![শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের ৮ কর্মীকে হল থেকে বহিষ্কার](uploads/2024/03/11/1710164402.SUST.jpg)
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ধাওয়া ও হাতাহাতির ঘটনায় ৮ ছাত্রলীগ কর্মীকে হল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। পরে বিজ্ঞপ্তি জারির বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান।
তিনি জানান, আবাসিক হলে শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তদন্ত কমিটির সুপারিশে তাদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের ওপর ভিত্তি করে ৮ শিক্ষার্থীকে হল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা হলেন পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোব্বাশ্বির বাঙ্গালী, সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের দুই শিক্ষার্থী সাদমান হাফিজ ও রিফাত চৌধুরী রিয়াজ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত তারা আদনান, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মহসিন নাইম, ইংরেজি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তৈমুর সালেহিন তাউস, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ, (ওরফে তানভীর ইশতিয়াক), সমাজকর্ম বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হৃদয় মিয়া। বহিষ্কৃতরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান চৌধুরী খবরের কাগজকে বলেন, ‘এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হল প্রশাসনের প্রাথমিক তদন্তের ওপর ভিত্তি করে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঘটনা তদন্তের জন্য ইতোমধ্যে ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় নতুন কমিটি ঘোষণা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নতুন কমিটিতে স্থান পেতে একাধিক গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। গত ৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ সেশনের ব্যাচের নামকরণ নিয়ে দ্বন্দ্বে ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত দুই শিক্ষার্থী সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থীদের ব্যাচের নামকরণ নিয়ে মেসেঞ্জার গ্রুপে এক শিক্ষার্থীর মন্তব্যের জের ধরে শাহপরাণ হলের সামনে কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। পরে সমাধানের উদ্দেশ্যে ওই হলের গেস্ট রুমে ছাত্রলীগের একাধিক গ্রুপের কর্মীরা বসেন। বিষয়টি সমাধান না হয়ে আবারও তর্কাতর্কিতে রূপ নেয়। এতে শাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক খলিলুর রহমানসহ অন্যান্য গ্রুপের অনুসারীদের সঙ্গে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সহসভাপতি মামুন শাহের অনুসারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উভয়পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে দেখা যায়। ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় দুইজন আহত হন বলে জানা গেছে। পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি এবং হলের প্রভোস্ট বডির সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
হল থেকে সাময়িক বহিষ্কৃতদের কেউ কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ও সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১২-১৩ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. খলিলুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘ওই দিন এত সিরিয়াস কিছু হয়নি। আমরা সিনিয়ররা মিলে ঘটনাস্থলে সবকিছু মিটমাট করে দেই। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িক বহিষ্কার করলেও আশা করি তদন্ত কমিটির পরবর্তী সিদ্ধান্তে ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে।’
ইসফাক/সালমান/