![রাজশাহীতে অপরিপক্ব তরমুজে সয়লাব বাজার](uploads/2024/03/24/1711257165.1710742774.1710660370.vokta-odhiker-photo.jpg)
রমজানের প্রথম দিন থেকেই রাজশাহীর বাজারে রসালো ফল তরমুজের চাহিদা বেড়েছে, আবার দামও বেশ চড়া। তবে এখনো পরিপূর্ণ মৌসুম শুরু না হওয়ায় বাজারে বিক্রি হওয়া তরমুজের ভেতরে লাল রং পাওয়া যায় না। মিষ্টতা ও স্বাদও অনেক কম। তবুও রমজান আর চৈত্রের খরতাপে বাড়তি মুনাফার আশায় অপরিপক্ব তরমুজে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। এতে ব্যবসায়ীরা লাভ গুনলেও বাড়ি নিয়ে কাটার পর লালের বদলে তরমুজের ভেতরের রং সাদা দেখে হতাশ হচ্ছেন ক্রেতারা।
ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, চৈত্রের খরতাপের মধ্যেই চলছে রোজা। সেই সুযোগে দাম বেশি থাকায় আড়তে অপরিপক্ব তরমুজ সরবরাহ করছেন ফড়িয়ারা। তবে বিক্রেতারা বলছেন, এগুলো বারোমাসি তরমুজ। এগুলোর রং-স্বাদ মৌসুমি তরমুজের চেয়ে কিছুটা কম। মৌসুমি তরমুজগুলো বাজারে উঠতে আরেকটু সময় লাগবে।
সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৫-১০ কেজি পর্যন্ত ওজনের তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বাজার, পাড়া ও মহল্লার মোড়ের দোকানে ছোট ও মাঝারি আকারের তরমুজ বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি করা হচ্ছে ৬৫ থেকে ৮০ টাকায়। গত বছর একই তরমুজের দাম ছিল প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫৫ টাকা। এর আগের বছরও প্রায় একই দামে বিক্রি হয়েছিল তরমুজ।
নগরীর উপশহরের নিউমার্কেটে তরমুজ কিনতে আসা কবির হোসেন বলেন, ‘ছোট একটি তরমুজের ওজন হয়েছে চার কেজি। ৭০ টাকা কেজি হিসেবে দাম এসেছে ২৮০ টাকা। কিন্তু এই তরমুজের দাম কোনোভাবেই ১২০ টাকার বেশি হওয়ার কথা না।’
নগরীর শালবাগান এলাকার ফলের আড়তদার শাহজামাল বলেন, ‘গত বছর এ সময় ১০০ তরমুজ ১৫ হাজার টাকায় আড়ত থেকে কেনা যেত, এবার সেই তরমুজ কিনতে হচ্ছে ২৫ হাজার টাকায়। আমাদের আরও খরচ আছে। পরিবহন ও শ্রমিকদের টাকা দিতে হয়। সেগুলো যোগ করে পাইকারি ৫০-৬০ টাকা কেজিতে আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে। এখান থেকে নিয়ে গিয়ে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে। আবার কেউ বেশি দামেও বিক্রি করছে।’
তরমুজচাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তরমুজের মৌসুম শুরু হয় মূলত বাংলা বর্ষপঞ্জির চৈত্র মাসের শেষে ও বৈশাখের শুরুতে। খ্রিষ্টীয় বর্ষপঞ্জি হিসাব করলে সময়টা দাঁড়ায় এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহ। পাওয়া যায় জুন মাস পর্যন্ত। কিন্তু এ বছর ফেব্রুয়ারির শেষ দিক থেকেই বাজারে দেখা মিলছে তরমুজের। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষের দিকে রমজান শুরু হতে না হতেই এর বিক্রি বেড়ে গেছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দেশে তরমুজ সাধারণত এপ্রিল-মে মাসেই ওঠে। এটাই তরমুজের প্রধান মৌসুম। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এই মৌসুমের বাইরেও অন্য সময়ে, বিশেষ করে মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তরমুজ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এ তরমুজকে অনেকে নাম দিয়েছেন ‘বারোমাসি তরমুজ’। অসময়ে ওঠার কারণে এগুলোর দামও বেশি।