত্রলীগ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া যাবে না। একটা গণতান্ত্রিক দেশে আমরা দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে জবাব চাইতেই পারি। এটি আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নিষেধ করার কে? তিনি তার নেতা-কর্মী দিয়ে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারে বাধা দেন। আমাদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করেছেন।’
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিব বলেন, ‘জাবিতে ধর্ষণের ঘটনা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। আমরাও এর প্রতিবাদ জানাই। তবে এর দায় তো ব্যক্তির, কোনো সংগঠনের নয়। তাই তারা যখন ছাত্রলীগ ও আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিল আমি তার প্রতিবাদ করেছি। এটাও বলেছি তোমরা যতবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান দিবে, আমি ততবার তোমাদের সামনে এসে এর প্রতিবাদ করব। এই বলে আমি চলে এসেছি। আমি তাদের কর্মসূচিতে কোনো ধরনের বাধা প্রদান করিনি।’
বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, ‘ধর্ষণ করার জন্য চাই ক্ষমতা, তাদের ক্ষমতা থাকার কারণে তারা ধর্ষণ করে। সারা দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করে তারা সবখানে দখলদারিত্ব করছে। বর্তমানে একটি সংগঠন ধর্ষক তৈরির কারখানায় পরিণত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের দুর্বার আন্দোলন করতে হবে।’
নাগরিক ছাত্র ঐক্যের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, ‘তারা অপকর্ম করার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না। হলে সিট বাণিজ্য করার লাইসেন্স থেকে শুরু করে ধর্ষণ করার লাইসেন্সও প্রশাসন তাদের দিয়ে দিয়েছে। ফলে তারা বারবার অপকর্ম করে যায়। তারা আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চেপে রাখতে চায়। আমাদের সবাইকে তাদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন করতে হবে।’
সুমন/পপি/ অমিয়/