ঢাকা ২১ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪

ইউসিটিসিতে অ্যাডমিশন উইক শুরু বুধবার

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১০:০৮ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:২৮ এএম
ইউসিটিসিতে অ্যাডমিশন উইক শুরু বুধবার
ছবি: খবরের কাগজ

সৃষ্টিশীল তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি চট্টগ্রামে (ইউসিটিসি) ৩ জুলাই শুরু হতে যাচ্ছে অটাম-২০২৪ সেমিস্টারের অ্যাডমিশন উইক। 

বন্দরনগরীর বহদ্দারহাটে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মেলা চলবে ৯ জুলাই পর্যন্ত।

বিবিএ, এমবিএ, মাস্টারস অব পাবলিক হেলথ (এমপিএইচ), ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড লিটারেচার, ইসলামিক স্ট্যাডিস অনার্স অ্যান্ড মাস্টার্স, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি এবং বিভিন্ন প্রোগ্রামে ভর্তি হতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নিতে পারবেন এই অ্যাডমিশন উইক থেকে।

অ্যাডমিশন উইকের মধ্যে থাকছে র‍্যাফেল ড্র’র মাধ্যমে আকর্ষণীয় উপহার পাওয়ার সুযোগ।

এ ছাড়া থাকছে স্পট অ্যাডমিশনের মাধ্যমে স্মার্ট ব্যাগ। ভর্তি ফি ও টিউশন ফি’র ওপর বিশেষ ছাড়।

তাছাড়া এই অ্যাডমিশন উইক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ভিত্তিক মেরিট স্কলারশিপ, ক্রেডিট ট্রান্সফার, ক্যাম্পাস লাইফস্টাইল, ক্যাম্পাস জব, ক্লাব ও অন্যান্য সহশিক্ষা কার্যক্রমের নানা তথ্য জানা যাবে।

ইফতেখার/সাদিয়া নাহার/অমিয়/

কোটা বাতিলের দাবিতে উত্তাল মাভাবিপ্রবি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৩:২৮ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৩:২৮ পিএম
কোটা বাতিলের দাবিতে উত্তাল মাভাবিপ্রবি
কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন মাভাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা। ছবি: খবরের কাগজ

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) কোটাবিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ ও আন্দোলনে নেমেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সরকারি চাকরিতে কোটা-পদ্ধতি বাতিল ও ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন।

শুক্রবার (৫ জুলাই) বেলা ১১টায় তৃতীয় একাডেমিক ভবনের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ফটক হয়ে প্রথম ফটকে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।

এরপর প্রথম ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে শুরু করেন। এ সময় তারা ‘সারা বাংলায় খবর দে’, ‘কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ স্লোগান দিতে থাকেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে বিএমবি বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীরা কখনো সারা দিন রাস্তায় রাস্তায় আন্দোলন করতে চাই না, আমরা পড়াশোনা করতে চাই। কিন্তু আমাদের কিছু করার নাই। কারণ যে পরিমাণ কোটা, তাতে দেশের মেধাবীরা চাকরি না পেয়ে দেশের বাইরে চলে যাবে, দেশে সরকারি চাকরি করার আগ্রহও হারাবে।’

সমাবেশে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তৌকির আহমেদ বলেন, ‘বৈষম্যমূলক কোটার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। আমরা ইতিপূর্বেও সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। এ বৈষম্য দূর না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’ 

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রাকিব বলেন, ‘এই আন্দোলন সরকারবিরোধী আন্দোলন না, এই আন্দোলন আমাদের সবার ভবিষ্যৎ নিশ্চিতের আন্দোলন। যৌক্তিক দাবি আদায়ের আন্দোলন। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যেতে চাই।’ 

সমাবেশে বক্তারা দাবি না মানলে আগামীকাল শনিবার (৬ জুলাই) ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন পরিচালনা করার হুঁশিয়ারি দেন।

জুয়েল রানা/ইসরাত চৈতী/

কোটা আন্দোলনের নেতাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা, রুখে দিল শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০১:২০ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০১:২০ পিএম
কোটা আন্দোলনের নেতাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা, রুখে দিল শিক্ষার্থীরা
ছবি: খবরের কাগজ

কোটাবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ও অমর একুশে হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সারজিস আলমকে হল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। মাঝরাতে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকে। পরে হলগেটের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে হল প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সারজিসকে হলে তুলে দেন প্রাধ্যক্ষ।

শুক্রবার (৫ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার খবর মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা অমর একুশে হলের সামনে জড়ো হন এবং কোটাবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। রাত ১টার দিকে পরবর্তী সময়ে সারজিসকে কক্ষে পৌঁছে দেন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ইশতিয়াক এম সৈয়দ।

এ সময় সারজিস আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘হল ছাত্রলীগের একাধিক পদপ্রত্যাশী নেতা হল থেকে বের করে দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগের শীর্ষ একজন নেতার নির্দেশ রয়েছে বলে জানান। বিষয়টি জানাজানি হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা হলগেটে জড়ো হতে থাকে। এদিকে ছাত্রলীগের হাইকমান্ডের সঙ্গেও আমার কথা হয়। তারা জানিয়েছেন, আমাকে যারা বলেছেন, তাদের সঙ্গে হাইকমান্ডের কোনো কথাই হয়নি। আমাকে বের করতে পারলে সেটা দেখাতে পারবে পদ পাওয়ার জন্য। তারা এটা স্বীকার করেছে, পরবর্তী সময়ে মাফও চেয়েছে।’

এদিকে অমর একুশে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইসতিয়াক এম সৈয়দ বলেন, ‘একটা ভুল বোঝাবুঝি থেকে এমনটি হয়েছিল। পরে আমি সেখানে গিয়ে বিষয়টি সমাধান করে দেই এবং সারজিসকে রুমে দিয়ে আসি। সে এখন নিজের রুমেই অবস্থান করছে।’

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘হলে কে থাকবে, কে থাকবে না সেটা হল কর্তৃপক্ষ ঠিক করে। কাউকে হল ত্যাগ করতে বাধ্য করার জন্য আমরা কোনো নির্দেশ দেইনি এবং এ ধরনের নির্দেশনা দিতে পারিও না।’

আরিফ জাওয়াদ/সাদিয়া নাহার/

কোটা নিয়ে উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৩ এএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৩ এএম
কোটা নিয়ে উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয়
ছবি : খবরের কাগজ

সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে কোটা পুনর্বহাল রায়ের প্রতিবাদে ও কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি), ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করেন। প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন-

শাবিপ্রবি: কোটা পুনর্বহাল রায়ের প্রতিবাদে ও কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর এলাকায় নিজেদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন তারা। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ আল গালিবের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নূরউদ্দিন রাজু, ফয়সাল হোসেন ও পরিসংখ্যান বিভাগের আয়াতুল্লাহ। 
 
রাবি: ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে  বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।  এতে মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে দুপুর ১২টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টা থেকেই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে জমায়েত হতে থাকেন। পরে বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন। 

ববি: কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা কাফনের কাপড় পরে এবং রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মানববন্ধন ও পরে সড়ক অবরোধ করা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা চার দফা দাবিসহ কোটা বাতিল উত্থাপন করেন। দাবি আদায় না হলে লাগাতার আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

ইবি: এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন তারা। এ সময় মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

বাকৃবি: কোটাবিরোধী আন্দোলনে জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেন অবরোধ করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জব্বারের মোড়সংলগ্ন রেললাইনে ট্রেন অবরোধ করা হয়। এ সময় তারা বিক্ষোভ মিছিল করে রেললাইনে অবস্থান নেন এবং বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে কোটা প্রথা বাতিলের দাবি জানান। ট্রেন আটকে দেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। পরে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। 

শিক্ষার্থীরা জানান, সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল করে কোটা পদ্ধতি পুনর্বহাল-সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে এবং সকল চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে এই আন্দোলন শুরু হয়। অবিলম্বে কোটা প্রথা বাতিল করতে হবে। দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর আন্দোলন করা হবে।

চবি: সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে আবারও চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক অবরোধ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ঘণ্টাব্যাপী অবরোধে সড়কের দুই লেনে দুই কিলোমিটারেরও বেশি যানজট তৈরি হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, এ দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে শুধু বৈষম্য দূর করার জন্য। কোটা পদ্ধতিতে এখনো সেই বৈষম্য বহাল রয়েছে। কোটা পদ্ধতির মাধ্যমে আমাদের ওপর জুলুম করা হচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ, অন্যায় ও বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত।’

বেরোবি: প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল নিয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। পরে বিক্ষোভ মিছিলটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্কের মোড়সংলগ্ন ১নং গেটের সামনে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।

কুবি: চারটি দাবি জানিয়ে তিন ঘণ্টা পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে গিয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে তারা মহাসড়কে অবরোধ ছাড়ার ঘোষণা দেন। তারা এ সময় চারটি দাবি করেন। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন ও মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় তারা ‘লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষ্যমের ঠাঁই নাই’, ‘লেগেছেরে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘সারা বাংলা খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’ ইত্যাদি বলে স্লোগান দেন।

কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ: সদরঘাটগামী রাস্তা অবরোধ করে জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৬:৫২ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৬:৫২ পিএম
কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ: সদরঘাটগামী রাস্তা অবরোধ করে জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
ছবি: খবরের কাগজ

সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) কোটা বাতিলসংক্রান্ত পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের প্রতিবাদে এবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রধান ফটকের সামনের রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই)  দুপুর ১২টা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হয়ে সদরঘাটগামী রাস্তাটি অবরোধ করে। 

এরপর মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা রায়সাহেব বাজার মোড়ে আসে এবং সড়ক অবরোধ করে। সড়ক অবরোধের কারণে যাত্রাবাড়ী, সদরঘাট, তাঁতীবাজার, গুলিস্থানগামী যানবাহন  চলাচল করতে পারেনি। 

রাস্তা অবরোধের কারণে সদরঘাটের দিকে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারেনি। এসময় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসাইন মুন্না বলেন, আমাদের দাবি এখনও পূরণ হয়নি। দাবি না মানা পর্যন্ত এভাবেই আমাদের আন্দোলন চলবে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে।

শিক্ষার্থীদের ৪ দফা পুনরায় পেশ করেন-

১। ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। 

২। ১৮' এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকুরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।

৩। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।  

 ৪। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে রাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৪:৩৫ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৪:৩৫ পিএম
কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে রাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ছবি: খবরের কাগজ

সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল বাতিল, কোটা সংস্কারের দাবিসহ কয়েকটি দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। 

আন্দোলনের প্রথম থেকেই বৃষ্টি শুরু হলেও তা উপেক্ষা করেই আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা।

এতে মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করেন তারা।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টা থেকেই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে জমা হতে থাকেন।

বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। 

এরপর শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন। 

এ সময় বৃষ্টিতে ভিজেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যান। 

পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। 

মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে কাজলা গেট হয়ে প্যারিস রোডে গিয়ে শেষ হয়।

বিক্ষোভ চলার সময় শিক্ষার্থীরা চারটি দাবি উত্থাপন করেন। 

দাবিগুলো হলো- ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করতে হবে, তবে কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে মেধাকোটায় শূন্যপদ পূরণ করতে হবে; ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় সব ধরনের সরকারি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় একবার কোটা ব্যবহার করতে পারবেন, এর মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত থাক; প্রতি জনশুমারির সঙ্গে অর্থনৈতিক সমীক্ষার মাধ্যমে বিদ্যমান কোটার পুনর্মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা এ আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। 

এরই ধারাবাহিকতায় আগামীকাল শুক্রবার (৫ জুলাই) সকাল ১০টায় একই কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।  

এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন লেখা-সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। 

কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘সারা বাংলা খবর দে, কোটা পদ্ধতির কবর দে’, ‘দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান’, ‘মেধাবীদের কান্না, আর না আর না’, ‘কোটা-বৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘মেধাবীদের যাচাই করো, কোটাপদ্ধতি বাতিল করো’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, কোটা পদ্ধতির ঠাঁই নাই’, ‘১৮ এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘বৈষম্যর বিরুদ্ধে, লড়াই করো একসাথে’, ‘ঝড় বৃষ্টি আধার রাতে, আমরা আছি রাজপথে’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন।

এ ছাড়া বিক্ষোভ চলার সময় বিখ্যাত কবিদের বিভিন্ন প্রতিবাদী কবিতা ও সংগ্রামী গান পরিবেশন করা হয়।

বিক্ষোভ কর্মসূচির মুখপাত্র ও রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার। আমরা হাইকোর্টের বিচারকদের মতো জ্ঞান রাখি না। তবে আমরা এটা জানি, এক শতাংশের কম জনসংখ্যার জন্য ৩০ শতাংশ কোটা অন্যায্য। এটা বুঝতে পৃথিবীর কোনো আইন জানা লাগে না। আমাদের দাবিগুলো স্পষ্ট, আমাদের আইন বোঝার দরকার নেই। দাবি কিভাবে আদায় করতে হয় তা বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়েছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ধারাবাহিক আন্দোলন চলমান থাকবে।’

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে আন্দোলনে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। 

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিবেকের তাড়নায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উপস্থিত হয়েছি। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক। এই রাষ্ট্রের জন্মের পেছনে সমতাভিত্তিক সমাজব্যবস্থা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করা অন্যতম প্রধান কারণ ছিল। রাষ্ট্রের চোখে সব নাগরিক সমান। এ ব্যাপারে কোনো বিভেদ সৃষ্টি করলে সেটা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী হবে। সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী, যারা সংখ্যাগরিষ্ঠ তারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। আজকে জাতিকে মেধাশূণ্য করে এগিয়ে নেওয়ার যে চক্রান্ত করা হয়েছে, সেটি বাস্তবায়ন করতে দেওয়া যাবে না।’

হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিকেত বর্ধন আকাশ বলেন, ‘সবধরনের চাকরি থেকে কোটা প্রথার অবসান করা হোক। একজন মেধাবী শিক্ষার্থী কঠোর পরিশ্রম করেও চাকরি পাচ্ছেন না। অন্যদিকে একজন কোটাধারী অল্প নম্বর পেয়েও চাকরিতে যোগদানের সুযোগ পাচ্ছেন। যা সম্পূর্ণভাবে বৈষম্য। এ বৈষম্যের অবসান হোক।’

আন্দোলন কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আজিজুর রহমান বলেন, ‘দেশের কোটা প্রথায় উপযোগী জনসংখ্যার সংখ্যা ১ শতাংশের কম কিন্তু তাদের জন্য কোটা ৫৬ শতাংশ। এমনিতেই দেশের চাকরির বাজার প্রতিযোগিতাপূর্ণ। সেখানে কোটায় অধিকাংশ সিট চলে যাওয়া আমাদের প্রতিযোগিতা আরও বাড়িয়ে দেয়। আমাদের দাবি, ২০১৮ সালে কোটা নিয়ে যে সিদ্ধান্ত এসেছিল তা পুনর্বহাল থাকুক।’

গত ৫ জুন সরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। 

এতে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল থাকবে। 

মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের করা এক রিটের প্রেক্ষিতে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এ রায় দেন।

সুমন/পপি/